গাজায় ত্রাণ বিতরণ ট্রাকের সামনে হামলা
নিহতের সংখ্যা ৫৪ হাজার ছুঁইছুঁই
যুগান্তর ডেস্ক
প্রকাশ: ২৫ মে ২০২৫, ১২:০০ এএম
প্রিন্ট সংস্করণ
|
ফলো করুন |
|
|---|---|
অবরুদ্ধ গাজায় ত্রাণের ট্রাকের সামনে জমে ওঠা ভিড়ে হামলা চালিয়েছে ইসরাইল। দক্ষিণ গাজার আল-মাওয়াসিতে একটি ট্রাকের সামনে আটা সংগ্রহ করতে আসে ফিলিস্তিনিরা। শনিবার স্থানীয় সময় দুপুর ২টায় খাবারের আশায় আসা সেই ক্ষুধার্তদের ভিড় লক্ষ্য করে হামলা চালায় ইসরাইলের বর্বর সেনারা। এ ঘটনায় কমপক্ষে পাঁচজন ফিলিস্তিনি নিহত হয়েছে। আহত হয়েছে আরও ৫০ জন। রয়টার্সের প্রতিবেদন অনুযায়ী-তিনদিনে গাজায় মোট ১১৯ ট্রাক ত্রাণ গাজায় প্রবেশ করেছে। যেখানে প্রতিদিন অন্তত ৫০০-৬০০ ট্রাক ত্রাণ প্রয়োজন। আলজাজিরা।
শনিবারও ইসরাইলের বিচ্ছিন্ন হামলার ঘটনায় ২৮ জন ফিলিস্তিনি নিহত হয়েছে। এরমধ্যে পূর্ব গাজা শহরে ড্রোন হামলায় চারজন নিহত হয়েছে। এছাড়াও গাজা শহরের আল-তুফাহ পাড়ায় আরেকটি বিমান হামলায় তিন নারী এবং এক শিশু নিহত হয়েছে। দক্ষিণ গাজার খান ইউনিসের উত্তর-পশ্চিমাঞ্চলে ‘আল-শরিফ’ পরিবারের ড্রোন হামলায় আরও ছয়জন নিহত হয়েছে। আল-আমাল পাড়ায় ‘আল-মাধৌন’ একই পরিবারের চারজন ও মধ্য গাজার নুসাইরাত শরণার্থী শিবিরে ‘জৌদা’ পরিবারের দুইজন নিহত হয়েছে। এর আগে ইসরাইলি সেনাবাহিনী জানিয়েছে-শুক্রবারও গাজার ১০০টি লক্ষ্যবস্তুতে জেট বিমান হামলা চালিয়েছিল তারা। বিবৃতি অনুসারে, গাজার সশস্ত্রবাহিনী হামাসের ব্যবহৃত টানেল এবং অবকাঠামোকে লক্ষ্য করে সেসব হামলা চালানো হয়। শুক্রবার থেকে ইসরাইলি হামলায় গাজা উপত্যকায় অন্তত ৭৬ জন ফিলিস্তিনি নিহত হয়েছে। এছাড়াও গাজায় অন্তত ৭৫ শতাংশ পরিবারের কাছে পর্যাপ্ত পানি নেই। শুক্রবার জাতিসংঘের নিরাপত্তা পরিষদের বৈঠকে ইউনিসেফের উপ-নির্বাহী পরিচালক টেড চাইবান বলেন, গাজার ৭০ শতাংশ পানি ও স্যানিটেশন অবকাঠামো ক্ষতিগ্রস্ত বা ধ্বংস হয়ে যাওয়ার কারণে পানির অভাব দেখা দিয়েছে। এদিকে চলমান এ হামলার ঘটনায় গাজায় নিহতের সংখ্যা ৫৪ হাজার ছুঁইছুঁই। গাজায় স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের সর্বশেষ তথ্যানুযায়ী-৭ অক্টোবর থেকে চলমান ১৯ মাসের বেশি সময় ধরে চলমান ইসরাইলি হামলায় নিহতের সংখ্যা বেড়ে ৫৩,৯০১ জনে পৌঁছেছে। আহত হয়েছে আরও ১২২,৫৯৩ জন। এদিকে গাজাবাসীকে মানবঢাল হিসাবে ব্যবহার করছে ইসরাইলের সেনারা। নিজেদের প্রবেশের আগে টানেল-ভবনগুলোতে জোরপূর্বক স্থানীয় নারী-পুরুষ-শিশুদের পাঠাচ্ছে। শনিবার এক বিবৃতিতে সেনাবাহিনীর এ ধরনের কর্মকাণ্ডের কঠোর নিষেধাজ্ঞা দিয়েছে ইসরাইলের প্রতিরক্ষাবাহিনী।
‘মাত্র এক চামচ’ ত্রাণ ঢুকেছে
জাতিসংঘের মহাসচিব অ্যান্তোনিও গুতেরেস বলেছেন, এক নিষ্ঠুর যুদ্ধের নিষ্ঠুরতম পর্যায়ে পৌঁছেছে গাজা। যেখানে খাবারের বন্যা প্রয়োজন, সেখানে ‘মাত্র এক চামচ’ সাহায্য ঢুকেছে গাজায়। এই পরিস্থিতিতে দুর্ভিক্ষের ঝুঁকি বাড়ছে। মৃত্যু ও ধ্বংসযজ্ঞের মাত্রা ভয়াবহ পর্যায়ে পৌঁছেছে। জরুরি ভিত্তিতে খাদ্য, ওষুধ ও জ্বালানির প্রবেশ নিশ্চিত করতে হবে। অন্যথায় বিপর্যয় আরও গভীর হবে।
ত্রাণ নিতে ২৫ কিমি. পাড়ি
বিশ্ব খাদ্য কর্মসূচি (ডাব্লিউএফপি) জানিয়েছে, ত্রাণ নিতে প্রায় ২৫ কিলোমিটার (প্রায় ১৫.৫ মাইল) পথ পাড়ি দিচ্ছেন গাজার বাসিন্দারা। টানা ১১ পর সোমবার থেকে ত্রাণ প্রবেশ করতে শুরু করে গাজায়। তবে তা মোটেও যথেষ্ট নয়। গাজায় প্রতিদিন অন্তত ৫০০টি ত্রাণবাহী ট্রাক প্রয়োজন।
