Logo
Logo
×

উপসম্পাদকীয়

ক্ষমতার পালাবদল ও সংখ্যালঘুদের নিরাপত্তা

Icon

দিলীপ কুমার সরকার

প্রকাশ: ০৮ সেপ্টেম্বর ২০২৪, ১২:০০ এএম

প্রিন্ট সংস্করণ

দেশে ক্ষমতার পালাবদল ঘটলেই ঝুঁকিতে পড়ে সংখ্যালঘুরা। সাম্প্রতিক গণঅভ্যুত্থানের পরও সংখ্যালঘুরা সহিংসতার শিকার হয়েছে। সেনাপ্রধানের ভাষ্যমতে, ২০ জেলার ৩২টি স্থানে সংখ্যালঘুদের নিয়ে কিছু অরাজকতা হয়েছে। বাংলাদেশ হিন্দু-বৌদ্ধ-খ্রিষ্টান ঐক্য পরিষদের তথ্যানুযায়ী, ৫০ জেলায় কয়েকশ হামলার ঘটনা ঘটেছে। হামলার ধরন ছিল সংখ্যালঘুদের বাড়িঘর, ব্যবসা প্রতিষ্ঠান ও উপাসনালয়ে হামলা, লুটপাট, অগ্নিসংযোগ। নারী নির্যাতনের ঘটনাও ঘটেছে এ অরাজকতার মধ্যে। এসবের পাশাপাশি চলেছে গরু-ছাগল ধরে নিয়ে যাওয়া ও চাঁদাবাজি। আর এখন চলছে গোপন চাঁদাবাজি। শুধু এবার নয়, অতীতেও অসংখ্যবার আমরা প্রত্যক্ষ করেছি এ ধরনের অনাকাঙ্ক্ষিত ঘটনা। কখনো তা বিক্ষিপ্ত-বিচ্ছিন্নভাবে, আবার কখনো তা ব্যাপকভাবে। কখনো তা ক্ষমতার পালাবদলের সময়, কখনো তা জাতীয় বা স্থানীয় নির্বাচনের আগে-পরে, আবার কখনো তা কোনো কারণ ছাড়াই স্রেফ গুজব রটিয়ে। এখন প্রশ্ন, এভাবেই কি নিজ দেশে পরবাসী হয়ে দিন কাটাতে হবে সংখ্যালঘুদের? এ প্রশ্নের উত্তর খুঁজতেই বিষয়টির অবতারণা।

আমাদের সংবিধানে ‘সংখ্যালঘু’ শব্দটি নেই। রাষ্ট্রের জনগণের পরিচিতি ক্ষেত্রে সংবিধানের ৬(২) অনুচ্ছেদে বলা হয়েছে ‘বাংলাদেশের জনগণ জাতি হিসাবে বাঙালি এবং নাগরিকগণ বাংলাদেশি বলিয়া পরিচিত হইবেন।’ জাতিগত এবং নাগরিক হিসাবে এ পরিচিতি মুক্তিযুদ্ধের চেতনার সঙ্গে সংগতিপূর্ণ হলেও আচরণের দিক থেকে আমরা কি সংখ্যাগরিষ্ঠ বা সংখ্যালঘিষ্ঠের ধারণা থেকে বেরিয়ে আসতে পেরেছি? না, পারিনি। সে কারণেই ‘সংখ্যাগুরু’, ‘সংখ্যালঘু’, বিশেষ করে ‘ধর্মীয় সংখ্যালঘু’, ‘জাতিগত সংখ্যালঘু’ ইত্যাদি শব্দ আমাদের কথনে, আমাদের লেখনিতে বহুল ব্যবহৃত হয়। সাধারণভাবে ‘গুরু’ শব্দটি বেশি এবং ‘লঘু’ শব্দটি কম অর্থে ব্যবহৃত হয়। জাতিসংঘের একটি সংজ্ঞায় বলা হয়েছে, ‘সংখ্যালঘু হচ্ছে কোনো একটি দেশের মোট জনসংখ্যার তুলনায় জাতিগত, ধর্মীয় অথবা ভাষাগত বৈশিষ্ট্যে সংখ্যালঘু দল বা গোত্র, যারা সুনির্দিষ্টভাবে তাদের সংস্কৃতি, রীতি-নীতি, ধর্ম বা ভাষাগত বৈশিষ্ট্য সংরক্ষণে তৎপর।’ ইউরোপিয়ান ইউনিয়নের একটি সংজ্ঞায় বলা হয়েছে, ‘সংখ্যালঘু হচ্ছে, রাষ্ট্রের একটি জনগোষ্ঠী যারা (ক) রাষ্ট্রের নাগরিক এবং রাষ্ট্রীয় সীমানায় বসবাস করে, (খ) রাষ্ট্রের সঙ্গে দৃঢ় বন্ধনে আবদ্ধ, (গ) সুনির্দিষ্ট জাতিগত বৈশিষ্ট্য, সংস্কৃতি, ধর্ম বা ভাষাগত বৈশিষ্ট্য বিদ্যমান, (ঘ) পর্যাপ্ত প্রতিনিধিত্বশীল, যদিও সংখ্যায় রাষ্ট্রের মোট জনসংখ্যার অথবা রাষ্ট্রের কোনো অঞ্চলের জনসংখ্যার তুলনায় সংখ্যালঘু, (ঙ) তাদের সংস্কৃতি, রীতি-নীতি, ধর্ম বা ভাষা রাষ্ট্রের সংস্কৃতি, রীতি-নীতি, ভাষা বা ধর্মের সঙ্গে সংরক্ষণে প্রতিশ্রুতিবদ্ধ।’

যারা বাংলাদেশের হিন্দু, বৌদ্ধ, খ্রিষ্টান ও আদিবাসী সম্প্রদায়ভুক্ত জনগোষ্ঠীকে সংখ্যালঘু বলতে চান না, তাদের আবেগের প্রতি আমি শ্রদ্ধাশীল। কেননা তারা ধর্মভিত্তিক পরিচিতি নয়, জাতিসত্তার পরিচয়কে তুলে ধরতে চান, মানুষ পরিচয়কে সমুন্নত রাখতে চান। সেটাই হয়তো সংগত। আর এক শ্রেণির বর্ণচোরা মানুষ, যাদের কারণে অনাকাঙ্ক্ষিত ঘটনাগুলো ঘটে, তারাও বড় গলায় বলেন, ‘এদেশে সংখ্যালঘু বলে কিছু নেই, আমরা সবাই বাংলাদেশি। এদেশের হিন্দু, মুসলমান, বৌদ্ধ, খ্রিষ্টান, আদিবাসী সবাই মিলেমিশে বসবাস করছে’। তারা আরও বলতে চান, ‘এদেশে শুধু হিন্দু, বৌদ্ধ, খ্রিষ্টান বা আদিবাসীদের ওপরই হামলা হয় না, মুসলমানদের ওপরও হয়। তাই, হামলার এ ঘটনাগুলোকে সাম্প্রদায়িক হামলা বলা ঠিক না’। আসলে বিষয়টির গুরুত্ব কমিয়ে দেওয়ার জন্যই এ ধরনের বক্তব্য দেওয়া হয়। কিন্তু বিভিন্ন সময়ে এ জনপদে বিশেষ বিশেষ ধর্মীয় সম্প্রদায় ও জাতিসত্তার মানুষের ওপর যে হামলা হয়, তা সমাজ বা রাষ্ট্রে তাদের সংখ্যাগত স্বল্পতা বা দুর্বলতার বিষয়টি মনে রেখেই হয়।

সাম্প্রদায়িক সহিংসতার ঘটনা এ জনপদে নতুন নয়। পেছন ফিরে তাকালে দেখা যায়, আমাদের এ জনপদে যুগ যুগ ধরে হিন্দু, মুসলমান, বৌদ্ধ, খ্রিষ্টান ও আদিবাসী সম্প্রদায় শান্তিপূর্ণ সহাবস্থান করলেও মাঝেমধ্যেই সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতি বিনষ্টের ঘটনাও ঘটেছে। আর যখনই সাম্প্রদায়িক সহিংসতার ঘটনা ঘটেছে, তখনি দেখা গেছে এর পেছনে কাজ করেছে হীন রাজনৈতিক স্বার্থ চরিতার্থ করা। নিকট অতীতের ঘটনাগুলোর দিকে তাকালে ২০০১-এর অষ্টম জাতীয় সংসদ নির্বাচন-পরবর্তী ভয়াবহতম সহিংসতাকে একটি বড় ধরনের ‘কালিমালিপ্ত অধ্যায়’ হিসাবে অভিহিত করতে হয়। দেশের কয়েকটি অঞ্চলে সংঘটিত এ ঘটনাগুলোকে সাম্প্রদায়িক সহিংসতা না বলে সাম্প্রদায়িক হামলা বলাই যৌক্তিক। কেননা দাঙ্গা বলতে যা বোঝায়, তা এখানে সাধারণত হয় না।

২০০১ সালের নির্বাচনোত্তর সহিংসতার সময়েও আমরা তৎকালীন তত্ত্বাবধায়ক সরকারকে নিষ্ক্রিয় দেখেছি। সেই নির্বাচনে বিজয়ী বিএনপি-জামায়াত জোট সরকার ঘটনার সঙ্গে জড়িতদের রক্ষা করেছে। পরবর্তীকালে আওয়ামী লীগের নেতৃত্বাধীন মহাজোট সরকার ক্ষমতায় এসে বিষয়টি নিয়ে শুধু ‘রাজনীতিই’ করেছে; কিন্তু অপরাধীদের শাস্তির উদ্যোগ গ্রহণ করেনি। এ সময় সংখ্যালঘু নির্যাতনের ঘটনাগুলোর তদন্ত করা হলেও দোষীদের বিচার হয়নি। ফলে ঘটনার সঙ্গে জড়িত প্রতিক্রিয়াশীল রাজনৈতিক অপশক্তি ও সুযোগসন্ধানী দুর্বৃত্তরা আরও বেশি সাহসী হয়ে উঠেছে। অপরাধীরা শাস্তি না পাওয়ার কারণেই পরবর্তীকালে কক্সবাজারের রামু, রংপুরের পাগলাপির, সুনামগঞ্জ ও কুমিল্লায় গুজব রটিয়ে বৌদ্ধ ও হিন্দু সম্প্রদায়ের ওপর হামলা করা হয়। এ ছাড়া নানা কারণে দেশের বিভিন্ন অঞ্চলে সংখ্যালঘু সম্প্রদায়ের ওপর হামলার ঘটনা ঘটেছেই। বাংলাদেশে ধর্মীয় সংখ্যালঘু সম্প্রদায় ছাড়াও ৪৫টি আদিবাসী জাতি-গোষ্ঠী বসবাস করে। তারাও মাঝেমধ্যেই হামলার শিকার হয়। মামলার শিকার হয় আহমদিয়া সম্প্রদায়ও।

এসব দেখে নিরাপত্তাহীনতার আতঙ্কে সংখ্যালঘু জনগোষ্ঠীর দেশত্যাগের ঘটনা ঘটছে। জাতীয় পরিসংখ্যান ব্যুরোর পরিসংখ্যান অনুযায়ী, ১৯৭৪ সালে দেশে ধর্মীয় সংখ্যালঘু (হিন্দু, বৌদ্ধ ও খ্রিষ্টান) মোট জনসংখ্যার ১৪.৬ শতাংশ থাকলেও বর্তমানে তা ৯ শতাংশেরও কম। এ ধারা ক্রমেই নিম্নগামী। তবে সাম্প্রতিক সহিংসতার সময় হিন্দু সম্প্রদায়কে পলায়ন মনোবৃত্তি থেকে বেরিয়ে আসতে দেখা গেছে। এবার তারা প্রতিবাদী হয়েছেন, বিক্ষোভ করেছেন। পাশাপাশি সংখ্যালঘু কমিশন ও সংখ্যালঘু মন্ত্রণালয় গঠনের দাবি তুলেছেন সরকারের কাছে।

সংখ্যালঘু সম্প্রদায়ের ওপর হামলার বিভিন্ন ঘটনা পর্যালোচনা করলে দেখা যায়, প্রতিক্রিয়াশীল ও সুবিধাবাদী রাজনৈতিক চক্র, সাম্প্রদায়িক মনোভাবাপন্ন গোষ্ঠী, স্থানীয় পর্যায়ের সুযোগসন্ধানী-স্বার্থান্বেষী শ্রেণি, সম্পত্তিলোভী, নারীলোলুপ হীন মানসিকতার অমানুষ গোত্রভুক্তরা এ ধরনের হামলার সঙ্গে জড়িত। ক্ষমতার রাজনীতি বা নির্বাচনে জয়-পরাজয়ের কারণেও সংখ্যালঘুদের স্বার্থসংরক্ষণের দাবিদার কোনো কোনো রাজনৈতিক দলের নেতাদেরও সংখ্যালঘুদের ওপর হামলার ঘটনায় জড়িত থাকতে দেখা গেছে অতীতে।

সংখ্যালঘু সম্প্রদায়ের ওপর হামলার কারণ অনুসন্ধান করলে সহজেই দৃষ্টিগোচর হয়, হীন রাজনৈতিক স্বার্থ চরিতার্থ, ভোটব্যাংক ভেঙে দেওয়া, সম্পত্তি দখল করা, অবৈধভাবে দখলকৃত অর্পিত সম্পত্তির মালিকানা পাকাপোক্ত করা, সম্পদ লুটপাট, রাষ্ট্রীয়ভাবে ধর্মপরিচয়ের দিক থেকে সংখ্যালঘু সম্প্রদায়কে অধস্তন করে রাখা, দায়ীদের বিচার না হওয়া, সংখ্যালঘু সম্প্রদায়ের ওপর হামলার ঘটনাকে পুঁজি করে রাজনীতি করার সুযোগ নেওয়া, সামাজিক প্রতিরোধ গড়ে না ওঠা, সংখ্যালঘু সম্প্রদায়ের অসংগঠিত থাকা, সাহসের অভাব ও পলায়নপর মনোবৃত্তি ইত্যাদি কারণে সংখ্যালঘু সম্প্রদায়ের ওপর হামলার ঘটনা ঘটে। উল্লেখ্য, অনেকের মধ্যেই একটি ধারণা প্রচলিত আছে, সংখ্যালঘুরা একটি বিশেষ দলকে ভোট দেয়। তারা না থাকলে ভোটব্যাংকও ভেঙে যাবে। আবার যাদের ভোটব্যাংক হিসাবে সংখ্যালঘুরা পরিচিত, সংশ্লিষ্ট এলাকায় তারা হেরে গেলেও সংখ্যালঘুদের ওপর হামলার ঘটনা ঘটে।

সংখ্যালঘু সম্প্রদায়ের নিরাপত্তার জন্য করণীয়গুলো হচ্ছে-সংখ্যালঘু সম্প্রদায়ের ওপর নিকট অতীতে ঘটে যাওয়া সব ঘটনা তদন্তের জন্য নিরপেক্ষ তদন্ত কমিটি গঠন করা এবং দোষীদের চিহ্নিত করে তাদের বিচার করা; অসাম্প্রদায়িক চেতনায় দেশ গড়ার উদ্যোগ গ্রহণ; সংবিধানকে প্রকৃত অর্থেই ধর্মনিরপেক্ষ চরিত্রে ফিরিয়ে আনা; বিভিন্নমুখী কর্মকাণ্ডের মধ্য দিয়ে নাগরিকদের মধ্যে জাতীয়তাবোধ জাগ্রত করা; আদিবাসীদের সাংবিধানিক স্বীকৃতি প্রদান করা; রাজনীতিতে ধর্মের ব্যবহার ও সাম্প্রদায়িক রাজনীতি নিষিদ্ধ করা; আনুপাতিক প্রতিনিধিত্বভিত্তিক নির্বাচন পদ্ধতি প্রবর্তন (স্থানীয় পর্যায়ে নির্দিষ্ট কোনো প্রার্থীর জয়-পরাজয়ের নির্ধারিত না হওয়ায় সহিংসতার ঝুঁকি কমে যায়); রাষ্ট্র কর্তৃক জাতি-ধর্ম-বর্ণ-গোত্র-নারী-পুরুষ নির্বিশেষে নাগরিকদের সমঅধিকার নিশ্চিত এবং প্রতিটি ঘটনার ক্ষেত্রে সামাজিক প্রতিরোধ গড়ে তোলা।

ধর্মীয় ও জাতিগত সংখ্যালঘুদের ওপর হামলা বন্ধে সরকারকেই নিতে হবে মূল দায়িত্ব। যে কোনো অজুহাতে হাত গুটিয়ে থাকলে চলবে না। কেননা নাগরিকদের সাংবিধানিক অধিকার রক্ষা সরকারের দায়িত্ব। আমাদের রাষ্ট্রপরিচালনার মূল দলিল সংবিধানে সব নাগরিকের সমমর্যাদা (২৭ অনুচ্ছেদ) নিশ্চিতকরণসহ তাদের জীবন (৩২ অনুচ্ছেদ) ও সম্পত্তির অধিকার (৪২ অনুচ্ছেদ) রক্ষার অঙ্গীকার করা হয়েছে। রাষ্ট্র নাগরিকদের জানমাল রক্ষা করবে, এমন আইনি বাধ্যবাধকতাও রয়েছে। অনুচ্ছেদ ১২ (ঘ)-এ ‘কোন বিশেষ ধর্মপালনকারী ব্যক্তির প্রতি বৈষম্য বা তাহার উপর নিপীড়ন, বিলোপ করা হইবে’ বলে উল্লেখ করা হয়েছে। প্রশাসন ও আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীকে অনাকাঙ্ক্ষিত এসব ঘটনা প্রতিরোধে এগিয়ে এসে আইনি দায়িত্ব পালন করতে হবে। ক্ষমতাসীনরাসহ সব রাজনৈতিক দল ও সামাজিক শক্তিসহ শুভবুদ্ধিসম্পন্ন সব সচেতন নাগরিকের দাঁড়াতে হবে আক্রান্তদের পাশে।

আমাদের মনে রাখতে হবে, ধর্মীয় ও জাতিগত সংখ্যালঘুরা এদেশে কারও অনুগ্রহে বসবাস করে না, এটি তাদের জন্মগত ও সাংবিধানিক অধিকার। মহান মুক্তিযুদ্ধ ও ব্রিটিশবিরোধী আন্দোলনসহ এ জনপদের প্রতিটি লড়াই-সংগ্রাম এবং জাতিগত প্রতিটি গৌরবোজ্জ্বল অর্জনে তাদেরও অসামান্য অবদান রয়েছে। এ বিষয়গুলো স্মরণ রেখে, আমরা সবাই যদি স্ব স্ব অবস্থানে থেকে রাষ্ট্র প্রদত্ত, পেশাগত ও নাগরিক দায়-দায়িত্ব, অঙ্গীকার ও দায়বদ্ধতার কথা মনে রেখে সঠিক ভূমিকায় অবতীর্ণ হই, তবে সাম্প্রদায়িক সহিংসতার মতো অনাকাঙ্ক্ষিত ঘটনাগুলো আমরা সহজেই প্রতিরোধ করতে পারব।

সংখ্যালঘু সম্প্রদায়ভুক্ত মানুষগুলোকও মনে করতে হবে-‘এ দেশ, এ মাটি আমার। জন্মগতভাবেই আমরা এদেশের নাগরিক। কারও অনুগ্রহে আমরা এখানে বসবাস করছি না। তাই যে কোনো বিপদে ঐক্যবদ্ধভাবে আমাদের নিজেদের রক্ষা করতে হবে। পাশাপাশি মনে রাখতে হবে, আমরা একা নই। অনেক শুভাকাঙ্ক্ষী, প্রশাসন, আইন-শৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী, প্রগতিশীল রাজনৈতিক শক্তি এবং সমাজের শুভবুদ্ধিসম্পন্ন মানুষ আছে আমদের পাশে। আক্রান্ত হলে সবার সহযোগিতা আমাদের প্রয়োজন।’ নিজভূমে পরবাসী না হয়ে, নাগরিক হিসাবে সব প্রাপ্য অধিকার নিয়েই স্বদেশভূমিতে সবাইকে বসবাস করতে হবে।

নিশ্চয়ই সবার সম্মিলিত প্রয়াসে আমাদের প্রিয় এ মাতৃভূমিকে আমরা হিন্দু-মুসলমান-বৌদ্ধ-খ্রিষ্টান-আদিবাসী তথা জাতি-ধর্ম-বর্ণ-গোত্র-নারী-পুরুষ-ধনী-দরিদ্র নির্বিশেষে সবার জন্য বাসযোগ্য করে তুলতে সক্ষম হব।

দিলীপ কুমার সরকার : কেন্দ্রীয় সমন্বয়কারী, সুশাসনের জন্য নাগরিক (সুজন)

 

Logo

সম্পাদক : আবদুল হাই শিকদার

প্রকাশক : সালমা ইসলাম