গর্ভকালীন ডায়াবেটিসে সুস্থতা
এমদাদুর রহমান উদয়
প্রকাশ: ২৩ এপ্রিল ২০২৫, ১২:০০ এএম
প্রিন্ট সংস্করণ
ছবি: সংগৃহীত
|
ফলো করুন |
|
|---|---|
ডায়াবেটিস হলো শরীরের এমন একটি গুরুতর অবস্থা, যখন আমাদের শরীর নিজে থেকে ইনসুলিন তৈরি করতে পারে না বা তৈরি হওয়া ইনসুলিন শরীরের চাহিদা অনুযায়ী ব্যবহার করতে পারে না। এর ফলে রক্তে শর্করার বা গ্লুকোজের মাত্রা স্বাভাবিকের চেয়ে বেশি হয়। বর্তমানে আমাদের দেশে এ রোগে আক্রান্ত রোগীর সংখ্যা ক্রমেই বাড়ছে। এর অন্যতম কারণ হিসাবে দৈহিক পরিশ্রমে অনীহা এবং অনিয়ন্ত্রিত খাদ্যাভ্যাসকে দায়ী করা যায়। পরিমিত আহার, নিয়মিত ওষুধ সেবন ও শারীরিক ব্যায়ামের মাধ্যমে এটি অনেকাংশেই নিয়ন্ত্রণ করা সম্ভব। তবে গর্ভকালীন ডায়াবেটিস সাধারণ সময়ের চেয়ে অধিকতর গুরুতর পরিস্থিতির সৃষ্টি করতে পারে। আগে ডায়াবেটিস না থাকলেও গর্ভধারণের সময়ে এ সমস্যা নতুন করে সৃষ্টি হতে পারে। তাই গর্ভাবস্থায় ডায়াবেটিস সম্পর্কে সম্যক জ্ঞান রাখা ও সচেতন থাকা প্রত্যেক মায়ের জন্য গুরুত্বপূর্ণ।
মূলত গর্ভকালীন ডায়াবেটিস হলো এমন একটি অবস্থা, যেখানে ডায়াবেটিসবিহীন মহিলার গর্ভাবস্থায় রক্তে শর্করার মাত্রা বেশি থাকে। তবে সাধারণ অবস্থা থেকে গর্ভকালীন ডায়াবেটিস সাধারণত খুব কম লক্ষণই প্রকাশ করে। গর্ভকালীন স্থূলতার কারণে প্রি-এক্লাম্পসিয়া, সিজারিয়ান সেকশন এবং ভ্রূণ ম্যাক্রোসোমিয়া, সেই সঙ্গে গর্ভকালীন ডায়াবেটিসের হার বৃদ্ধি পায়। গর্ভকালীন ডায়াবেটিসের যথাযথ চিকিৎসা করা না হলে আক্রান্ত মায়ের গর্ভে জন্ম নেওয়া শিশুদের ম্যাক্রোসোমিয়া, জন্মের পর হাইপোগ্লাইসেমিয়া এবং জন্ডিসের ঝুঁকি বেশি থাকে। এছাড়া গর্ভকালীন ডায়াবেটিসের মাত্রা অনিয়ন্ত্রিত হলে গর্ভের সন্তান মৃত হওয়ারও প্রবল আশঙ্কা থাকে। তবে শুরু থেকে স্বাস্থ্যকর জীবনযাপন ও সঠিক খাদ্যাভ্যাসে সহজেই এ ঝুঁকি কমানো সম্ভব।
তাই এ সময়ে নিয়মিত ডায়াবেটিস পরীক্ষা ও নিয়ন্ত্রণের বিষয়টিতে সর্বোচ্চ গুরুত্ব দিতে হবে। এ সময় যেহেতু মায়ের খাবারের চাহিদা স্বাভাবিকের তুলনায় বেশি থাকে, তাই পরিমিত ও সুষম খাদ্যাভ্যাস গড়ে তুলতে হবে। খাদ্যাভ্যাস পরিবর্তন ও নিয়মিত ব্যায়ামের মধ্য দিয়ে এ ডায়াবেটিস নিয়ন্ত্রণ করা সম্ভব। তাই খাবারের সঙ্গে সঙ্গে প্রতিদিন হালকা ব্যায়াম ও হাঁটাহাঁটির অভ্যাস করতে হবে। আগে থেকে ডায়াবেটিসে আক্রান্ত থাকুন বা নাই থাকুন, এ সময় নিয়মিত চেকআপ ও ডাক্তারের পরামর্শ মেনে চললে মা ও শিশু উভয়ের স্বাস্থ্য সুরক্ষা নিশ্চিত করা সম্ভব হবে।
শিক্ষার্থী, স্বাস্থ্য অর্থনীতি ইনস্টিটিউট, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়।
