Logo
Logo
×

টিউটোরিয়াল

বাংলা : সময়ের সঠিক ব্যবহার করতে হবে

Icon

ড. সনজিত পাল, প্রভাষক, সেন্ট গ্রেগরিজ হাইস্কুল, লক্ষ্মীবাজার, ঢাকা

প্রকাশ: ১৮ ডিসেম্বর ২০২৫, ১২:০০ এএম

প্রিন্ট সংস্করণ

অষ্টম শ্রেণির শিক্ষার্থীবৃন্দ, আগামী ২৮ ডিসেম্বর থেকে শুরু হচ্ছে তোমাদের জুনিয়র বৃত্তি পরীক্ষা। কয়েক বছর আগে জেএসসি’র পরীক্ষার মাধ্যমে দেশব্যাপী পরীক্ষা নিয়ে সেখান থেকে ফলাফলের ভিত্তিতে বৃত্তি দেওয়া হতো। জেএসসি পরীক্ষা বন্ধ হওয়ার পর এবারই তোমাদের জন্য বৃত্তি পরীক্ষার আয়োজন করা হয়েছে। জেএসসি পরীক্ষা প্রচলনের আগে এভাবে বৃত্তি পরীক্ষা হতো। যা-ই হোক, তোমাদের মধ্যে যারা এবারের বৃত্তি পরীক্ষায় অংশগ্রহণ করছ; তাদের জন্য শুভকামনা রইল। আমি বাংলা বিষয়ে তোমাদের কিছু দিকনির্দেশনা দিচ্ছি। আশাকরি এগুলো অনুসরণ করলে তোমাদের ফলাফল ইতিবাচক হবে।

শিক্ষার্থীবৃন্দ, তোমাদের বাংলা পরীক্ষায় বাংলা প্রথমপত্রের গদ্য, কবিতা ও আনন্দপাঠ যেমন থাকবে; তেমনি থাকবে বাংলা দ্বিতীয়পত্রের ব্যাকরণ ও নির্মিতি বা রচনামূলক অংশ। বাংলা প্রথমপত্রের অংশ থেকে ৭০ নম্বরে থাকবে বহুনির্বাচনি প্রশ্ন, সৃজনশীল প্রশ্ন এবং বর্ণনামূলক প্রশ্ন। বাংলা প্রথমপত্রের গদ্য ও কবিতাংশ থেকে ২০টি বহুনির্বাচনি প্রশ্ন থাকবে। গদ্য থেকে পাঁচটি, কবিতা থেকে পাঁচটি এবং ব্যাকরণ থেকে দশটি করে মোট ২০টি বহুনির্বাচনি প্রশ্ন থাকবে। ২০টি বহুনির্বাচনি প্রশ্নের মান হবে ২০। গদ্য অংশ থেকে দুটি এবং কবিতা অংশ থেকে দুটি করে মোট চারটি সৃজনশীল প্রশ্ন থাকবে এবং এ চারটি প্রশ্নেরই উত্তর দিতে হবে। এর মান হবে ৪০। আনন্দপাঠ থেকে একটি প্রশ্ন থাকবে। এ প্রশ্নের দুটি অংশ থাকবে। ক অংশে ৩ নম্বরের জন্য ছোট প্রশ্ন বা ব্যাখ্যামূলক প্রশ্ন থাকবে। খ অংশে ৭ নম্বরের জন্য বড় প্রশ্ন বা বর্ণনামূলক প্রশ্ন থাকবে। বাংলা প্রথমপত্রের অংশ থেকে মোট ৭০ নম্বরের প্রশ্ন থাকবে। অন্যদিকে, বাংলা দ্বিতীয়পত্রে একটি পত্র রচনায় (চিঠিপত্র কিংবা আবেদনপত্র) থাকবে ৫ নম্বর। একটি সারাংশ কিংবা সারমর্মে থাকবে ৫ নম্বর। একটি ভাবসম্প্রসারণে থাকবে ৫ নম্বর। দুটি প্রবন্ধ রচনা থেকে যে কোনো একটি প্রবন্ধ রচনা লিখতে হবে। এর মান হবে ১৫ নম্বর। তাহলে বাংলা দ্বিতীয়পত্রের অংশ থেকে মোট ৩০ নম্বরের প্রশ্ন থাকবে। পরীক্ষার জন্য তোমাদের সময় থাকবে তিন ঘণ্টা।

শিক্ষার্থীবৃন্দ, বাংলা প্রথমপত্র ও দ্বিতীয়পত্র থেকে ১০০ নম্বরের পরীক্ষা হলেও তোমাদের কিন্তু ২০০ নম্বরের পড়া পড়তে হবে। তাই তোমাদের পড়ায় যেমন শ্রম দিতে হবে, তেমনি কিছু কৌশল প্রয়োগ করতে হবে প্রশ্নের উত্তর লেখার ক্ষেত্রে। যেমন, প্রতিটি সৃজনশীল প্রশ্ন লেখার জন্য তোমাকে ১৯ মিনিট সময় নিতে হবে। এর চেয়ে বেশি কিংবা কম সময় তুমি নিতে পারবে না। ১৯ মিনিটের চেয়ে বেশি সময় নিলে তোমরা অন্য প্রশ্নের উত্তর যথাযথভাবে দিতে পারবে না। আবার যদি ১৯ মিনিটের চেয়ে কম সময় নাও, তবে তথ্যের ঘাটতি থেকে যাবে। প্রতি সৃজনশীল প্রশ্নের উত্তর লিখার সময় তুমি স্তর অনুসারে সময় ভাগ করে নাও। জ্ঞান স্তরের প্রশ্নের জন্য ১ মিনিট। অনুধাবন স্তরের প্রশ্নের উত্তর লিখার জন্য ৪ মিনিট। প্রয়োগ স্তরের প্রশ্নের উত্তর লিখার জন্য ৬ মিনিট এবং উচ্চতর চিন্তন দক্ষতার প্রশ্নের উত্তর লিখার জন্য ৮ মিনিট সময় ব্যবহার করবে। আনন্দপাঠের বর্ণনামূলক প্রশ্নের ক অংশের উত্তর লিখার জন্য ৪ মিনিট এবং খ অংশের উত্তর লিখার জন্য ১০ মিনিট সময় ব্যবহার করবে। ভাবসম্প্রসারণ লিখার জন্য তোমরা ১২ মিনিট, সারাংশ/ সারমর্ম লিখার জন্য ৩ মিনিট সময়, পত্র-দরখাস্ত লিখার জন্য ১০ মিনিট সময় এবং প্রবন্ধ রচনা লিখার জন্য ৫০ মিনিট সময় ব্যবহার করবে। বহুনির্বাচনি প্রশ্নের উত্তর লিখার জন্য ১৫ মিনিটের বেশি সময় নেওয়া ঠিক হবে না। বহুনির্বাচনি প্রশ্নগুলো সাধারণত জ্ঞান, অনুধাবন, প্রয়োগ ও উচ্চতর চিন্তন দক্ষতা স্তরের থাকবে। এ চার স্তরের প্রশ্ন সাধারণ, বহুপদী ও অভিন্ন তথ্যভিত্তিক বহুনির্বাচনি প্রশ্নাকারে থাকবে। এসব প্রশ্নের উত্তর খাতায় লিখতে বলা হতে পারে। সেক্ষেত্রে সঠিক উত্তরটি আগে বাছাই করে তারপর তা খাতায় লিখবে।

শিক্ষার্থীবৃন্দ, প্রতিটি প্রশ্নের উত্তর লিখার জন্য তোমাকে যেমন সময় বরাদ্দ করে এগিয়ে যেতে হবে, তেমনি প্রতিটি প্রশ্নের উত্তরে যা চেয়েছে ঠিক তা-ই লিখতে হবে। কোনো প্রকার অপ্রয়োজনীয় তথ্য বা বর্ণনা উত্তরে লিখা যাবে না। প্রতিটি প্রশ্নের উত্তর যেন প্রাসঙ্গিক, তথ্যবহুল ও নির্ভুল হয়। শব্দচয়ন ও বাক্য গঠনেও তোমাদের সচেতন হতে হবে। বিশেষ করে বাংলা দ্বিতীয়পত্রের নির্মিতি অংশে শব্দ, বাক্য, ভাব ও ভাষা যেন প্রাসঙ্গিক ও তথ্যনিষ্ঠ হয়। প্রতিটি প্রশ্নের উত্তর দেওয়ার সময় উত্তর লিখার গঠন কাঠামো যেন বিকৃত না হয়।

শিক্ষার্থীবৃন্দ, প্রতিটি গদ্য ও কবিতা ধরে ধরে পড়তে চেষ্টা কর। প্রতিটি লাইনের প্রতিটি শব্দের অর্থ জানতে চেষ্টা কর। প্রতিটি অনুধাবন প্রশ্নের শাব্দিক অর্থ ও ভাবার্থ জানতে চেষ্টা কর। প্রতিটি গদ্য ও কবিতার মধ্যে সৃজনশীল প্রশ্নের উদ্দীপকের বিষয় হতে পারে- এমন যেসব তথ্য রয়েছে তা চিহ্নিত কর। গদ্য ও কবিতায় বর্ণিত প্রতিটি চরিত্র, বিষয়, ভাব ও ঘটনাকে নিজের মতো করে চিন্তা কর। গদ্য ও কবিতায় বর্ণিত বিষয়গুলোকে সময়ের সঙ্গে বড় ও ছোট করতে পার কি না তা যাচাই কর। আনন্দপাঠ থেকেও এভাবে প্রতিটি বিষয়, ঘটনা ও চরিত্রকে বিশ্লেষণ কর। আনন্দপাঠের অংশ থেকে বড় প্রশ্ন ও ছোট প্রশ্নগুলো আলাদা করে লিখে সেগুলোর উত্তর কতটুকু হবে তা চিন্তা করবে। যেহেতু আনন্দপাঠ থেকে বহুনির্বাচনি প্রশ্ন হবে না তাই গদ্য ও কবিতা পড়ার সময় শব্দার্থ, টিকা ও পাঠ পরিচিতি ভালো করে পড়বে। বাংলা দ্বিতীয়পত্রের ব্যাকরণ অংশের বিভিন্ন পরিচ্ছেদে বর্ণিত বিষয় ধরে ধরে পড়বে। সংজ্ঞা, শ্রেণিকরণ, উদাহরণ ও পরিবর্তন বারবার পড়বে ও লিখবে। ব্যাকরণের তথ্যগুলো কতভাবে ঘুরিয়ে আসতে পারে তা চিন্তা করবে। নির্মিতি অংশের ভাবসম্প্রসারণ, পত্র-দরখাস্ত, সারাংশ/ সারমর্ম লিখার ক্ষেত্রে সময়ের সঙ্গে কতটুকু লিখবে, কী কী তথ্য যুক্ত করবে তা বাসায় অনুশীলন করবে। রচনা কত শব্দে লিখবে। রচনায় কতটি প্যারা দিবে, কী কী তথ্য লিখবে, কোনো তথ্য-উপাত্ত দিবে কি-না, কোনো উদ্ধৃতি দিবে কি-না তা বাসায় অনুশীলন করবে। মনে রাখবে নির্দিষ্ট সময়ে সঠিক তথ্যের যথাযথ ব্যবহার তোমাকে নম্বর পেতে সহায়তা করবে।

Logo

সম্পাদক : আবদুল হাই শিকদার

প্রকাশক : সালমা ইসলাম