Logo
Logo
×

টিউটোরিয়াল

এইচএসসি ২০২৫ : তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি

Icon

মো. ফয়সাল আহম্মেদ ফরাজী

প্রকাশ: ৩০ অক্টোবর ২০২৪, ১২:০০ এএম

প্রিন্ট সংস্করণ

সহকারী উপাধ্যক্ষ ও আইসিটি প্রভাষক

ড্যাফোডিল ইন্টারন্যাশনাল কলেজ, চাঁদপুর

বায়োমেট্রিক্স

[পূর্বে প্রকাশিত অংশের পর]

আইরিস ও রেটিনা স্ক্যান বায়োমেট্রিক্সের সুবিধা

১. অত্যন্ত হাই অ্যাকিউরিস পাওয়া সম্ভব। ২. এ প্রত্যঙ্গগুলোকে সহজে নকল করা সম্ভব নয়। ৩. মৃত ব্যক্তির রেটিনা দ্রুত পচন ধরে বিধায় একে বায়োমেট্রিক্স পদ্ধতিতে ব্যবহার করে অপরাধমূলক কাজ করা সম্ভব নয়। ৪. এটি মাত্র ৫ মিনিটেই ব্যক্তি শনাক্তকরণের কাজটি সম্পন্ন করতে পারে।

আইরিস ও রেটিনা স্ক্যান বায়োমেট্রিক্সের অসুবিধা

১. অত্যন্ত ব্যয়বহুল প্রযুক্তি। ২. প্রচুর মেমোরি প্রয়োজন হয়। ৩. অনধিকার প্রবেশমূলক প্রযুক্তি। ৪. চোখের জন্য কিছুটা ক্ষতিকর।

আইরিস ও রেটিনা স্ক্যান বায়োমেট্রিক্সের ব্যবহার

১. বিভিন্ন আন্তর্জাতিক সরকারি সংস্থা যেমন- এফবিআই, নাসাতে ব্যক্তি শনাক্তকরণে ব্যবহৃত হয়ে থাকে।

২. সম্প্রতি কারাগার, এটিএম বুথ প্রভৃতিতে ভেরিফিকেশনে এ পদ্ধতি ব্যবহৃত হয়ে থাকে।

৩. মিলিটারিতে এ পদ্ধতি ব্যবহৃত হয়ে থাকে।

ডিএনএ রিকগনিশন সিস্টেম বা ডিএনএ ফিঙ্গারপ্রিন্ট

ডিএনএ এর পূর্ণরূপ হলো ডিওক্সিরাইবো নিউক্লিক এসিড যা কোষের নিউক্লিয়াসে অবস্থিত। প্রতিটি ব্যক্তির কোষস্থ ডিএনএ এর গঠন ও একক অদ্বিতীয়। মানুষের দেহের কোষে অবস্থিত ডিএনএ এর পার্থক্যের ভিত্তিতে ব্যক্তিকে অদ্বিতীয়ভাবে শনাক্ত করা যায়। “কোনো মানুষের দেহের কোষের মধ্যে অবস্থিত ডিএনএ বিশ্লেনের মাধ্যমে একটি প্রোফাইল বা প্রতিকৃতি তৈরি করে উক্ত ব্যক্তিকে অদ্বিতীয়ভাবে শনাক্তকরণ পদ্ধতিকে ডিএনএ প্রোফাইলিং বা ডিএনএ ফিঙ্গারপ্রিন্ট বলে।”

১৯৮৬ সালে ইংল্যান্ডের লিসেস্টার বিশ্ববিদ্যালয়ের বিজ্ঞানী অ্যালেক জেফ্রিস ফরেনসিক গবেষণায় এক অভূতপূর্ব পরিবর্তন আনলেন ডিএনএ প্রোফাইলিং আবিষ্কারের মাধ্যমে। ল্যাবরেটরিতে কাজ করার সময় তিনি একটি পরিবারের বিভিন্ন সদস্যের ডিএনএ এর এক্স-রে ফিল্মের মধ্যে মিল খুঁজে পান, যা তার ডিএনএ প্রোফাইলিং পদ্ধতি আবিষ্কারের মূল ভিত্তি। বর্তমানে এ পদ্ধতি National DNA Database এ ব্যাপকভাবে কাজে লাগান হচ্ছে। ২০০৬ সালে প্রতিষ্ঠিত National Forensic DNA Profiling Laboratory হলো বাংলাদেশের একমাত্র ডিএনএ টেস্ট করার প্রতিষ্ঠান।

ডিএনএ ফিঙ্গারপ্রিন্ট যেভাবে কাজ করে

বিভিন্ন মানুষের ডিএনএ প্রোফাইলে ৯৯.৯৯% মিল থাকলেও এর ০.১% প্রত্যেক মানুষের জন্য ইউনিক। ডিএনএ ফিঙ্গারপ্রিন্টে এর ০.১% স্বাতন্ত্র্যই ব্যক্তি শনাক্তকরণে ব্যবহৃত হয়ে থাকে।

ডিএনএ প্রোফাইলের মুখ্য উপাদান ডিএনএ প্রধানত কোনো অপরাধের স্থান (যেমন : খুনের স্থল, কোনো জায়গায় পড়ে থাকা রক্ত ইত্যাদি), মানবদেহের রক্ত, চুল, শুক্ররস, পরিহিত জামা-কাপড় থেকে সংগ্রহ করা যেতে পারে। অনেকদিন ধরে মাটির নিচে থাকা মানুষের মৃতদেহের কঙ্কাল থেকেও ডিএনএ সংগ্রহ করা যেতে পারে। মানুষের ক্ষেত্রে শ্বেত কণিকার বা শুক্ররসে, চুলের গোড়ায় অথবা অস্থিতে অবস্থিত কোষ থেকে ডিএনএ সংগ্রহ করে ডিএনএ প্রোফাইল করা হয়। সংগৃহীত ডিএনএকে প্রধানত টেস্ট টিউবে সংগ্রহ করা হয় এবং একে সংরক্ষিত রাখার জন্য ঠান্ডা বা কম উষ্ণতায় রাখা হয়।

ডিএনএ ফিঙ্গারপ্রিন্টের সুবিধা

১. পদ্ধতিগত ত্রুটি না থাকলে শনাক্তকরণে সাফল্যের পরিমাণ শতভাগ।

২. মানবদেহের যে কোনো প্রত্যঙ্গ বা জৈবিক উপাদান যা কোষ ধারণ করে সেখান থেকেই ডিএনএ স্যাম্পল সংগ্রহ করা সম্ভব।

৩. প্রকৃত অপরাধীকে শনাক্ত করতে সাহায্য করে।

ডিএনএ ফিঙ্গারপ্রিন্টের অসুবিধা

১. সহোদর যমজদের ক্ষেত্রে ডিএনএ ফিঙ্গারপ্রিন্ট সম্পূর্ণ এক হয়।

২. প্রোফাইলিং করার সময় সংকরায়ন ও প্রোবিং পদ্ধতির ত্রুটি ডিএনএ ফিঙ্গারপ্রিন্টের ত্রুটির সম্ভাবনা বাড়িয়ে দেয়।

৩. পরীক্ষাগারের কর্মীদের কর্মদক্ষতা ও পারদর্শিতা এবং সতর্কতার অভাব ডিএনএ ফিঙ্গারপ্রিন্টের ফলের ওপর প্রভাব পড়ে।

ডিএনএ ফিঙ্গারপ্রিন্টের ব্যবহার

১. অপরাধী শনাক্তকরণে ডিএনএ ফিঙ্গারপ্রিন্ট ব্যবহৃত হয়

২. পিতৃত্ব ও মাতৃত্ব নির্ণয়ে ব্যবহৃত হয়

৩. বিকৃত শবদেহ শনাক্তকরণে ডিএনএ ফিঙ্গারপ্রিন্ট ব্যবহৃত হয়

৪. চিকিৎসা বিজ্ঞানে ডিএনএ ফিঙ্গারপ্রিন্ট ব্যবহৃত হয়

৫. মানুষের বিবর্তনের সঠিক রাস্তা খোঁজা বা লুপ্তপ্রায় প্রাণীর বংশবৃদ্ধির জন্য জীনগত মিল রয়েছে এমন আত্মীয় খুঁজে বের করতে।

আচরণগত বৈশিষ্ট্যের বায়োমেট্রিক্স পদ্ধতি

১.ভয়েস রিকগনিশন সিস্টেম : প্রত্যেকের কণ্ঠের ধ্বনির বৈশিষ্ট্য, সুরের উচ্চতা, সুরের মূর্ছনা, স্পন্দনের দ্রুততা ইত্যাদি বিশ্লেষণ করা।

২. সিগনেচার ভেরিফিকেশন সিস্টেম : হাতের দস্তখত বিশ্লেষণ করা।

৩. টাইপিং কীস্ট্রোক রিকগনিশন সিস্টেম : নির্দিষ্ট কোনো পাসওয়ার্ড যা টাইপ করে এন্ট্রি করা হয় এবং বিশ্লেষণ করা।

Logo

সম্পাদক : আবদুল হাই শিকদার

প্রকাশক : সালমা ইসলাম