Logo
Logo
×

টিউটোরিয়াল

পঞ্চম শ্রেণির শিক্ষার্থীদের বিজ্ঞান

Icon

আফরোজা বেগম

প্রকাশ: ১৪ নভেম্বর ২০২১, ০৬:০০ পিএম

প্রিন্ট সংস্করণ

পঞ্চম শ্রেণির শিক্ষার্থীদের বিজ্ঞান

ছবি: সংগৃহীত

সিনিয়র শিক্ষক, উত্তরা হাইস্কুল অ্যান্ড কলেজ

উত্তরা, ঢাকা

স্বাস্থ্যবিধি

প্রশ্ন : সংক্রামক রোগ কীভাবে ছড়ায় তা ব্যাখ্যা কর।

উত্তর : সংক্রামক রোগ : বিভিন্ন জীবাণু যেমন- ব্যাকটেরিয়া, ভাইরাস, ছত্রাক ইত্যাদি শরীরে প্রবেশের ফলে সৃষ্ট রোগই হলো সংক্রামক রোগ।

কারণ : সংক্রামক রোগ নানা কারণে হয়। যেমন-

* বায়ুবাহিত বিভিন্ন রোগ যেমন- সোয়াইন ফ্লু, হাম, গুটি বসন্ত, যক্ষ্মা, ইনফ্লুয়েঞ্জা ইত্যাদি বায়ুবাহিত রোগীর হাঁচি-কাশি বা কথাবার্তা বলার সময় এ রোগ হতে পারে।

* ডায়রিয়া, কলেরা, জন্ডিস, আমাশয় এবং টাইফয়েড ইত্যাদির মতো পানিবাহিত রোগগুলো খুব দ্রুত দূষিত পানির মাধ্যমে সংক্রামিত হয়।

* ফ্লু, ইবোলা, হাম, নিপা ভাইরাস, বার্ড ফ্লু, জিকা ভাইরাস, এইচআইভি ভাইরাসগুলো নানাভাবে মানুষের দেহে সংক্রমিত হয়।

* সংক্রমিত ব্যক্তির ব্যবহৃত জিনিস যেমন- গ্লাস, প্লেট, চেয়ার, টেবিল, জামা-কাপড়, টয়লেট ইত্যাদি ব্যবহারের মাধ্যমে আমরা জীবাণু দ্বারা সংক্রমিত হতে পারি।

* মশার মতো নানা পোকামাকড় বা কুকুরের মতো প্রাণীর কামড়ের মাধ্যমে কিছু রোগ ছড়াতে পারে।

* আবার দূষিত খাদ্য গ্রহণ এবং দূষিত পানি পানের মাধ্যমেও সংক্রামক রোগ ছড়াতে পারে।

সুতরাং, সংক্রামক রোগের মূল কারণই হলো অসচেতনতা বা অজ্ঞানতা।

প্রশ্ন : পানি জমে থাকে এমন বস্তু যেমন- গামলা, টায়ার ইত্যাদি সরিয়ে ফেলার মাধ্যমে আমরা ডেঙ্গি বা ম্যালেরিয়া প্রতিরোধ করতে পারি। এর কারণ কী?

উত্তর : পানি জমে থাকে এমন বস্তু যেমন- গামলা, টায়ার ইত্যাদি সরিয়ে ফেলার মাধ্যমে আমরা ডেঙ্গি বা ম্যালেরিয়া প্রতিরোধ করতে পারি। কারণ পানি জমে থাকে এমন বস্তুতে এডিস ইজিপটিলাইটিস নামক মশা ডিম পাড়ে ও বংশ বিস্তার করে। এসব মশার কামড়ে আমাদের দেহে ডেঙ্গিজ্বর দেখা দেয়। এ রোগে মানুষের মৃত্যুও হতে পারে। এ ডেঙ্গি মশা পরিষ্কার পানিতে জন্মায়। ফুলের টবে বা এসিতে জমে থাকা পানিতেও এসব মশা জন্মাতে পারে।

অন্যদিকে যে কোনো বস্তু যেখানে পরিষ্কার বা ময়লা পানি জমে সেগুলোতে এনোফিলিস মশা জন্মায়। স্ত্রী অ্যানোফিলিস মশার কামড়ে আমাদের ম্যালেরিয়া জ্বর হয়। এ জ্বরের যদিও ভালো চিকিৎসা রয়েছে তারপরও এ রোগে মৃত্যু ঝুঁকি রয়েছে।

সুতরাং, ডেঙ্গি ও ম্যালেরিয়া জ্বরের বাহক, ডেঙ্গি ও অ্যানোফিলিস মশার জন্মস্থান ধ্বংস করার মাধ্যমে আমরা এ দুটি রোগের প্রতিরোধ করতে পারি।

প্রশ্ন : পানিবাহিত এবং বায়ুবাহিত রোগের সাদৃশ্য এবং বৈসাদৃশ্য কোথায়?

উত্তর : সাদৃশ্য : পানিবাহিত এবং বায়ুবাহিত রোগ- উভয়েই হলো সংক্রামক বা ছোঁয়াচে রোগ। এসব রোগে আক্রান্ত ব্যক্তির দেহ থেকে বায়ু বা পানির মাধ্যমে খুব দ্রুত একজনের দেহ থেকে অন্যজনের দেহে ছড়িয়ে পড়ে। এটাই উভয় রোগের সাদৃশ্য।

বৈসাদৃশ্য : পানিবাহিত ও বায়ুবাহিত উভয়ে সংক্রামক হলে এদের মধ্যে বৈসাদৃশ্য রয়েছে। যেমন-

* পানিবাহিত সংক্রমিত হয় পানির মাধ্যমে। দূষিত পানি পান করলে, দূষিত পানি দিয়ে হাত বা থালা-বাসন ধুলে দূষিত পানির মাধ্যমে এ রোগের জীবাণু ছড়িয়ে পড়ে।

* আবার বিভিন্ন খাবার যেমন- রাস্তার খোলা খাবার, আমড়া, শসা, ফুচকা ইত্যাদির সঙ্গে দূষিত পানির খুব নিবিড় সম্পর্ক রয়েছে। সবার অজান্তে এসব খাবারের মধ্য দিয়েও পানিবাহিত রোগ বিস্তার লাভ করে।

অপরদিকে, বায়ুবাহতি রোগের বিস্তার ঘটে দূষিত বায়ুর মাধ্যমে।

* বিভিন্ন প্রাণঘাতী বায়ুবাহিত রোগের জীবাণু যেমন- যক্ষ্মা, হাম, বসন্ত, বাতাসের মাধ্যমে একজনের দেহ থেকে খুব দ্রুত অন্যজনের দেহে ছড়িয়ে পড়ে।

* আবার বায়ু দূষণের ফলে হাঁচি-কাশি, হাঁপানি, ইনফ্লুয়েঞ্জাসহ বায়ুবাহিত নানা সাধারণ রোগে মানুষ আক্রান্ত হয়।

* দূষিত বায়ুর জন্য মানুষের শ্বাসকষ্টও বাড়ছে। চীনের বেইজিং শহরের অধিবাসী পাহাড়ি এলাকা থেকে বিশুদ্ধ বাতাস কিনে তা ব্যবহার করে।

সুতরাং পানি ও বায়ুবাহিত রোগের মধ্যে উপরের সাদৃশ্য বা মিল এবং অসাদৃশ্য বা অমিল রয়েছে।

প্রশ্ন-৪ : হাঁচি-কাশির সময় হাত দিয়ে মুখ ঢেকে বা রুমাল ব্যবহার করে আমরা সংক্রামক রোগ প্রতিরোধ করতে পারি। এ ক্ষেত্রে হাতের তালু ব্যবহার করার চেয়ে হাতের উল্টো পিঠ বা কনুইয়ের ভাঁজ ব্যবহার করা ভালো কেন?

উত্তর : হাঁচি-কাশির সময় হাত দিয়ে মুখ ঢেকে বা রুমাল ব্যবহার করে আমরা সংক্রমামক রোগ প্রতিরোধ করতে পারি। এ ক্ষেত্রে হাতের তালু ব্যবহার করার চেয়ে হাতের উল্টো পিঠ বা কনুইয়ের ভাঁজ ব্যবহার করা ভালো। কারণ হাঁচি-কাশির মাধ্যমেও আমরা হাতের সাহায্যে রোগ ছড়াই। রোগ প্রতিরোধের সবচেয়ে ভালো উপায় হলো রোগ জীবাণু বন্ধ করা। জীবাণু ছড়ানো বন্ধ করা রোগ থেকে বাঁচার ভালো অভ্যাস। আমরা হাঁচি-কাশির সময় হাতের উল্টো পিঠ ব্যবহার করলে জীবাণু হাতের উল্টো পিঠে থাকে। কিন্তু আমরা বিভিন্ন কাজ করি হাতের তালু দিয়ে। ফলে হাতের উল্টো পিঠে লেগে থাকা জীবাণু আমার কাজের সংস্পর্শে আসবে না। আর এভাবেই আমরা খুব সহজে সাধারণ সতর্কতামূলক ব্যবস্থা গ্রহণ করে জীবাণু ছড়ানো বন্ধের মাধ্যমে সংক্রামক রোগের হাত থেকে বাঁচতে পারি।

সুতরাং হাতের উল্টো পিঠ খুব কম ব্যবহার হয় বলে জীবাণু ছড়ানো বন্ধের একটি সহজ উপায় এটি। তাই কাজের সময় হাতের উল্টো পিঠ বা কনুই কম ব্যবহার হয় বলে হাঁচি-কাশির সময় সংক্রামক রোগের হাত থেবে বাঁচার জন্য এটি ব্যবহার করা ভালো।

পঞ্চম শ্রেণি শিক্ষার্থী বিজ্ঞান

Logo

সম্পাদক : আবদুল হাই শিকদার

প্রকাশক : সালমা ইসলাম