Logo
Logo
×

টিউটোরিয়াল

এসএসসি পরীক্ষার্থীদের প্রস্তুতি

বাংলা প্রথমপত্র * ইসলাম ও নৈতিক শিক্ষা

বাংলা প্রথমপত্র

Icon

ড. সনজিত পাল

প্রকাশ: ০১ আগস্ট ২০২৪, ১২:০০ এএম

প্রিন্ট সংস্করণ

সিনিয়র শিক্ষক, সেন্ট গ্রেগরী হাইস্কুল অ্যান্ড কলেজ, লক্ষ্মীবাজার, ঢাকা

মানুষ মুহম্মদ (স.)

-মোহাম্মদ ওয়াজেদ আলী

সাহিত্যিক মোহাম্মদ ওয়াজেদ আলী (১৮৯৬-১৯৫৪) পেশায় ছিলেন একজন সাংবাদিক। তিনি বাংলা ও ইংরেজি অনেক পত্রিকার সঙ্গে যুক্ত ছিলেন। তিনি খুব পরিচ্ছন্ন চিন্তা ও যুক্তিবাদী মন নিয়ে সবকিছুর বিচার করতেন। সহজ সরল প্রকাশভঙ্গি তার রচনার অন্যতম বৈশিষ্ট্য। তার গদ্যশৈলী ঋজু, রচনা সাবলীল। মোহাম্মদ ওয়াজেদ আলী রচিত ‘মানুষ মুহম্মদ (স.)’ প্রবন্ধটি লেখকের মরু ভাস্কর গ্রন্থ থেকে নেয়া হয়েছে। হজরত মুহম্মদ (স.)-এর মানবিক গুণাবলি এ প্রবন্ধে বিশ্লেষণ করা হয়েছে। হজরত ছিলেন মানুষের নবি। তাই মানুষের পক্ষে যা আচরণীয় তিনি তারই আদর্শ প্রতিষ্ঠা করে গেছেন। তিনি বিপুল ঐশ্বর্য, ক্ষমতা ও মানুষের অগাধ ভালোবাসা ও শ্রদ্ধার মধ্যে থেকেই একজন সাধারণ মানুষের মতো জীবনযাপন করে গেছেন। ক্ষমতা ও মহত্ত্ব, প্রেম ও দয়া তাঁর অজস্র চারিত্রিক গুণের মধ্যে প্রধান। তিনি সারা জীবন মানব জাতির কল্যাণের জন্য নিয়োজিত ছিল। আল্লাহর নির্দেশে ইসলাম প্রচার করতে গিয়ে তিনি যে নির্মম নির্যাতনের শিকার হয়েছেন তা বিশ্বে বিরল। যারা তাঁর প্রতি অত্যাচার করেছে, তিনি তাদের ক্ষমা করে দিয়েছেন। মানুষের শ্রেষ্ঠ আদর্শ হিসেবে তিনি তাঁর জীবন রূপায়িত করে তুলেছিলেন। তাঁর সাধনা, ত্যাগ, কল্যাণচিন্তা ছিল বিশ্বের সমগ্র মানুষের জন্য অনুকরণীয়। হজরত মুহম্মদ (স.)-এর মৃত্যুর পর তাঁর অনুসারীদের মধ্যে যে বেদনা ও হতাশা দেখা দিয়েছিল তা প্রশমন করার জন্য হজরত আবুবকর (রা.) মহানবি (স.)-এর জীবনের বৈশিষ্ট্য তুলে ধরে প্রচণ্ড শোককে শান্ত করেন। মানুষ হিসেবে হজরতের বৈশিষ্ট্যের আলোচনাই এ প্রবন্ধের বিষয়।

‘মানুষ মুহম্মদ (স.)’ প্রবন্ধের যে দিকগুলো ভালো করে পড়তে হবে :

‘মানুষ মুহম্মদ (স.) একটি জীবনীমূলক প্রবন্ধ। এ জাতীয় রচনায় মহান ব্যক্তিদের জীবনাচরণ অত্যন্ত নান্দনিক ভাষায় প্রকাশ করা হয়। সাধারণত মহান ব্যক্তিদের জীবনাদর্শ সাধারণ মানুষের কাছে অনুসরণীয় করার জন্য লেখক তাঁর জীবনের বিভিন্ন পর্যায় বা জীবন সংগ্রামের নানা দিক বর্ণনা করেছেন। এ প্রবন্ধে মহানবি কিংবা আল্লাহর রাসূল হিসাবে নয়, একজন মানুষ হিসাবে হজরত মুহম্মদ (স.)-এর জীবনাচরণ তুলে ধরা হয়েছে। এ প্রবন্ধটি পড়ার সময় যে দিকগুলো গভীরভাবে পড়তে হবে তা দেওয়া হলো। বীরবাহু ওমর পাগলের মতো আচরণ করেন কেন? আবুবকর কেন ও কীভাবে মানুষকে রাসূলের প্রতি শ্রদ্ধা জানানোর জন্য সচেতন করলেন? আবুবকর কেন আল্লাহর বাণী বা কুরআনের বাণী বারবার স্মরণ করে সমবেত জনতার উদ্দেশ্যে বলেন? মহানবির মানবীয় গুণাবলি কী কী? হজরতের বাহ্যিক সৌন্দর্যের বর্ণনা, তায়েফে তাঁর ইসলাম প্রচারের বর্ণনা, ইসলাম প্রচারে তাঁর ত্যাগ-তিতিক্ষা, ধৈর্য ও ক্ষমাশীলতা, সরল জীবন-যাপন, নিজের ত্রুটি স্বীকার করার মহত্ত্ব, সত্য প্রকাশে অবিচল মনোভাব, নিজের ক্ষুদ্রতাবোধ প্রকাশ কীভাবে হয়েছে? স্বামীর মৃত্যুতে আয়েশা (রা.) শোকের মাতম কীভাবে প্রকাশ হয়? এ প্রবন্ধে উল্লিখিত যুদ্ধক্ষেত্রের নাম ও ভিন্ন ভিন্ন যুদ্ধক্ষেত্রে ঘটে যাওয়া ঘটনা জানতে হবে।

অনুধাবন প্রশ্ন:

১. মদিনায় আঁধার ঘনাইয়া আসিল কেন?

২. ‘যে বলিবে... মাথা যাইবে’- কেন বলা হয়েছে?

৩. আবুবকর গম্ভীরভাবে জনতার মাঝে দাঁড়ালেন কেন?

৪. ‘মুহম্মদ (স.) একজন রাসূল বৈ আর কিছু নন’- বলতে কী বোঝানো হয়েছে? / কেন বলা হয়েছে?

৫. তাঁহারই দিকে সকলের মহাযাত্রা- বলতে কী বোঝানো হয়েছে?

৬. আবুবকর মূর্ছিত মুসলিমকে কোন কথা এবং কেন বুঝাইয়া দিলেন?

৭. ‘মুহম্মদ মানুষের মন...গুণাবলি দ্বারা’- ব্যাখ্যা কর।

৮. ‘বংশগৌরব হজরতের সচেতন চিত্তে মুহূর্তের জন্যও স্থান লাভ করে নাই’- বলতে কী বোঝানো হয়েছে?

৯. মুহম্মদ নরনারীর একান্ত প্রিয় হয়েছিলেন কীভাবে?

১০. বিবি খাদিজা মুহম্মদের প্রতি আকৃষ্ট হয়েছিলেন কেন?

১১. ‘হজরতের রূপলাবণ্য ছিল অপূর্ব, অসাধারণ’- বলতে কী বোঝানো হয়েছে?

১২. হজরত দেখতে কেমন ছিল- বর্ণনা কর।/ হজরতের বাহ্যিক সৌন্দর্যের বর্ণনা দাও।

১৩. ‘সত্যের নিবিড় সাধনায় হযরতের চরিত্র মধুময় হইয়া উঠিয়াছিল’- বলতে কী বোঝানো হয়েছে?

১৪. ‘অকুতোভয় বিশ্বাসে তিনি অজেয় হইয়াছিলেন’- বলতে কী বোঝানো হয়েছে?

১৫. ‘সত্যে তিনি বজ্রের মতো কঠিন, পর্বতের মতো অটল ছিলেন’- বলতে কী বোঝানো হয়েছে?

১৬. ‘তথাপি পাপী মানুষকে... অন্তরে উদিত হয় নাই’- ব্যাখ্যা কর।

১৭. ‘এদের জ্ঞান দাও প্রভু, এদের ক্ষমা কর’- কেন বলা হয়েছে? / মহানবি এ প্রার্থনা করেছেন কেন?

১৮. ‘তায়েফে মহানবি সত্য প্রচারে গিয়ে কোন ধরনের অবস্থায় পতিত হন’- বর্ণনা কর।

১৯. ‘এই পৃথিবীতে আমি ইসলামের বাহন, সত্যের প্রচারক’- কেন বলা হয়েছে?

২০. ‘তোমার পতাকা যদি...শক্তি আমায় দাও’- বলতে কী বোঝানো হয়েছে?

২১. হজরত মদিনায় চলে গেলেন কেন?

২২. ‘ক্ষুধার্ত ব্যাঘ্রের মতো হিংস্র শত শত ঘাতক পাঠানো হইল’- কেন?

২৩. খালিদের সঙ্গে কারা এবং কেন হাঙ্গামা বাঁধাইয়া দিল?

২৪. ‘আজ তোমরা সবাই স্বাধীন, সবাই মুক্ত’- ব্যাখ্যা কর।

ইসলাম ও নৈতিক শিক্ষা

মো. মুজাম্মেল হক

সিনিয়র শিক্ষক

মিরপুর বাংলা উচ্চ মাধ্যমিক বিদ্যালয়, ঢাকা

শরিয়তের উৎস

প্রশ্ন. ‘নিশ্চয় আমি মানুষকে সুন্দর গঠনে সৃষ্টি করেছি’- বুঝিয়ে লেখ।

উত্তর : ‘নিশ্চয়ই আমি মানুষকে সুন্দরতম গঠনে সৃষ্টি করেছি’- সূরা আত-তিনের এ আয়াতটির মাধ্যমে মহান আল্লাহতায়ালা মানুষের প্রতি তার প্রদত্ত নিয়ামতের কথা স্মরণ করিয়ে দিয়েছেন।

আল্লাহর সৃষ্টি জগতের মধ্যে মানুষের আকৃতি সবচেয়ে সুন্দর করেছেন। সূরা আত-তিনের চতুর্থ আয়াতে তিনি তাই উল্লেখ করেছেন। এখানে আল্লাহ মানুষকে অত্যন্ত সুন্দর সৃষ্টি হিসাবে ঘোষণা করেছেন। মানুষ সৎকাজ ও ইবাদতে নিযুক্ত প্রশ্ন : সূরা ‘আল-মাউন’-এ বর্ণিত মুনাফিকদের বৈশিষ্ট্যগুলো উল্লেখ কর।

উত্তর : সূরা-আল মাউন আল কুরআনের ১০৭তম সূরা। এর আয়াত সংখ্যা ৭টি।

সূরা আল মাউনের আলোকে মুনাফিকদের কয়েকটি বৈশিষ্ট্য নিম্নে দেয়া হল-

১. মুনাফিকরা মুসলমানদের দেখানোর জন্য সালাত আদায় করে।

২. তারা এতিমদের প্রতি কঠোর, এতিমদের ধন সম্পদ জোর করে দখল করে।

৩. এতিম দুস্থ দরিদ্রের সাহায্য তো করেই না বরং এ ব্যাপারে অন্যদের উৎসাহ দেয় না।

৪. গৃহস্থালির প্রয়োজনীয় ছোটখাটো বস্তু অন্যকে দেয় না।

প্রশ্ন : সূরা আল মাউনের বর্ণিত সাহুন এবং মাউন বলতে কী বোঝায়?

উত্তর : সূরা আল মাউনে উল্লেখ আছে সাহুন যার অর্থ উদাসীন অবহেলাকারী। মূলত সাহুন বলতে যারা নামাজের ব্যাপারে উদাসীন তাদের বোঝানো হয়েছে। সূরা মাউনের মাউন শব্দটির অর্থ গৃহস্থালির ছোটখাটো প্রয়োজনীয় বস্তু নিত্য ব্যবহার্য বস্তু। এর দ্বারা বোঝানো হয়েছে, মুনাফিকরা তাদের গৃহস্থালির প্রয়োজনীয় ছোটখাটো বস্তুও কাউকে দেয় না। আর এদের জন্য রয়েছে মহাদুর্ভোগ।

প্রশ্ন : হাদিসকে আল কুরআনের ব্যাখ্যাস্বরূপ বলা হয় কেন?

উত্তর : কুরআনের বর্ণিত বিধানবলি বিস্তারিতভাবে হাদিসে বর্ণনা করা হয়েছে বলে একে আল কুরআনের ব্যাখ্যাস্বরূপ বলা হয়।

আল্লাহতায়ালা পবিত্র কুরআনে শরিয়তের যাবতীয় আদেশ নিষেধ বিধি-বিধান ও মূলনীতি অত্যন্ত সংক্ষিপ্তভাবে বর্ণনা করেছেন। অতঃপর মহানবি (সা.) এসব বিধি-বিধান আল্লাহর নির্দেশে বিস্তারিতভাবে বর্ণনা করেছেন। অর্থাৎ হাদিসে কুরআনের ব্যাখ্যাই প্রদান করা হয়েছে।

প্রশ্ন : ‘কুরআনের পরেই হাদিসের স্থান’- বুঝিয়ে লেখ।

উত্তর : হাদিসের মাধ্যমে কুরআন সুস্পষ্টভাবে বোঝা যায়। এ কারণে কুরআনের পরই হাদিসের স্থান। কুরআন মজিদে বিভিন্ন বিষয়ের সংক্ষিপ্ত মূলনীতি বর্ণনা করা হয়েছে আর হাদিসে এসব বিধি-বিধান ও বিষয়গুলোর ব্যাখ্যা-বিশ্লেষণ করা হয়েছে। যেমন সালাত আদায়ের কথা কুরআনে বলা থাকলেও কীভাবে আদায় করতে হবে তা বলা নেই। সালাতের নিয়ম আমরা হাদিস থেকেই পাই। অর্থাৎ হাদিস হলো কুরআনের পরিপূরক। এ কারণেই কুরআনের পরই হাদিসের স্থান।

প্রশ্ন : হিজরি তৃতীয় শতককে হাদিস সংকলনের স্বর্ণযুগ বলা হয় কেন?

উত্তর : হিজরি তৃতীয় শতককে হাদিসের অনেক গ্রন্থ সংকলিত হয়েছিল। তাই এ শতককে হাদিস সংকলনের স্বর্ণযুগ বলা হয়। মহানবী (সা.)-এর জীবদ্দশাতেই হাদিস সংরক্ষণ শুরু হয়েছিল। কিন্তু হাদিস গ্রন্থবদ্ধ সংকলন শুরু হয়নি। উমাইয়া খেলাফতকালে হজরত ইমর ইবনে আব্দুল আজিজ (র.) প্রথম হাদিস সংকলনের উদ্যোগ নেন। পরে হিজরি ৩য় শতকে হাদিসের সবচেয়ে বিশুদ্ধ ছয়টি কিতাব সংকলিত হয়। এগুলোকে একত্রে সিহাহ সিত্তাহ বলা হয়। হিজরি ৩য় শতকে হাদিসের এ গ্রন্থগুলো সংকলিত হওয়ার এ শতককে হাদিস সংকলনের স্বর্ণযুগ বলা হয়।

Logo

সম্পাদক : আবদুল হাই শিকদার

প্রকাশক : সালমা ইসলাম