Logo
Logo
×

টিউটোরিয়াল

জুনিয়র স্কুল সার্টিফিকেট পরীক্ষার পড়াশোনা

বাংলা ব্যাকরণ

Icon

উজ্জ্বল কুমার সাহা

প্রকাশ: ২৪ সেপ্টেম্বর ২০১৮, ০৬:০০ পিএম

প্রিন্ট সংস্করণ

প্রভাষক, সেন্ট যোসেফ উচ্চ মাধ্যমিক বিদ্যালয়, মোহাম্মদপুর, ঢাকা

বাছাইকৃত সারমর্ম

ক)

বহুদিন ধরে বহু ক্রোশ দূরে

বহু ব্যয় করি বহু দেশ ঘুরে

দেখিতে গিয়েছি পর্বতমালা

দেখিতে গিয়েছি সিন্ধু।

দেখা হয় নাই চক্ষু মেলিয়া

ঘর হতে শুধু দুই পা ফেলিয়া

একটি ধানের শিষের উপরে

একটি শিশির বিন্দু।

সারমর্ম : আমাদের মনের চোখ এতটাই দুর্বল যে, বহু টাকা ব্যয় করে, বহু সময়ের অপচয় করে আমরা বাইরের সৌন্দর্য অবলোকন করতে যাই। কিন্তু আমাদের ঘরের কাছে অবহেলায় পড়ে থাকা সৌন্দর্য দর্শনে আমরা আগ্রহী নই।

খ)

নমঃ নমঃ নমঃ সুন্দরী মম জননী বঙ্গভূমি!

গঙ্গার তীর, স্নিগ্ধ সমীর, জীবন জুড়ালে তুমি।

অবারিত মাঠ, গগনললাট চুমে তব পদধূলি

ছায়াসুনিবিড় শান্তির নীড় ছোটো ছোটো গ্রামগুলি।

পল্লবঘন আম্রকানন রাখালের খেলাগেহ,

স্তব্ধ অতল দিঘি কালোজল- নিশীথশীতল স্নেহ।

বুকভরা মধু বঙ্গের বধূ জল লয়ে যায় ঘরে -

মা বলিতে প্রাণ করে আনচান, চোখে আসে জল ভরে।

সারমর্ম : মা ও মাতৃভূমি সবার কাছে প্রিয়। মাতৃভূমির রূপ-সৌন্দর্য ও প্রকৃতি হৃদয়কে আপ্লুত করে। বাংলাদেশ আমাদের মাতৃভূমি- এর আকাশ-বাতাস, নদী, মাঠ, প্রকৃতি-নিসর্গ, মানুষ সবই আমাদের ভালোবাসার ধন। বাংলার আবহমান অপরূপ রূপে প্রতিটি বাঙালিই মোহমুগ্ধ।

গ)

ভদ্র মোরা, শান্ত বড়ো, পোষ-মানা এ প্রাণ

বোতাম-আঁটা জামার নিচে শান্তিতে শয়ান।

দেখা হলেই মিষ্ট অতি,

মুখের ভাব শিষ্ট অতি,

অলস দেহ ক্লিষ্ট গতি,

গৃহের প্রতি টান-

তৈল-ঢালা স্নিগ্ধ তনু নিদ্রা রসে ভরা

মাথায় ছোটো বহরে বড় বাঙালি সন্তান।

ইহার চেয়ে হতাম যদি আরব বেদুইন.

চরণতলে বিশাল মরু দিগন্তে বিলীন।

ছুটছে ঘোড়া উড়েছে বালি,

জীবনস্রোত আকাশে ঢালি

হৃদয়-তলে বহ্নি জ্বালি চলেছি নিশিদিন-

বরশা হাতে, ভরসা প্রাণে,

সদাই নিরুদ্দেশ

মরুর ঝড় যেমন বহে সকল বাধা-হীন।

সারমর্ম : বাঙালি শান্তশিষ্ট, কর্মহীন, আরামপ্রিয় ও অলস জাতি। এ জীবন কারো কাম্য হতে পারে না। তার চেয়ে সাহসী, কর্মী ও চঞ্চলতা-মুখর জীবনের অধিকারী হওয়া অনেক বেশি সম্মানের।

ঘ)

এই যে বিটপি-শ্রেণি হেরি সারি সারি-

কি আশ্চর্য শোভাময় যাই বলিহারি!

কেহ বা সরল সাধু-হৃদয় যেমন,

ফল-ভরে নত কেহ গুণীর মতন।

এদের স্বভাব ভালো মানবের চেয়ে,

ইচ্ছা যার দেখ দেখ জ্ঞানচক্ষে চেয়ে।

যখন মানবকুল ধনবান হয়,

তখন তাদের শির সমুন্নত রয়।

কিন্তু ফলশালী হলে এই তরুগণ,

অহংকারে উচ্চশির না করে কখন।

ফলশূন্য হলে সদা থাকে সমুন্নত,

নীচ প্রায় কার ঠাঁই নহে অবনত।

সারমর্ম : গাছ ফলে পরিপূর্ণ হয়ে উঠলেও তার মধ্যে কোন অহংকারবোধ জাগ্রত হয় না বরং সে নত হয়। তাতে তার গৌরব থাকলেও অহংকার থাকে না। কিন্তু মানুষের অর্থ হলেই অহংকার, অর্থ ফুরিয়ে গেলেই মাথা নিচু হয়। গাছ ফলশূন্য হলেও কিন্তু মাথা সোজা করে দাঁড়িয়ে থাকে। মানুষের উচিত গাছের কাছ থেকে নিঃস্বার্থ পরোপকারী হওয়ার শিক্ষা গ্রহণ করা।

Logo

সম্পাদক : আবদুল হাই শিকদার

প্রকাশক : সালমা ইসলাম