Logo
Logo
×

উপসম্পাদকীয়

মুক্ত জীবন-রুদ্ধ প্রাণ

মুসলিম বিশ্বের জন্য ওআইসি কতটা উপকারী সংস্থা?

Icon

মাহফুজ উল্লাহ

প্রকাশ: ০৯ মে ২০১৮, ০৬:০০ পিএম

প্রিন্ট সংস্করণ

মুসলিম বিশ্বের জন্য ওআইসি কতটা উপকারী সংস্থা?

আটত্রিশ বছর পর ঢাকায় অনুষ্ঠিত হয়ে গেল ওআইসির পররাষ্ট্রমন্ত্রীদের ৪৫তম সম্মেলন। এর আগে ১৯৮৩ সালের ৬-১১ ডিসেম্বর ঢাকায় অনুষ্ঠিত পররাষ্ট্রমন্ত্রীদের ১৪তম সম্মেলনের সময় বাংলাদেশ ছিল প্রেসিডেন্ট পদ্ধতির সরকারের অধীন, যার চেহারা বোঝা যেত, আর বর্তমানে দেশ পরিচালিত হচ্ছে কাগজপত্রে পার্লামেন্ট পদ্ধতির সরকারের অধীনে। এ বক্তব্য বর্তমান সম্মেলনকে কেন্দ্র করে অপ্রাসঙ্গিক মনে হতে পারে, কিন্তু বাস্তবে তা নয়।

ওআইসির পতাকাতলে এশিয়া ও আফ্রিকার যে দেশগুলো মিলিত হয়েছে, সেগুলোর সংখ্যাগরিষ্ঠ নাগরিক মুসলমান- এ ছাড়া অন্য কোনো মিল নেই। এই দেশগুলোর সমাজ, সংস্কৃতি, অর্থনীতি এবং ক্ষমতার রাজনীতি পরস্পরের চেয়ে সম্পূর্ণ ভিন্ন। এসব দেশে রাজতন্ত্র যেমন, তেমনি মুখের গণতন্ত্র থেকে শুরু করে নির্বাচনে জালিয়াতি করে ক্ষমতায় টিকে থাকা স্বৈরশাসন পর্যন্ত বিদ্যমান।

একটি সংগঠনের ভেতরে পারস্পরিক একতার যে যোগসূত্র থাকে তা ছিঁড়ে গেলে সে একতা ফিরিয়ে আনা যায় না। ওআইসির সদস্য রাষ্ট্রগুলোর দিকে তাকালে এ বিষয়টিই প্রধান হয়ে দেখা দেয়। ওআইসির বেশ কটি রাষ্ট্র মার্কিন আগ্রাসনের কারণে আজ বিপর্যস্ত। এসব দেশে সরকার থাকলেও জনজীবনে শান্তি ও নিরাপত্তা নেই। এবং এই বৈদেশিক আগ্রাসনের বিরুদ্ধে ওআইসি কোনো ঐক্যবদ্ধ অবস্থান গ্রহণ করতে পারেনি বলেই আগ্রাসন বৈধতা পেয়েছে। একই সংস্থার কয়েকটি সদস্য অপর একটি সদস্য রাষ্ট্রের বিরুদ্ধে গড়ে তুলেছে অবরোধ। ধনবান সদস্য সৌদি আরব যুদ্ধ চালিয়ে যাচ্ছে ইয়েমেনের বিরুদ্ধে, ইসরাইলের সঙ্গে যোগসাজশে চেষ্টা করছে ইরানকে একঘরে করতে। খোঁড়া যুক্তিতে নির্বাচিত সরকারকে ক্ষমতা থেকে সরিয়ে স্বৈরশাসন আবার ফিরে এসেছে মিসরে। এ রকম অসংখ্য উদাহরণ আছে, কিন্তু যে বিষয়টি বিবেচ্য তা হচ্ছে, এই ভিন্নতা সংস্থাটির ঐক্যকে দুর্বল করে দিয়েছে। একই ঘটনা ঘটেছে আরব বিশ্বের মুসলমান রাষ্ট্রগুলোর সংগঠন আরব লীগের ক্ষেত্রেও।

এক সময় সদস্যদের মধ্যকার বিরোধ নিষ্পত্তিতে ওআইসি যে উদ্যোগী ভূমিকা গ্রহণ করত, বর্তমানে সে অবস্থা নেই। ইরাক-ইরান যুদ্ধের সময় ওআইসি যে ভূমিকা নিয়েছিল তা অনেকেরই মনে আছে। সম্মানের আসনে প্রতিষ্ঠিত বাংলাদেশের রাষ্ট্রপতি জিয়াকে দায়িত্ব দেয়া হয়েছিল উভয় দেশের মধ্যে দূতিয়ালির। ইরাক ১৯৮০ সালের ২২ সেপ্টেম্বর ইরান আক্রমণ করলে দু’দেশের মধ্যে আট বছরব্যাপী যুদ্ধের শুরু হয়। প্রথমদিকে যুদ্ধ ইরাকের অনুকূলে থাকলেও পরে হাওয়া ঘুরে যায়। ১৯৮১ সালের জানুয়ারিতে সৌদি আরবের তায়েফে ইসলামী শীর্ষ সম্মেলনের প্রাক্কালে পররাষ্ট্রমন্ত্রী সম্মেলনে বাংলাদেশসহ আরও ছয়টি দেশকে সদস্য করে একটি শান্তি কমিটি গঠিত হয়। ইরাক-ইরান যুদ্ধের ব্যাপারে বাংলাদেশ নিরপেক্ষ থাকলেও এরশাদ ইরাকি শাসক সাদ্দাম হোসেনের দিকে ঝুঁকে পড়লে এ নিরপেক্ষতা আর বজায় থাকেনি। অথচ ইরাকের কুয়েত অভিযানের পর অসংখ্য বাংলাদেশি সে দেশ থেকে গাড়ি চালিয়ে দেশে ফিরে এসেছে। মুসলিম বিশ্বে জিয়ার অবস্থানকে দেশের বিরোধী দল ভালোভাবে নেয়নি। ২৭ মে ১৯৮১ জাতীয় সংসদে প্রধানমন্ত্রীর বক্তৃতা শেষে আওয়ামী লীগ নেতা ও সংসদে বিরোধীদলীয় নেতা আসাদুজ্জামান খান বলেছিলেন, ‘মুসলিম দেশগুলো আমাদের বন্ধু নয়, তারা আমাদের প্রভু।’

সদ্যসমাপ্ত ওআইসির বর্তমান পররাষ্ট্রমন্ত্রী সম্মেলনের উদ্বোধনী অধিবেশনে বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী ও আওয়ামী লীগ সভানেত্রী যে বক্তৃতা দিয়েছেন তা প্রণিধানযোগ্য। নিজের প্রবাসজীবনের দুঃখ-কষ্ট, রোহিঙ্গাদের দুঃখ-কষ্ট বর্ণনা করা ছাড়াও তিনি বলেছেন, ‘আমরা এমন একটা সময় অতিক্রম করছি যখন প্রযুক্তি প্রবাহ ত্বরান্বিত হচ্ছে এবং যুবসমাজের কলেবর বৃদ্ধি পাচ্ছে। একই সঙ্গে বৃদ্ধি পাচ্ছে অসমতা, অসহিষ্ণুতা ও সামাজিক অবিচার এবং জলবায়ুর বিরূপ প্রভাব। এসবের সমন্বিত প্রভাবে আমাদের ইসলামী চিন্তা-চেতনার মৌলিক ভিত্তি আজ হুমকির সম্মুখীন। এখনকার মতো মুসলিম বিশ্ব আগে কখনও এত বেশি পরিমাণ সংঘাত, অভ্যন্তরীণ গোলযোগ, বিভাজন ও অস্থিরতার মুখোমুখি হয়নি।’ তিনি আরও বলেছেন, আজকে মুসলমান পরিচয়কে ভুলভাবে সহিষ্ণুতা ও চরমপন্থার সঙ্গে গুলিয়ে ফেলা হচ্ছে। এ অবস্থা চলতে পারে না। এখন সময় এসেছে চিন্তা-চেতনা ও দৃষ্টিভঙ্গিতে পরিবর্তন আনার।

মুসলিম বিশ্বের বিরাজমান কঠিন বাস্তবতাকে প্রধানমন্ত্রী তার বক্তৃতায় তুলে এনেছেন। বর্তমানে মুসলিম বিশ্বের প্রতিটি দেশে অসমতা, অসহিষ্ণুতা ও সামাজিক অবিচার প্রবলভাবে বিদ্যমান। বাংলাদেশও এ অবস্থা থেকে মুক্ত নয়। কিন্তু মুসলিম বিশ্বে যে বাস্তবতা বিরাজমান, তাতে প্রধানমন্ত্রীর এ আহ্বানকে অন্যরা মর্যাদা দেবে কিনা সন্দেহ আছে। মুসলিম বিশ্বে শিয়া-সুন্নি হিসেবে নিজেদের মধ্যে যে বিরোধ জিইয়ে রাখা হচ্ছে, তাতে ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে রাষ্ট্র, অর্থনীতি, সমাজ ও জনজীবন। আরব বসন্তের পর আশা করা গিয়েছিল ওই রাষ্ট্রগুলো জনগণের রাষ্ট্র হিসেবে বিকশিত হবে। কিন্তু শেষ পর্যন্ত তা হয়নি। সৌদি আরব হয়তো সাম্প্রতিক সময়ে সমাজকে উন্মুক্ত করে দিয়ে জনঅসন্তোষকে প্রশমিত করার চেষ্টা করছে; কিন্তু ধর্মীয় অনুশাসনের কঠিন উপস্থিতির কারণে সেটা শেষ পর্যন্ত কোথায় গিয়ে দাঁড়াবে তার জন্য অপেক্ষা করতে হবে। একই সঙ্গে ইয়ামেনের বিরুদ্ধে সৌদি আরবের যে যুদ্ধ তা কেমন করে ব্যাখ্যা করা যাবে? এই যুদ্ধে সবচেয়ে বেশি লাভবান হচ্ছে অস্ত্র ব্যবসায়ীরা এবং ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছেন ইয়েমেনের জনগণ।

প্রধানমন্ত্রী অসহিষ্ণুতা, অসমতা ও সামাজিক অবিচারের কথা বলেছেন। ইসলামী অনুশাসনে এসব গ্রহণযোগ্য না হলেও মুসলিম বিশ্বে তা কেমন করে জারি রয়েছে তা বিশ্লেষণের বিষয়। কারণগুলো সবার জানা। স্নায়ুযুদ্ধের সময় মুসলিম বিশ্ব যেভাবে পথচলায় বিভক্ত হয়েছিল, আজও সে অবস্থা অনেকাংশেই বিরাজমান। নতুন বিশ্বপরিস্থিতিতে যুক্ত হয়েছে আরব বিশ্বের সম্পদের প্রতি দৃষ্টি এবং বিশ্বরাজনীতিতে প্রভাববলয় সৃষ্টির খেলা।

মুসলিম বিশ্বে একদিকে নেতৃত্ব দিচ্ছে সৌদি আরব, যেখানে সংখ্যাগরিষ্ঠ জনগণ সালাফি মতবাদে বিশ্বাসী। অন্যদিকে নেতৃত্বের আসনে উঠে আসছে ইরান। সৌদি আরবের সঙ্গে ইরানের বিরোধ অনেক পুরনো। ইরানকে বিভিন্নভাবে একঘরে করার চেষ্টা হলেও তা সফল হয়নি। সাম্প্রতিক সময়ে পাকিস্তান ও রাশিয়ার সঙ্গে মিলে ইরান এক নতুন কৌশলগত অবস্থান তৈরি করছে। সিরিয়ার পক্ষেও কঠিনভাবে দাঁড়িয়ে আছে রাশিয়া। হয়তো এ কারণেই আসাদ সরকার সেখানে টিকে যাবে। কিন্তু লিবিয়া বা মিসরের মুসলমানদের ভাগ্যে কী আছে কেউ জানে না।

প্রধানমন্ত্রী তার বক্তৃতায় খুব গুরুত্বপূর্ণ একটি কথা বলেছেন। তিনি বলেছেন, আজও ইসলামী বিশ্বে যেসব মতপার্থক্য ও ভিন্ন দৃষ্টিভঙ্গি পরিলক্ষিত হচ্ছে তা খোলা মন নিয়ে আলাপ-আলোচনার মাধ্যমে দূর করা সম্ভব। কিন্তু সে উদ্যোগটি কে নেবে? ১৯৭২ সালে প্রতিষ্ঠার পর থেকে এই সংস্থা তার দীর্ঘ পথপরিক্রমায় বিভিন্ন দেশে কিছু প্রকল্প বাস্তবায়িত করেছে, কিন্তু দেশে দেশে কোন্দল মেটাতে পারছে না। সংস্থাটির মূল যাত্রা শুরু হয়েছিল ১৯৬৯ সালে। সংস্থার ৫৭টি দেশের মধ্যে ৫৬টি জাতিসংঘের সদস্য। ১৯৬৯ সালের ২৫ সেপ্টেম্বর মরক্কোর রাজধানী রাবাতে অনুষ্ঠিত শীর্ষ সম্মেলনের পরই এই সংস্থা বাস্তবে যাত্রা শুরু করে। আর ১৯৭০ সালে অনুষ্ঠিত ইসলামী পররাষ্ট্রমন্ত্রীদের সম্মেলনে নির্ধারিত হয় সৌদি আরবের জেদ্দায় হবে এর প্রধান কার্যালয়। গত ৪৬ বছরে এই সংস্থার সদস্য সংখ্যা ত্রিশ থেকে বেড়ে দাঁড়িয়েছে সাতান্নয়।

প্রধানমন্ত্রীর বক্তব্যের পরিপ্রেক্ষিতে এটা স্পষ্ট হয়ে উঠেছে যে, ওআইসির সংস্কার প্রয়োজন। অবশ্য জাতিসংঘের সংস্কারের বিষয়টিও বর্তমান সময়ে বিশ্বজুড়েই আলোচিত হচ্ছে। ১৯৬৫ সালের ভারত-পাকিস্তান যুদ্ধের পর স্লোগান উঠেছিল ‘আজ নতুন জাতিসংঘ গড়ার দিন।’ বাস্তবে, বিগত কয়েক দশকে পৃথিবীজুড়েই বহুপাক্ষিক সংস্থার গুরুত্ব কমে গেছে। তার স্থান করে নিচ্ছে দ্বিপাক্ষিক অথবা গুটিকয়েকের সম্মিলিত সংস্থা। সম্ভবত এর ফলে পারস্পরিক ব্যবসা-বাণিজ্য অনেক সহজ হয়, সমস্যার সমাধানও সম্ভব হয়ে ওঠে। আবার গুটিকয়েক রাষ্ট্রের সংস্থা সার্ক যে আর কার্যকর নয় সেটা বোঝা যাচ্ছে। ক’দিন আগেই ভারতীয় প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি বলেছেন সার্ক আর কার্যকর নয়, কেননা এর মাধ্যমে সমস্যার সমাধান করা যায় না। বিশ্ব রাজনীতিতে যে বিভিন্ন পরিবর্তন ঘটে যাচ্ছে তার একটি উদাহরণ কয়েক দশকের আলোচনায় প্রতিষ্ঠিত ইউরোপীয় ইউনিয়ন থেকে ব্রিটেনের বেরিয়ে যাওয়া এবং উত্তর ও দক্ষিণ কোরিয়ার মধ্যকার বৈরিতার অবসানের সূত্রপাত। অবশ্য চীন ও জাপানের কারণে এ দুটি দেশের পুনঃএকত্রীকরণ বিলম্বিত হবে।

ওআইসির পররাষ্ট্রমন্ত্রীদের সম্মেলন থেকে বাংলাদেশের প্রাপ্তিটা কী? আশা করা গিয়েছিল স্বাগতিক দেশ হিসেবে ওআইসির (এশিয়া বিভাগ) বিজ্ঞান ও প্রযুক্তিবিষয়ক সহকারী মহাসচিব পদে বাংলাদেশ জয়লাভ করবে। তা হয়নি, বাংলাদেশ হেরেছে কাজাখস্তানের কাছে। ওআইসির গুরুত্বপূর্ণ কোনো পদে বাংলাদেশ এখন পর্যন্ত জয়লাভ করেনি। মহাসচিব পদে নির্বাচন করে বিচারপতি আবু সাইদ চৌধুরী, আওয়ামী লীগ নেতা হুমায়ুন রশীদ চৌধুরী এবং বিএনপি নেতা সালাহউদ্দীন কাদের চৌধুরী হেরে গেছেন। সম্ভবত এই সংস্থায় যারা কলকাঠি নাড়েন তারা বাংলাদেশকে এ পদে দেখতে চান না। কমনওয়েলথ মহাসচিব পদেও বাংলাদেশ জিততে পারেনি। আন্তর্জাতিক সংস্থাগুলোর নির্বাচনের সমীকরণ বড় জটিল। নিজের অভিজ্ঞতা না থাকলে এটা যাবে না।

পররাষ্ট্রমন্ত্রীদের ঢাকা সম্মেলন শেষে যে ঘোষণা প্রকাশিত হয়েছে তাতে রোহিঙ্গাদের সমস্যা সমাধানে বাংলাদেশের সঙ্গে সহযোগিতার জন্য মিয়ানমারের প্রতি আহ্বান জানিয়েছে ওআইসি। অবশ্য ঘোষণায় রোহিঙ্গাদের নির্যাতনকে জাতিগত নিধন হিসেবে উল্লেখ করা হয়েছে, বলা হয়েছে আনান কমিশনের রিপোর্ট বাস্তবায়নের কথা। অবশ্য রোহিঙ্গা সমস্যা যে জায়গায় পৌঁছেছে, তাতে মিয়ানমারকে কোনো অবস্থায় নতি স্বীকার করানো যাবে না। রোহিঙ্গাদের বিরাট অংশ বাংলাদেশে থেকে যাবে এটা মেনে নিয়ে বাংলাদেশকে দুটি বিষয়ে সক্রিয় উদ্যোগ গ্রহণ করতে হবে- আন্তর্জাতিক অপরাধ আদালতে মিয়ানমারের শাসকগোষ্ঠীর বিচার এবং রোহিঙ্গাদের পুনর্বাসনের জন্য ক্ষতিপূরণ। এ দাবি উচ্চারিত হলে মিয়ানমার হয়তো কিছুটা নমনীয় হতে পারে। কিন্তু ভারত, চীন ও রাশিয়ার অবস্থানের কারণে এ ক্ষেত্রে কতখানি অগ্রগতি হবে সে বিষয়ে সন্দেহ আছে।

সবাইকে অবাক করে সম্মেলন শেষে প্রকাশিত ঢাকা ঘোষণার ব্যাপারে আপত্তি তুলেছে পাকিস্তান। তারা বলেছে এটা সর্বসম্মত ঘোষণা নয়, আলোচনা না করেই সর্বসম্মত বলে চালিয়ে দেয়া হয়েছে। অবশ্য অভিযোগ প্রত্যাখ্যান করে বাংলাদেশ বলেছে ঢাকা ঘোষণার মূল খসড়া ওআইসি সচিবালয় তৈরি করেছিল। পরে কিছু সদস্য দেশ, ওআইসির সংশ্লিষ্ট প্রতিষ্ঠান এবং স্বাগতিক দেশের পরামর্শে অতিরিক্ত অনুচ্ছেদ এতে সংযোজন করা হয়। পররাষ্ট্রমন্ত্রীদের বৈঠকে গৃহীত হওয়ার আগে পরামর্শগুলো যুক্ত করা হয়।

পাকিস্তান বলছে, স্বাগতিক দেশ সম্মেলন শেষ হওয়ার ঠিক আগে ঢাকা ঘোষণা প্রচার করেছে। এতে শুধু স্বাগতিক দেশের দৃষ্টিভঙ্গির বহিঃপ্রকাশ ঘটেছে। ঘোষণার সারবস্তু নিয়ে সদস্য দেশগুলোর সঙ্গে আলোচনা কিংবা দরকষাকষি হয়নি। এ ক্ষেত্রে পাকিস্তানের উচিত এ কথা স্পষ্ট করে বলা যে, ঘোষণার কোন কোন প্রশ্নে তাদের আপত্তি আছে এবং বাংলাদেশের উচিত বিষয়টি বিস্তৃতভাবে ব্যাখ্যা করা। না হলে ওআইসির কূটনীতিতে বাংলাদেশ পিছিয়ে পড়বে।

মাহফুজ উল্লাহ : সাংবাদিক ও শিক্ষক

মতামত

Logo

সম্পাদক : আবদুল হাই শিকদার

প্রকাশক : সালমা ইসলাম