Logo
Logo
×

টিউটোরিয়াল

প্রাথমিক শিক্ষাসমাপনী পরীক্ষার প্রাথমিক বিজ্ঞান

Icon

মো. ফোরকান আহমেদ

প্রকাশ: ১৪ অক্টোবর ২০১৯, ০৬:০০ পিএম

প্রিন্ট সংস্করণ

সহকারী শিক্ষক, মুনলাইট মডেল স্কুল অ্যান্ড কলেজ

আবহাওয়া জলবায়ু

সংক্ষিপ্ত উত্তর প্রশ্ন

প্রশ্ন : বাংলাদেশের তিনটি প্রাকৃতিক দুর্যোগের নাম লেখ?

উত্তর : বাংলাদেশ ভৌগোলিকভাবে প্রাকৃতিক দুর্যোগপূর্ণ দেশ। বছরে প্রতি বছরই নানা দুর্যোগ হানা দেয় এ দেশে। বাংলাদেশে বিভিন্ন প্রাকৃতিক দুর্যোগের মধ্যে তিনটি হল-

* দাবদাহ ও শৈত্যপ্রবাহ

* বন্যা ও খরা * কালবৈশাখী

প্রশ্ন : আবহাওয়া কী?

উত্তর : আবহাওয়া (Weather):

আবহাওয়া হল কোনো নির্দিষ্ট সময়ে কোনো নির্দিষ্ট স্থানের আকাশ ও বায়ুমণ্ডলের সাময়িক অবস্থা। আবহাওয়া যে কোনো সময়ই পরিবর্তন হতে পারে।

প্রশ্ন : আবহাওয়ার উপাদানগুলো কী কী?

উত্তর : আবহাওয়ার উপাদানগুলো নিচে দেয়া হল-

* তাপমাত্রা * মেঘ * আর্দ্রতা * বৃষ্টিপাত * বায়ুপ্রবাহ

* বায়ুচাপ ইত্যাদি

প্রশ্ন : সাধারণত কোন সময়ে সমুদ্র থেকে স্থলভাগে বায়ু প্রবাহিত হয়?

উত্তর : সাধারণ দিনের বেলায় সমুদ্র থেকে স্থলভাগে বায়ু প্রবাহিত হয়। কারণ দিনের বেলায় স্থলভাগে বায়ুর নিম্নচাপ আর সমুদ্রে উচ্চচাপ থাকে। বায়ু উচ্চচাপ অঞ্চল অর্থাৎ সমুদ্র থেকে নিম্নচাপ অঞ্চল তথা স্থলভাগে প্রবাহিত হয়।

প্রশ্ন : আমাদের দৈনন্দিন জীবনের আবহাওয়ার পূর্বাভাস কীভাবে সাহায্য করে?

উত্তর : আমাদের দৈনন্দিন জীবনের আবহাওয়ার পূর্বাভাস নানাভাবে সাহায্য করে। যেমন : * কোন দিন কোন কাপড় পরব তা ঠিক করতে পারি।

* ছুটির দিনে কী করব তা ঠিক করতে পারি।

* আবহাওয়ার পূর্বাভাস অনুযায়ী জেলেরা মাছ ধরার প্রস্তুতি নেয়।

* আবহাওয়ার পূর্বাভাস জেনে নৌযান ও আকাশ যান চলাচল করে।

এভাবে আবহাওয়ার পূর্বাভাস আমাদের দৈনন্দিন জীবনের প্রতিদিনের কাজকর্মকে প্রভাবিত করে।

বর্ণনামূলক প্রশ্ন

প্রশ্ন : বায়ু চাপ কী?

উত্তর : বায়ুচাপ : বায়ু তার ওজনের কারণে ভূ-পৃষ্ঠের উপর যে চাপ প্রয়োগ করে তাই বায়ুচাপ। বায়ুচাপের একক হল প্যাসকেল। বায়ুচাপ দুই প্রকার। যথা ১। বায়ুর নিম্নচাপ উষ্ণ অঞ্চলে দেখা যায়।

২। বায়ুর উচ্চচাপ সাধারণত ঠাণ্ডা এলাকায় দেখা যায়।

বায়ু উচ্চচাপ অঞ্চল থেকে নিম্নচাপ অঞ্চলে প্রবাহিত হয়।

প্রশ্ন : কীভাবে নিম্নচাপ সৃষ্টি হয়?

উত্তর : নিম্নচাপ

আবহাওয়া ও জলবায়ুর অন্যতম নিয়ামক হল তাপমাত্রা ও বায়ু প্রবাহ। তাপমাত্রা বেশি হলে সেখানকার বায়ু হালকা হয়ে উপরের দিকে উঠে যায়। ফলে বায়ু চাপ কমে যায়। এ রকম অবস্থাকে নিম্নচাপ বলে।

নিম্নচাপ সৃষ্টি :

* দিনে স্থলভাগ জলভাগ থেকে উষ্ণ থাকে। উষ্ণ স্থলভাগ তার উপরে থাকা বাতাসের উষ্ণতা বৃদ্ধি করে। বায়ু উষ্ণ হলে তা হালকা হয়ে উপরে উঠে যায় ফলে ওই স্থান ফাঁকা হয়ে নিম্নচাপের সৃষ্টি হয়।

* রাতে স্থলভাগ সমুদ্রের তুলনায় ঠাণ্ডা থাকে, তাই তখন স্থলভাগে বায়ুর উচ্চচাপ ও সমুদ্র নিম্নচাপের সৃষ্টি হয়।

* বাংলাদেশে বর্ষাকালে দক্ষিণ-পশ্চিম মৌসুমি বায়ু এবং শীতকালে উত্তর-পূর্বে মৌসুমি বায়ু প্রবাহিত হয়। বর্ষাকাল অর্থাৎ জুন থেকে আগস্ট মাসে বাংলাদেশের স্থলভাগ বঙ্গোপসাগরের চেয়ে উষ্ণ থাকে। শীতকালে অর্থাৎ ডিসেম্বর থেকে ফেব্রুয়ারি মাসে বাংলাদেশের স্থলভাগ বঙ্গোপসাগর থেকে শীতল থাকে। স্থলভাগ ও জলভাগের তাপমাত্রার এই বিপরীত অবস্থাই বায়ুর উচ্চচাপ ও নিম্নচাপ সৃষ্টি হয়।

সুতরাং তাপমাত্রার পার্থক্যের জন্যই বায়ু হালকা হয়ে নিম্নচাপের সৃষ্টি হয়।

প্রশ্ন : বাংলাদেশে কেন বর্ষাকালে অধিক বৃষ্টিপাত হয়?

উত্তর : আর্দ্রতা হল বাতাসে জলীয় বাষ্পের পরিমাণ। বাতাসের জলীয় বাষ্পের পরিমাণ যত কমে আর্দ্রতাও তত কমে। বর্ষাকালে মাসিক গড় আর্দ্রতার পরিমাণ ও মাসিক গড় বৃষ্টিপাত অন্য মাসের তুলনায় বেশি। বর্ষাকালে দক্ষিণ-পশ্চিম মৌসুমি বায়ু বঙ্গোপসাগর থেকে প্রচুর জলীয় বাষ্প নিয়ে আসে। এই জলীয় বাষ্প ঠাণ্ডা বৃষ্টিপাত ঘটায়। এজন্য গ্রীষ্ম ও বর্ষাকালে বায়ু আর্দ্র থাকে এবং প্রচুর বৃষ্টি হয়।

সুতরাং বর্ষাকালে বাতাস জলভাগের উপর প্রবাহিত হয় বলে বাতাসে প্রচুর জলীয় বাষ্প থাকে এবং মৌসুমি বায়ুর প্রভাবে প্রচুর বৃষ্টিপাত ঘটায়।

প্রশ্ন : কালবৈশাখী ঝড়ের কারণ ব্যাখ্যা কর।

উত্তর : কালবৈশাখী : গ্রীষ্মকালে আমাদের দেশে যে ঝড় হয় তাই কালবৈশাখী।

ঝড়ের কারণ : বৈশাখ মাসে সাধারণত সূর্য বাংলাদেশ ও তার দক্ষিণে বঙ্গোপসাগর ও ভারত মহাসাগরের উপর খাড়াভাবে কিরণ দেয়। ফলে এ অঞ্চলের বায়ু সকাল থেকে দুপুরের রোদের তাপে হালকা হয়ে উপরের দিকে উঠে যায়। এভাবে বিকালের দিকে এ অঞ্চলে নিম্নচাপের সৃষ্টি হয়। এ সময় দেশের উত্তরে ও হিমালয়ের দিকে বায়ুর চাপ থাকে বেশি। তাই উচ্চচাপের উত্তরাঞ্চল থেকে বায়ু প্রবল বেগে দক্ষিণ দিকে নিম্নচাপ অঞ্চলের দিকে ধাবিত হয় ও কালবৈশাখী ঝড় সৃষ্টি হয়। এ ঝড় সর্বোচ্চ ২০ কিলোমিটার এলাকা পর্যন্ত বিস্তৃত হতে পারে। সঞ্চারণশীল ধূসর মেঘ সোজা উপরে উঠে গিয়ে জমা হয়। পরবর্তীতে এই মেঘ ঘণীভূত হয়ে ঝড়ো হাওয়া, ভারি বৃষ্টি, বজ্র বৃষ্টি, শিলাবৃষ্টি ইত্যাদি সৃষ্টি করে।

সুতরাং স্থলভাগ অত্যন্ত গরম হওয়ার ফলেই কালবৈশাখীর সৃষ্টি হয়।

প্রশ্ন : আবহাওয়া ও জলবায়ুর মধ্যে মিল ও অমিল কোথায়?

উত্তর মিল : * আবহাওয়া ও জলবায়ু প্রত্যেকটি শব্দই পানি ও বায়ুর সঙ্গে সম্পর্কিত। দুটোরই শাব্দিক অর্থ একই।

* আবহাওয়া ও জলবায়ুর উপাদান একই। আবহাওয়া ও জলবায়ু প্রত্যেক তাপমাত্রা, আর্দ্রতা, বায়ু প্রবাহত, মেঘ, বৃষ্টিপাত ও বায়ুর চাপ ইত্যাদি দ্বারা নিয়ন্ত্রিত। * আমাদের জনজীবনে আবহাওয়া ও জলবায়ু প্রভাব ব্যাপক ও বিস্তৃত। অমিল (পার্থক্য) : * আবহাওয়া হল কোনো নির্দিষ্ট সময়ে কোনো নির্দিষ্ট সময়ে কোনো নির্দিষ্ট স্থানের আকাশ ও বায়ুমণ্ডলের সাময়িক অবস্থা। অপরদিকে জলবায়ু হল কোনো স্থানের বহু বছরের আবহাওয়ার গড় অবস্থান।

* আবহাওয়া হল প্রতিদিনের অবস্থা। অন্যদিকে জলবায়ু হল ৩০-৪০ বছরের গড় অবস্থা। * আবহাওয়া দ্রুত পরিবর্তনশীল কিন্তু জলবায়ুর পরিবর্তন দীর্ঘস্থায়ী * সুতরাং আবহাওয়া ও জলবায়ু হল একে অপরের সম্পূরক। তাদের মধ্যে যথেষ্ট মিল ও অমিল রয়েছে।

Logo

সম্পাদক : আবদুল হাই শিকদার

প্রকাশক : সালমা ইসলাম