এইচএসসি পরীক্ষার্থীদের আইসিটি
মো. ফয়সাল আহম্মেদ ফরাজী
প্রকাশ: ১৮ সেপ্টেম্বর ২০২৪, ১২:০০ এএম
প্রিন্ট সংস্করণ
|
ফলো করুন |
|
|---|---|
সহকারী উপাধ্যক্ষ ও আইসিটি প্রভাষক
ড্যাফোডিল ইন্টারন্যাশনাল কলেজ, চাঁদপুর
বায়োমেট্রিক্স
বায়োমেট্রিক্স (Biometrics)
গ্রীক শব্দ ‘bio’ (যার অর্থ Life বা জীবন) ও ‘metric’ (যার অর্থ পরিমাপ করা) থেকে উৎপত্তি হয়েছে বায়োমেট্রিক্স (Biometrics)। বায়োমেট্রিক্স হলো বায়োলজিক্যাল ডেটা মাপা এবং বিশ্লেষণ করার প্রযুক্তি। অর্থাৎ বায়োমেট্রিক্স হলো এমন একটি প্রযুক্তি যেখানে কোনো ব্যক্তির শারীরবৃত্তীয় অথবা আচরণগত বৈশিষ্ট্যের ওপর ভিত্তি করে ব্যক্তিকে অদ্বিতীয়ভাবে চিহ্নিত বা শনাক্ত করা হয়। বায়োমেট্রিক্স পদ্ধতি যিশুখ্রিষ্টের জন্মের প্রায় ২৯০০ বছর পূর্ব থেকে ব্যবহৃত হয়ে আসছে। ১৪শ শতকে চীনে ব্যবসায়ীরা শিশুদের শনাক্ত করার জন্য তাদের হাতের তালু ও পায়ের ছাপ ব্যবহার করত। ১৯শ শতকের শেষের দিকে আঙুলের ছাপ ব্যবহার শুরু হয়। মূলত শত্রুদের শনাক্ত করতে বায়োমেট্রিক্স প্রযুক্তি ব্যবহৃত হতো। বিশেষ করে ফ্রান্স, ব্রিটেন এবং আমেরিকাতে এর প্রচলন শুরু হয়। ১৯৮০-এর দশকে বায়োমেট্রিক্স প্রযুক্তির ব্যাপক প্রসার ঘটেছে। মানুষের শারীরিক বৈশিষ্ট্য শনাক্ত করতে বায়োমেট্রিক্স প্রযুক্তি ব্যবহৃত হয়। কম্পিউটার বিজ্ঞানে বায়োমেট্রিক্সকে ব্যক্তি শনাক্তকরণ এবং কোন সিস্টেমে প্রবেশাধিকার নিয়ন্ত্রণের কৌশল হিসাবে ব্যবহার করা হয়। এ পদ্ধতির মাধ্যমে বায়োমেট্রিক্স ডিভাইসগুলো ব্যবহারকারীদের কোনো প্রোগ্রাম, সিস্টেম বা কক্ষ ব্যবহারের অনুমতি দিয়ে থাকে। সন্দেহভাজন ব্যক্তিদের তালিকা থেকে কাউকে আলাদাভাবে চিহ্নিত করার কাজেও বায়োমেট্রিক্স পদ্ধতি ব্যবহার করা হয়।
বায়োমেট্রিক্সের প্রকারভেদ (Classification of Biometrics)
দেহের গঠন ও আচরণগত বৈশিষ্ট্যের ওপর ভিত্তি করে বায়োমেট্রিক্স পদ্ধতি বিভিন্ন প্রকার হতে পারে। যেমন-
ক. দেহের গঠন ও শারীরবৃত্তীয় বৈশিষ্ট্যের বায়োমেট্রিক্স পদ্ধতি
১. মুখ (Face) : মুখ বা চেহারার বৈশিষ্ট্য (Facial characteristics) বিশ্লেষণ করা।
২. ফিঙ্গারপ্রিন্ট (Fingerprint) : প্রত্যেকের আলাদা একক বৈশিষ্ট্যপূর্ণ হাতের ছাপ বিশ্লেষণ করা।
৩. হ্যান্ড জিওমেট্রি (Hand Geometry) : হাতের গঠন (Shape) এবং আঙ্গুলের দৈর্ঘ্যরে মাপ বিশ্লেষণ করা।
৪. আইরিস (Iris) : চোখের মণির চারিপার্শ্বে বেষ্টিত রঙিন বলয় (Colored ring) বিশ্লেষণ করা।
৫. রেটিনা (Retina) : চোখের পেছনের অক্ষিপটের (রেটিনার) মাপ বিশ্লেষণ করা।
৬. শিরা (Vein) : হাত এবং কব্জির শিরার প্যাটার্ন বিশ্লেষণ করা।
৭. ডিএনএ (DNA) : কোষের মধ্যে অবস্থিত ডিএনএ বিশ্লেষণ করে ডিএনএ প্রোফাইলিং তৈরি করা।
খ. আচরণগত বৈশিষ্ট্যের বায়োমেট্রিক্স পদ্ধতি
১. কণ্ঠস্বর (Voice) : প্রত্যেকের কণ্ঠের ধ্বনির বৈশিষ্ট্য, সুরের উচ্চতা, সুরের মূর্ছনা, স্পন্দনের দ্রুততা ইত্যাদি বিশ্লেষণ করা।
২. সিগনেচার (Signature) : হাতের স্বাক্ষর বিশ্লেষণ করা।
৩. টাইপিং কি স্ট্রোক (Typing Keystroke) : নির্দিষ্ট কোনো পাসওয়ার্ড যা টাইপ করে এন্ট্রি করা হয় এবং বিশ্লেষণ করা।
বায়োমেট্রিক্সের ব্যবহার (Application of Biometrics)
বর্তমানে নিরাপত্তার কাজে বায়োমেট্রিক্স পদ্ধতি ব্যাপকভাবে ব্যবহৃত হচ্ছে। এ প্রযুক্তি সাধারণত তিন ধরনের কাজে ব্যবহৃত হয়। যথা-
১. কোনো ব্যক্তি শনাক্তকরণ (Identification) কাজে
২. সত্যতা যাচাই (Verification) কাজে
৩. প্রবেশাধিকার নিয়ন্ত্রণ (Entry control) [চলবে]
