এসএসসি পরীক্ষার্থীদের বাংলা প্রথমপত্র
ড. সনজিত পাল
প্রকাশ: ২২ আগস্ট ২০২৪, ১২:০০ এএম
প্রিন্ট সংস্করণ
|
ফলো করুন |
|
|---|---|
সিনিয়র শিক্ষক, সেন্ট গ্রেগরী হাইস্কুল অ্যান্ড কলেজ লক্ষ্মীবাজার, ঢাকা
নিমগাছ
-বনফুল
বলাইচাঁদ মুখোপাধ্যায়ের (১৮৯৯-১৯৭৯) ছদ্মনাম বনফুল। বনফুল কর্মজীবন শুরু করেন মেডিকেল অফিসার হিসাবে। ১৯১৮ সালে ‘শনিবারের চিঠি’তে ব্যঙ্গ-কবিতা ও প্যারোডি লিখে সাহিত্য অঙ্গনে তিনি প্রবেশ করেন। ‘প্রবাসী’ পত্রিকায় তিনি একপাতা-আধপাতার গল্প লিখতেন। তার গল্পগুলো আকারে ক্ষুদ্র, অথচ বক্তব্যে তাৎপর্যপূর্ণ। বাস্তবজীবনে ও জ্ঞান-বিজ্ঞানের বিচিত্র উপাদান তার গল্প ও উপন্যাসে নিপুণভাবে প্রকাশিত হয়েছে। ‘নিমগাছ’ গল্পটি লেখকের অদৃশ্যলোক গ্রন্থের অন্তর্গত। এ গল্পের সংক্ষিপ্ত অবয়বের মধ্যে লেখক বিপুল বক্তব্য উপস্থাপনের যে দক্ষতার পরিচয় দিয়েছেন তা বাংলা সাহিত্যে বিরল। নিমগাছের বর্ণনা, এর পাতা, বাকল, ছায়ার ইত্যাদিরা বাহ্যিক উপকারিতা কবিতার মতো বর্ণনা করা হয়েছে এ গল্পে। কবিরাজ তার চিকিৎসার কাজে, সাধারণ মানুষ প্রাত্যহিক প্রয়োজনে নিমগাছকে অনবরত ব্যবহার করে থাকে। কিন্তু কেউ এ গাছের সামান্যও যত্ন নেয় না। একজন কবি একদিন নিমগাছের গুণ ও রূপের প্রশংসা করে। নিমগাছের ভালো লাগে ওই লোককে এবং সে তার সঙ্গে চলে যেতে চায়। কিন্তু মাটির গভীরে তার শিকড়। গাছটি যেতে পারে না। আসলে গাছ তো চলতে পারে না। এটি একটি প্রতীকী গল্প। এ গল্পের ম্যাজিক-বাক্য হলো শেষটি, যেখানে লেখক পুরে দিয়েছেন সীমাহীন কথার আখ্যান।
‘নিমগাছ’ গল্পের যে দিকগুলো ভালো করে পড়তে হবে-
বনফুল রচিত ‘নিমগাছ’ একটি ছোটগল্প। ছোটগল্পের সংজ্ঞা, বৈশিষ্ট্য ও কাঠামো সবই এ গল্পে পূর্ণ ও সার্থকরূপে বিদ্যমান। এ গল্পটিতে নিমগাছের প্রতীকে লেখক একটি পরিবারের গৃহকর্ত্রীর জীবনসংগ্রাম ও তার অনুভূতি, সংসারের সার্বিক কাছে নিজেকে যুক্ত করার ক্ষেত্র কিংবা তাকে কেন্দ্র করে সংসারে প্রাত্যহিক কাজের আবর্তন, প্রাপ্তি-অপ্রাপ্তি, মনের ক্ষোভ ও আকাঙ্ক্ষা গল্পকার প্রকাশ করেছেন। তাই এ গল্পটি পড়ার সময় কতগুলো বিষয় খেয়াল করতে হবে। গল্পকার নিমগাছের উপকারিতা বর্ণনায় কোন কোন দিক তুলে ধরছেন? বাড়িতে নিমগাছের অবস্থান, গাছকে কেন্দ্র করে বিজ্ঞলোকদের অনুভূতি, গাছের প্রতি অবজ্ঞার কারণ জানতে হবে। কবি ও কবিরাজের মধ্যে পার্থক্য। কবি নিমগাছের কী কী দেখে প্রশংসা করলেন এবং কেন করলেন? কবির প্রশংসা শুনে নিমগাছের প্রতিক্রিয়া কী হলো? কেন নিমগাছ নিজের ইচ্ছা অনুসারে কাজ করতে পারল না? মাটির গভীরে শিকড় চলে যাওয়া একটি সংসারে আবদ্ধ গৃহকর্ত্রীর কোন দিক প্রকাশ করেছে? গল্পকারের ম্যাজিক বাক্যের তাৎপর্য কীভাবে উপলব্ধি করা যায়? ম্যাজিক বাক্যে বর্ণিত নিপুণা লক্ষ্মীবউটার সঙ্গে নিমগাছের সাদৃশ্যের ক্ষেত্রগুলো চিহ্নিত করা।
অনুধাবন প্রশ্ন :
১. চর্মরোগের অব্যর্থ মহৌষধ- বলতে কী বোঝানো হয়েছে?
২. কবিরাজরা প্রশংসায় পঞ্চমুখ- কেন? বলতে কী বোঝানো হয়েছে?
৩. বাড়ির পাশে নিমগাছ গজালে বিজ্ঞরা খুশি হন কেন?
৪. নিমের হাওয়া ভালো- বলতে কী বোঝানো হয়েছে?
৫. শান দিয়ে বাঁধিয়ে দেওয়াকে আবর্জনা বলা হয়েছে কেন?
৬. মুগ্ধ দৃষ্টিতে চেয়ে রইল নিমগাছের দিকে- কে এবং কেন?
৭. কবি ও কবিরাজের মধ্যে পার্থক্য বর্ণনা কর।
৮. নক্ষত্র নেমে এসেছে যেন নীল আকাশ থেকে সবুজ সায়রে- ব্যাখ্যা কর।
৯. লোকটার সঙ্গে/ কবির সঙ্গে যাওয়ার জন্য নিমগাছের ইচ্ছা হলো কেন?
১০. নিমগাছটা কেন কবির সঙ্গে যেতে পারল না?
১১. মাটির ভেতরে শিকড় অনেক দূরে চলে গেছে- বলতে কী বোঝানো হয়েছে?
১২. আবর্জনার স্তূপের মধ্যে নিমগাছটা দাঁড়িয়ে রইল- কেন?
১৩. ‘ওদের বাড়ির গৃহকর্ম-নিপুণা লক্ষ্মীবউটার ঠিক এক দশা’- বলতে কী বোঝানো হয়েছে?
১৪. ছোটগল্পের সংজ্ঞা/ বৈশিষ্ট্য লেখ।
সৃজনশীল প্রশ্নের দিকগুলো :
১. নিমগাছের গুণের বর্ণনা
২. নিমগাছের বিভিন্ন অংশের উপকারিতা বর্ণনা।
৩. মানবজীবনে নিমগাছের উপকারিতা।
৪. কবি ও কবিরাজের মধ্যে কাজের পার্থক্য।
৫. নিমগাছের সীমাদ্ধতা
৬. নিমগাছ সম্বন্ধে মানুষের স্বাভাবিক দৃষ্টিভঙ্গি।
৭. সংসারের জালে গৃহবধূর অবস্থা।
৮. ছোটগল্প হিসাবে নিমগাছের সার্থকতা।
৯. নিমগাছের কবির সঙ্গে যাইতে না পারা।
১০. মানুষের কল্যাণে নিমগাছের নিজেকে বিলিয়ে দেয়া।
মূলদিক : নিমগাছের প্রতীকে সংসারে গৃহবধূর অসহায়
অবস্থা বর্ণনা।
