Logo
Logo
×

কাল নিরবধি

ফিরে দেখা ২০২১

লঞ্চের আগুনে কেঁদেছে বাংলাদেশ

জীবন বাঁচানোর আর্তচিৎকারে ঘুম ভাঙে ঝালকাঠিবাসীর

Icon

আককাস সিকদার, ঝালকাঠি

প্রকাশ: ৩১ ডিসেম্বর ২০২১, ০৬:০০ পিএম

প্রিন্ট সংস্করণ

লঞ্চের আগুনে কেঁদেছে বাংলাদেশ

পাওয়া না পাওয়ার হিসাব দিয়ে বিদায় নিয়েছে ২০২১। এই বছরে শেষ দিকে ঝালকাঠিতে ঘটে যাওয়া ঘটনাটি বাংলাদেশের জন্য মোটেও ভালো ছিল না। সুগন্ধা নদীতে যাত্রীবাহী অভিযান-১০ লঞ্চে আগুন লাগার ঘটনাটি কাঁদিয়েছে বাংলাদেশের মানুষকে।

২৩ ডিসেম্বর রাতে ঢাকা-বরগুনা রুটের নৌযান অভিযান-১০ লঞ্চে আগুন লেগে প্রায় অর্ধশত মানুষের মৃত্যু এবং অর্ধশতাধিক নিখোঁজ হওয়ার ঘটনা ঘটে। এছাড়া জীবন বাঁচাতে নদীতে ঝাঁপ দিয়ে আহত হন শতাধিক। দেশে এর আগে যাত্রীবাহী চলন্ত লঞ্চে আগুন লেগে এত হতাহতের ঘটনা ঘটেনি। জানা গেছে, ২৩ ডিসেম্বর ঢাকা সদর ঘাট থেকে পাঁচ শতাধিক যাত্রী নিয়ে বরগুনার উদ্দেশ্যে যাত্রা শুরু করে এমভি অভিযান ১০ নামের লঞ্চটি। লঞ্চটি রাত পৌনে তিনটার দিকে ঝালকাঠির সুগন্ধা-বিষখালী-গাবখান নদীর মোহনা অতিক্রমকালে ইঞ্জিনরুম থেকে আগুনের সূত্রপাত ঘটে। লঞ্চের নিচতলায় ইঞ্জিন রুমের আশপাশে থাকা যাত্রী এবং নিচতলায় ডেকে থাকা যাত্রীরা আগুনের বিষয়টি টের পেলেও দোতলা যাত্রী এবং দোতলা তিনতলার কেবিনের ঘুমন্ত যাত্রীরা আগুনের বিষয়টি টের পেতে পেতে আগুন ছড়িয়ে পড়ে।

আগুন লাগার পরে লঞ্চের মাস্টার এবং সুকানি প্রথমে লঞ্চটি সুগন্ধা-বিষখালী-গাবখান নদীর মোহনায় তোতা শাহর মাজার এলাকায় ভিড়িয়ে দেয়। এখানে কয়েক মিনিট থেমে থাকা অবস্থায় লঞ্চের প্রায় দুইশ যাত্রী তীরে নেমে যেতে সক্ষম হন। অজ্ঞাত কারণে লঞ্চটি এখান থেকে নদীর মাঝখানে চলে আসে এবং তখনই লঞ্চের ইঞ্জিন রুমে বিকট শব্দে বিস্ফোরণ ঘটে পুরোলঞ্চে আগুনের লেলিহান শিখা ছড়িয়ে পড়ে। এদিকে লঞ্চের মাস্টার সুকানিসহ সব স্টাফও নেমে যাওয়ায় লঞ্চটি নদীর মধ্যে ঘুরতে থাকে। এরপর কয়েক মিনিটের মধ্যে লঞ্চটি সুগন্ধার দক্ষিণ পাড়ে দিয়াকুল গ্রামে তীরে আটকে যায়।

লঞ্চে থাকা মানুষের জীবন বাঁচানোর আর্তচিৎকারে সুগন্ধা নদীর দক্ষিণ প্রান্তের গ্রাম দিয়াকুল, ঝালকাঠি লঞ্চঘাট বেড়িবাঁধ, কিফাইতনগর ইটভাটা, গাবখান নদীর টোলঘরের বাসিন্দাদের ঘুম ভেঙে যায়। এসব এলাকার কয়েকশ মানুষ রাত তিনটা থেকে লঞ্চের যাত্রীদের বাঁচাতে এগিয়ে আসেন। খবর পেয়ে ফায়ার সার্ভিস আগুন নিয়ন্ত্রণে আনতে বা নেভাতে নেভাতে শুক্রবার সকাল ৮টা বেজে যায়। আগুন নেভার পরে জেলা প্রশাসন, পুলিশ প্রশাসন, ফায়ার সার্ভিসকর্মীরা লঞ্চে উঠে বিভীষিকাময় দৃশ্য দেখতে পান। বেশ কিছু মানুষ পুড়ে ছাই, কিছু মানুষের শরীরের অবশিষ্ট অংশ থেকে ধোঁয়া বের হচ্ছে। কারো দেহ অঙ্গার, আবার কারো দেহ অর্ধ-অঙ্গার। লঞ্চের কেবিনের যাত্রীদের অবস্থা আরও বীভৎস। একে একে লঞ্চ থেকে বের করা হয় মানুষের পোড়া লাশ।

লঞ্চ আগুন কেঁদেছে বাংলাদেশ

Logo

সম্পাদক : আবদুল হাই শিকদার

প্রকাশক : সালমা ইসলাম