এইচএসসি পরীক্ষার্থীদের বাংলা প্রথমপত্র
ড. সনজিত পাল
প্রকাশ: ২৭ মার্চ ২০২৪, ১২:০০ এএম
প্রিন্ট সংস্করণ
|
ফলো করুন |
|
|---|---|
সিনিয়র শিক্ষক, সেন্ট গ্রেগরী হাইস্কুল অ্যান্ড কলেজ, লক্ষ্মীবাজার, ঢাকা
মানব-কল্যাণ
-আবুল ফজল
আবুল ফজল (১৯০৩-১৯৮৩) সমাজ ও সমকাল-সচেতন সাহিত্যিক এবং প্রগতিবাদী বুদ্ধিজীবী হিসাবে সমধিক খ্যাত। তিনি চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য ও রাষ্ট্রপতির উপদেষ্টার দায়িত্ব পালন করেছেন। ছাত্রজীবনেই যুক্ত হন বুদ্ধির মুক্তি আন্দোলনে; অন্যদের সঙ্গে প্রতিষ্ঠা করেন মুসলিম সাহিত্য সমাজ। কথাশিল্পী হিসাবে পরিচিতি অর্জন করলেও তিনি ছিলেন মূলত চিন্তাশীল প্রাবন্ধিক। তার প্রবন্ধে সাহিত্য, সংস্কৃতি, সমাজ ও রাষ্ট্র সম্পর্কে গভীর ও স্বচ্ছ দৃষ্টির পরিচয় বিধৃত। আধুনিক অসাম্প্রদায়িক জীবনবোধ, স্বদেশ ও ঐতিহ্যপ্রীতি, মানবতা ও শুভবোধ তার সাহিত্যকর্মের মূল প্রতিপাদ্য বিষয়। আবুল ফজলের ‘মানব-কল্যাণ’ প্রবন্ধটি ১৯৭২ খ্রিষ্টাব্দে রচিত। এটি প্রথম ‘মানবতন্ত্র’ গ্রন্থে সংকলিত হয়। এ রচনায় লেখক মানব-কল্যাণ ধারণাটির তাৎপর্য বিচারে সচেষ্ট হয়েছেন। সাধারণভাবে অনেকে দুস্থ মানুষের করুণবশত দান-খয়রাত করাকে মানব-কল্যাণ মনে করেন। কিন্তু লেখকের মতে, এমন ধারণা খুবই সংকীর্ণ মনোভাবের পরিচায়ক। তার মতে, মানব-কল্যাণ হলো মানুষের সার্বিক মঙ্গলের প্রয়াস। এ কল্যাণের লক্ষ্য সব অবমাননাকর অবস্থা থেকে মর্যাদাপূর্ণ অবস্থায় মানুষের উত্তরণ ঘটান। লেখকের বিশ্বাস, মুক্তবুদ্ধির সহায়তায় পরিকল্পনামাফিক পথেই কল্যাণময় পৃথিবী রচনা করা সম্ভব।
‘মানব-কল্যাণ’ প্রবন্ধের যে দিকগুলো ভালো করে পড়তে হবে-
‘মানব-কল্যাণ’ আমাদের সমাজে বহুল প্রচলিত কল্যাণমূলক কাজের একটি নাম। এ শব্দটির সঙ্গে অনেক মানুষের আবেগ, ধর্মীয় বিশ্বাস ও মানবিক দিক জুড়ে রয়েছে। কিন্তু ‘মানব-কল্যাণ’ বলতে আমাদের সমাজে প্রচলিত ধারণার সঙ্গে প্রাবন্ধিক সহমত পোষণ করেননি। প্রাবন্ধিকের মতে মানব-কল্যাণ হলো সেই কাজ, যা মানুষকে দীর্ঘস্থায়ী কল্যাণকর এবং চিন্তা ও মননের ক্ষেত্রে উন্নত করে। প্রাবন্ধিক মতে, কোনো ব্যক্তি বা গোষ্ঠীকে আর্থিক সহযোগিতা করে কিংবা ক্ষুধা মিটিয়ে মানব-কল্যাণের ঢেকুর তোলা প্রকৃত মানব-কল্যাণ নয়। যে কল্যাণে মানুষের চিন্তা ও মননের উন্নয়ন হয়, ব্যক্তির চেতনাগত উন্নয়ন হয়, মর্যাদাগত সমৃদ্ধি হয় এবং তা দীর্ঘস্থায়ী প্রভাব ফেলে তা-ই প্রকৃত মানব-কল্যাণ। তিনি মনে করেন, মানুষের অধিকার আর মর্যাদার প্রতিষ্ঠা ছাড়া মানব-কল্যাণ মূলত মানব অপমান ছাড়া আর কিছু নয়। এ প্রবন্ধটি পড়ার সময় যে বিষয়গুলো ভালো করে পড়তে হবে তা নিচে দেওয়া হলো। মানব-কল্যাণ বলতে আমাদের সমাজে প্রচলিত ধারণা, মানব-কল্যাণ সম্পর্কে প্রাবন্ধিকের ধারণা, প্রকৃত মানব-কল্যাণ যেভাবে হয়ে থাকে, তথাকথিত মানব-কল্যাণ যে কারণে ফলপ্রসূ হয় না। মানব-কল্যাণকে দীর্ঘস্থায়ী ও জনমুখী করার জন্য যেসব করণীয় রয়েছে বলে প্রাবন্ধিক মনে করেন, মানব-কল্যাণকর্মের সঙ্গে ধর্মীয় আবেগের সম্পর্ক, প্রচলিত মানব-কল্যাণমূলক কাজে যেভাবে সংকীর্ণ মনোভাবে পরিচয় প্রকাশ পায়। প্রকৃত মানব-কল্যাণ করার জন্য মানুষকে যে কারণে মর্যাদাপূর্ণ আসনে অধিষ্ঠিত করা প্রয়োজন ইত্যাদি।
অনুধাবন প্রশ্নগুলো :
১. মানব-কল্যাণ কথাটি অনেকখানি সস্তা আর মামুলি অর্থেই ব্যবহৃত হয়ে থাকে- কেন?
২. একমুষ্টি ভিক্ষ দেওয়ায় মনুষ্যত্ববোধ আর মানব-মর্যাদাকে ক্ষুণ্ন করা হয় কীভাবে? বুঝিয়ে লেখ।
৩. উপরের হাত সব সময় নিচের হাত থেকে শ্রেষ্ঠ- বলতে কী বোঝানো হয়েছে?
৪. দান বা ভিক্ষা গ্রহণকারীর দীনতার প্রতিফলনকে প্রাবন্ধিক বীভৎস বলেছেন কেন?
৫. মনুষ্যত্ব আর মানব-মর্যাদার দিক থেকে অনুগ্রহকারী আর অনুগৃহীতের মধ্যে আকাশ-পাতাল তফাত- কেন বলা হয়েছে?
৬. রাষ্ট্র জাতির যৌথ জীবন আর যৌথ চেতনারই প্রতীক- বলতে কী বোঝানো হয়েছে?
৭. জাতিকে আত্মমর্যাদাসম্পন্ন করে তোলাও রাষ্ট্রের এক বৃহত্তম দায়িত্ব- ব্যাখ্যা কর।
৮. কোনো রাষ্ট্র কিছুতেই আত্মমর্যাদাসম্পন্ন নাগরিক সৃষ্টি করতে পারে না এবং কেন? বুঝিয়ে লেখ।
৯. মনুষ্যত্বের অবমাননা যে ক্রিয়াকর্মের অবশ্যম্ভাবী পরিণতি তাকে কিছুতেই মানব-কল্যাণ নামে অভিহিত করা যায় না- ব্যাখ্যা কর।
১০. মানব-কল্যাণের উৎস মানুষের মর্যাদাবোধ বৃদ্ধি আর মানবিক চেতনা বিকাশের মধ্যেই নিহিত- বলতে কী বোঝানো হয়েছে?
১১. মানব-কল্যাণের প্রাথমিক সোপান বলতে কী বোঝানো হয়েছে? অথবা, মানব-কল্যাণের প্রাথমিক সোপান রচনাই সমাজ ও রাষ্ট্রের দায়িত্ব- ব্যাখ্যা কর।
১২. মানব-কল্যাণ স্বয়ম্ভু, বিছিন্ন, সম্পর্ক-রহিত হতে পারে না- বলতে কী বোঝানো হয়েছে?
১৩. উপলব্ধি ছাড়া মানব-কল্যাণ স্রেফ দান-খয়রাত- কেন বলা হয়েছে?
১৪. কাঙালি ভোজনকে মানব-মর্যাদার অবমাননাকর এক পদ্ধতি বলা হয়েছে কেন?
১৫. মানুষের জৈব অস্তিত্বের প্রতি সহানুভূতিশীল- বলতে কী বোঝানো হয়েছে?
১৬. মানুষের মনুষ্যত্বকে বাদ দিয়ে তার জৈব অস্তিত্বের প্রতি সহানুভূতিশীল হওয়া কেন ফলপ্রসূ মানব-কল্যাণ হতে পারে না?
১৭. মানব-কল্যাণের কুৎসিত ছবি বলতে কী বোঝানো হয়েছে?
১৮. বিভক্তিকরণের মনোভাব নিয়ে কারও কল্যাণ করা যায় না- বলতে কী বোঝানো হয়েছে?
১৯. সত্যিকার মানব-কল্যাণ মহৎ চিন্তা-ভাবনারই ফসল- বলতে কী বোঝানো হয়েছে?
২০. বঙ্কিমচন্দ্রের অবিস্মরণীয় উক্তিকে (তুমি অধম তাই... হইব না কেন) গভীর মূল্যবোধের উৎসারণ বলা হয়েছে কেন?
২১. রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর তার হিবার্ট বক্তৃতামালায় Relationship বলতে কী বোঝাতে চেয়েছেন? বর্ণনা কর।
২২. মানব-কল্যাণকে এক জাগতিক মানবধর্ম বলা হয়েছে কেন?
২৩. মানব-কল্যাণের সঙ্গে মানব-মর্যাদার তথা Human dignity-র সম্পর্ক অবিচ্ছেদ্য- কেন বলা হয়েছে?
২৪. পৃথিবীতে দুস্থ, অবহেলিত, বাস্তুহারা, স্বদেশ-বিতাড়িত মানুষের সংখ্যা দিন দিনই বেড়ে চলেছে কেন?
২৫. মানব-কল্যাণ কখন এবং কীভাবে মানব-অপমানে পরিণত হয়? ব্যাখ্যা কর।
২৬. কালের বিবর্তনে আমরা এখন বৃহত্তর মানবতার অংশ- বলতে কী বোঝানো হয়েছে?/ কেন বলা হয়েছে?
২৭. Go of humanity কে বিছিন্ন, বিক্ষিপ্ত কিংবা খণ্ডিতভাবে দেখা বা নেওয়া যায় না- কেন বলা হয়েছে?
২৮. স্রেফ সদিচ্ছার দ্বারা মানব-কল্যাণ সাধিত হয় না- বলতে কী বোঝানো হয়েছে?
২৯. সব কর্মের সঙ্গে শুধু যে ব্যক্তিগত সম্পর্ক থাকে তা নয়, তার সামাজিক পরিণতি তথা Social consequence ও অবিছিন্ন- বলতে কী বোঝানো হয়েছে?
৩০. এ সত্যটা অনেক সময় ভুলে থাকা হয়- কোন সত্য? ব্যাখ্যা কর।
৩১. আমাদের দৃষ্টিভঙ্গি পাল্টাতে হবে- প্রাবন্ধিক এ কথা বলেছেন কেন?
৩২. সমস্যার সমাধান করতে হবে নতুন দৃষ্টিকোণ থেকে- বলতে কী বোঝানো হয়েছে?
৩৩. সমস্যার মোকাবিলা করতে হবে সাহস ও বুদ্ধিমত্তার সঙ্গে- বলতে কী বোঝানো হয়েছে?
৩৪. এড়িয়ে গিয়ে কিংবা জোড়াতালি দিয়ে কোনো সমস্যারই সমাধান করা যায় না- বলতে কী বোঝানো হয়েছে?
৩৫. আমাদের বিশ্বাস মুক্তবুদ্ধির সহায়তায় সুপরিকল্পিত পথেই কল্যাণময় পৃথিবী রচনা সম্ভব- বলতে কী বোঝানো হয়েছে?
৩৬. মানব-কল্যাণ কখন ও কীভাবে মানব-মর্যাদার সহায়ক? বর্ণনা কর।
৩৭. প্রাবন্ধিক মানব-কল্যাণ বলতে কী বুঝিয়েছেন? ব্যাখ্যা কর।
৩৮. রাষ্ট্র আত্মমর্যাদাসম্পন্ন নাগরিক সৃষ্টি করতে ব্যর্থ হয় কীভাবে?
৩৯. রেডক্রস ইত্যাদি সেবাধর্মী সংস্থার সংখ্যা বৃদ্ধির সঙ্গে মানব-কল্যাণ কথাটি মানব-অপমানে পরিণত হওয়ার যোগসূত্র ব্যাখ্যা কর।
সৃজনশীল প্রশ্নের দিকগুলো
১. মানব-কল্যাণ সম্পর্কে প্রচলিত ধারণা।
২. মানব-মর্যাদা ক্ষুণ্ন হওয়ার কারণ।
৩. সামাজিক বিভক্তিকরণের নেতিবাচক প্রভাব।
৪. কল্যাণময় পৃথিবী গড়তে ব্যক্তির দায়বদ্ধতা/ রাষ্ট্রের দায়বদ্ধতা।
৫. মানব-কল্যাণে ইতিবাচক দৃষ্টিভঙ্গির প্রভাব।
৬. মানব-কল্যাণ সম্পর্কে মানুষের সংকীর্ণ দৃষ্টিভঙ্গি।
৭. মানব-কল্যাণ সাধন করতে মুক্ত বিচারবুদ্ধির প্রভাব।
৮. মানব-কল্যাণ ও মানব-অপমানের মধ্যে পার্থক্য।
৯. কল্যাণময় পৃথিবী রচনার অন্তরায় সম্পর্কে।
মূলদিক : অস্থায়ী নয়, বরং স্থায়ীভাবে (আত্মমর্যাদা সম্পন্ন) মানব-কল্যাণে প্রয়োজনীয় উদ্যোগ নেওয়ার আহ্বান এবং মুক্তবুদ্ধি চর্চার গুরুত্ব।
মাসি-পিসি
-মানিক বন্দ্যোপাধ্যায়
উপন্যাস ও ছোটগল্প লেখক হিসাবে মানিক বন্দ্যোপাধ্যায় (১৯০৮-১৯৫৬) বাংলা সাহিত্যে খ্যাতিমান। তার পৈতৃক বাড়ি ঢাকার বিক্রমপুরে। তার পিতৃপ্রদত্ত নাম প্রবোধকুমার বন্দ্যোপাধ্যায়। ডাকনাম মানিক। মাত্র আটচল্লিশ বছর তিনি বেঁচেছিলেন। অল্প সময়েই প্রচুর গল্প-উপন্যাস সৃষ্টি করেন। সেই সঙ্গে লিখেছেন কিছু কবিতা, নাটক, প্রবন্ধ ও ডায়েরি। বিজ্ঞানমনস্ক ও সমাজবাস্তবতার শিল্পী হিসাবেও স্বাক্ষর রেখেছেন। প্রান্তিক জনগোষ্ঠীর অন্তর্জীবনের অনুভূতির সার্থক রূপকার মানিক বন্দ্যোপাধ্যায়। তিনি তার সাহিত্যে সমাজ বাস্তবতার নির্মম ছবি তুলে ধরেছেন। তার সাহিত্য সত্তায় বৈজ্ঞানিক ভাবনা ও বাস্তবতার চেতনা বিশেষ তাৎপর্য লাভ করেছে। ‘মাসি-পিসি’ গল্পটি লেখকের ‘পরিস্থিতি’ নামক গল্পগ্রন্থের অন্তর্গত। স্বামীর নির্মম নির্যাতনের শিকার পিতৃমাতৃহীন এক তরুণী আহ্লাদির করুণ জীবনকাহিনি নিয়ে এ গল্পটি রচিত। এ গল্পের কেন্দ্রে আহ্লাদি অবস্থান করলেও গল্পটি আগাগোড়া আবর্তিত হয়েছে দুই প্রৌঢ়া বিধবা নারীকে কেন্দ্র করে। আহ্লাদির বাবার বোন পিসি আর মায়ের বোন মাসি অভাবের বিরুদ্ধে নিজেদের অস্তিত্ব রক্ষার পাশাপাশি বিরূপ পরিবেশ থেকে আহ্লাদিকে রক্ষার জন্য যে বুদ্ধিদীপ্ত ও সাহসী সংগ্রাম পরিচালনা করে, তাই এ গল্পকে তাৎপর্যপূর্ণ করে তুলেছে। দুর্ভিক্ষের গ্রাস থেকে নিজেদের বাঁচানোর বুদ্ধি থেকে অস্তিত্ব রক্ষার সংগ্রামে কাঁধে কাঁধ মিলিয়ে ঝাঁপিয়ে পড়ে মাসি-পিসি। নিজেদের জীবন বাঁচানো স্বপ্নে যুক্ত হয় আহ্লাদির আজ ও আগামীর জীবন। এ কারণে মাসি-পিসির সংগ্রাম শুধু নিজেদের জন্য নয়, আহ্লাদির জন্যও। যৌতুক লোভী স্বামীর হাত থেকে সন্তান সম্ভবা আহ্লাদিকে মানসিকভাবে শান্তিতে রাখা, গ্রামের প্রভাবশালীদের হাত থেকে নিজেদের রক্ষা করা, বুদ্ধির খেলায় লালসায় উন্মত্ত সমাজপতিদের হাত থেকে রেহাই পাওয়া এ গল্পের মূল বিষয় হয়ে উঠেছে।
‘মাসি-পিসি’ গল্পটি পড়ার সময় যে দিকগুলো ভালো করে খেয়াল করতে হবে-
জীবন থেমে থাকার নয়। অস্তিত্ব রক্ষার জন্য জীবনের বেগ অধিক গতিময়, ঝঞ্ঝাটপূর্ণ ও বিপদসংকুল। ‘মাসি-পিসি’ গল্পটি যেন তারই প্রকাশ। এ গল্পে জীবিকা নির্বাহে নারীদের কঠিন সংগ্রাম, বুদ্ধি প্রয়োগের মাধ্যমে মানবপশুদের হাত থেকে রক্ষা পাওয়া ও যৌতুকের লোভে নির্যাতিতা এ নারীর বেঁচে থাকার কাহিনি প্রকাশ পেয়েছে। গল্পটি সামাজিক প্রেক্ষাপটে লেখা। দু’বেলা দু’মুঠো ভাত খেয়ে বেঁচে থাকার সংগ্রামে নিমজ্জিত সমাজ, সমাজের মানুষের সুখ-দুঃখ, সমাজপতিদের লোভী চেহারা এখানে প্রাধান্য পেয়েছে। ‘মাসি-পিসি’ গল্পে উল্লেখিত সমাজ বাস্তবতা, আহ্লাদির প্রতি জগুর দৃষ্টিভঙ্গি ও তাকে নির্যাতনের চিত্র, মাসি-পিসির সংগ্রামে নিয়োজিত হওয়ার বাস্তব ভাবনা ও তার বাস্তবায়ন, সম্পর্কের শুরুতে মাসি ও পিসির মধ্যে দ্বন্দ্ব লাগার কারণ, দুর্ভিক্ষের ভয়াবহতার বর্ণনা গভীরভাবে উপলব্ধি করতে হবে। গোকুল, কৈলাশ ও কানায়ের মতো ব্যক্তিদের স্বার্থের দিকটি বিশ্লেষণ করতে হবে। আহ্লাদিকে সান্ত্বনা দেয়ার ক্ষেত্রে মাসি-পিসির দূরদর্শিতা, কৈলাসের চালাকি ধরতে পারা, রাত্রিতে যুদ্ধের সাজে সজাগ থাকা, শুধু বেঁচে থাকা নয়- বরং অর্থনৈতিক ভাবে টিকে থাকার যে বার্তা গল্পকার দিয়েছেন তা গভীরভাবে বুঝতে হবে।
অনুধাবন প্রশ্ন
১. কৈলাশ কেমন লোক ছিল?
২. মাসি-পিসি সালঁতির গতি ঠেকায় কেন?
৩. ‘অনেকটা পথ যেতে হবে’- বলতে কী বোঝানো হয়েছে?
৪. ‘কথাবার্তা সেসব শুনতে পায় সহজেই’- ব্যাখ্যা কর।
৫. ‘খুনশুটি রাখো দিকি কৈলেশ তোমার, মোদ্দাকথাটাকি তাই কও’- ব্যাখ্যা কর।
