পঞ্চম শ্রেণির বিজ্ঞান
মো. সিদ্দিকুর রহমান
প্রকাশ: ১১ জানুয়ারি ২০২৩, ১২:০০ এএম
প্রিন্ট সংস্করণ
|
ফলো করুন |
|
|---|---|
সিনিয়র শিক্ষক, প্রগতি মডেল স্কুল অ্যান্ড কলেজ, নন্দীপাড়া, ঢাকা
আমাদের পরিবেশ
প্রশ্ন : খাদ্যশৃঙ্খল ও খাদ্যজালের মধ্যে পার্থক্য নির্ণয় কর।
উত্তর : শাদ্যশৃঙ্খল ও খাদ্যজালের মধ্যে পার্থক্য নিচে দেয়া হলো-
খাদ্যশৃঙ্খল খাদ্যজাল
* শক্তির স্থানান্তরের জন্য পরিবেশের জীব ও জড় উপাদানের মধ্যে যে খাদ্য-খাদক সম্পর্ক গড়ে ওঠে তাকে খাদ্যশৃঙ্খল বলে।
* খাদ্যশৃঙ্খল হলো পরিবেশের ক্ষুদ্র একক।
* পরিবেশে কখনো কখনো ২-১টি খাদ্যশৃঙ্খল নষ্ট বা বিলুপ্ত হলে তেমন কোনো বিরূপ প্রভাব পড়ে না।
* খাদ্যশৃঙ্খল দুই প্রকার। যথা- পরভোজী ও মৃতজীবী খাদ্যশৃঙ্খল
* উদাহরণ : সবুজ উদ্ভিদ-ফড়িং-ব্যাঙ * পরিবেশে বিদ্যমান বিভিন্ন খাদ্যশৃঙ্খলের মধ্যে যে সম্পর্ক গড়ে ওঠে তাকে খাদ্যজাল বলে।
* খাদ্যজাল হলো অপেক্ষাকৃত বড় একক।
* খাদ্যজাল ভেঙে গেলে পরিবেশে বিপর্যয় দেখা দেয়।
* খাদ্যজালের এমন কোনো নির্দিষ্ট প্রকার নেই।
ঘাস-ফড়িং-পাখি
ঘাস-গরু-মানুষ
প্রশ্ন : উদ্ভিদ কীভাবে প্রাণীর ওপর নির্ভরশীল?
উত্তর : উদ্ভিদ নানাভাবে প্রাণীর ওপর নির্ভরশীল।
যেমন-
* প্রাণীরা নিশ্বাসের সঙ্গে, জ্বালানি পোড়ানোর মাধ্যমে পরিবেশে কার্বন ডাই-অক্সাইড বাড়ায়। উদ্ভিদ এ কার্বন ডাই-অক্সাইড গ্রহণ করে খাদ্য তৈরি করে।
* মৌমাছি, প্রজাপতিসহ নানা কীটপতঙ্গ ছোট পাখি পরাগায়নের মাধ্যমে উদ্ভিদের বংশবিস্তারে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে।
* পুষ্টি উপাদানের জন্যও উদ্ভিদ প্রাণীর ওপর নির্ভরশীল। প্রাণীর মৃতদেহ প্রাকৃতিক সারে পরিণত হয়। এ সার পুষ্টি হিসাবে ব্যবহার করে বেড়ে ওঠে। তাই উদ্ভিদের বৃদ্ধিতেও প্রাণীর ভূমিকা রয়েছে।
* মানুষ ও অন্যান্য প্রাণীর মাধ্যমে উদ্ভিদের বীজের বিস্তরণ ঘটে ও গড়ে ওঠে উদ্ভিদের নতুন আবাসস্থল।
* বিভিন্ন কীটপতঙ্গ যেমন- পিঁপড়া, বিছা পোকা শত্রুকে আক্রমণ করে উদ্ভিদকে বাঁচায়।
সুতরাং, উদ্ভিদ তার অস্তিত্বকে টিকিয়ে রাখার জন্য নানাভাবে প্রাণীর ওপর নির্ভরশীল।
প্রশ্ন : মানুষ নির্ভর করে এমন তিনটি জড় বস্তুর উদাহরণ দাও।
উত্তর : মানুষ বিভিন্নভাবে পরিবেশের বিভিন্ন জড় উপাদানের ওপর নির্ভর করে। মানুষ নির্ভর করে এমন তিনটি জড় বস্তুর উদাহরণ নিচে দেয়া হলো-
* মাটি * বাতাস * পানি
প্রশ্ন : পরাগায়ন কাকে বলে?
উত্তর : ফুলের পরাগধানী থেকে পরাগ বিভিন্ন মাধ্যমে একই ফুলের বা ভিন্ন ফুলের গর্ভমুণ্ডে এসে পড়ে। একেই পরাগায়ন বলে। এ প্রক্রিয়ার মাধ্যমে উদ্ভিদ তার বংশবৃদ্ধি করে। তাই এটা ইদ্ভিদের অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ ও আব্যশিক একটি প্রক্রিয়া।
প্রশ্ন : খাদ্যশৃঙ্খলে কীভাবে সাপ এবং ঈগল একই রকম তা ব্যাখ্যা কর।
উত্তর : খাদ্যশৃঙ্খলে সূর্য থেকে শক্তি উৎপাদকের মাধ্যমে সংগৃহীত হয়। এই শক্তি পরে উৎপাদক থেকে খাদ্যশৃঙ্খলের উৎপাদকের মাধ্যমে বিভিন্ন খাদক স্তরে স্থানান্তরিত হয়। ঈগল এবং খাদ্যশৃঙ্খলের উৎপাদক নয়, খাদক তারা উভয়েই উৎপাদক থেকে খাদকের বিভিন্ন স্তর অতিক্রম করে শক্তির সঞ্চয় করে। একইভাবে সাপ ব্যাংক খায় এবং ঈগল সাপ খায়। এভাবেই শক্তি উদ্ভিদ থেকে প্রাণীতে প্রবাহিত হয়। বাস্তুসংস্থানে উদ্ভিদ থেকে প্রাণীতে তথা ঈগল ও সাপে খাদ্যশৃঙ্খল নামক শক্তি প্রবাহের ধারাবাহিক প্রক্রিয়াতে শক্তির প্রবাহ চলতে থাকে।
যেমন-
সবুজ উদ্ভিদ (ঘাস) → ঘাসফড়িং → ব্যাঙ → সাপ → ঈগল
উপরের খাদ্যশৃঙ্খলে দেখা যায় যে, ঘাস হলো উৎপাদক। আর ঈগল এবং সাপ উভয়েই খাদ্যশৃঙ্খলের খাদক। এরা উভয়েই উৎপাদক থেকে শক্তি নিয়ে বেঁচে থাকে।
সুতরাং, খাদ্যশৃঙ্খলে সাপ ও ঈগল পাখি উভয়েই খাদক।
