Logo
Logo
×

টিউটোরিয়াল

পঞ্চম শ্রেণির বাংলাদেশ ও বিশ্বপরিচয়

Icon

আফরোজা বেগম

প্রকাশ: ১০ আগস্ট ২০২১, ০৬:০০ পিএম

প্রিন্ট সংস্করণ

পঞ্চম শ্রেণির বাংলাদেশ ও বিশ্বপরিচয়

ছবি: সংগৃহীত

সিনিয়র শিক্ষক, উত্তরা হাইস্কুল অ্যান্ড কলেজ উত্তরা, ঢাকা

জনসংখ্যা

প্রশ্ন : জনসংখ্যা সমস্যার তিনটি সমাধান লেখ।

উত্তর : জনসংখ্যা সমস্যার তিনটি সমাধান নিচে দেওয়া হলো-

* কারিগরি শিক্ষার উন্নয়নের মাধ্যমে খাদ্যের উৎপাদন বাড়াতে হবে ও দক্ষ জনগোষ্ঠী তৈরির মাধ্যমে শিল্পের প্রসার বাড়াতে হবে।

* সাক্ষরতা এবং শিক্ষার মান বাড়াতে শিশুদের উৎসাহিত করতে হবে। ফলে দক্ষ জনশক্তি হিসাবে কর্মসংস্থান হবে।

* গৃহ নির্মাণে সরকারি সাহায্য বাড়াতে হবে ও পরিবেশ দূষণ রোধ করতে হবে।

সুতরাং, উপরের পদক্ষেপ গ্রহণের মাধ্যমে জনসংখ্যা সমস্যার সমাধান করা যেতে পারে।

প্রশ্ন : কারিগরি প্রশিক্ষণ বৃদ্ধির মাধ্যমে আমরা কীভাবে উপকৃত হতে পারি?

উত্তর : বাংলাদেশ স্বল্প আয়ের স্বল্পোন্নত একটি দেশ। দারিদ্র্যে নিমজ্জিত এদেশের সবার উচ্চশিক্ষা গ্রহণের মতো আর্থিক সুযোগ নেই। তাই তাদের উন্নয়নের জন্য চাই গতানুগতিক উচ্চশিক্ষা নয় বরং নানা রকম বৃত্তিমূলক শিক্ষা, কারিগরি জ্ঞান, সরকারি সহায়তায় বৃত্তিমূলক প্রশিক্ষণ কর্মসূচির ব্যবস্থা করে এই শ্রমিকদের দক্ষ শ্রমশক্তিতে রূপান্তরিত করা যায়।

কারিগরি প্রশিক্ষণ কেন্দ্রের বিভিন্ন কাজের প্রশিক্ষণ দেওয়া যাতে তারা নতুন কোনো শিল্পের বিকাশে সহায়তা করতে পারে, যেমন যন্ত্রপাতি শিল্প।

প্রতিটি শ্রেণিতে গতানুগতিক বিষয়ের সঙ্গে একটি করে কারিগরি প্রশিক্ষণ থাকলে আর্থিক দৈন্যতায় শিক্ষা থেকে ঝরে পড়লেও কারিগরি প্রশিক্ষণ থাকার ফলে তার উপার্জনের একটি পথ থাকে।

উচ্চ শিক্ষিত বেকার যুবসমাজ হতাশাগ্রস্ত না হয়ে আত্মনির্ভরশীল হতে পারবে তার কারিগরি প্রশিক্ষণের মাধ্যমে।

সমাজের কর্মসংস্থান বাড়বে। ব্যক্তি, পরিবার, সমাজ তথা রাষ্ট্র অর্থনৈতিক সমৃদ্ধির দিকে।

আধুনিক প্রযুক্তি সফলভাবে মোকাবিলার জন্য কারিগরি প্রশিক্ষণের কোনো বিকল্প নেই।

জলবায়ু ও দুর্যোগ

প্রশ্ন : দুর্যোগের দুটি প্রাকৃতিক কারণ উল্লেখ কর।

উত্তর : দুর্যোগের দুটি প্রাকৃতিক কারণ হলো-

* জলবায়ু পরিবর্তন * ভূমিকম্প বা আগ্নেয়গিরি

প্রশ্ন : দুর্যোগের দুটি মানবসৃষ্ট কারণ উল্লেখ কর।

উত্তর : দুর্যোগের দুটি মানবসৃষ্ট কারণ হলো-

* মানবসৃষ্ট দূষণ, যেমন- শিল্প কলকারখানা এবং যানবাহনের ধোঁয়া। * বন-বাদাড়, গাছপালা উজাড় করা।

প্রশ্ন : বাংলাদেশের জলবায়ু পরিবর্তনের তিনটি কারণ উল্লেখ কর।

উত্তর : অন্যতম কারণ হলো মানবসৃষ্ট দূষণ। যেমন : শিল্প কারখানা এবং যানবাহনের দূষণ। ফলে বৈশ্বিক তাপমাত্রা বৃদ্ধি পাচ্ছে ও জলবায়ুর পরিবর্তন হচ্ছে।

* বন-জঙ্গল কেটে সাফ করলে এবং গাছপালা কেটে ফেললে জীববৈচিত্র্য ধ্বংস হয় ও জলবায়ুর পরিবর্তন হয়।

* নদীশাসনের ফলে নদী ধ্বংস হওয়া, জলাধার ভরাট করা ইত্যাদি কারণে প্রকৃতির ক্ষতি হয় ও জলবায়ুর পরিবর্তন হয়।

সুতরাং, প্রাকৃতিক কারণ ছাড়াও পরিবেশবিরোধী মানুষের নানা কর্মকাণ্ডই জলবায়ু পরিবর্তনের মূল কারণ।

প্রশ্ন : বাংলাদেশের কোন অঞ্চলগুলোতে নদীভাঙনের প্রবণতা রয়েছে? কেন?

নদীভাঙন : বাংলাদেশ ভৌগোলিকভাবে দুর্যোগপ্রবণ এলাকায় অবস্থিত। বাংলাদেশের বিভিন্ন দুর্যোগের মধ্যে নদীভাঙন অন্যতম।

এলাকা : বাংলাদেশ নদীমাতৃক দেশ। শত শত নদী জালের মতো এ দেশকে জড়িয়ে রয়েছে। তাই এ দেশের অনেক জায়গায়ই নদীভাঙন দেখা যায়। সাধারণত নদীসমৃদ্ধ এলাকাগুলোতেই বাংলাদেশের নদীভাঙনের প্রবণতা রয়েছে।

কারণ : * বন্যা নদীভাঙনের একটি অন্যতম প্রাকৃতিক কারণ। বন্যার অতিরিক্ত পানির স্রোত ও ঢেউ নদীর পাড়ে আঘাত হানে, ফলে বন্যার সময় নদীভাঙন শুরু হলে তা মারাত্মক রূপ ধারণ করে। * নদী থেকে বালি উত্তোলনের ফলে নদীভাঙন দেখা দেয়। * নদী তীরবর্তী গাছপালা কেটে ফেলার কারণেও নদীভাঙন দেখা দেয়। * যাতায়াত ব্যবস্থার উন্নয়নের জন্য ব্রিজ, কালভার্ট ইত্যাদি তৈরির সময় নদীর দিক পরিবর্তনের মাধ্যমে নদীশাসন করা হয়। এতেও নদীভাঙন হয়। * বন্যা ছাড়াও জোয়ার-ভাটা, ভূমিকম্প ইত্যাদি প্রাকৃতিক কারণে নদীভাঙন বৃদ্ধি পায়। * বন্যা প্রাকৃতিক নিয়মে হলেও মানুষের পরিবেশবিরোধী নানা কর্মকাণ্ড এর তীব্রতা বাড়িয়ে দেয়। ফলে মারাত্মম বন্যা নদীভাঙনের অন্যতম কারণ হয়ে দাঁড়ায়। সরকারি হিসাব মতে প্রতি বছর প্রায় ১০ হাজার হেক্টর জমি নদীভাঙনের শিকার হয়।

সুতরাং, ফারাক্কা বাঁধসহ, বন্যা ও ননা কারণে নদীভাঙন বাড়ছে। ফলে কৃষিজমি, ঘরবাড়ি, জনবসতি এমনকি গ্রামের পর গ্রাম নদীগর্ভে বিলীন হয়ে স্বাভাবিক জনজীবন, সামাজিক ও অর্থনৈতিক বিপর্যয় দেখা দেয়। নদীভাঙা রোধে সরকার ও জনগণ সবাইকে একযোগে কাজ করতে হবে।

প্রশ্ন : বাংলাদেশের কোন অঞ্চলগুলোতে খরা বেশি হয়?

উত্তর : বাংলাদেশের বিভিন্ন প্রাকৃতিক দুর্যোগের অন্যতম হলো খরা। দীর্ঘকাল ধরে শুষ্ক আবহাওয়া এবং অপর্যাপ্ত বৃষ্টিপাতের কারণে ও ভূগর্ভস্থ পানির মাত্রাতিরিক্ত ব্যবহারের ফলে পরিবেশের তাপমাত্রা বেড়ে যায়। ফলে জনজীবনে নেমে আসে নানা দুর্ভোগ। এটাই খরা। খরা বেশি দেখা যায় বাংলাদেশের উত্তরাঞ্চলের জেলাগুলোতে যেমন : দিনাজপুর, রংপুর, বগুড়া, রাজশাহী ইত্যাদি অঞ্চলে। বাংলাদেশের উত্তর-পশ্চিমাঞ্চলে দীর্ঘকাল ধরে শুষ্ক আবহাওয়া এবং অপর্যাপ্ত বৃষ্টিপাত ও অল্প সংখ্যক নদী থাকার কারণে এসব অঞ্চলে খরা বেশি দেখা দেয়। ফলে ‘মঙ্গা’ তথা খাদ্য ও কাজের অভাব এসব এলাকার মানুষের নিত্যসঙ্গী। প্রতিকূলতার সঙ্গে, বিরূপ প্রকৃতির সঙ্গে প্রতিনিয়ত লড়াই করে এদের বেঁচে থাকতে হয়।

প্রশ্ন : বাংলাদেশের কোন অঞ্চলগুলো ভূমিকম্পপ্রবণ?

উত্তর : বিভিন্ন প্রাকৃতিক দুর্যোগের অন্যতম হল ভূমিকম্প। এ দুর্যোগে প্রকৃতিগত কারণে ভূমি কেঁপে ওঠে, ফলে পৃথিবীর বুকে তৈরি নানা স্থাপনা ভেঙে পড়ে জনজীবনে ব্যাপক ক্ষতিসাধিত হয়। ভূমিকম্প পাহাড়ি এলাকার দুর্যোগ হলেও সাম্প্রতিককালে বালাদেশে প্রায়ই মৃদু ও মাঝারি ধরনের ভূমিকম্প হচ্ছে। বিজ্ঞানীদের মতে ছোট ছোট ভূমিকম্প বড় ভূমিকম্পের পূর্বাভাস। তাই পূর্ব প্রস্তুতি হিসাবে সরকার ভূমিকম্পপ্রবণ এলাকা চিহ্নিত করেছে। ভৌগোলিক অবস্থানের কারণে ভূমিকম্পের নিশ্চিত ঝুঁকিতে থাকা বাংলাদেশকে তিনটি অঞ্চলে ভাগ করা হয়েছে। যথা-

এলাকা-১ : এ অঞ্চলের অন্তর্গত এলাকা হলো বাংলাদেশের দক্ষিণ-পশ্চিম অঞ্চলে অবস্থিত জেলাগুলো।

এলাকা-২ : এলাকা-২-এ বাংলাদেশের উত্তর-পশ্চিম থেকে দক্ষিণ-পূর্ব দিকের জেলাগুলো অর্থাৎ দেশের উত্তর থেকে দক্ষিণে দেশের মধ্যভাগের এলাকাগুলো এ অঞ্চলের অন্তর্গত।

এলাকা-৩ : এ অঞ্চলের অন্তর্গত এলাকা হলো বাংলাদেশের উত্তর-পূর্ব অঞ্চলের এলাকাগুলো।

পঞ্চম শ্রেণি বাংলাদেশ ও বিশ্বপরিচয়

Logo

সম্পাদক : আবদুল হাই শিকদার

প্রকাশক : সালমা ইসলাম