Logo
Logo
×

উপসম্পাদকীয়

ইন্দো-ইসরাইলি পরিকল্পনা ব্যর্থ হবে

Icon

মোবায়েদুর রহমান

প্রকাশ: ০৪ জুলাই ২০২৫, ১২:০০ এএম

প্রিন্ট সংস্করণ

ইন্দো-ইসরাইলি পরিকল্পনা ব্যর্থ হবে

ইরান-ইসরাইল ১০ দিনের যুদ্ধবিরতির রেশ কাটতে না কাটতেই পাকিস্তানের পারমাণবিক স্থাপনায় হামলা করার পরিকল্পনা করছে ইসরাইল ও ভারত। ইরানে ইসরাইলি হামলার সঙ্গে যোগ দিয়েছিল আমেরিকা। এবার পাকিস্তানে সম্ভাব্য হামলার নীলনকশা করেছে ইসরাইল। তার সহযোগী থাকছে ভারত। পরিকল্পনা মোতাবেক ইসরাইল ভারতের বিমানঘাঁটি জামনগরে সর্বাধুনিক মার্কিন বিমান এফ-৩৫ এবং এফ-৩৫-এর আগের সংস্করণ এফ-১৬-এর একাধিক স্কোয়াড্রন নিয়ে আসবে। জামনগর থেকে তারা এ বিমান হামলা চালাবে। হামলাকে জোরদার করার জন্য ভারতের জঙ্গিবিমান বহরে সর্বশেষ যুক্ত ফরাসি রাফাল বিমানও ইসরাইলি মিশনের সঙ্গে সংযুক্ত হবে।

এসব খবর দিয়েছেন পাকিস্তানের বহুল পরিচিত সাংবাদিক জিও নিউজের প্রধান সম্পাদক হামিদ মীর। হামিদ মীরের এক্সক্লুসিভ খবর শুধু পাকিস্তান নয়, অন্যান্য প্রভাবশালী দেশের প্রভাবশালী রাজনৈতিক মহল সিরিয়াসলি গ্রহণ করেন। একসময় বিশ্ববিখ্যাত মার্কিন সাময়িকী ‘টাইম’ ম্যাগাজিনের ওয়াল্টার লিপম্যান বা পরবর্তী সময়ে ক্রিস্টিয়ানা আমানপুরীর এক্সক্লুসিভ নিউজ অথবা মার্কিন ‘নিউজ উইকে’র ফরিদ জাকারিয়ার কলামের সঙ্গে হামিদ মীরের এক্সক্লুসিভকে সমান গণ্য করা হতো।

২০০১ সালের অক্টোবরে আমেরিকা যখন আফগানিস্তানে হামলা চালায়, তখন একটি বাংলা দৈনিকের ওয়ার করেসপন্ডেন্ট হিসাবে আমাকে আফগান ওয়ার কাভার করার জন্য পাকিস্তানের পেশওয়ার ও আফগানিস্তানে পাঠানো হয়। সেখানে আমার সঙ্গে দেখা হয় সিএনএন তুরস্কের সাংবাদিক ইমেরি বুরচুনের সঙ্গে। আমরা যখন আফগানিস্তানে প্রবেশের জন্য বেলুচিস্তানের চমন শহরে অবস্থান করছি (চমন শহরের ওধারেই আফগানিস্তান), তখন পাকিস্তানের ‘দি নিউজ ইন্টারন্যাশনালে’ একটি খবর পড়ে চমকে উঠি। তখন ৯/১১ এবং আলকায়দার শীর্ষনেতা ওসামা বিন লাদেনকে নিয়ে মুসলিম জাহান এবং পশ্চিমা দুনিয়া সরগরম। এমন পটভূমিতে দি নিউজ ইন্টারন্যাশনালের খবরে বলা হয়, হামিদ মীর ওসামা বিন লাদেনের সঙ্গে দেখা করে ফিরে এসেছেন। কীভাবে হামিদ মীরের চোখ বেঁধে অজ্ঞাত স্থানে নিয়ে যাওয়া হয়, কীভাবে লাদেনের সঙ্গে তার দেখা হয় এবং কীভাবে আবার চোখ বেঁধে তাকে পাকিস্তানে পাঠানো হয়, সেখানে তার বিবরণ রয়েছে। সেই বিবরণটি আজকের এ লেখায় অপ্রাসঙ্গিক বলে আর উল্লেখ করলাম না। তবে এ মাপের সাংবাদিক হামিদ মীর।

সেই হামিদ মীর এক সপ্তাহ আগে লিখেছেন, মোদি-নেতানিয়াহু জোট কেবল দুটি ব্যক্তির সহযোগিতা নয়। এটি দুটি মতাদর্শের সহযোগিতা। একটি হলো জায়নবাদ এবং অন্যটি হলো হিন্দুত্ববাদ। সাম্প্রতিক ১২ দিনের যুদ্ধে পাকিস্তান কেন ইরানকে প্রকাশ্যে সমর্থন করেছিল, তা নিয়ে অনেক ইসরাইলি ক্ষুব্ধ। গত ১৮ জুন একজন ইসরাইলি সামরিক অফিসার বলেছেন, ইরান অভিযানের পর আমরা পাকিস্তানের পারমাণবিক কর্মসূচি ধ্বংস করার চেষ্টা করতে পারি। ইসরাইলি অধ্যাপক মেইর মাসরির বলেছেন, ইরাকের মতো ইরানকে ধ্বংস করার পর পাকিস্তান ইসরাইলের প্রাথমিক লক্ষ্যবস্তুতে পরিণত হবে। তিনি বলেন, ভারতকে ঘাঁটি হিসাবে ব্যবহার করে বিমান হামলা, ক্রুজ ক্ষেপণাস্ত্র বা ড্রোন হামলা চালানো পাকিস্তানের পারমাণবিক স্থাপনাগুলোর ওপর মারাত্মক ক্ষতি করবে। তিনি আরও উল্লেখ করেন, সিন্ধু ও পাঞ্জাবে পাকিস্তানকে বলকানাইজ করতে ভারত সামরিক আক্রমণ করবে এবং ভারত কর্তৃক আজাদ কাশ্মীর দখলের আশঙ্কা রয়েছে। ফলে ভারত মহাসাগরে চীনের প্রবেশাধিকার বন্ধ হয়ে যাবে। এর অর্থ হলো, ভারত ও ইসরাইল চীনকে গোয়াদর বন্দর থেকে বিচ্ছিন্ন করতে চায়।

হামিদ মীর বলেন, ভারত ও ইসরাইল পাকিস্তানের বিরুদ্ধে বড় বড় পরিকল্পনা করতে পারে, কিন্তু তাদের বুঝতে হবে, পাকিস্তান লেবানন, গাজা, এমনকি ইরানও নয়। পাকিস্তানের ব্যালিস্টিক ক্ষেপণাস্ত্র ইরানি ব্যালিস্টিক ক্ষেপণাস্ত্রের চেয়েও বেশি বিপজ্জনক ও কার্যকর। সাম্প্রতিক ইসরাইল-ইরান যুদ্ধে পাকিস্তান ইরানের পাশে দাঁড়ায় এবং ভারত দাঁড়ায় ইসরাইলের পাশে। ভারত কখনো ইরানের ওপর ইসরাইলি আক্রমণের বিরুদ্ধে এসসিও (সাংহাই করপোরেশন) বিবৃতি-সমর্থন করেনি। ভারত গাজায় গণহত্যা সমর্থন করছে। কারণ ইসরাইলকে সমর্থন করা ভারতের জাতীয় স্বার্থ। মোদি ইসরাইলের সাহায্যে পাকিস্তানে আক্রমণ করার পরিকল্পনা করছেন। কারণ ভারত কাশ্মীরকে আরেকটি গাজায় পরিণত করতে চায়।

হামিদ মীরের মতে, মোদি আসলে বোকার স্বর্গে বাস করছেন। পাকিস্তানের বিরুদ্ধে যুদ্ধ বা কাশ্মীরে গণহত্যা তার রাজনৈতিক প্রয়োজন হয়ে উঠছে। তিনি একটি কথা ভুলে যাচ্ছেন। এটি ১৯৭১ নয়। এটি ২০২৫। ভারত এবং ইসলাইল কাশ্মীরকে গাজায় পরিণত করবে আর পাকিস্তান বসে বসে আঙুল চুষবে, সেটি হবে না। তাদের বুঝতে হবে, পাকিস্তানের ২ হাজার ৭৫০ কিলোমিটার পাল্লার শাহীন-৩ ক্ষেপণাস্ত্র কেবল ভারতকেই নয়, ইসরাইলকেও পারমাণবিক নিরস্ত্রীকরণের জন্য যথেষ্ট।

২.

ভারত ও ইসরাইল উভয় দেশেরই মাথাব্যথার কারণ পাকিস্তান। কিন্তু কেন? কারণ হলো, পাকিস্তানও একটি শক্তিশালী পারমাণবিক দেশ। ভারতের অস্ত্র ভান্ডারে রয়েছে ১৮০টি পারমাণবিক বোমা। পাকিস্তানের রয়েছে ১৭০টি। ইসরাইলের ৭০টি। এসব তথ্য দিয়েছে ‘জেনস ডিফেন্স’ নামক প্রতিরক্ষা ম্যাগাজিনটি। শুধু পাকিস্তান নয়, পাকিস্তানের বিজ্ঞানী ড. আবদুল কাদির খানের ওপর ওদের ছিল জাতক্রোধ। তাকে হত্যা করার একাধিক চেষ্টা হয়েছে। ড. কাদির খান জীবনের অনেক ঝুঁকি নিয়ে, শুধু দেশপ্রেমের আদর্শে উজ্জীবিত হয়ে জীবন-মৃত্যুকে পায়ের ভৃত্য জ্ঞান করে এবং মুসলিম জাহানকে সুরক্ষার মহান মন্ত্রে দীক্ষিত হয়ে আণবিক বোমা নির্মাণে ঝাঁপিয়ে পড়েন। পাকিস্তানে কাদির খানের পারমাণবিক বোমা নির্মাণের কাহিনি রহস্য ও রোমাঞ্চ কাহিনিকেও হার মানায়। কত দুর্গম পথ পাড়ি দিতে হয়েছিল কাদির খানকে, সেটি ছত্রে ছত্রে বিধৃত হয়ে আছে একটি পুস্তকে। পুস্তকটির নাম, ‘দ্য ম্যান ফ্রম পাকিস্তান’। লেখক, ডগলাস ফ্রানৎজ ও ক্যাথেরিন কলিন্স। ওরা কাদির খানকে নিউক্লিয়ার স্মাগলার হিসাবে দেখানোর চেষ্টা করেছে। কিন্তু ওরা ভুলে গেছে, সোভিয়েত ইউনিয়নও (আজকের রাশিয়া) পারমাণবিক শক্তি হয়েছে আমেরিকার এটম বোমার ফর্মুলা চুরি করে। তখন সেটি সোভিয়েত স্মাগলিং হয়নি, তাই না? ইসরাইল ৭০টি বোমার অধিকারী হয়েও সেটি ঘোষণা করেনি। বরং তার পক্ষ নিয়ে অস্ত্র ধরে আমেরিকা এবং ওকালতি করে ভারত।

৩.

‘দ্য ম্যান ফ্রম পাকিস্তান’ গ্রন্থটির কথা থাক। এ ব্যাপারে আমার ব্যক্তিগত অভিজ্ঞতার কথা বলছি। ড. আবদুল কাদির খান ম্যাটেরিয়াল সাইন্সের ওপর মাস্টার্স করেছেন নেদারল্যান্ডসে ডেলফ ইউনিভার্সিটি অফ টেকনোলজিতে। ১৯৭২ সালের দিকে একিউ খান কাজ করতেন নেদারল্যান্ডসে। ইউরেনকো নামের একটি বহুজাতিক পারমাণবিক জ্বালানি কোম্পানিতে, যারা ইউরেনিয়াম এনরিচমেন্ট নিয়ে গবেষণা করত। সে সময় ইউরেনকো ছিল ইউরোপের সর্ববৃহৎ সিভিলিয়ান নিউক্লিয়ার রিসার্চ ফ্যাসিলিটি, যারা ইউরেনিয়াম এনরিচমেন্ট করার জন্য কেয়ার সেন্ট্রিফিউজ বানাত।

ঘটনাচক্রে ১৯৭৬ সালে আর্থসামাজিক উন্নয়নের জন্য নেদারল্যান্ডস সরকারের এক বৃত্তি নিয়ে ৭ মাসের জন্য আমি নেদারল্যান্ডস যাই। আমাকে গবেষণা করতে হয় যে ইনস্টিটিউটে, সেটির নাম হলো, ‘ডেলফ ইউনিভার্সিটি অব টেকনোলজি’। এটি হলো সেই ইনস্টিটিউট, যেখানে ড. আবদুল কাদির খান ইউরেনিয়াম সমৃদ্ধকরণ গবেষণায় নিয়োজিত ছিলেন। এ ইনস্টিটিউটে ৭ মাস পড়াশোনাকালীন ড. কাদির খান সম্পর্কে অনেক কথা শুনলাম। খ্রিষ্টানরা একটি কথা বলে। সেটি হলো, ‘Baptism of fire’, অর্থাৎ নতুন, কিন্তু কঠিন চ্যালেঞ্জ গ্রহণের অগ্নি শপথ। ডেলফটের ওই প্রযুক্তি প্রতিষ্ঠান থেকেও একিউ খান পারমাণবিক বোমা বানানোর দুটি অত্যাবশ্যকীয় উপাদান-ইউরেনিয়াম সমৃদ্ধকরণ এবং সেন্ট্রিফিউজের ফর্মুলা কপি করেছিলেন, যেটিকে ওরা ফর্মুলা চুরি বলে আখ্যায়িত করে।

ফিরে যাচ্ছি একটু পেছনে। ১৯৭১ সালের ১৬ ডিসেম্বর পাকবাহিনী ঢাকায় মিত্রবাহিনীর কাছে আত্মসমর্পণ করে। আর ২০ ডিসেম্বর পাকিস্তানের প্রেসিডেন্ট হিসাবে ক্ষমতা গ্রহণ করেন জুলফিকার আলী ভুট্টো। ’৭১-এর পরাজয়ের পর ভুট্টোর মনে এ ধারণা বদ্ধমূল হয়, ভারতের সামনে টিকে থাকতে হলে পাকিস্তানকে অবশ্যই আণবিক বোমার অধিকারী হতে হবে। প্রেসিডেন্ট হওয়ার পর ১৯৭২ সালের জানুয়ারিতে পাঞ্জাবের মুলতানে তিনি একটি গোপন বৈঠক করেন। এ বৈঠকে হাজির ছিলেন অন্যদের মধ্যে নোবেলবিজয়ী বিশ্ববিখ্যাত পদার্থবিদ ড. আবদুস সালাম, আন্তর্জাতিক খ্যাতিসম্পন্ন পরমাণু বিজ্ঞানী মনির আহম্মেদ। এ বৈঠকে তিনি দ্ব্যর্থহীন কণ্ঠে ঘোষণা করেন, অস্তিত্বের জন্য, টিকে থাকার জন্য আমি আপনাদের কাছ থেকে আণবিক বোমা চাই। বিজ্ঞানীরা যখন বললেন, এজন্য বিপুল অর্থ প্রয়োজন, তখন মিস্টার ভুট্টো বললেন, ঘাস খেয়ে হলেও আমি পারমাণবিক বোমা বানাবো। ড. মনির খান প্লুটোনিয়াম দিয়ে বোমা বানানোর চেষ্টা করে প্রথমে ব্যর্থ হন।

ধীরে ধীরে ভুট্টোর সংকল্পের কথা কাদির খানও জেনে যান। তিনি প্রেসিডেন্ট ভুট্টোকে একটি গোপন চিঠি দেন, যেখানে তিনি বলেন, তিনি ইউরেনিয়াম সমৃদ্ধকরণের মাধ্যমে পাকিস্তানকে পারমাণবিক বোমা উপহার দিতে পারবেন। তার পর অনেক কাহিনি, যা রহস্য উপন্যাসকেও হার মানায়। ভুট্টো কাদির খানের চিঠিতে সাড়া দিলেন। আর কাদির খান তার ডাচ্ (হল্যান্ড) পত্নী ও সন্তান নিয়ে সোজা চলে আসেন করাচিতে।

ইসলামাবাদের অদূরে কাহুটা নামক এক দুর্গম পাহাড়ি স্থানে প্রতিষ্ঠিত হলো খান রিসার্চ ল্যাবরেটরিজ। এ গবেষণাগারে যে কাজ শুরু হলো, তার সাংকেতিক নাম দেওয়া হলো প্রজেক্ট-৬১। নামে-বেনামে বিদেশ থেকে সংগ্রহ করা হলো বিপুল ইউরেনিয়াম। আর কেনা হলো শত শত কোটি টাকার সেন্ট্রিফিউজের রোটরসহ যন্ত্রাংশ। এগুলো আনা হলো কহড়পশবফ ফড়হি অবস্থায়, মার্কিন এবং পশ্চিমা চোখকে ফাঁকি দেওয়ার জন্য। কাদির খানের নাম দেওয়া হলো এজেন্ট করিম। কাদির খানকে হত্যা করার জন্য কিলিং মিশনে নেমে গেল সিআইএ এবং ইসরাইলি মোসাদের গুপ্তচররা। এরপর যেসব ঘটনা ঘটল, সেগুলো জেমস বন্ড কাহিনি বা প্যানিক ইন ব্যাংকক কাহিনিকেও হার মানায়। রাখে আল্লাহ মারে কে, আর মারে আল্লাহ রাখে কে। প্রতিবারই কাদির খানকে হত্যাচেষ্টা ব্যর্থ হয়।

৪.

ভুট্টো বলেছিলেন, আমেরিকার ইংল্যান্ডের যদি খ্রিষ্টান বোমা থাকতে পারে, ইসরাইলের যদি ইহুদি বোমা থাকতে পারে, ভারতের যদি হিন্দু বোমা থাকতে পারে, তাহলে পাকিস্তানের ইসলামি বোমা বানাতে এত আপত্তি কেন? বোমা বানানো হয়েছিল আগেই। অবশেষে ১৯৯৮ সালে প্রধানমন্ত্রী নেওয়াজ শরিফ ঘোষণা করেন, পাকিস্তানের হাতেও আণবিক বোমা রয়েছে। মুসলিম জাহানকে শক্তিশালী করার জন্য কাদির খান তার ইউরেনিয়াম পারমাণবিক বোমার ফর্মুলা ইরান এবং লিবিয়াকেও দেন। তবে তারা আজও বোমা বানাতে পেরেছে কিনা জানা যায়নি।

পারমাণবিক বোমা বানানোই হয়েছিল জুলফিকার আলী ভুট্টোর কাল। ১৯৭৬ সালে মার্কিন পররাষ্ট্রমন্ত্রী ড. হেনরি কিসিঞ্জার পাকিস্তান আসেন। প্রধানমন্ত্রীর সরকারি বাস ভবনে কিসিঞ্জার এবং ভুট্টোর মধ্যে যে উত্তপ্ত বাক্য বিনিময় হয়, সেটি পাশের ঘর থেকে কন্যা বেনজির ভুট্টো আড়ি পেতে সব শুনেছেন। বেনজির বলেন, কিসিঞ্জার ভুট্টোকে বারবার আণবিক বোমার কর্মসূচি পরিত্যাগ করতে বলেন। যখন তার পিতা চূড়ান্ত কথা বললেন, তিনি বোমা বানাবেনই, তখন কিসিঞ্জার এই বলে হুমকি দেন, In that case you will have to face the music. কিন্তু সেই মিউজিক যে এত ভয়াবহ হবে, তা কে জানত। জেনারেল জিয়াউল হক ক্ষমতায় আসার পর আমেরিকার অঙ্গুলিহেলনে আদালতকে প্রভাবিত করে একটি সাজানো মামলায় জুলফিকার আলী ভুট্টোর ফাঁসির রায় আদায় করা হয়। ফাঁসিটি কার্যকর হয় ১৯৭৯ সালে।

মোবায়েদুর রহমান : সিনিয়র সাংবাদিক

journalist15@gmail.com

Logo

সম্পাদক : আবদুল হাই শিকদার

প্রকাশক : সালমা ইসলাম