এইচএসসি পরীক্ষা ২০২৩ : বাংলা প্রথমপত্র
ড. সনজিত পাল
প্রকাশ: ২৬ জুলাই ২০২৩, ১২:০০ এএম
প্রিন্ট সংস্করণ
|
ফলো করুন |
|
|---|---|
সিনিয়র শিক্ষক, সেন্ট গ্রেগরী হাইস্কুল অ্যান্ড কলেজ, লক্ষ্মীবাজার, ঢাকা
তাহারেই পড়ে মনে
-সুফিয়া কামাল
সৃজনশীল প্রশ্নের দিকগুলো
১. মানবমনে/ কবি সত্তায় প্রকৃতির প্রভাব।
২. প্রকৃতির সঙ্গে মানবমনের সম্পর্ক।
৩. প্রকৃতিতে বিরাজিত বসন্তের বৈশিষ্ট্য।
৪. প্রিয়জন হারানোর বেদনা।
৫. কবি ও কবি-ভক্তের চমৎকার সম্পর্ক/ ভাবের আদান-প্রদান।
৬. শীত ঋতুর বৈশিষ্ট্য।
৭. কবির কাছে কবি-ভক্তের চাওয়া/ প্রার্থনা।
৮. কবির ব্যক্তিজীবনের বেদনার জাগরণ।
মূলদিক : প্রকৃতিতে বিরাজিত বসন্তের ছবির মাধ্যমে কবির প্রিয়জন হারানোর বেদনাকে জাগিয়ে দেওয়ার বর্ণনা।
মডেল সৃজনশীল প্রশ্ন-১
জেলে পাড়ার সুধীর বর্ষায় আগের মতো পদ্মা নদীতে মাছ ধরতে যেতে চায় না। নদীর পাড়ে নৌকায় বসে উদাস হয়ে পদ্মার বুকে তাকিয়ে থাকে আর মাঝে মাঝে দীর্ঘনিশ্বাস ছাড়ে। প্রতিবেশী অজিত তাকে মাছ ধরার জন্য জাল মেরামত করতে বললে সে নদীতে যেতে ও কাজ করতে অনীহা প্রকাশ করে। কারণ জানতে চাইলে সুধীর জানায় পাঁচ বছর আগে তার একমাত্র ছেলে এমন এক বর্ষায় মাছ ধরতে গিয়ে পদ্মার গভীর জলে হারিয়ে যায়। ছেলের দেহখানি পর্যন্ত সে পায়নি। তাই পদ্মায় বর্ষার আয়োজন দেখলে ছেলের কথা তার মনে পড়ে।
ক) ‘তাহারেই পড়ে মনে’ কবিতাটি প্রথম কোন পত্রিকায় প্রকাশিত হয়?
খ) পুষ্পশূন্য দিগন্তের পথে- বলতে কবি কী বুঝিয়েছেন?
গ) উদ্দীপকের সুধীরের সঙ্গে ‘তাহারেই পড়ে মনে’ কবিতার কবির সাদৃশ্য তুলে ধর।
ঘ) উদ্দীপক ও আলোচ্য কবিতার প্রকাশিত ভাব সমানভাবে উজ্জ্বল হয়ে উঠেছে কি? যুক্তি দাও।
প্রশ্ন-২
জন্মান্ধ ববিতা বিয়ের পর চেয়েছিল স্বামীর একটু আদর ও ভালোবাসা। কিন্তু বিয়ের কয়েকমাস পর তার স্বামী তাকে রেখে বিদেশে চলে যায় এবং তার সঙ্গে যোগাযোগ বন্ধ করে দেয়। সারা দিন ঘরের কোণে একাকী জীবনে ববিতা শুধু স্বামীর কথা ভাবে। ছোট ননদকে কাছে পেলে জানতে চায় বসন্তকাল শেষ হয়েছে কি না? কাঁচা আমে হলুদ রং ধরেছে কি না? দক্ষিণা বায়ু প্রবাহিত হয় কি না? বসন্তের শেষে এক গ্রীষ্মকালে ববিতার বিয়ে হয়েছিল। তখন তার দিনগুলো স্বামীর ভালোবাসা পরিপূর্ণ ছিল। সেই স্মৃতি তাকে আজও সজীব করে রেখেছে। সে বিশ্বাস করে তার স্বামী ফিরে এসে আবার তাকে ভালোবাসা দিবে।
ক) সৈয়দ নেহাল হোসেনের মৃত্যু হয় কত সালে?
খ) ‘যদিও এসেছে তবু তুমি তারে করিলে বৃথাই’- কেন বলা হয়েছে?
গ) উদ্দীপকের ববিতার সঙ্গে ‘তাহারেই পড়ে মনে’ কবিতার কবির সাদৃশ্য বর্ণনা কর।
ঘ) সাদৃশ্য থাকলেও উদ্দীপকের ববিতা আর আলোচ্য কবিতার কবি একই প্রেক্ষাপটে আঁকা অভিন্ন মানবী নয়’- মন্তব্যের যথার্থতা নিরূপণ কর।
আঠারো বছর বয়স
-সুকান্ত ভট্টাচার্য
কিশোর বিপ্লবী কবি সুকান্ত ভট্টাচার্যের (১৯২৬-১৯৪৭) পৈতৃক নিবাস গোপালগঞ্জ জেলার কোটালিপাড়ায়। ছোটবেলা থেকেই তিনি ছিলেন অত্যন্ত রাজনীতি-সচেতন। সুকান্ত তার কাব্যে অন্যায়-অবিচার শোষণ-বঞ্চনার বিরুদ্ধে বিদ্রোহ বিপ্লব ও মুক্তির আহ্বান জানিয়েছেন। বাংলাদেশের স্বাধীনতা যুদ্ধের সময়ে তার কবিতা মুক্তিকামী বাঙালির মনে বিশেষ শক্তি ও সাহস জুগিয়েছে। তিনি ফ্যাসিবিরোধী লেখক শিল্পী সংঘের পক্ষে ‘আকাল’ নামে একটি কাব্যগ্রন্থ সম্পাদনা করেন। ‘আঠারো বছর বয়স’ কবিতায় কবি সুকান্ত ভট্টাচার্য নিজের অভিজ্ঞতার আলোকে বয়ঃসন্ধিকালের বৈশিষ্ট্যকে তুলে ধরেছেন। কবিতাটি মননধর্মী এবং বয়ঃসন্ধিকালের মানসিকতার বৈশিষ্ট্যগুলো এতে বর্ণিত হয়েছে। এখানে উল্লেখিত বৈশিষ্ট্যগুলো কৈশোর থেকে যৌবনে পদার্পণের সময় লক্ষণীয়। এ বয়সের ধর্মই হলো আত্মত্যাগের মন্ত্রে উজ্জীবিত হওয়া, আঘাত-সংঘাতের মধ্যে রক্তশপথ নিয়ে ঝাঁপিয়ে পড়া। এ বয়স অদম্য দুঃসাহসে সব বাধা-বিপদকে পেরিয়ে যাওয়ার এবং অন্যায়ের বিরুদ্ধে মাথা উঁচু করে দাঁড়াবার জন্য প্রস্তুত। এ বয়স প্রবল আবেগ, উত্তেজনায় ও উচ্ছ্বাসে জীবনের ঝুঁকি নেওয়ার জন্য যেমন উপযোগী তেমনি সমাজজীবনের নানা বিকার, অসুস্থতা ও সর্বনাশের অভিঘাতে হয়ে উঠতে পারে ভয়ঙ্কর। তারুণ্য ও যৌবনশক্তি দুর্বার বেগে এগিয়ে যায় প্রগতির পথে কিংবা ধ্বংসের দিকে। কবি এ বয়সের সব নেতিবাচক ব্যবহার ও ভয়ঙ্কর দুর্যোগ বাদ দিয়ে যৌবনের তারুণ্য, উদ্দীপনা, সাহসীকতা, দুর্বার গতি, নতুন জীবন রচনার স্বপ্ন এবং কল্যাণব্রত শক্তিকে প্রত্যাশা করেছেন। কবি আশা প্রকাশ করেন পরাধীনতার শৃঙ্খলে আবদ্ধ ও নানা সমস্যাপীড়িত ভারতবর্ষে তারুণ্য ও যৌবনশক্তি যেন জাতীয় জীবনের চালিকাশক্তি হয়ে দাঁড়ায়।
