Logo
Logo
×

দশ দিগন্ত

পাকিস্তানে উৎসব দিবস

কাশ্মীরের মালিকানা ঠিক করবেন ট্রাম্প

Icon

যুগান্তর ডেস্ক

প্রকাশ: ১২ মে ২০২৫, ১২:০০ এএম

প্রিন্ট সংস্করণ

ভারতের সঙ্গে যুদ্ধে বিজয়ের আনন্দে রোববার পুরো পাকিস্তানেই ছিল উৎসবের আমেজ। আনন্দ মিছিল, মিষ্টিমুখ আর পাকিস্তান সেনাবাহিনীর বীরত্বের স্লোগানে মুখরিত হয়ে ওঠে দেশটির রাজধানী থেকে সীমান্ত পর্যন্ত। ভারতের বিরুদ্ধে প্রতিশোধমূলক অভিযান ‘বুনইয়ানুন মারসুস’ সফল হয়েছে। শনিবার যুদ্ধবিরতিতে রাজি হয়েছে দুই দেশ। এই আনন্দে রোববার সারা দেশে ‘ইয়ুম-ই-তাশাকুর’ পালনের আহ্বান জানান পাকিস্তান প্রধানমন্ত্রী শাহবাজ শরিফ। ‘দেশবাসীর প্রতি কৃতজ্ঞতা থেকেই এদিন পাকিস্তানে পালিত হওয়া উৎসবের নাম দেওয়া হয় ‘ইয়ুম-ই-তাশাকুর।’ যার অর্থ ‘কৃতজ্ঞতার দিন’ বা ‘ধন্যবাদ জানানোর দিন’। এদিকে ভারত ও পাকিস্তানের মধ্যে টানা চারদিনের যুদ্ধাবস্থা অবসানের একদিন পরই, যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প কাশ্মীর ইস্যুতে এক ঐতিহাসিক মন্তব্য করেন। বলেন, যুক্তরাষ্ট্র এই দীর্ঘকালীন বিরোধের সমাধানে মধ্যস্থতার জন্য প্রস্তুত এবং এই ‘হাজার বছরের পুরোনো সমস্যার’ স্থায়ী সমাধান খুঁজে বের করতে কাজ করবে।

রোববার সকালে নিজের ট্রুথ সোশ্যালের পোস্টে এমনই ইঙ্গিত দিলেন মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প। বললেন, ‘আমি গর্বিত যে যুক্তরাষ্ট্র এই ঐতিহাসিক ও বীরত্বপূর্ণ সিদ্ধান্তে পৌঁছাতে সহায়তা করতে পেরেছে। ভারত ও পাকিস্তানের শক্তিশালী নেতৃত্ব যুদ্ধবিরতি ঘোষণার মাধ্যমে লাখো নিরীহ মানুষের প্রাণ রক্ষা পেয়েছে।’

ট্রাম্প আরও লেখেন, যদিও এটা নিয়ে সরাসরি আলোচনা হয়নি, আমি ভারত ও পাকিস্তানের সঙ্গে বাণিজ্য বাড়াতে যাচ্ছি এবং আমি চেষ্টা করব কাশ্মীর নিয়ে, ‘হাজার বছরের পুরোনো সমস্যার’ একটি সমাধানে পৌঁছাতে।

বিশ্লেষকরা বলছেন, যুদ্ধবিরতি স্বাগত জানালেও, ইসলামাবাদের প্রতি আর্থিক বা বাণিজ্যিক ছাড় দিলে দিল্লি তা ভালো চোখে দেখবে না। অবজারভার রিসার্চ ফাউন্ডেশনের সিনিয়র ফেলো কবির তানেজা বলেন, পাকিস্তানকে আর্থিকভাবে শক্তিশালী করা অতীতে দীর্ঘমেয়াদে ব্যর্থ হয়েছে এবং তা সন্ত্রাসবাদের বিরুদ্ধে লড়াইয়ে কোনো স্থায়ী সমাধান আনেনি। ভারত-পাকিস্তান শান্তি প্রচেষ্টার পরিপ্রেক্ষিতে যুক্তরাষ্ট্রের ভূমিকা নিয়ে এখনো বিতর্ক রয়েছে, তবে ট্রাম্পের এই ‘মধ্যস্থতা’ প্রচেষ্টাকে দুই দেশেই ভিন্নভাবে দেখা হচ্ছে। আজ এ নিয়ে আলোচনায় বসবেন দুই দেশের প্রতিনিধি।

চেনাব নদীর পানি ছাড়ল ভারত : রোববারই চেনাব নদীর বাগলিহার ও সালাল বাঁধের একাধিক গেট খুলে দিল ভারত। এর ফলে আবারও পাকিস্তানের দিকে পানি প্রবাহিত হতে শুরু করেছে। পহেলগাঁওয়ের হামলার পর ভারত একাধিক কঠোর পদক্ষেপ গ্রহণ করে। এর মধ্যে অন্যতম ছিল পাকিস্তানের দিকে পানি প্রবাহ বন্ধ করা এবং পাকিস্তানি নাগরিকদের দেশ ছাড়ার নির্দেশ। ভারত সরকার সাময়িকভাবে সিন্ধু পানিচুক্তি স্থগিত করে এবং চেনাব নদীর প্রবাহ আটকে দেয়। ফলে পাকিস্তানের দিকে চেনাব নদীর জলস্তর আশঙ্কাজনকভাবে কমে যায়। ডন।

প্রশাসন জানিয়েছে, সম্প্রতি জম্মু-কাশ্মীরে টানা বৃষ্টির কারণে বাগলিহার ও সালাল বাঁধে পানিরস্তর বেড়ে গিয়েছিল। বাঁধে অতিরিক্ত জল জমে থাকায় তা ছেড়ে দেওয়ার প্রয়োজন হয়। বিশেষজ্ঞদের মতে, পানি না ছাড়লে বাঁধের ওপর অতিরিক্ত চাপ পড়ে বিপর্যয় সৃষ্টি হতে পারত। যদিও সরকারিভাবে এখনো পর্যন্ত বাঁধের গেট খোলার প্রকৃত কারণ জানানো হয়নি। গেট খোলার ফলে পাকিস্তানে চেনাব নদীর শুকিয়ে যাওয়া এলাকাগুলোতে আবারও জল প্রবাহিত হচ্ছে।

বিশেষ অধিবেশন চেয়ে মোদিকে চিঠি রাহুলের : যুদ্ধবিরতি ঘোষণা নিয়ে আলোচনা চান লোকসভার বিরোধী দলনেতা তথা কংগ্রেস সাংসদ রাহুল গান্ধী। রোববার দেশটির প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ মোদিকে এ নিয়ে চিঠি লিখেছেন তিনি। চিঠিতে দাবি, সংসদে বিশেষ অধিবেশন ডাকা হোক। সেখানেই ‘অপারেশন সিঁদুর’ এবং যুদ্ধবিরতি নিয়ে আলোচনা চান রাহুল। সংক্ষিপ্ত চিঠিতে তিনি লেখেন, ‘‘আমি অবিলম্বে সংসদের একটি বিশেষ অধিবেশন ডাকার জন্য বিরোধীদের সর্বসম্মত অনুরোধ পুনর্ব্যক্ত করছি। পেহেলগামের হামলা, অপারেশন সিঁদুর, এবং মার্কিন প্রেসিডেন্টের যুদ্ধবিরতি ঘোষণা নিয়ে আলোচনা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। ভবিষ্যতের চ্যালেঞ্জগুলি মোকাবিলায় সম্মিলিত সংকল্প দেখানোর একটি সুযোগও হবে। আমি বিশ্বাস করি, আপনি বিষয়টি গুরুত্ব সহকারে এবং দ্রুত বিবেচনা করবেন।’

Logo

সম্পাদক : আবদুল হাই শিকদার

প্রকাশক : সালমা ইসলাম