প্রাথমিক শিক্ষাসমাপনীর প্রস্তুতি : ইসলাম ও নৈতিক শিক্ষা
মো. ফোরকান আহমেদ
প্রকাশ: ২৬ অক্টোবর ২০১৯, ০৬:০০ পিএম
প্রিন্ট সংস্করণ
|
ফলো করুন |
|
|---|---|
সহকারী শিক্ষক,
মুনলাইট মডেল স্কুল অ্যান্ড কলেজ
যোগ্যতাভিত্তিক প্রশ্ন উত্তর
২য় অধ্যায় : ইবাদত
প্রশ্ন- ২. পাঁচ ওয়াক্ত সালাতের সময় বর্ণনা কর।
উত্তর : পাঁচ ওয়াক্ত সালাতের সময়সূচি একটি ছকের মাধ্যমে বর্ণনা করা হল-

প্রশ্ন- ৩. কোরবানি কাকে বলে?
উত্তর : কোরবানি শব্দের অর্থ নৈকট্য, ত্যাগ বা উৎসর্গ। আল্লাহতায়ালার সন্তুষ্টি ও নৈকট্য লাভের জন্য ত্যাগের মনোভাব নিয়ে কোরবানি করা হয়। এ উদ্দেশ্যে ১০ থেকে ১২ জিলহজ পর্যন্ত সময়ের মধ্যে গৃহপালিত হালাল পশু আল্লাহর নামে উৎসর্গ করাকে কোরবানি বলে। হজরত ইবরাহিম (আ.)-এর সময় থেকে পশু কোরবানির প্রথা চালু হয়। আমরাও তাই প্রতি বছর কোরবানি করি। কোরবানির গোশত তিন ভাগ করা উত্তম। এক ভাগ নিজেরা রাখব। এক ভাগ
আত্মীয়স্বজন ও প্রতিবেশীদের দেব। আর এক ভাগ গরিবদের দেব।
প্রশ্ন- ৪. সালাতের ফজিলত ও শিক্ষা বর্ণনা কর।
উত্তর : সবচেয়ে বড় ইবাদত হল সালাত। একজন মুসলিম ফজরের সময় উঠে সবকিছুর আগে পাক-সাফ হয়। এরপর মহান আল্লাহর সামনে হাজির হয়। তাঁর সামনে দাঁড়িয়ে রুকু করে, তাঁর আনুগত্য স্বীকার করে সিজদাহ করে। তাঁর কাছে সাহায্য চায়। বারবার তাঁর সন্তুষ্টি কামনা করে। তাঁর শাস্তি থেকে বাঁচার জন্য মিনতি জানায়। এমনি করে শুরু হয় তার দিন। সালাতের ফজিলতগুলো নিম্নরূপ-
* কোনো বান্দা প্রতি দিন পাঁচবার সালাত আদায় করলে তার সব গুনাহ আল্লাহ ক্ষমা করে দেন।
* সালাত জান্নাতের চাবি।
* সালাত আদায় করলে আল্লাহ্ সব পেরেশানি ও বিপদ দূর করেন।
* সালাতের বদলে আল্লাহ্ আমাদের বিপদ ও মুসিবত দূর করে দেবেন।
প্রশ্ন- ৫. চার রাকাআত ফরজ নামাজ আদায়ের নিয়ম লিখ।
উত্তর : সালাতের সময় হলে পাক-সাফ কাপড় পরে, ভালোভাবে ওজু করে পাক-পবিত্র জায়গায় কিবলার দিকে মুখ করে দাঁড়াতে হবে।
দাঁড়ানোর পর মনে মনে সালাতের নিয়ত করে আল্লাহু আকবার বলতে হবে। সঙ্গে সঙ্গে দুই হাত কান বরাবর উঠাতে হবে। মেয়েরা দুই হাত কাঁধ পর্যন্ত উঠাবে। আল্লাহু আকবার বলে নাভির ওপর হাত বাঁধতে হবে। মেয়েরা হাত বাঁধতে হবে বুকের ওপর। প্রথমে সানা পড়বে।
সানা পড়ার পর আউজু বিল্লাহ, বিসমিল্লাহ পড়ে সূরা ফাতিহা পড়ব। সূরা ফাতিহা পড়ে ‘আমিন’ বলব। বিসমিল্লাহ পড়ে অন্য কোনো সূরা বা কোনো সূরার কিছু অংশ পাঠ করব। পরে আল্লাহু আকবার বলে রুকু করব। রুকুতে অন্তত তিনবার ‘সুবহানা রাব্বিয়াল আজিম’ বলব।
রুকু শেষ করে ‘সামিআল্লাহু লিমান হামিদাহ’ বলা অবস্থায় মাথা উঠিয়ে সোজা হয়ে দাঁড়াব। দাঁড়ানো অবস্থায় ‘রাব্বানা লাকাল হাম্দ’ বলব।
তারপর আল্লাহু আকবার বলা অবস্থায় সিজদায় যাব। সিজদায় তিনবার ‘সুব্হানা রাব্বিয়াল আলা’ বলব। এরপর আল্লাহু আকবার বলে সোজা হয়ে বসব। দুই হাত দুই হাঁটুর ওপর রাখব। তারপর আল্লাহুম্মাগ ফিরলি ওয়ারহামনি ওয়াহদিনী ওয়া আফিনী ওয়ারযুকনী বলব।
এরপর আল্লাহু আকবার বলে দ্বিতীয় সিজদাহ করব এবং সিজদাহর তাসবিহ পড়ব। এভাবে সিজদাহ শেষ করে আল্লাহু আকবার বলে মাথা উঠিয়ে সোজা হয়ে দাঁড়াব। এভাবে প্রথম রাকাআত শেষ হল। এখন দ্বিতীয় রাকাআত শুরু হল। বিসমিল্লাহির রাহমানির রাহিম বলে সূরা ফাতিহা পড়ব। এরপর অন্য কোনো সূরা অথবা কোনো সূরার কিছু অংশ পড়ব।
প্রশ্ন- ৬. সালাতের আহকামগুলো লিখ।
উত্তর : যে ফরজ কাজগুলো সালাত শুরু করার আগেই করতে হয়, সেগুলোকে সালাতের আহ্কাম (শর্তাবলি) বলা হয়। আহ্কাম মোট সাতটি-
(ক) শরীর পাক (খ) কাপড় পাক (গ) জায়গা পাক
(ঘ) সতর ঢাকা (ঙ) কিবলামুখী হওয়া (চ) ওয়াক্ত হওয়া
(ছ) নিয়ত করা
প্রশ্ন-৭. সালাতের আরকান বলতে কী বুঝ? আরকানগুলো কী কী?
উত্তর : যে ফরজ কাজগুলো সালাতের মধ্যে করতে হয়, সেগুলাকে সালাতের আরকান বলে। আরকান মোট সাতটি:
(ক) তাকবির তাহরিমা বা আল্লাহু আকবার বলে সালাত শুরু করা। (খ) কিয়াম বা দাঁড়িয়ে সালাত আদায় করা। পুরুষ ও মহিলা উভয়কেই দাঁড়িয়ে সালাত আদায় করতে হবে। তবে কোনো কারণে দাঁড়াতে না পারলে বসে সালাত আদায় করা যায়। আর বসতে অক্ষম হলে শুয়ে শুয়ে ইশারায় সালাত আদায় করা যায়। (গ) কিরয়াত অর্থাৎ কোরআন মাজিদের কিছু অংশ তিলাওয়াত করা।
(ঘ) রুকু করা। (ঙ) সিজদাহ করা। (চ) শেষ বৈঠকে বসা।
(ছ) সালামের মাধ্যমে সালাত শেষ করা।
