পঞ্চম শ্রেণির শিক্ষার্থীদের পড়াশোনা
ইসলাম ও নৈতিক শিক্ষা * প্রাথমিক বিজ্ঞান
ইসলাম ও নৈতিক শিক্ষা
মো. ফোরকান আহমেদ
প্রকাশ: ০৩ মার্চ ২০১৮, ০৬:০০ পিএম
প্রিন্ট সংস্করণ
|
ফলো করুন |
|
|---|---|
সহকারী শিক্ষক, মুনলাইট মডেল স্কুল অ্যান্ড কলেজ ভোলা
আকাইদ-বিশ্বাস
প্রশ্ন : ঈমান শব্দের অর্থ কী?
উত্তর : ঈমান একটি আরবি শব্দ। ঈমান শব্দের অর্থ দৃঢ় বিশ্বাস। ইসলামী পরিভাষায় মহানবী হজরত মুহাম্মদ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম আল্লাহতায়ালার পক্ষ থেকে যা কিছু নিয়ে এসেছেন সে সব বিষয়কে অন্তরে দৃঢ়ভাবে বিশ্বাস করা, মুখে স্বীকার করা এবং সে অনুযায়ী কাজ করাকে ঈমান বলে। ইসলামের পাঁচটি স্তম্ভের মধ্যে প্রথম ও প্রধান হচ্ছে ঈমান।
প্রশ্ন : সারা বিশ্বের পালনকর্তা কে?
উত্তর : আমরা যা কিছু দেখতে পাই সবই আল্লাহতায়ালা সৃষ্টি করেছেন। আবার অনেক কিছু আছে যেগুলো আমরা দেখতে পাই না, সেগুলোও তিনিই সৃষ্টি করেছেন। তিনি এগুলো শুধু সৃষ্টি করেই ছেড়ে দেননি। তিনি তার নেয়ামতগুলো দিয়েও লালন-পালন করেন। সারা বিশ্বের পালনকর্তা মহান আল্লাহতায়ালা। তিনি নিখিল বিশ্বের লালন-পালনকারী।
প্রশ্ন : আমাদের দ্বীনের নাম কী?
উত্তর : আমরা মুসলমান। মহান আল্লাহতায়ালা আমাদের জন্য দ্বীন মনোনীত করে দিয়েছেন। আমাদের দ্বীনের নাম হল ইসলাম। আর এ ইসলাম হচ্ছে শান্তির ধর্ম। আল্লাহতায়ালার আনুগত্যের নামই হচ্ছে ইসলাম। এ আনুগত্যের জন্য প্রয়োজন আল্লাহ সম্পর্কে জানা ও ঈমান আনা।
প্রশ্ন : মুমিন কাকে বলে? ঈমানের ফল কী?
উত্তর : মুমিন : ইসলামের মূল বিষয় যেমন- আল্লাহ, ফেরেশতা, আসমানি কিতাব, শেষ দিবস, মৃত্যু ও মৃত্যুর পর পুনরুত্থানকে অন্তরে বিশ্বাস করা, মুখে স্বীকার করা এবং সে অনুযায়ী আমল করাই হল প্রকৃত ঈমান। যার ঈমান আছে তাকে মুমিন বলে।
ঈমানের ফল : ঈমান মানুষের মনে আল্লাহর আনুগত্য ও আল্লাহর ভয় সৃষ্টি করে। ঈমানের ফলে মানুষের নৈতিক চরিত্র উন্নত হয়। একজন মানুষ ঈমানদার হলে তার মধ্যে আল্লাহ ও পরকালের ভয় থাকবে। একজন মুমিন ব্যক্তি সদা সত্য কথা বলবেন। সৎ পথে চলবেন। লোভ হিংসা বিদ্বেষের ঊর্ধ্বে থাকবেন। ন্যায়ের পথে কাজ করে যাবেন। নিষেধগুলো পরিহার করবেন। মুমিন ব্যক্তি সত্যের জন্য লড়াই করবেন। অন্যায়ের প্রতিবাদ করবেন। এতে তিনি ইহকালে শান্তি পাবেন। পরকালে জান্নাতে যাবেন।
প্রশ্ন : আমরা কী বলে আল্লাহর শোকর আদায় করব?
উত্তর : আল্লাহ আমাদের সৃষ্টিকর্তা। তিনি সব সৃষ্টিকে আমাদের আজ্ঞাবহ করে দিয়েছেন। আমরা একমাত্র তারই আনুগত্য ও শোকর আদায় করব। শোকর আদায় করতে গিয়ে আমরা বলব : আলহামদুলিল্লাহি রাব্বিল আলামীন।
অর্থ : সব প্রশংসা একমাত্র আল্লাহর যিনি সারা বিশ্বের পালনকর্তা।
প্রশ্ন : সারা বিশ্বের পালনকর্তা কে? তাঁর লালন-পালনের একটি বর্ণনা দাও।
উত্তর : আমরা যা কিছু দেখতে পাই সবই আল্লাহতায়ালা সৃষ্টি করেছেন। আবার অনেক কিছু আছে যেগুলো আমরা দেখতে পাই না, সেগুলোও তিনিই সৃষ্টি করেছেন। তিনি এগুলো শুধু সৃষ্টি করেই ছেড়ে দেননি। তিনি তার নেয়ামতগুলো দিয়েও লালন-পালন করেন। সারা বিশ্বের পালনকর্তা মহান আল্লাহতায়ালা। তিনি নিখিল বিশ্বের লালন-পালনকারী।
আল্লাহ মহান ও দয়াময়। আমাদের জীবনযাপনের জন্য অনেক রকমের কাজ করতে হয়। কাজ করতে শক্তি লাগে। শক্তির মূল উৎস হল মহান আল্লাহ্র সৃষ্টি সূর্য। সূর্যের আলো ছাড়া কোনো প্রাণীই বাঁচতে পারে না। কোনো প্রাণী শক্তিও পায় না। আমরা বাড়িতে এ ব্যাপারে একটি পরীক্ষা করে দেখতে পারি। একটা গাছের চারা একটি পাতিল বা একটি ঢাকনা দিয়ে ঢেকে রাখি। কয়েক দিন পর পাতিলটি বা ঢাকনাটি সরিয়ে চারাটি বের করলে দেখা যাবে যে, তা সাদাটে বা নিস্তেজ হয়ে গেছে। আলো না পাওয়ার জন্য এমনটি হয়েছে। আলো না পেলে শক্তির অভাবে চারাটি একদিন মরে যাবে। মানুষ, পশুপাখি, গাছপালা, তৃণলতা ইত্যাদি সূর্যের আলো ছাড়া বাঁচতে পারে না। আল্লাহ তাঁর সূর্যের আলো দিয়ে এ সব লালন-পালন করেন।
প্রাথমিক বিজ্ঞান
আফরোজা বেগম
সিনিয়র শিক্ষক, উত্তরা হাইস্কুল অ্যান্ড কলেজ, উত্তরা, ঢাকা
বায়ু
প্রশ্ন : মানুষ কীভাবে বায়ুপ্রবাহকে দৈনন্দিন জীবনে ব্যবহার করে?
উত্তর : মানুষ নানাভাবে বায়ুপ্রবাহকে দৈনন্দিন জীবনে ব্যবহার করে। যেমন-
* বায়ুপ্রবাহের সাহায্যে বড় চরকা বা টারবাইন ঘুরিয়ে বিদ্যুৎ উৎপাদন করা হয়। * মানুষ শরীর ঠাণ্ডা রাখতে হাতপাখা বা বৈদ্যুতিক পাখার বায়ুপ্রবাহ ব্যবহার করে। * বায়ুপ্রবাহ ব্যবহার করে নদীতে পাল তোলা নৌকা চলে। * কোনো ভেজা বস্তু যেমন- ভেজা কাপড় শুকানোর জন্য বায়ুপ্রবাহকে ব্যবহার করা হয়। * ভেজা চুল শুকানোর জন্য হেয়ার ড্রয়ারের বায়ুপ্রবাহ ব্যবহার করি।
সুতরাং, দৈনন্দিন জীবনে বায়ুপ্রবাহে নানাবিধ গুরুত্বপূর্ণ সব ব্যবহার রয়েছে।
প্রশ্ন : মানুষের স্বাস্থ্যের ওপর বায়ুদূষণের ক্ষতিকর প্রভাবসমূহ কী?
উত্তর : মানুষের স্বাস্থ্যের ওপর বায়ুদূষণের ক্ষতিকর প্রভাব অনেক। বায়ুদূষণের ফলে মানুষ নানা রোগে আক্রান্ত হচ্ছে। মেন-
* ফুসফুসের ক্যান্সার। * শ্বাসজনিত রোগ (হাঁপানি)।
* হৃদরোগ (উচ্চ রক্তচাপ) * হাঁচি-কাশি।
* অ্যালার্জি। * ব্রঙ্কাইটিস।
* হাম, যক্ষ্মা, বসন্তের মতো নানা বায়ুবাহিত রোগ ছাড়ায়।
* সিসাযুক্ত ধোঁয়া শিশু ও গর্ভবতী মায়ের জন্য খুবই ক্ষতিকর। রক্তে সিসার পরিমাণ বেড়ে গেলে ক্ষুধা কমে যায়, রক্ত স্বল্পতা দেখা যায়। কিনডি, øায়ু ও মস্তিষ্কের অসুবিধা দেখা দেয়। রক্তচাপ বেড়ে যায় এবং শিশুদের বুদ্ধির বিকাশ ব্যাহত হয়।
সুতরাং, দূষিত বায়ুর জন্য স্বাস্থ্য ঝুঁকি বাড়ায়।
প্রশ্ন : বায়ুদূষণ প্রতিরোধের তিনটি উপায় লিখ।
উত্তর : বায়ুদূষণ প্রতিরোধের তিনটি উপায় নিচে দেয়া হল-
* শক্তির ব্যবহার কমিয়ে আমরা জীবাশ্ম জ্বালানির অতিরিক্ত ব্যবহার কমাতে পারি। যেমন- বাতি বন্ধ রাখা, গাড়ি ব্যবহারের পরিবর্তে হাঁটা বা সাইকেল ব্যবহার করা ইত্যাদি।
* প্রাকৃতিক সম্পদের ব্যবহার কমিয়ে, পুনঃব্যবহার করে ও রিসাইকেল প্রক্রিয়ার মাধ্যমে আমরা দূষণ প্রতিরোধ করতে পারি। * ময়লা-আবর্জনা পরিষ্কার করে এবং গাছ লাগানোর মাধ্যমেও বায়ু দূষণমুক্ত রাখতে পারি।
সুতরাং, ওপরের নিয়মগুলো পালনের মাধ্যমে আমরা বায়ুদূষণ প্রতিরোধ করতে পারি।
প্রশ্ন : বায়ুদূষণের কারণ কী?
উত্তর : বায়ুদূষণের কারণগুলো নিচে দেয়া হল-
* মানুষের বিভিন্ন কর্মকাণ্ড বায়ুদূষণের একটি বড় কারণ, বিশেষ কর জীবাশ্ম জ্বালানি পোড়ানো। এর ফলে বায়ুতে বিভিন্ন ধরনের গ্যাস নির্গত হয়। * কলকারখানা ও যানবাহনের নির্গত বিষাক্ত কালো ধোঁয়া বায়ুকে দূষিত করে।
* গাছপালা পোড়ানোর ফলে উৎপন্ন ধোঁয়া থেকেও বায়ুদূষণ হয়। * যেখানে-সেখানে ময়লা-আবর্জন ফেলা ও মলমূত্র ত্যাগের কারণে বায়ুতে দুর্গন্ধ ছড়ায় এবং বায়ু দূষিত হয়।
* আগ্নেয়গিরি অগ্ন্যুৎপাত, ধুলাবালি ইত্যাদির কারণেও বায়ু দূষিত হয়।
সুতরাং মানুষের নানা কর্মকাণ্ড, জনসংখ্যার দ্রুত বৃদ্ধি ও কিছু প্রাকৃতিক কারণে বায়ু দূষিত হয়।
