বাংলা : পরিষ্কার ও সুন্দর হাতের লেখা জরুরি
সবুজ চৌধুরী, শিক্ষক, সেন্ট যোসেফ উচ্চমাধ্যমিক বিদ্যালয়, মোহাম্মদপুর, ঢাকা
প্রকাশ: ১৭ ডিসেম্বর ২০২৫, ১২:০০ এএম
প্রিন্ট সংস্করণ
|
ফলো করুন |
|
|---|---|
সুপ্রিয় শিক্ষার্থীবৃন্দ,
শুভেচ্ছা রইল। তোমাদের সামনে জীবনের একটি গুরুত্বপূর্ণ পরীক্ষা- প্রাথমিক বৃত্তি পরীক্ষা। এ সময়ে একটি সূত্র মনে রাখবে, ‘পরিশ্রম + অনুশীলন + আত্মবিশ্বাস = সাফল্য।’ নিজেকে প্রস্তুত কর, নিজের ওপর আস্থা রাখ- তুমি নিশ্চয়ই বৃত্তি পরীক্ষায় সাফল্য অর্জন করবে।
বৃত্তি পরীক্ষায় বাংলা বিষয়টি খুবই গুরুত্বপূর্ণ। বাংলা শুধু একটি বিষয় নয়, এটি তোমাদের চিন্তা, অনুভূতি ও প্রকাশের মাধ্যম। তাই প্রস্তুতির সময় কিছু বিষয় মনে রাখলে ভালো ফল করবে। বাংলায় ভালো ফলাফল করার জন্য প্রশ্নের ধরন বুঝে বারবার অনুশীলনের কোনো বিকল্প নেই। পাঠ্যবই বারবার পুঙ্খানুপুঙ্খরূপে পড়বে। প্রত্যেক অধ্যায়ের কঠিন শব্দগুলোর শব্দার্থ, সমার্থক ও বিপরীত শব্দ দিয়ে একটি চার্ট তৈরি করে পড়ার টেবিলের সামনে টানিয়ে রাখতে পার। এর সঙ্গে যুক্তবর্ণগুলো খুঁজে বের করে সেগুলো ভেঙে লিখবে ও বাক্য তৈরি করে তারও একটা তালিকা শেষ সময়ে প্রস্তুত করে রাখতে পার। পাঠ্যবইয়ের শেষের দিকে যে শব্দার্থগুলো দেওয়া আছে সেগুলো ভালোভাবে পড়বে। কারণ এখান থেকেই এক বাক্যে প্রকাশগুলো সাধারণত এসে থাকে। ক্রিয়াপদের চলিত রূপ অনুশীলন করার জন্য উপরের ক্লাসের ব্যাকরণ বইয়ের সহায়তা নিতে পার। ক্রিয়া পদের অতীত, বর্তমান ও ভবিষ্যৎ রূপ লিখনে ব্যাকরণ বইয়ের ‘ক্রিয়ার কাল’ অধ্যায়টি অনুশীলন করলে সহায়তা পবে। পাঠ্যবই অন্তর্গত গুরুত্বপূর্ণ অনুচ্ছেদগুলো চিহ্নিত করে তা থেকে প্রশ্নের ধরন অনুসারে শব্দার্থ ও প্রশ্ন খুঁজে বের করবে এবং তার উত্তর অনুশীলন করবে। তোমাকে তিনটি বড় প্রশ্নের উত্তর লিখতে হবে। বড় প্রশ্নের উত্তরে কখনোই হুবহু পাঠ্য বইয়ের অনুচ্ছেদের লাইন তুলবে না। প্রশ্ন বুঝে নিজের থেকে উত্তর করবে। এক্ষেত্রে অতিরিক্ত কথা লিখবে না। বিরামচিহ্ন অনুশীলনের ক্ষেত্রে পাঠ্যবইয়ের গদ্য রচনাগুলো থেকে ছোট ছোট অনুচ্ছেদ বাছাই কর এবং সেগুলো ভালোভাবে লক্ষ্য কর। এ বছর তোমাদের প্রশ্নের ধরনে নতুন সংযোজিত হয়েছে- অনুচ্ছেদ পড়ে প্রশ্ন তৈরিকরণ। এ প্রশ্নের উত্তর লিখনে প্রশ্নটি তৈরি করে তুমি খেয়াল কর উত্তরটি অনুচ্ছেদে আছে কিনা। কবিতা থেকে যে প্রশ্ন আসে তার ধরন কিছুটা এবার পরিবর্তিত হয়েছে। এক্ষেত্রে কবিতাংশ চিহ্নিত করে তার মূলভাব বাসায় বসে নোট করে রাখবে। কবিতাংশের মূলভাব লিখতে গিয়ে কখনোই পুরো কবিতার মূলভাব লিখবে না। পত্র লিখনের ক্ষেত্রে তোমাদের আবেদনপত্র থাকবে। পত্রের নিয়ম-কানুন তোমাকে অবশ্যই মেনে চলতে হবে। পত্রের প্রত্যেক অংশ যথাযথ স্থানে লিখতে হবে। ফরম পূরণ করতে সবসময় প্রদত্ত প্রশ্নের তথ্যগুলো খেয়াল রাখবে। রচনা লিখনের ক্ষেত্রে খেয়াল রাখবে রচনাটি যাতে দুইশ শব্দের কম না হয়। সূত্র দেয়া থাকলে প্রশ্নে উল্লিখিত পয়েন্টগুলোর আলোকেই রচনা লিখবে। রচনায় যদি যুক্তিসংগতভাবে কবিতার লাইন বা মনীষীদের উক্তি ব্যবহার কর, তবে রচনার মান ভালো হয়। প্রস্তুতির ক্ষেত্রে পাঠ্যবইয়ের অন্তর্গত ও বহির্ভূত রচনা উভয়ই পড়তে হবে।
সামনের কয়েকদিন লেখার অভ্যাস গড়ে তুলবে। লেখার সময় স্পষ্ট, শুদ্ধ ও সুন্দরভাবে লেখার চেষ্টা করবে। হাতের লেখা পরিষ্কার রাখা খুবই জরুরি। সবশেষে, সময় ব্যবস্থাপনা ও আত্মবিশ্বাস- পরীক্ষার হলে সময় দেখে দেখে উত্তর দেবে। কোনো প্রশ্ন কঠিন মনে হলে ভয় পাবে না। শান্ত থেকে ভাবলে উত্তর নিজে থেকেই মাথায় আসবে।
