হাওড় ও জলাভূমির গুরুত্ব বুঝতে হবে
ড. মোহাম্মদ জাহাঙ্গীর আলম ও মো. আখতারুজ্জামান
প্রকাশ: ০২ জুলাই ২০২৪, ১২:০০ এএম
প্রিন্ট সংস্করণ
|
ফলো করুন |
|
|---|---|
বাংলাদেশ পৃথিবীর অন্যতম বৃহত্তম বদ্বীপ রাষ্ট্র। এ দেশের সুনামগঞ্জ, সিলেট, হবিগঞ্জ, মৌলভীবাজার, নেত্রকোনা, কিশোরগঞ্জ ও ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় প্রায় ৩৭৩টি হাওড় রয়েছে। হাওড় এলাকায় প্রায় ২০ মিলিয়ন মানুষের বসবাস রয়েছে। শতাংশের হিসাবে মোট আয়তনের প্রায় ৪৩ শতাংশই হাওড়। এ হাওড়গুলোতে বিভিন্ন ধরনের শস্য, সবুজ গাছপালা, মাছ ও অন্যান্য প্রাকৃতিক সম্পদে ভরপুর রয়েছে, যা ক্রমাগত পরিবেশ সংরক্ষণ ও খাদ্য নিরাপত্তায় ভূমিকা রেখে যাচ্ছে। কৃষি ফসলের মধ্যে বিভিন্ন জাতের ধান ও সবজি দৃশ্যমান রয়েছে, যা খাদ্য নিরাপত্তার পাশাপাশি প্রাকৃতিক সৌন্দর্যও বাড়াতে সহায়তা করে থাকে।
বাংলাদেশ হাওড় ও জলাভূমি উন্নয়ন কর্তৃপক্ষের তথ্য অনুযায়ী দেখা যায়, সুনামগঞ্জে ৯৫টি, সিলেটে ১০৫টি, হবিগঞ্জে ১৪টি, মৌলভীবাজারে ৩টি, নেত্রকোনায় ৫২টি, কিশোরগঞ্জে ৯৭টি ও ব্রাহ্মণবাড়িয়াতে ৭টিসহ মোট ৩৭৩টি হাওড় রয়েছে। এছাড়া জলাভূমির মধ্যে রয়েছে পুকুর, নদী, নালা, খাল, বিল ও বাঁওড়। পানি উন্নয়ন বোর্ডের তথ্য অনুযায়ী, বাংলাদেশে প্রায় ৯০৭টি নদী রয়েছে। তার মধ্যে ৫৭টিকে ট্রান্স বাউন্ডারি নদী হিসাবে চিহ্নিত করা হয়েছে। এ নদীগুলোর মধ্যে ৫৪টি ভারত থেকে এবং বাকি ৩টি মিয়ানমার থেকে বাংলাদেশে প্রবেশ করেছে। তাছাড়া ১২১ কিলোমিটার দৈর্ঘ্যরে কক্সবাজার সমুদ্রসৈকত ও এশিয়ার সর্ববৃহৎ কৃত্রিম কাপ্তাই লেকও বাংলাদেশে রয়েছে। অন্যদিকে ১ দশমিক ৩ মিলিয়ন আয়তনের পুকুরও রয়েছে।
দেশে রামসর কর্তৃক স্বীকৃত টাঙ্গুয়া, হাকালুকি ও সুন্দরবন রয়েছে। হাওড় ও অন্য জলাভূমিগুলো পরিবেশ সংরক্ষণে ভূমিকা রাখতে ‘বাংলাদেশ হাওড় ও জলাভূমি উন্নয়ন অধিদপ্তর’ গঠন করা হয়। ইতিহাস পর্যালোচনায় দেখা যায়, ১৯৪৭ সালে সিলেট পাকিস্তানের নাকি ভারতের অংশ থাকবে, সে বিষয়ে বিতর্ক দেখা দিয়েছিল। ওই সময় বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান একাদশ শ্রেণিতে অধ্যয়নরত ছিলেন। তিনি ওই বিতর্কের সময় প্রায় ৫০০ সহকর্মী নিয়ে সিলেট ভ্রমণ করেছিলেন। এ ভ্রমণের অভিজ্ঞতা থেকেই বঙ্গবন্ধু ১৯৭৪ সালে পৃথকভাবে হাওড় উন্নয়ন বোর্ড গঠনের ঘোষণা দিয়েছিলেন। পরবর্তীকালে বঙ্গবন্ধুর পরিকল্পনা অনুযায়ী ১৯৭৭ সালে প্রথম হাওড় উন্নয়ন বোর্ড গঠিত হয়েছিল। মাননীয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ২০১৬ সালে দেশে বিদ্যমান অন্য জলাভূমিগুলোকে একত্র করে হাওড় ও জলাভূমি উন্নয়ন অধিদপ্তর গঠন করেন। এভাবে উত্তর পূর্বাঞ্চলের ৭টি জেলার অন্তর্গত সব হাওড় এবং বাংলাদেশের অন্য জলাভূমিকে একত্র করে হাওড় ও জলাভূমি উন্নয়ন অধিদপ্তরের যাত্রা শুরু হয়। সমুদ্রের ৬ মিটার গভীর এলাকাও এ অধিদপ্তরের আওতায় আনা হয়।
তথ্য ও উপাত্ত বিশ্লেষণে দেখা যায়, টাঙ্গুয়ার হাওড়ে প্রায় ১৩৫ প্রজাতির মাছ ও ৮ প্রজাতির পাখি রয়েছে। হাওড়গুলোতে প্রতি বছর সাইবেরিয়া, চীন ও হিমালয়ের পাদদেশ থেকে ৯৮ প্রজাতির পাখি আসে। ফলে পাখিগুলো ইকোসিস্টেম ও জীববৈচিত্র্য সংরক্ষণে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রেখে যাচ্ছে। বর্তমানে জলবায়ু পরিবর্তনে ফলে দেশে বিভিন্ন প্রজাতির মাছ ও পাখির সংখ্যা কমে যাচ্ছে। অন্যদিকে, হাকালুকি হাওড়ে ১০৭ প্রজাতির মাছের মধ্যে ইতোমধ্যে প্রায় ৩২ প্রজাতিই বিলুপ্ত হয়ে গেছে। যদিও বর্তমানে ৭৫ প্রজাতির মাছ দৃশ্যমান রয়েছে। বাংলাদেশ কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ের মাৎস্যবিজ্ঞান অনুষদের অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ মাহফুজুল হক মনে করেন, ভবিষ্যতে হাওড় ও জলাভূমিতে বিদ্যমান বিভিন্ন প্রজাতির মাছের সংখ্যা কমে যাওয়ার আশঙ্কা রয়েছে। তিনি মনে করেন, মাছ শীতল রক্তবিশিষ্ট প্রাণী হওয়ায় মাছের প্রজনন ক্ষমতা পরিবেশগত উপাদান দ্বারা ব্যাপকভাবে প্রভাবিত হয়। সেক্ষেত্রে পানির গভীরতা, তাপমাত্রা, পানির স্রোত ও জলজ গাছপালা মাছের প্রজনন ক্ষমতার ওপর প্রভাব বিস্তার করে থাকে। যদি অপরিকল্পিত পানি ব্যবস্থাপনার কারণে পানি দূষণ, জলাশয়ের গভীরতা, পানির গতিপথ ও পলির পরিমাণ বৃদ্ধি পায়, তাহলে ভবিষ্যতে হাওড় ও জলাভূমি থেকে বিভিন্ন প্রজাতির মাছের সংখ্যা অনাকাঙ্ক্ষিত হারে কমে যাওয়ার আশঙ্কা রয়েছে। তাছাড়া তিনি আরও মনে করেন, মাছের প্রজননের সময় এপ্রিল থেকে আগস্টে যদি জলাশয় থেকে বেশি পরিমাণে মাছ সংগ্রহ করা হয়, তাহলে পরবর্তী বছরে ডিম দেওয়ার জন্য মাতৃ মাছের সংখ্যা কমে যেতে পারে, যা প্রাকৃতিকভাবে মাছ উৎপাদনে ঋণাত্মক প্রভাব সৃষ্টি করতে পারে।
হাওড়গুলো মানুষের প্রয়োজনীয় প্রাকৃতিক সম্পদের চাহিদা পূরণ করে থাকে। হাওড়গুলোতে বিভিন্ন ধরনের ফসল উৎপাদিত হয়। হাওড়ে বিদ্যমান গাছপালাগুলো পাখির আশ্রয়কেন্দ্র ও প্রাকৃতিক দুর্যোগ মোকাবিলায় ভূমিকা রেখে যাচ্ছে। হিজল, করচ, বরুণ, পিটালী, পানিফল, শাপলা, কলমিশাক, হেলো ও বিষকাটালী গাছ পরিবেশ সংরক্ষণে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রেখে যাচ্ছে। তাছাড়া কচুরিপানা ও খুদেপানাও হাওড়ে পাওয়া যায়, যা বায়োকম্পোস্ট তৈরিতে ব্যবহৃত হতে পারে। ‘ইন্টারন্যাশনাল ইউনিয়ন ফর কনজারভেশন অব ন্যাচারের তথ্য অনুযায়ী, বর্তমানে হাওড়ে হিজল, করচ, গুজ্জাকান্টা, হোগলা, পদ্ম, ও শালুক অনেকটা ঝুঁকিতে রয়েছে যা ভবিষ্যতে বিলুপ্ত হওয়ার আশঙ্কা রয়েছে। যদি হাওড় এলাকায় গাছের সংখ্যা কমে যায়, তাহলে জীববৈচিত্র্য কমে যাওয়ার আশঙ্কা রয়েছে। গবেষণায় দেখা যায়, হাওড় এলাকায় বিদ্যমান খাদ্য শৃঙ্খলে কোনো একটি প্রজাতি কমে গেলে অন্য প্রজাতিও কমে যায়। ফলে ইকোসিস্টেম সার্ভিস কমে যেতে পারে, যা ওই অঞ্চলে টেকসই উন্নয়নের অন্তরায় হতে পারে।
বাংলাদেশ ধান উৎপাদনে পৃথিবীর তৃতীয় বৃহত্তম দেশ। ২০২৩ সালের হিসাব অনুযায়ী বছরে বাংলাদেশে প্রায় ৪০ মিলিয়ন টন ধান উৎপাদিত হচ্ছে। বোরো ধানের প্রায় ৭০ শতাংশ হাওড় অঞ্চলেই উৎপাদিত হচ্ছে। যদি হাওড় অঞ্চলে জলাধারের নাব্য ধরে রাখা না যায়, তাহলে ভবিষ্যতে ধান উৎপাদনে বাংলাদেশের বর্তমান অবস্থান ধরে রাখা সম্ভব নাও হতে পারে। বাংলাদেশ ধান গবেষণা ইনস্টিটিউটের মহাপরিচালক ড. মো. শাহজাহান কবীরের মতে, হাওড় অঞ্চলে ব্রি ধান-২৯, ৬৭, ৮১, ৮৪, ৮৬, ৮৮, ৮৯, বঙ্গবন্ধু ধান ১০০, ব্রি ধান ১০১, ১০২ ও ১০৭ চাষাবাদ হচ্ছে। তিনি মনে করেন ব্রি উদ্ভাবিত ধানের জাতগুলো হাওড় অঞ্চলে চাষাবাদের সময় রিপ্রডাক্টটিভ স্টেজে ঠান্ডাজনিত সমস্যা ও ফসল সংগ্রহের আগে অর্থাৎ ফুল আসার সময় খরার প্রভাব দেখা যায়। এ সমস্যাগুলো দূরীকরণে ইতোমধ্যে বাংলাদেশে ধান গবেষণা ইনস্টিটিউট ঠান্ডা সহনশীল ধানের জাত উদ্ভাবন করেছে, যা শিগ্গির বাজারে আসবে বলে তিনি আশা প্রকাশ করেন। তাছাড়া তিনি আরও মনে করেন, হাওড় অঞ্চলে প্রায় ২০ লাখ টন চাল উৎপাদিত হচ্ছে, যা খাদ্য নিরাপত্তায় গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রেখে যাচ্ছে। ড. কবীরের মতে ভবিষ্যতে জলবায়ু পরিবর্তনের কারণে সৃষ্ট পরিস্থিতিতে হাওড় অঞ্চলে ধান উৎপাদন যাতে ব্যাহত না হয়, সে বিষয়ে জলবায়ু পরিবর্তন সহনশীল ধানের জাত উদ্ভাবনে ব্রির বিজ্ঞানীরা অব্যাহত গবেষণা চালিয়ে যাচ্ছেন।
গুরুত্ব বিবেচনায় নিয়ে দেশের হাওড়গুলোর রক্ষণাবেক্ষণে গুরুত্ব দিতে হবে। উজানের দেশ ভারত থেকে বছরে ১ বিলিয়ন টনের বেশি পলি বাংলাদেশে প্রবেশ করছে। এ পলির প্রভাবে হাওড়ের তলদেশ ভরাট হয়ে জলাশয়ের গতিপথ পরিবর্তিত হচ্ছে। ফলে দেশের উত্তর-পূর্বাঞ্চল ও পশ্চিমাঞ্চলে বর্ষাকালে পানির প্রবাহে ভয়াবহ বন্যা এবং শীতকালে পানির অভাবে সৃষ্ট খরায় ফসল উৎপাদন ব্যাহত হচ্ছে। এমতাবস্থায় হাওড় অঞ্চলে সারা বছর ফসল উৎপাদন অব্যাহত রাখতে ড্রেজিং করে পানি ধরে রাখতে হবে। তাছাড়া ছোট ছোট নালা তৈরি করে সেচের জন্য পানি সারা বছর হাওড় অঞ্চলে মজুত রাখা যেতে পারে।
মাছ আমিষের অন্যতম উৎস্য। পানির অভাবে মাছের পরিমাণও কমে যাচ্ছে। হাওড়ে সারা বছর পানি ধরে রেখে মাছের উৎপাদনও বাড়ানো যেতে পারে। প্রাকৃতিকভাবে মাছ সংরক্ষণের পাশাপাশি বছরে ১০০ কোটি মাছের পোনা এ হাওড়গুলোতে ছাড়া যেতে পারে। ফলে ওই উৎপাদিত মাছ মানুষের প্রয়োজনীয় আমিষের চাহিদা পূরণে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখতে পারবে। হাওড় অঞ্চলে বৃক্ষরোপণ বাড়াতে হবে। সে লক্ষ্যে, হাওড় ও অন্যান্য জলাশয়ে ১০০ কোটি করচগাছ লাগানো যেতে পারে। হাওড়গুলোতে রাতারগুল সোয়াম্প ফরেস্টের মতো প্রাকৃতিক সৌন্দর্য বাড়ানো যেতে পারে। তাছাড়া মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর নির্দেশনা মোতাবেক দেশীয় প্রজাতির হিজলগাছও লাগানো যেতে পারে। ফলে গাছে পাখি বসবে এবং ওই গাছের শিকড় দ্বারা মাটির ক্ষয়রোধ কমাবে। এভাবে এমন একটি প্রাকৃতিক পরিবেশের সৃষ্টি করতে হবে, যা পরিবেশ সংরক্ষণ ও পর্যটক আকর্ষণে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখতে পারবে।
বাংলাদেশে পর্যটকরা সাধারণত কক্সবাজার, চট্টগ্রাম ও সুন্দরবনের দিকে ভ্রমণ করে থাকে। এসব এলাকায় ভ্রমণের জন্য সবার আর্থিক সামর্থ্য নাও থাকতে পারে। সে জন্য হাওড় এলাকার প্রাকৃতিক সৌন্দর্য বাড়িয়ে কমিউনিটি বেইজড পর্যটন এলাকা গড়ে তোলা যেতে পারে। তাছাড়া হাওড় এলাকার ৩৭টি উপজেলাকে টার্গেট করে প্রায় ১০০ কিলোমিটার ফ্লাইওভারও তৈরি করা যেতে পারে। ওই এলাকায় মানুষের যাতায়াতের সুবিধা উন্নত করে পর্যটকদের আকর্ষণ বাড়াতে হবে। মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর ‘আমার গ্রাম হবে আমার শহর’ এ ধারণায় দেশের হাওড়গুলোকে শহরে পরিণত করা যেতে পারে। এ গ্রামীণ শহরগুলোতে পরিবেশ সংরক্ষণকে প্রাধান্য দিয়ে সব ধরনের সুযোগ-সুবিধা নিশ্চিত করা যেতে পারে। হাওড় অঞ্চলগুলোতে জলবায়ু পরিবর্তনের কারণে সৃষ্ট বন্যা, খরা, ঘূর্ণিঝড়, জলাবদ্ধতা ও অন্যান্য প্রাকৃতিক দুর্যোগ সহনশীল পরিবেশ গড়ে তোলা যেতে পারে। ফলে হাওড় অঞ্চলে বসবাসরত মানুষগুলো স্বাস্থ্যসম্মত কৃষি, মৎস্য, পশু ও অন্যান্য পণ্য উৎপাদনে সক্ষম হবে, যা সমগ্র বাংলাদেশে ছড়িয়ে পড়বে। প্রাকৃতিকভাবে উৎপাদিত পণ্যগুলো দেশে ও বিদেশে রপ্তানি করার পরিবেশও সৃষ্টি করা যেতে পারে।
মোটা দাগে বলা যেতে পারে, দেশের অর্থনৈতিক উন্নয়নে হাওড় অঞ্চলের গুরুত্ব অপরিসীম। এখনো এ হাওড় অঞ্চল থেকে মাছ, ধান, সবজি, ঔষধিগাছ ও জ্বালানি কাঠ দেশের বিভিন্ন এলাকায় সরবরাহ করা হচ্ছে। হাওড় অঞ্চলের বিদ্যমান সমস্যাগুলো সমাধানের জন্য ‘বাংলাদেশ হাওড় ও জলাভূমি উন্নয়ন কর্তৃপক্ষের’ মাধ্যমে একটি দীর্ঘমেয়াদি পরিকল্পনা গ্রহণ করা যেতে পারে। যদিও ইতোমধ্যে ডেল্টা প্ল্যান ও হাওড় উন্নয়ন কর্তৃপক্ষ বিভিন্ন ধরনের পরিকল্পনা গ্রহণ করেছে। ডেল্টা প্ল্যানে হাওড় অঞ্চলগুলোকে হটস্পট হিসাবেও চিহ্নিত করা হয়েছে। সেজন্য দরকার দীর্ঘমেয়াদি একটি সমন্বিত পরিকল্পনা, যার মাধ্যমে ‘বাংলাদেশ হাওড় ও জলাভূমি উন্নয়ন কর্তৃপক্ষ’ হাওড় ও জলাভূমির প্রাকৃতিক পরিবেশ সংরক্ষণে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখতে সক্ষম হবে।
পরিশেষে বলা যায়, হাওড় ও জলাভূমি সংরক্ষণই ২০৪১ সালের স্মার্ট বাংলাদেশ বিনির্মাণে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখতে পারবে। আশা করা যাচ্ছে, জলবায়ু পরিবর্তনজনিত সমস্যাগুলো মোকাবিলায় হাওড় ও জলাভূমি উন্নয়নে ব্যবহৃত পরিকল্পনাই প্রাকৃতিক পরিবেশ উন্নয়ন ও নিরাপদ খাদ্য উৎপাদনে ভূমিকা রাখবে। তাছাড়া হাওড়ের প্রাকৃতিক সৌন্দর্য যদি রক্ষা করা যায়, তাহলে বায়ুমণ্ডলে নির্গত কার্বনের পরিমাণও কমে যাবে। ফলে বাংলাদেশকে বৈশ্বিক উষ্ণতায় সৃষ্ট দাবদাহের প্রভাব থেকে রক্ষা করা যাবে বলে আমাদের দৃঢ় বিশ্বাস।
ড. মোহাম্মদ জাহাঙ্গীর আলম : অধ্যাপক, এনভায়রনমেন্টাল সায়েন্স বিভাগ, বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়, গাজীপুর
মো. আখতারুজ্জামান : মহাপরিচালক, বাংলাদেশ হাওড় ও জলাভূমি উন্নয়ন অধিদপ্তর
mohammad.alam@wsu.edu
