একাদশ শ্রেণির শিক্ষার্থীদের বাংলা দ্বিতীয়পত্র
উজ্জ্বল কুমার সাহা
প্রকাশ: ০৩ জুন ২০১৮, ০৬:০০ পিএম
প্রিন্ট সংস্করণ
|
ফলো করুন |
|
|---|---|
প্রভাষক, সেন্ট যোসেফ উচ্চ মাধ্যমিক বিদ্যালয়
মোহাম্মদপুর, ঢাকা
[পূর্বে প্রকাশিত অংশের পর]
২। বিশেষ্য কাকে বলে? বিশেষ্যের শ্রেণিবিভাগ আলোচনা কর।
কোনো ব্যক্তি, স্থান, দ্রব্যসামগ্রী, গুণ বা অবস্থার নাম বিশেষ্য শব্দশ্রেণির মধ্যে পড়ে। যেমন : নজরুল, ঢাকা, চট্টগ্রাম, দয়া, হাসি। এ ছাড়া যাতে -র/-এর বা -গুলি/-গুলো বিভক্তি বা প্রত্যয় যুক্ত হয় এবং যা কর্তা/উদ্দেশ্য বা কর্ম হিসাবে বাক্যে ব্যবহৃত হতে পারে তা-ই বিশেষ্য। বাংলায় সংস্কৃত শব্দঋণ ও তদ্ভব অংশে কেবল বিশেষ্য শব্দেরই স্ত্রীলিঙ্গ রূপ পাওয়া যায়।
বিশেষ্যকে নানা শ্রেণিতে ভাগ করা যেতে পারে। যেমন :
সংজ্ঞা বা নামবাচক বিশেষ্য : যে বিশেষ্য বিশেষ ব্যক্তি, স্থান, দেশ, শিল্পকর্ম, পত্রিকা, বই, মাস, দিন ইত্যাদির সুনির্দিষ্ট নাম বোঝায় তাকে সংজ্ঞাবাচক বিশেষ্য বলে। যেমন : রবীন্দ্রনাথ, ঢাকা, বাংলাদেশ, পদ্মা, বৈশাখ, শনিবার ইত্যাদি।
সাধারণবাচক বা জাতিবাচক বা শ্রেণিবাচক বিশেষ্য : এ জাতীয় বিশেষ্য বিশেষ বা নির্দিষ্ট কোনো ব্যক্তি, স্থান বা জিনিসের নাম না বুঝিয়ে সাধারণ ও সামগ্রিকভাবে ওই শ্রেণিকে বোঝায়। এই জাতীয় বিশেষ্য অর্থের দিক থেকে সংজ্ঞাবাচক বিশেষ্যের বিপরীত। যেমন : মানুষ সাধারণ বিশেষ্য, কিন্তু নজরুল সংজ্ঞাবাচক বিশেষ্য। এ রকম নদী, পর্বত, গাছ, পাখি ইত্যাদি সাধারণ বিশেষ্য।
সাধারণ বিশেষ্যকে (ক) ইন্দ্রিয়গ্রাহ্যতা, (খ) গণনযোগ্যতা, (গ) সজীবতা, (ঘ) অন্য শব্দশ্রেণিজাত বিশেষ্য হিসেবে ভাগ করা যায়। যেমন :
ক. ইন্দ্রিয়গ্রাহ্যতা অনুসারে সাধারণ বিশেষ্যকে দুই ভাগে ভাগ করা যায়। যথা : (১) মূর্ত বিশেষ্য : এ জাতীয় বিশেষ্য এমন ব্যক্তি বা বস্তুর নাম বোঝায় যা দেখা যায়, স্পর্শ করা যায়, ঘ্রাণ নেয়া যায়, পরিমাপ করা যায়। যেমন : পানি, গোলাপ, হাত ইত্যাদি।
(২) ভাব বিশেষ্য : নির্বস্তুক অবস্থা, মনোগত ভাব বা গুণগত বৈশিষ্ট্য ইত্যাদির নাম বোঝায়। যেমন- আনন্দ, দুঃখ, ইচ্ছা, রাগ, সন্দেহ, সাহস ইত্যাদি।
খ) গণনযোগ্যতা অনুসারে সাধারণ বিশেষ্যকে তিন ভাগে ভাগ করা যায়। যেমন : (১) গণন বিশেষ্য : সংখ্যা দিয়ে গণন করা যায় এবং এগুলো বহুবচন হয়। যেমন : দিন (তিন দিন বা চারদিন) শিক্ষক (শিক্ষকবৃন্দ) ইত্যাদি।
(২) পরিমাণ বিশেষ্য : যা শুধু পরিমাপ করা যায়; সংখ্যা দিয়ে গণনা করা যায় না। যেমন : চাল, ডাল, চিনি, তেল ইত্যাদি।
(৩) সমষ্টি বিশেষ্য : কোনো দল বা গোষ্ঠীর একক বা সমষ্টি বোঝায়। যেমন- শ্রেণি, দল, গুচ্ছ, জনতা, বাহিনী, সমাজ, সভা, সমিতি ইত্যাদি।
গ) সজীবতা অনুসারে সাধারণ বিশেষ্যকে দুই ভাগে ভাগ করা যায়। যথা : (১) সজীব বিশেষ্য : জীবন্ত বা সক্রিয় সত্তার সাধারণ শ্রেণিকে বোঝায়। (২) অজীব বিশেষ্য : জীবন্ত নয় এবং নিজে চলাফেরা করতে পারে না ধারণাযোগ্য ও ইন্দ্রিয়গ্রাহ্য এমন কিছু সাধারণ নামকে বোঝায়। যেমন- আকাশ, ঘর, পানি, পাথর, বই ইত্যাদি।
ঘ) অন্য শব্দশ্রেণিজাত সাধারণ বিশেষ্যকে দুই ভাগে ভাগ করা যেতে পারে। যেমন : (১) ক্রিয়া বিশেষ্য : ক্রিয়া বা কাজের নাম বোঝায়। যেমন- করা, দেখা, বলা, খাওয়া, যাওয়া, পঠন, ভোজন ইত্যাদি।
(২) বিশেষণজাত বিশেষ্য : ধীরতা, পটুত্ব, শৌখিনতা, নষ্টামি ইত্যাদি।
