Logo
Logo
×

দৃষ্টিপাত

কাপড় ধোয়ার ডিটারজেন্ট কতটা ভালো?

Icon

শেখ আনোয়ার

প্রকাশ: ১৭ নভেম্বর ২০২০, ০৬:০০ পিএম

প্রিন্ট সংস্করণ

কাপড় ধোয়ার ডিটারজেন্ট কতটা ভালো?

পরিষ্কার-পরিছন্নতা আধুনিক সভ্যতার অঙ্গ হয়ে দাঁড়ালেও খুব কম মানুষই ব্যক্তিগত পরিছন্নতার সঙ্গে পরিবেশ পরিষ্কার পরিছন্ন রাখার সম্পর্কটা বোঝেন।

খ্রিস্টপূর্ব আড়াই হাজার বছর পূর্বেও সাবান তৈরির কথা শোনা যায়। তখন সাবান তৈরি হতো প্রাণীজ ও উদ্ভিদজ তেলের সঙ্গে ক্ষারীয় লবণ মিশিয়ে। উপমহাদেশে বহু প্রাচীনকাল থেকেই কাপড় কাচা ও গোসলের কাজে সাবানের ব্যবহার হতো।

এখন কাপড় কাচার কাজে সাবানের পরিবর্তে ব্যাপকভাবে ব্যবহৃত হচ্ছে সিন্থেটিক ডিটারজেন্ট বা গুঁড়ো সাবান। ডিটারজেন্ট শিল্প এ উপমহাদেশে এখন অন্যতম বৃহৎ শিল্প।

গবেষণায় জানা যায়, ডিটারজেন্ট তৈরি হয় বিভিন্ন রাসায়নিক বস্তু দিয়ে। ডিটারজেন্টে থাকে ফসফেট। এই ফসফেট মানুষের ত্বকের জন্য মারাত্মক ক্ষতিকর। দীর্ঘদিন ধরে ডিটারজেন্টে মেশানো পানি নাড়াচাড়া করলে ত্বকের উপরিভাগে ক্ষয় শুরু হয়। ফলে ত্বক হয়ে যায় খসখসে।

এ থেকে জন্ম নিতে পারে নানাবিধ চর্মরোগ। এ কারণে প্রতিবেশী দেশ ভারতের স্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞরা এর ব্যবহার সম্পর্কে বিরুদ্ধ মনোভাব পোষণ করে থাকেন। স্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞরা দাবি করেন- ডিটারজেন্ট তৈরিতে এমন কিছু উপাদান ব্যবহার করা হয়, যা কেবল মানুষের ত্বক নয়, পরিবেশের জন্যও ক্ষতিকর।

গবেষকরা বলছেন, ‘পানিতে ডিটারজেন্টের ফসফরাস এবং এর যৌগগুলো পানিকে ব্যবহারের অনুপযোগী করে তোলে। এগুলো পানিতে ক্ষুদ্র ক্ষুদ্র উদ্ভিদের জন্ম দেয়, যেগুলো মাত্রাতিরিক্ত দুর্গন্ধই শুধু ছড়ায় না; প্রাণঘাতী বিভিন্ন ব্যাকটেরিয়া ও ভাইরাসজনিত রোগের জীবাণুর আশ্রয়দাতা হিসেবে কাজ করে।’

ডিটারজেন্ট দিয়ে কাপড় কাচার পর কাপড়ে যে রাসায়নিক অবশেষ থেকে যায়, তা ত্বক বা ফুসফুসের মাধ্যমে শরীরে প্রবেশ করে। এর ফলে নানারকম স্বাস্থ্য সমস্যা দেখা দেয় যেমন- অ্যালার্জি, ত্বকের জ্বালা ধরা বা চুলকানি এবং খুব অল্প হলেও ক্যান্সার।

ডিটারজেন্টকে সুগন্ধযুক্ত করতে যেসব রাসায়নিক দ্রব্য ব্যবহার করা হচ্ছে, তা থেকে অ্যালার্জি ছাড়াও ফুসফুসের ক্ষতি হতে পারে।

বিশেষত যারা হাঁপানি বা হার্টের অসুখে ভুগছেন, তাদের ক্ষেত্রে ওই সুগন্ধি বিপদ ডেকে আনতে পারে। বয়স্কদের এ ব্যাপারে আরও সতর্ক হওয়া উচিত; কারণ অধিক মাত্রায় সিন্থেটিক ডিটারজেন্টের সংস্পর্শে এলে একজিমা হতে পারে। তাই এ ব্যাপারে সবার সাবধান হওয়া জরুরি।

বিজ্ঞান লেখক ও গবেষক, ঢাকা

কাপড়

Logo

সম্পাদক : আবদুল হাই শিকদার

প্রকাশক : সালমা ইসলাম