এইচএসসি পরীক্ষার্থীদের বাংলা প্রথমপত্র
ড. সনজিত পাল
প্রকাশ: ১৭ সেপ্টেম্বর ২০২০, ০৬:০০ পিএম
প্রিন্ট সংস্করণ
|
ফলো করুন |
|
|---|---|
শিক্ষক,
সেন্ট গ্রেগরী হাই স্কুল অ্যান্ড কলেজ।
ঐকতান
-রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর
রবীন্দ্রকাব্য ভুবনে ‘ঐকতান’ কবিতাটি বিশেষভাবে স্মরণীয়। এটি বিশ্ব কবির আত্ম সমালোচনার বর্ণনা। কবি হিসেবে নিজের অপূর্ণতার স্বতঃস্ফূর্ত স্বীকারোক্তি। দীর্ঘ জীবন-পরিক্রমণের শেষ প্রান্তে পৌঁছে স্থিতপ্রজ্ঞ রবীন্দ্রনাথ পেছনে ফিরে তাকিয়ে সমগ্র জীবনের সাহিত্যসাধনার সাফল্য ও ব্যর্থতার হিসাব খুঁজেছেন ‘ঐকতান’ কবিতায়। তিনি অকপটে নিজের সীমাবদ্ধতা ও অপূর্ণতার কথা ব্যক্ত করেছেন এ কবিতায়। জীবন-মৃত্যুর সন্ধিক্ষণে দাঁড়িয়ে কবি কাব্য সাধনায় নিজের ব্যর্থতার স্বরূপ উপলব্ধি করেছেন। সব মানুষের জীবনেই সাফল্য ও ব্যর্থতা থাকে। কবিও তাদের বাইরে নয়। জ্ঞানের দীনতার কারণেই নানা দেশের বিচিত্র অভিজ্ঞতা, বিভিন্ন গ্রন্থের চিত্রময় বর্ণনার বাণী কবি ভিক্ষালব্ধ ধনের মতো সযত্নে আহরণ করে নিজের কাব্যভাণ্ডার পূর্ণ করেছেন। তবু বিপুলা এ পৃথিবীর সর্বত্র তিনি প্রবেশের দ্বার খুঁজে পাননি। কবি সমাজের উচ্চ মঞ্চে আসন গ্রহণ করেছিলেন বলে সংকীর্ণ জানালা দিয়ে দেখা খণ্ডিত বা ক্ষুদ্র জীবনের সঙ্গে তিনি বৃহত্তর মানব-জীবনধারার ঐকতান সৃষ্টি করতে ব্যর্থ হয়েছেন। এ কারণেই কবির সৃষ্টিসম্ভার কৃত্রিমতায় পর্যবসিত হয়ে ব্যর্থ হয়েছে। তিনি উপলব্ধি করেছেন, তার কবিতা বিচিত্র পথে অগ্রসর হলেও জীবনের সব স্তরে পৌঁছতে পারেনি। তিনি প্রত্যাশা করেছেন এমন এক কবির আবির্ভাব, যিনি শ্রমজীবী মানুষের অংশীদার হয়ে সত্য ও কর্মের মধ্যে আত্মীয়তার বন্ধন সৃষ্টি করবেন।
‘ঐকতান’ কবিতাটি পড়ার সময় যে দিকগুলো ভালো করে খেয়াল করতে হবে :
১. ঐকতান কবিতাটি কবির আত্ম-সমালোচনার বর্ণনা। কাব্য সাধনায় কবি নিজের অপূর্ণতা ও ব্যর্থতার কথা অকপটে স্বীকার করেছেন কবিতায়। এ কবিতায় তিনটি বিষয় বিশেষভাবে লক্ষ্যণীয়। সাহিত্য সাধনার বিষয় ও তার বিস্তার এবং নিজের অপূর্ণতা; নিজের ব্যর্থতার কারণ এবং মাটির মানুষের কবির আগমনের প্রতীক্ষা। কবিতায় কবি নিজের ব্যর্থতার সমালোচনা কত সহজ ও সাবলীলভাবে করেছেন, কেন করেছেন তা গভীরভাবে বুঝতে হবে। জমিদার পরিবারের সন্তান হয়ে সাধারণ মানুষের সঙ্গে নিজেকে মেশানো চেষ্টা করেও তিনি ব্যর্থ হয়েছেন- এ ব্যর্থতার কারণ অনুসন্ধান করতে হবে। নিজের সাহিত্যে সাধারণ খেটে খাওয়া শ্রমজীবী মানুষের কথা বলতে না পারার কারণ তিনি কীভাবে তুলে ধরেছেন তা বুঝতে হবে।
২. শ্রমজীবী সাধারণ মানুষের কথা যে কবি বলবেন, সাধারণ মানুষের সঙ্গে তার সম্পর্ক কেমন হবে- কবি তাও বর্ণনা করেছেন কবিতায়। কবি কেন সাধারণ মানুষের সঙ্গে মিশতে পারেননি, কেন মাটির মানুষের কাছা কাছি যেতে পারেননি, মূক মানুষের কবির কাছে রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের প্রত্যাশা কী, কবি কেন ঐকতান সৃষ্টি করতে চান - এ বিষয়গুলো গভীরভাবে পড়তে হবে।
অনুধাবন প্রশ্ন :
১. ‘ঐকতান’ কবিতায় কবি কেন নিন্দার কথা মেনে নিয়েছেন?
২. ‘ঐকতান’ কবিতায় কবির গানের পসরা কৃত্রিম পণ্যে ব্যর্থ হয়েছে কেন?
৩. ‘ঐকতান’ কবিতায় কবির সুরের মধ্যে অপূর্ণতা কেন?
৪. কবিতায় কবি ‘এসো কবি অখ্যাত জনের’- বলতে কী বোঝাতে চেয়েছেন? ব্যাখ্যা কর।
৫. ‘সমাজের উচ্চমঞ্চে বসেছি সংকীর্ণ বাতায়নে’- ব্যাখ্যা কর।
৬. ‘ঐকতান’ কবিতায় কবি কাদের বাণী শুনতে চেয়েছেন এবং কেন?
৭. ‘ঐকতান’ কবিতায় কবি সর্বত্র প্রবেশের দ্বার পান না- কেন?
৮. ‘বিশাল বিশ্বের আয়োজন’- বলতে কী বোঝানো হয়েছে?
৯. ‘ঐকতান’ কবিতায় অখ্যাতজনের কবিকে আহ্বান করা হয়েছে কেন?
১০. ‘যেথা পাই চিত্রময়ী বর্ণনার বাণী, কুড়াইয়া আনি’- ব্যাখ্যা কর।
১১. ‘বাধা হয়ে আছে মোর বেড়াগুলি জীবনযাত্রার’- ব্যাখ্যা কর।
১২. ‘রয়ে গেলো অগোচরে’- কী? কেন এ কথা বলা হয়েছে?
১৩. ‘ঐকতান’ কবিতায় কবি জ্ঞানের দীনতা অনুভব করেছেন কেন?
১৪. ‘প্রকৃতির ঐকতান স্রোতে / নানা কবি ঢালে গান নানা দিক হতে’- ব্যাখ্যা কর।
১৫. ‘অবজ্ঞার তাপে শুষ্ক নিরানন্দ সেই মরুভূমি’- বলতে কবি কী বুঝিয়েছেন?
১৬. কবি মাঝে মাঝে ও পাড়ার প্রাঙ্গণের ধারে গিয়েছেন কেন?
১৭. ‘এ স্বরসাধনায় পৌঁছিল না বহুতর ডাক’- বলতে কী বোঝানো হয়েছে?
১৮. কবি নিজের কবিতা সম্পর্কে কী জানেন- ব্যাখ্যা কর।
