Logo
Logo
×

দৃষ্টিপাত

চাকরিপ্রার্থীদের ভোগান্তি লাঘবে সময়োপযোগী পদক্ষেপ চাই

Icon

ফজলে রাব্বি

প্রকাশ: ০৫ এপ্রিল ২০২২, ০৬:০০ পিএম

প্রিন্ট সংস্করণ

একাডেমিক শিক্ষাজীবনের ইতি ঘটিয়ে একজন শিক্ষার্থী চাকরিজীবনে পুরোপুরি মনোনিবেশ করে। এজন্য তাকে দিতে হয় প্রতিযোগিতামূলক পরীক্ষা। আর এ পরীক্ষা দিতে গিয়ে চাকরি প্রার্থীদের পোহাতে হয় নানা দুর্ভোগ ও ভোগান্তি। প্রথমত সবচেয়ে বড় সমস্যা হলো প্রশ্নফাঁস। এ কারণে অযোগ্য এবং অদক্ষরা যোগ্যদের স্থান দখল করে নিচ্ছে এবং রাষ্ট্রকে এর মাশুল দিতে হচ্ছে। অদক্ষ চাকরিপ্রার্থী প্রশ্নফাঁস নামক ভয়াবহ জালিয়াতির আশ্রয় নিয়ে সংশ্লিষ্ট পদে নিয়োগ পাচ্ছে এবং যোগ্য এবং মেধাবীরা বঞ্চিত হচ্ছে। এ কারণে একদিকে যেমন যোগ্যরা হতাশায় নিমজ্জিত হচ্ছে; তেমনি রাষ্ট্র প্রদত্ত দায়িত্ব সুষ্ঠুভাবে সম্পন্ন হচ্ছে না। এ থেকে রেহাই পেতে হলে অতিদ্রুত প্রশ্নফাঁস নামক ভয়াবহ জালিয়াতি বন্ধ করা প্রয়োজন। প্রশ্নফাঁস চক্রের বিরুদ্ধে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সার্বক্ষণিক কঠোর নজরদারি রাখতে হবে এবং প্রশ্ন মডারেশন থেকে শুরু করে প্রিন্টিং, কেন্দ্রে পৌঁছানো পর্যন্ত সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষকে আগের চেয়ে অনেকাংশে সচেতনভাবে দায়িত্ব পালন করতে হবে।

দ্বিতীয়ত, সরকারি চাকরিতে আবেদন ফি সাধারণত পদভেদে ৩০০ থেকে ৭০০ টাকা পর্যন্ত হয়ে থাকে, যা সদ্য স্নাতক পাশ করা একজন বেকারের পক্ষে দেওয়া কষ্টসাধ্য। একজন চাকরিপ্রত্যাশীকে অনেক সময় অনাহার বা অর্ধাহারে থেকে আবেদনের ফি জোগাতে হয়। এজন্য চাকরির আবেদন ফি কমানো উচিত।

তৃতীয়ত, সরকারি চাকরির পরীক্ষাগুলো বেশিরভাগই বিভাগীয় শহরগুলোতে অনুষ্ঠিত হয়ে থাকে। প্রায়ই এমন জায়গায় পরীক্ষার কেন্দ্র নির্ধারণ করা হয়, যে কেন্দ্রে বই, সেলফোনসহ অন্যান্য জিনিস রাখার পর্যাপ্ত পরিমাণ জায়গার অভাব থাকে এবং কেন্দ্রটি বেশিরভাগ চাকরিপ্রার্থীদের অপরিচিত।

চতুর্থত, পদের তুলনায় অধিক চাকরিপ্রত্যাশীর সুপারিশ করা। এতে করে অনেকেই শেষ পর্যন্ত নন-ক্যাডারের আশায় থেকে পোস্টিং না পেয়ে মনোবল হারিয়ে ফেলে। যতগুলো পদ খালি আছে, ততগুলো পদের সুপারিশ করে অবশিষ্ট উত্তীর্ণ প্রার্থীদের তালিকা সংশ্লিষ্ট পদে নিয়োগ দিয়ে পর্যায়ক্রমে প্রকাশ করা উচিত। তাহলে ওই চাকরিপ্রত্যাশী ব্যক্তি তার জন্য বিকল্প অপশন বের করবে।

পরিশেষে বিপিএসসি বা বিপিএসসি’র আদলে নন-ক্যাডার পদে নিয়োগের জন্য নতুন কোনো কমিশন গঠন করে গ্রেডভিত্তিক কেন্দ্রীয়ভাবে বছরে একটি বা দুটি পরীক্ষা নেওয়া হলে একদিকে যেমন চাকরিপ্রার্থীদের ভোগান্তি কমবে; তেমনি নিয়োগগুলোও যথেষ্ট সুষ্ঠু হওয়ার সম্ভাবনা বেশি থাকবে। এতে করে রাষ্ট্রের কাজগুলো দ্রুত সম্পন্ন হবে এবং জনগণ ভালোমানের সেবা পাবে। পদ্ধতিটি রাষ্ট্র এবং চাকরিপ্রার্থীদের ভোগান্তি লাঘবে সহায়ক হবে। রাষ্ট্রের সংশ্লিষ্ট প্রতিষ্ঠানকে জনবল নিয়োগের জন্য অতিরিক্ত কর্মঘণ্টা ব্যয় করতে হবে না। এর ফলে প্রতিষ্ঠানগুলোতে গতিশীলতা আসবে এবং চাকরিপ্রার্থীরাও উপকৃত হবে; কারণ, তাদের তখন বাড়তি চাকরির আবেদন ফি এবং সময়ের অপচয় দুটোই কমে আসবে। আশা করি যথাযথ কর্তৃপক্ষ বিষয়টি বিবেচনায় নেবেন।

চাকরিপ্রত্যাশী, বংশাল, ঢাকা

Logo

সম্পাদক : আবদুল হাই শিকদার

প্রকাশক : সালমা ইসলাম