যুদ্ধবিরতির পরও আতঙ্কে সীমান্ত
দোটানায় আজাদ কাশ্মীরের ১,১৪৬ পরিবার
যুগান্তর ডেস্ক
প্রকাশ: ১৩ মে ২০২৫, ১২:০০ এএম
প্রিন্ট সংস্করণ
|
ফলো করুন |
|
|---|---|
থেমে গেছে সীমান্তে উত্তেজনা। গোলাগুলির শব্দও আর নেই। মাথার উপরও উড়ছে না বিধ্বংসী ড্রোন। সবমিলিয়ে শান্ত হয়েছে ভারত-পাকিস্তান সীমান্ত। তবুও ছন্দ ফিরছে না ভারত-পাকিস্তান সীমান্তে। পরিস্থিতি যেন এখনো প্রতিকূলে। যুদ্ধবিরতির পরও বাড়ি ফিরতে ভয় পাচ্ছেন আজাদ কাশ্মীরের বাসিন্দারা। একই অবস্থা ভারত অধিকৃত জম্মু-কাশ্মীরের সীমান্ত জনপদেও। যুদ্ধবিরতি হলেও যুদ্ধের ধোঁয়া নাকি এখনো কাটেনি! ভয়-আতঙ্ক-হতাশায় এখন রয়েছেন আশ্রয় কেন্দ্রে। কেউ আবার পরিবার-পরিজন নিয়ে আছেন উঁচু পাহড়ের ঢালে। সারাদিন জটলা পাকিয়ে একই দরবার সবার-বাড়ি যাব কি যাব না? এই দোটানাতেই সময় কাটছে বাস্তুচ্যুত শিবিরগুলোতে আশ্রয় নেওয়া জম্মু-কাশ্মীরের শত শত মানুষের। আজাদ কাশ্মীরে ১,১৪৬ পরিবার। সোমবার সেই দৃশ্যই উঠে এসেছে ডন ও আলজাজিরা প্রতিবেদনে।
২২ এপ্রিলের কাশ্মীরের পেহেলগাম হামলার জের ধরে যুদ্ধংদেহী হয়ে ওঠে দুই দেশই। দুই সীমান্তে শুরু হয় মাঝ রাতে গোলাগুলি। একপর্যায়ে চার দিনের (৭-১০ মে) রক্তক্ষয়ী সংঘাত। দুই সেনাবাহিনীর ভয়াবহ সে রণ উন্মাদনার শিকার এই জনপদ। শনিবার যুদ্ধবিরতির পরও যেন বিশ্বাস করতে পারছেন না ‘যুদ্ধ শেষ’। এখনো নিরাপত্তাহীনতায় কাশ্মীর, জম্মু, অমৃতসর ও আজাদ কাশ্মীরের নীলম উপত্যকার বাসিন্দারা। আতঙ্ক এখনো কাটেনি! সীমান্ত এলাকায় দুই দেশের নিরাপত্তা বাহিনীও চাইছে না এখনই নিজ নিজ ঘরে ফিরুক বাসিন্দারা। যুদ্ধবিরতির কয়েক ঘণ্টার মধ্যেই গোলার আওয়াজ শোনা গেছে সীমান্তের দুই পাশেই। রোববার জম্মু-কাশ্মীরের এক জরুরি পুলিশ বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, ফ্রন্টলাইন গ্রামগুলোতে কেউ এখনই যেন না ফেরেন। নিয়ন্ত্রণ রেখার জেলাগুলোতে জরুরি অবস্থা ঘোষণা করেছে দুই দেশই। পরবর্তী নির্দেশ না দেওয়া পর্যন্ত শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান বন্ধ রাখার নির্দেশনা দিয়েছে উভয় প্রশাসনই। পাকিস্তানের গোলাবর্ষণের ফলে অনেক অবিস্ফোরিত গোলা পড়ে আছে। স্বভাবতই জীবনের ঝুঁকি রয়েছে এখনো। তবে এই দাবি অস্বীকার করেছে ইসলামাবাদ। মুজাফফরাবাদের লোয়ার প্লেট পাড়ার একটি উচ্চবিদ্যালয় ভবনে আশ্রয় নিয়েছেন নীলম উপত্যকার গৃহিণী জাহিদা পারভীন। বলেন, ‘আমরা এখনো ঝুঁকি নিতে প্রস্তুত নই। আমাদের সন্তানদের নিয়ে আমরা সবচেয়ে বেশি চিন্তিত। আমরা আতঙ্কে পালিয়ে এসেছি। নিরাপত্তা নিশ্চিত না হয়ে ফিরে যেতে চাই না। স্কুলের বারান্দায়, সান্দোক গ্রামের ৫৬ বছর বয়সি সৈয়দ মুরিদ হুসেনও একই রকম মতামত ব্যক্ত করেন। তিবি বলেন, ‘আমার মন ফিরে যেতে চায়, কিন্তু বাচ্চারা আতঙ্কিত। কামানের শব্দ এখনো তাদের মনে প্রতিধ্বনিত হয়।’ তিনি এক বা দুই দিন মুজাফফরাবাদের উপকণ্ঠে আত্মীয়দের সঙ্গে থাকার পরিকল্পনা করেছেন। কাশ্মীরের আখনুরের বাসিন্দা ২২ বছর বয়সি কৃষি শ্রমিক আশা দেবী বলেন, আমি বিহারে আমার গ্রামে ফিরে যেতে চাই। সীমান্তে ফিরে মরতে চাই না।
