|
ফলো করুন |
|
|---|---|
একতারা বাংলাদেশের এক ধরনের লোকবাদ্যযন্ত্র। এক তারবিশিষ্ট বলে এটির নাম একতারা। একসময় এর নাম ‘একতন্ত্রী বীণা’ ছিল বলে ইতিহাসে পাওয়া যায়। আমাদের দেশীয় সংস্কৃতির স্বকীয়তা আর ঐতিহ্যের ধারাবাহিকতায় যে বাদ্যযন্ত্রটি আদি ও অকৃত্রিমভাবে বহমান- তার নাম একতারা। এই বাদ্যযন্ত্রটির বাদন ভঙ্গি আর সুরের মূর্ছনায় আজো খুঁজে পাওয়া যায় মাটির ঘ্রাণ। এখনও এ দেশের গ্রাম-গ্রামান্তর আর নগরে পাড়ি জমানো নগর বাউলদের কাছে শুনতে পাওয়া যায় এ বাদ্যযন্ত্রের বোল।
একতারা তৈরির জন্য লাউ, কুমড়া, মোটা বাঁশ বা কাঠ, নারিকেলের খোল কিংবা পিতলের পাতলা আবরণ, যাই ব্যবহার করা হোক না কেন- লক্ষ্য রাখতে হবে এটি যেন ওপরে-নিচে খোলা এবং বৃত্তাকার হয়। বৃত্তাকারের খোলা মুখের ব্যাস সাধারণত ৬ থেকে ৭ ইঞ্চি হয়। প্রায় ৩ ফুট লম্বা বিশেষ এক ধরনের মুলি বাঁশের ওপরের দিকে গিঁট রেখে নিচের দিকে এমনভাবে ফাঁড়তে হবে- যাতে বাঁশ বা কঞ্চিটি চিমটা আকারের হয়। বিশেষ ধরনের মুলিবাঁশ বা কঞ্চির মাঝ দিয়ে কাঠের একটি কাঠি তৈরি করতে হবে। চিমটার নিচের দিকটি লাউ, মোটা বাঁশ, কাঠ বা নারিকেলের খোল কিংবা কাঁসার পাতলা বৃত্তাকারের খোলটির দু’প্রান্তে শক্ত করে বাঁধতে হবে। ওই খোলটির তলা চামড়া দিয়ে ঢেকে ফেলতে হবে। চামড়াটি শুকিয়ে এলে চামড়ার মধ্যে সূক্ষ্ম ছিদ্র করতে হবে। সেই ছিদ্রটির মধ্য দিয়ে একটি সরু পিতল বা লোহা কিংবা ইস্পাতের তার ঢুকাতে হবে। সেই তারের একটি মাথা দু’পাশে দেয়া বিশেষ মুলিবাঁশ অথবা কঞ্চির মাঝে থাকা কাঠের টুকরোর সঙ্গে বাঁধতে হবে। ‘কান’ নামের ওই কাঠের টুকরো দিয়ে তারটি টান বা ঢিলা করা হয়। দুই পাশে থাকা কঞ্চিতে চার আঙুলে ধরে এক আঙুল দিয়ে একতারায় মোহনীয় সুর তোলা হয়।
