Logo
Logo
×

টিউটোরিয়াল

বাংলাদেশ ও বিশ্বপরিচয়ে বেশি নম্বর পাওয়ার কৌশল

Icon

সহিদুল ইসলাম, সিনিয়র শিক্ষক, কলাগাছিয়া ইউনিয়ন উচ্চবিদ্যালয়, বন্দর নারায়ণগঞ্জ

প্রকাশ: ১৮ ডিসেম্বর ২০২৫, ১২:০০ এএম

প্রিন্ট সংস্করণ

অষ্টম শ্রেণির প্রিয় শিক্ষার্থীবৃন্দ, তোমরা ইতোমধ্যে জুনিয়র বৃত্তি পরীক্ষার রুটিন পেয়েছ। এ পরীক্ষায় অংশগ্রহণ করা তোমাদের জন্য যেমন সম্মানজনক তেমনি ভবিষ্যতে এসএসসি পরীক্ষায়ও ভয়-ভীতি কাটানোরও একটা অন্যতম মাধ্যম। কিভাবে লিখলে বাংলাদেশ ও বিশ্বপরিচয় বিষয়ে অধিক নম্বর পাওয়া যায় এবং প্রশ্নের ধরন ও নম্বর বিভাজন নিয়ে আজ বিস্তারিত জানাব। পরীক্ষায় ভালোভাবে লিখে খাতা সাজানোই বাড়তি নম্বর পাওয়ার অন্যতম কৌশল। অনেক সময় একই উত্তর দুজন লিখলেও সুন্দরভাবে গুছিয়ে লেখার কারণে পরীক্ষক খুশি হয়ে একজনকে বেশি নম্বর দেন। নিচে কিছু কার্যকর টিপস দেওয়া হলো-

খাতা সাজানোর কৌশল : ১. হাতের লেখা পরিষ্কার রাখতে হবে- অক্ষরগুলো সমান আকারে ও ফাঁক রেখে লিখতে হবে। খারাপ হাতের লেখা পরীক্ষকের মনোযোগ নষ্ট করে, ফলে নম্বর কমে যায়। ২. মার্জিন টেনে খাতা ব্যবহার করতে হবে- খাতার উপরে-নিচে প্রায় এক স্কেল পরিমাণ জায়গা খালি রেখে বাম পাশে মার্জিন টেনে নিলে খাতাটা পরিপাটি দেখায়, সেইসঙ্গে ডান পাশেও আধা ইঞ্চি পরিমাণ জায়গা খালি রাখলে খাতার সৌন্দর্য বহুগুণ বেড়ে যায়। কিন্তু ডান পাশে খালি রাখার কৌশল সহজে রপ্ত হয় না। দীর্ঘ প্র্যাকটিস করলে তা ঠিক হয়ে যায়। লেখায় ভুল হলে মার্জিনে চিহ্ন দিয়ে সংশোধন করলে ভালো, বারবার কাটাকাটি না করাই শ্রেয়। ৩. সৃজনশীল প্রশ্নের উত্তর লিখতে খাতার উপরের মার্জিনের নিচে মাঝ বরাবর ১নং প্রশ্নের (ক)-এর উত্তর লিখে আন্ডারলাইন করতে হবে। এক্ষেত্রে তুমি যে প্রশ্নের উত্তর অতি উত্তমভাবে লিখতে পারবে সে প্রশ্নের উত্তরই প্রথমে লিখবে। উপরোল্লিখিত ১নং প্রশ্ন দিয়ে উত্তর লিখা শুরু করলে ক-এর উত্তর শেষ হলে একটু ফাঁকা রেখে আবারও খাতার মাঝ বরাবর ১নং প্রশ্নের (খ)-এর উত্তর লিখে আন্ডারলাইন করতে হবে। খ-এর উত্তর শেষ হলে ঠিক আগের মতোই ১নং প্রশ্নের (গ)-এর উত্তর লিখে আন্ডারলাইন করতে হবে এবং গ-এর উত্তর শেষে খাতার মাঝ বরাবর আগের মতোই ১নং প্রশ্নের (ঘ)-এর উত্তর লিখে আন্ডারলাইন করতে হবে।

সৃজনশীল প্রশ্নের উত্তর লেখার ক্ষেত্রে আরও একটি বিষয় লক্ষ্য রাখতে হবে। ‘ক’ নং-এর উত্তরের ক্ষেত্রে শুধু জ্ঞানমূলক এক প্যারায় লিখলেই চলবে। ‘খ’ নং উত্তরের ক্ষেত্রে জ্ঞান এবং অনুধাবনের জন্য দুটি প্যারায়, ‘গ’ নং উত্তরের ক্ষেত্রে জ্ঞান, অনুধাবন এবং প্রয়োগের জন্য তিনটি প্যারায় এবং ‘ঘ’ নং উত্তরের জন্য জ্ঞান, অনুধাবন, প্রয়োগ এবং উচ্চতর চিন্তন দক্ষতার জন্য চারটি প্যারায় উত্তর লিখতে হবে। ৪. প্রত্যেকটি উত্তর লিখার শুরুতে মার্জিন থেকে এক বা আধা ইঞ্চি ফাঁকা রেখে লিখা শুরু করতে হবে। অনেকে খাতার মাঝ বরাবর -নং প্রশ্নের উত্তর লিখে খাতার বাম পাশে আবারও উত্তর লিখে লেখা শুরু করে, এতে পরীক্ষক বিরক্ত হন। ৫. প্রশ্নের ক্রম অনুযায়ী উত্তর লিখতে হবে। প্রশ্ন বাদ দিয়ে এদিক-ওদিক উত্তর না লিখে ধারাবাহিকভাবে লিখতে হবে। এতে পরীক্ষক সহজে উত্তর খুঁজে পাবেন এবং নম্বর কমার সুযোগ থাকবে না। ৬. ছোট প্রশ্নের ছোট উত্তর, বড় প্রশ্নের বড় উত্তর দিতে হবে। অপ্রয়োজনীয় বাড়তি বাক্য লিখলে নম্বর কেটে যায়। পাঁচ মিনিট পূর্বেই লেখা শেষ করতে হবে। এ সময় বানান ভুল বাদ পড়া প্রশ্ন বা অসম্পূর্ণ উত্তর আছে কিনা তা দেখে নিতে হবে। সব প্রশ্নের উত্তর লেখা শেষ হলে সমাপ্তসূচক চিহ্ন ব্যবহার করতে হবে। এতে পরীক্ষকের পজিটিভ দৃষ্টিভঙ্গি সৃষ্টি হবে। বহুনির্বাচনি প্রশ্নের সবকটি উত্তর দিতে হলে প্রতিটি অধ্যায়ের প্রতিটি গুরুত্বপূর্ণ লাইন যাচাই-বাছাই করে আন্ডারলাইন করার সঙ্গে সঙ্গে কয়েকবার পড়ে খুব ভালোভাবে আয়ত্ত করতে হবে।

বাংলাদেশ ও বিশ্বপরিচয় বিষয়ের জন্য ৫০ নম্বর বরাদ্দ রয়েছে। বহু নির্বাচনি প্রশ্নের জন্য ১০ নম্বর, সংক্ষিপ্ত উত্তর প্রশ্নের জন্য ১০ নম্বর এবং সৃজনশীল প্রশ্নের জন্য ৩০ নম্বর। সব প্রশ্নের উত্তর দিতে হবে। বহুনির্বাচনি ১০টি- ১০ নম্বর, সংক্ষিপ্ত উত্তর প্রশ্ন ৫টি- ১০ নম্বর এবং সৃজনশীল প্রশ্ন ৩টি- ৩০ নম্বর। প্রতিটি অধ্যায়ের গুরুত্ব অনুধাবন করে তোমাদের পড়াশোনা করতে হবে। এক্ষেত্রে ১ম অধ্যায় ঔপনিবেশিক যুগ ও বাংলার স্বাধীনতা সংগ্রাম, ৩য় অধ্যায়- বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধ, ৪র্থ অধ্যায়- বাংলাদেশের অর্থনীতি, ৫ম অধ্যায়- বাংলাদেশ : রাষ্ট্র সরকার ব্যবস্থা, ৮ম, ৯ম, ১০ম অধ্যায়- বাংলাদেশের বিভিন্ন নৃগোষ্ঠী, সামাজিক সমস্যা, জনসংখ্যা উন্নয়ন এবং ত্রয়োদশ অধ্যায়- বাংলাদেশ এবং বিভিন্ন আঞ্চলিক ও আন্তর্জাতিক সহযোগী সংস্থা- এ অধ্যায়গুলো থেকে সৃজনশীল এবং বহুনির্বাচনি প্রশ্ন আসার সম্ভাবনা বেশি। তাই এ অধ্যায়গুলো অধিক মনোযোগ দিয়ে পড়তে হবে। আর অন্যান্য অধ্যায় থেকে বহুনির্বাচনির জন্য বেশি সময় দিতে হবে।

সর্বোপরি সব অধ্যায়ই মনোযোগ দিয়ে পড়তে হবে। উপরোক্ত নিয়ম অনুসরণ করলে বাংলাদেশ ও বিশ্বপরিচয় বিষয়ে সর্বোচ্চ নম্বর পাওয়া যাবে।

Logo

সম্পাদক : আবদুল হাই শিকদার

প্রকাশক : সালমা ইসলাম