মরা পামগাছগুলো দুর্ঘটনার কারণ হতে পারে
সেলিম আল রাজ
প্রকাশ: ২৪ এপ্রিল ২০২৪, ১২:০০ এএম
প্রিন্ট সংস্করণ
|
ফলো করুন |
|
|---|---|
বৈশাখে মৌসুমি বায়ুর প্রবাহে ঝড়ো হাওয়া ও কালবৈশাখীর তাণ্ডব দেখা দেয়। আমরা তাই বসতবাড়ি যথাসম্ভব নিরাপদ রাখার জন্য গাছের ডালপালা কেটে রাখি। কিন্তু সড়ক, মহাসড়ক, রাস্তাঘাট, বাজার প্রভৃতি গুরুত্বপূর্ণ স্থানের গাছের ডালপালা ছাঁটা কিংবা মরা গাছ কাটার বিষয়ে সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের উদাসীনতা আমাদের ব্যথিত করে। এ কারণে ঝড় হলে রাস্তাঘাটে গাছ-ডালপালা পড়ে থাকে। এতে ভোগান্তির সৃষ্টি হয়। অনেক সময় বৈদ্যুতিক তারের উপর ডাল পড়ে বিদ্যুতায়িত হয়ে দুর্ঘটনার শিকার হন পথচারী। অনেক সময় প্রাণহানির ঘটনাও ঘটে। ঝুঁকির মধ্যে থাকে অনেক গুরুত্বপূর্ণ স্থাপনা।
এমনিভাবে ময়মনসিংহের গৌরীপুর উপজেলা পরিষদসংলগ্ন জোড়া পুকুরপাড়ে অবস্থিত দৃষ্টিনন্দন স্থাপনা বঙ্গবন্ধু চত্বরটি ঝুঁকিতে রয়েছে। যে কোনো মুহূর্তে মরা পামগাছ ভেঙে দুর্ঘটনা ঘটতে পারে। ২০টি পাম গাছের মধ্যে ৬টির মাথা পচে গেছে। এছাড়াও বঙ্গবন্ধু চত্বরের পাশে স্থাপিত গৌরীপুর পাইলট বালিকা উচ্চ বিদ্যালয়ের সামনে এবং গোবিন্দ জিউর মন্দিরের সামনে একটি করে মরা পামগাছ রয়েছে। উল্লেখ্য, প্রাকৃতিক কারণের পাশাপাশি নির্বিচারে পামগাছে লোহার পেরেক দিয়ে প্যানা-ফেস্টুন টানানোর ফলে গাছগুলো টিকতে পারছে না। এসব পামগাছ যে কোনো মুহূর্তে ভেঙে মারাত্মক দুর্ঘটনা ঘটতে পারে।
মূলত মুক্তিযুদ্ধের ইতিহাস-ঐতিহ্যকে আগামী প্রজন্মের কাছে তুলে ধরার জন্য ২০১৩ সালে বঙ্গবন্ধু চত্বর তৈরি করা হয়। স্থাপনাটিতে রয়েছে জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান ও জাতীয় চার নেতার ম্যুরাল। এর পাশেই রয়েছে পাথরে খোদায় করা সাত বীরশ্রেষ্ঠ, বন্ধবন্ধুর পরিবারের সদস্যদের ভাস্কর্য এবং স্থানীয় গুরুত্বপূর্ণ ব্যক্তিদের প্রতিকৃতি। জাতীয় ও দলীয় বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ দিনগুলোয় বঙ্গবন্ধু চত্বরে পুষ্পস্তবক অপর্ণ করতে ব্যাপক মানুষের সমাগম হয়। এছাড়াও দৃষ্টিনন্দন স্থাপনাটি দেখতে অনেকেরই আগমন ঘটে। সুন্দর এ স্থাপনগুলো নির্মাণের পর থেকে রাজনৈতিক, সামাজিক, সাংস্কৃতিক সংগঠনগুলো বিভিন্ন দিবসে নানা আয়োজন করে থাকে এখানে। ঝড়বৃষ্টিতে পথচারী, রিকশা, অটোবাইক, হকারসহ নানা পেশার মানুষ ছাউনির নিচে দাঁড়ায়।
উপজেলা পরিষদ, গৌরীপুর মহিলা কলেজ, গৌরীপুর পাইলট বালিকা উচ্চবিদ্যালয়, অগ্রদূত নিকেতন আদর্শ উচ্চবিদ্যালয়, উপজেলা কৃষি অফিস, গোবিন্দবাড়ি মন্দির, মুক্তিযোদ্ধা কমপ্লেক্স, শহিদ মিনার, বড় মসজিদ, দুর্গাবাড়ি মন্দির, প্রেস ক্লাব, শিল্পকলা একাডেমি, সংগীত নিকেতন, বড় বাজার, পৌর ভূমি অফিসসহ বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ প্রতিষ্ঠান বঙ্গবন্ধু চত্বরের আশপাশেই অবস্থিত। শহরের প্রাণকেন্দ্র হাওয়ায় দিন-রাত এ রাস্তা দিয়ে স্কুল-কলেজগামী শিক্ষার্থী, পথচারী, গণপরিবহণ যাতায়াত করে। তাই কোনো দুর্ঘটনা ঘটার আগেই মরা পামগাছগুলোর অপসারণ জরুরি। পাশাপাশি সড়ক, মহাসড়ক, রাস্তাঘাট, বাজার প্রভৃতি গুরুত্বপূর্ণ স্থানের গাছের ডালপালা ছাঁটা এবং মরা গাছ কাটার বিষয়ে কর্তৃপক্ষের দৃষ্টি আকর্ষণ করছি।
প্রভাষক, গৌরীপুর মহিলা ডিগ্রি কলেজ, ময়মনসিংহ
