Logo
Logo
×

দশ দিগন্ত

যুক্তরাষ্ট্রে দুই ইসরাইলি কর্মীকে গুলি করে হত্যা

এই ভয়াবহ হত্যাকাণ্ড স্পষ্টতই ইহুদিবিদ্বেষ থেকে ঘটেছে : ট্রাম্প * মুসলিম বিশ্বে সবার আগে নিন্দা আরব আমিরাতের

Icon

যুগান্তর ডেস্ক

প্রকাশ: ২৩ মে ২০২৫, ১২:০০ এএম

প্রিন্ট সংস্করণ

যুক্তরাষ্ট্রের রাজধানী ওয়াশিংটন ডিসিতে ইসরাইলি দূতাবাসের দুই কর্মীকে (দম্পতি) গুলি করে হত্যা করা হয়েছে। একটি ইহুদি জাদুঘরের বাইরে এ হত্যাকাণ্ডের ঘটনা ঘটে। বুধবার স্থানীয় সময় রাত ৯টা ৮ মিনিটের দিকে ‘ক্যাপিটল জিউইশ মিউজিয়াম’র বাইরে একটি অনুষ্ঠান থেকে বের হওয়ার সময় এই ঘটনা ঘটে। পুলিশ জানিয়েছে, সন্দেহভাজন হামলাকারীকে গ্রেফতার করতে গেলে তিনি ‘ফ্রি, ফ্রি ফিলিস্তিন’ বলে স্লোগান দিতে থাকেন। বিবিসি, এএফপি।

মেট্রোপলিটন পুলিশ বিভাগ (এমপিডি) জানিয়েছে, নিহত দুজন হলেন ইয়ারন লিশিনস্কি ও সারা লিন মিলগ্রিম। ইসরাইলি দূতাবাস নিশ্চিত করেছে, তারা দূতাবাসের কর্মী ছিলেন। ওয়াশিংটনে ইসরাইলের রাষ্ট্রদূত ইয়েচিয়েল লেইটার জানান, এই তরুণ-তরুণীর শিগগির বিবাহবন্ধনে আবদ্ধ হওয়ার কথা ছিল। ছেলেটি আগামী সপ্তাহে জেরুজালেমে তার প্রেমিকাকে প্রস্তাব দেওয়ার জন্য একটি আংটিও কিনেছিলেন।

পুলিশ বলেছে, শিকাগোর বাসিন্দা ৩০ বছর বয়সী এলিয়াস রদ্রিগেজ এই হত্যাকাণ্ড ঘটিয়েছেন। তাকে জিজ্ঞাসাবাদ করা হচ্ছে। তবে পুলিশ জানায়, রদ্রিগেজের আগের কোনো অপরাধের রেকর্ড নেই। এমপিডির প্রধান পামেলা স্মিথ জানান, রদ্রিগেজকে গুলি চালানোর আগে জাদুঘরের বাইরে পায়চারী করতে দেখা গিয়েছিল। এরপর তিনি একটি হ্যান্ডগান দিয়ে চারজনের একটি দলের ওপর গুলি চালান, যাতে দুজন নিহত হন। এরপর সন্দেহভাজন ব্যক্তি জাদুঘরের ভেতরে প্রবেশ করলে তাকে আটক করা হয়।

হামলার সময় কী ঘটেছিল : প্রত্যক্ষদর্শীরা বিবিসিকে হামলা পরবর্তী পরিস্থিতি বর্ণনা করেছেন। কেটি কালিশার নামের একজন বলেন, ‘রাত প্রায় ৯টা ৭ মিনিটে আমরা গুলির শব্দ শুনি। তারপর একজন লোক ভেতরে আসেন, তাকে খুব বিচলিত দেখাচ্ছিল। আমরা ভেবেছিলাম তার সাহায্য বা নিরাপদ আশ্রয়ের প্রয়োজন। আমরা জানতাম না যে তিনি বাইরে ঠান্ডা মাথায় মানুষ দুজনকে হত্যা করেছেন।’ তিনি আরও বলেন, ‘পুলিশ আসার পর তিনি নিজেই বলেন, ‘আমি এটা করেছি। আমি নিরস্ত্র।’ একটি লাল কেফিয়াহ বা ফিলিস্তিনিদের ঐতিহ্যবাহী স্কার্ফ বের করে বলেন, ‘আমি এটা গাজার জন্য করেছি। ফিলিস্তিন মুক্ত কর। একটাই সমাধান। ইন্তিফাদা বিপ্লব’।

হামলাকারী এলিয়াস রদ্রিগেজ কে : ৩০ বছর বয়সী এলিয়াস রদ্রিগেজ শিকাগোর বাসিন্দা। তিনি পার্টি ফর সোস্যালিজম অ্যান্ড লিবারেশনের (পিএসএল) সঙ্গে সক্রিয় এবং ব্ল্যাক লাইভস ম্যাটার (বিএলএম) আন্দোলনে জড়িত ছিলেন বলে জানা গেছে। ২০১৭ সালে তিনি শিকাগোর তৎকালীন মেয়র রাহম ইমানুয়েলের বাসভবনের বাইরে প্রতিবাদে অংশ নেন।

বিশ্বনেতাদের ক্ষোভ : প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প এই হামলার নিন্দা জানিয়ে এটিকে ‘ইহুদিবিদ্বেষী’ বলে আখ্যা দিয়েছেন। তিনি সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ট্রুথ সোস্যালে লিখেছেন, ‘ওয়াশিংটন ডিসির এই ভয়াবহ হত্যাকাণ্ড স্পষ্টতই ইহুদিবিদ্বেষ থেকে ঘটেছে, এ ধরনের হামলা বন্ধ হতে হবে! যুক্তরাষ্ট্রে ঘৃণা ও চরমপন্থার কোনো স্থান নেই। নিহত ব্যক্তিদের পরিবারের প্রতি সমবেদনা। এমন ঘটনা যে ঘটতে পারে, ভাবতেই কষ্ট লাগে! ঈশ্বর সবার মঙ্গল করুণ!’ ইসরাইলের প্রধানমন্ত্রী বেঞ্জামিন নেতানিয়াহু এই হামলাকে ‘ভয়াবহ ইহুদিবিদ্বেষী হত্যাকাণ্ড’ অভিহিত করে ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন। তিনি বলেন, ‘আমার হৃদয় নিহত তরুণদের পরিবারের জন্য শোকাহত, যাদের জীবন এক ঘৃণ্য ইহুদিবিদ্বেষী খুনির হাতে এক মুহূর্তে শেষ হয়ে গেছে।’ তিনি বিশ্বজুড়ে ইসরাইলি মিশন ও রাষ্ট্রীয় প্রতিনিধিদের নিরাপত্তা বাড়ানোর নির্দেশ দিয়েছেন। হত্যাকাণ্ডের এ ঘটনায় মুসলিম বিশ্বে সবার আগে নিন্দা জানিয়েছে সংযুক্ত আরব আমিরাত। বৃহস্পতিবার দেশটির পররাষ্ট্রমন্ত্রণালয় এক বিবৃতিতে ‘এই জঘন্য হামলায় নিহতদের পরিবারের সঙ্গে এবং ইসরাইলি জনগণের সঙ্গে সংহতি’ প্রকাশ করেছে।

Logo

সম্পাদক : আবদুল হাই শিকদার

প্রকাশক : সালমা ইসলাম