Logo
Logo
×

টিউটোরিয়াল

প্রাথমিক শিক্ষা সমাপনী পরীক্ষার পড়াশোনা

ইসলাম ও নৈতিক শিক্ষা * প্রাথমিক বিজ্ঞান

ইসলাম ও নৈতিক শিক্ষা

Icon

মো. ফোরকান আহমেদ

প্রকাশ: ২৩ মার্চ ২০১৮, ০৬:০০ পিএম

প্রিন্ট সংস্করণ

সহকারী শিক্ষক, মুনলাইট মডেল স্কুল অ্যান্ড কলেজ

ইবাদত

প্রশ্ন : মুখ, দাঁত, হাত ও পা পরিষ্কার-পরিচ্ছন্ন রাখার গুরুত্ব বর্ণনা কর।

উত্তর : মহান আল্লাহ চির পবিত্র। তাই যারা পাক-সাফ এবং পরিষ্কার-পরিচ্ছন্ন থাকে, আল্লাহ্ তাদের পছন্দ করেন। মহানবী (সা.) বলেছেন : ‘পরিষ্কার-পরিচ্ছন্নতা ঈমানের অঙ্গ’। অতএব, আমরা পরিষ্কার-পরিচ্ছন্ন থাকব। তা হলে আল্লাহ্ ও রাসূল (সা.) আমাদের ভালো বাসবেন। যারা পরিষ্কার-পরিচ্ছন্ন থাকে না, তাদের শরীর থেকে দুর্গন্ধ বের হয়। তাদের নানা ধরনের অসুখ-বিসুখ হয়। অপরিচ্ছন্ন, নোংরা মানুষকে কেউ ভালোবাসে না। সবাই তাদের ঘৃণা করে। তাই শরীর পরিষ্কার রাখা প্রয়োজন।

মুখ : আমরা মুখ দিয়ে খাবার খাই। মুখ ভালো না থাকলে পেট ভালো থাকে না। পেট ভালো না থাকলে শরীর অসুস্থ হয়ে যায়। মনে শান্তি থাকে না। মুখ পরিষ্কার না থাকলে মুখ থেকে দুর্গন্ধ বের হয়। মানুষ তাকে ঘৃণা করে। মহানবী (সা.) দুর্গন্ধযুক্ত কোনো কিছু খেয়ে মসজিদে যেতে নিষেধ করেছেন। মুখ দ্বারা আমরা কোরআন পাঠ করি। কোরআন মজিদ পাঠ করা শ্রেষ্ঠ ইবাদত। মুখে দুর্গন্ধ নিয়ে এ ইবাদত করা যায় না।

দাঁত : আমরা দাঁত দিয়ে চিবিয়ে খাবার খাই। এতে দাঁতের ফাঁকে খাদ্যকণা লেগে থাকে। প্রতিবার খাবার শেষে বিশেষ করে ঘুমানোর আগে দাঁত না মাজলে দাঁতের ফাঁকে লেগে থাকা খাদ্যকণা পচে মুখে দুর্গন্ধ হয়। দাঁতের নানারকম রোগ হয়। দাঁত পরিষ্কার রাখার জন্য অজু করার আগে মেসওয়াক করতে হয়, দাঁত মাজতে হয়।

হাত : আমরা হাত দিয়ে নানারকম কাজ করি। এতে হাত ময়লা হয়, নোংরা হয়। অনেক সময় হাতের নখ বড় হয়। বড় নখে অনেক ময়লা আটকে থাকে। নোংরা হাতে খাবার খেলে খাবারের সঙ্গে ময়লা পেটে চলে যায়। এতে নানারকম পেটের অসুখ হয়। আমাদের নখ কেটে ছোট রাখতে হবে। খাওয়ার আগে ও পরে ভালোভাবে হাত ধুতে হবে। পায়খানা প্রস্রাব থেকে ফিরে সাবান দিয়ে হাত ধুতে হবে।

পা : রাস্তাঘাটে চলাফেরা করার সময় আমাদের পায়ে ধুলা-ময়লা লাগে। পা নোংরা হয়ে যায়। পা নোংরা থাকলে নানারকম রোগ হয়। কাজের শেষে পা ধুয়ে-মুছে পরিষ্কার-পরিচ্ছন্ন রাখতে হবে। যাদের ডায়াবেটিস আছে তাদের পায়ের প্রতি বিশেষ যত্ন নেয়া প্রয়োজন।

প্রশ্ন : কোরবানি প্রচলনের সংক্ষিপ্ত ইতিহাস বর্ণনা কর।

উত্তর : হজতর ইবরাহিম (আ.) ছিলেন একজন বিশিষ্ট নবী। আল্লাহতায়ালা তাকে অনেকবার পরীক্ষা করেছেন। আল্লাহর আদেশে একদিন তিনি তার স্ত্রী হাজেরা এবং তাদের বৃদ্ধ বয়সের একমাত্র শিশুপুত্র ইসমাইল (আ.)কে জনমানবশূন্য মরুভূমিতে রেখে চলে যান। ইসমাইল (আ.) যখন কিশোর বয়সে উপনীত, তখন ইবরাহিম (আ.) তাদের দেখতে এলেন। এবার তিনি এক কঠিন পরীক্ষার সম্মুখীন হলেন। তিনি স্বপ্নে দেখলেন, আল্লাহ তাকে আদেশ করছেন প্রিয় পুত্র ইসমাইলকে কোরবানি করতে। একই স্বপ্ন দেখলেন বারবার। তিনি আল্লাহর সন্তুষ্টির জন্য পুত্রকে কোরবানি করতে স্থির করলেন। তিনি তার স্বপ্নের কথা ইসমাইল (আ.)কে জানিয়ে বললেন, ‘হে বৎস, আমি স্বপ্নে দেখলাম আমি তোমাকে জবাই করছি। এখন তোমার অভিমত কী বল।’ উত্তরে ইসমাইল (আ.) বললেন, ‘হে আমার আব্বা, আপনি তাই করুন যা আপনাকে আদেশ করা হয়েছে। ইনশাআল্লাহ আমাকে ধৈর্যশীলদের অন্তর্ভুক্ত পাবেন।’ ইবরাহিম (আ.) পুত্রের আল্লাহর প্রতি এমন আনুগত্য, নিষ্ঠা ও সাহসিকতাপূর্ণ উত্তরে খুশি হলেন। তিনি প্রাণপ্রিয় পুত্রকে আল্লাহর সন্তুষ্টির জন্য কোরবানি করতে তার গলায় ছুরি চালালেন। পুত্র ইসমাইলও আল্লাহকে সন্তুষ্ট করার জন্য ধারালো ছুরির নিচে মাথা পেতে দিলেন। এবারের কঠিন পরীক্ষায়ও পিতা-পুত্র উত্তীর্ণ হলেন। আল্লাহতায়ালা কোরবানি কবুল করলেন। তিনি ইসমাইলকে রক্ষা করলেন। তার পরিবর্তে একটি দুম্বা কোরবানি হয়ে গেল। আল্লাহতায়ালা ইবরাহিম (আ.)কে বললেন, ‘হে ইবরাহিম! তুমি তো স্বপ্ন দেখে সত্যিই পালন করলে।’ আল্লাহতায়ালার প্রতি হজরত ইবরাহিম (আ.) ও ইসমাইল (আ.)-এর আনুগত্য ও ত্যাগের ঘটনাকে স্মরণীয় করে রাখার জন্য এবং মুসলিমদের ত্যাগের মহিমায় উজ্জীবিত করার জন্য তখন থেকে কোরবানির প্রচলন রয়েছে।

প্রাথমিক বিজ্ঞান

আফরোজা বেগম

সিনিয়র শিক্ষক, উত্তরা হাইস্কুল অ্যান্ড কলেজ উত্তরা, ঢাকা

সুস্থ জীবনের জন্য খাদ্য

প্রশ্ন : কোন কোন খাদ্যে কৃত্রিম রং ব্যবহার করা হয়?

উত্তর : আজকাল কিছু ব্যবসায়ী খাদ্যকে আকর্ষণীয় ও লোভনীয় করতে বিভিন্ন কৃত্রিম রং খাদ্যে ব্যবহার করে। যেমন :

* মিষ্টি *জেলি * চকলেট * আইসক্রিম * কেক * চিপস্

* কোমল পানীয় ইত্যাদি

সুতরাং, আমরা নিজেদের লোভ সংবরণ করে এসব খাদ্য থেকে দূরে থাকব।

প্রশ্ন : একটি বার্গারে বিভিন্ন ধরনের খাবার যেমন- গরু ও মুরগির মাংস, টমেটো, লেটুস পনির, পাউরুটি ইত্যাদি থাকে। তারপরও খুব বেশি বার্গার খাওয়া আমাদের শরীরের জন্য ক্ষতিকর কেন?

উত্তর : একটি বার্গারে বিভিন্ন ধরনের খাবার যেমন- গরু ও মুরগির মাংস, টমেটো, লেটুস, পনির, পাউরুটি ইত্যাদি থাকে। তারপরও খুব বেশি বার্গার খাওয়া আমাদের জন্য ক্ষতিকর কারণ-

* বার্গার একটি লবণাক্ত বা জাঙ্কফুড। যা উচ্চ রক্তচাপ বাড়ায়। * জাঙ্ক ফুড অর্থাৎ, বার্গার খেতে সুস্বাদু হলেও তা সুষম খাদ্য নয়।

* জাঙ্ক ফুডে শরীরের জন্য সামান্য প্রয়োজনীয় চিনি, লবণ ও উচ্চমাত্রার চর্বি অত্যধিক থাকে। এগুলো আমাদের দেহে নানা ক্ষতি করে।

* সাধারণ খাবারের বদলে জাঙ্ক ফুড, বার্গার, খেলে পুষ্টিহীনতা, অতিরিক্ত ওজন বৃদ্ধি বা মোটা হয়ে যাওয়াসহ নানা সমস্যা দেখা দিতে পারে।

* বার্গারে শাকসবজি বা খাদ্য আঁশ সামান্য থাকতে পারে। আবার নাও থাকতে পারে। এটা স্বাস্থ্যের জন্য ক্ষতিকর।

সুতরাং বার্গার উপকারের চেয়ে অপকারই বেশি করে। ইহা স্বাস্থ্যের জন্য শুধু ক্ষতিকরই নয় √মকিস্বরূপও। তাই এসব খাবার বেশি খাওয়া উচিত নয়।

প্রশ্ন : খাদ্য সংরক্ষণের মাধ্যমে আমরা কীভাবে উপকৃত হই?

উত্তর : খাদ্য সংরক্ষণের মাধ্যমে আমরা নানাভাবে উপকৃত হই। যেমন-

* মাছ, মাংস, সবজি, ফল, দুগ্ধজাত খাদ্য ইত্যাদি খুব সহজেই ব্যাকটেরিয়া দ্বারা পচে নষ্ট হয়ে যায়। খাদ্য সংরক্ষণ খাবারে পচন সৃষ্টিকারী ব্যাকটেরিয়া জš§াতে বাঁধা দেয়। ফলে খাদ্য সংরক্ষণ দ্রুত পচন থেকে খাদ্যকে রক্ষা করে। * খাদ্যকে পচনের হাত থেকে রক্ষা করে খাদ্যের অপচয় রোধ করে। * খাদ্য সংরক্ষণের ফলে খাদ্যকে বিভিন্ন মৌসুমি খাদ্যদ্রব্য সারা বছর পাওয়া যায়।

* খাদ্য সংরক্ষণের ফলে অনেক দূরবর্তী এলাকায় সহজেই খাদ্যদ্রব্য সরবরাহ করা যায়। * খাদ্য সংরক্ষণের ফলে অনেক সুস্বাদু, মুখরোচক ও মজাদার খাদ্যদ্রব্য যেমন- আচার, জ্যাম-জেলি ইত্যাদি পাওয়া যায়।

সুতরাং, খাদ্যদ্রব্য সংরক্ষণ করে আমরা নানাভাবে উপকৃত হতে পারি।

Logo

সম্পাদক : আবদুল হাই শিকদার

প্রকাশক : সালমা ইসলাম