Logo
Logo
×

দৃষ্টিপাত

তবুও বলতে হয়

Icon

আ জ ম সামশুল হক

প্রকাশ: ১৪ মে ২০২৫, ১২:০০ এএম

প্রিন্ট সংস্করণ

আমাদের দেশে সমাজব্যবস্থায় ও অর্থনৈতিক বিশ্লেষণে মানুষের মধ্যে শ্রেণি বিভাজনের স্তর চারটি-নিম্নবিত্ত, নিম্নমধ্যবিত্ত, মধ্যবিত্ত ও উচ্চবিত্ত। কালের চক্রে ও বর্তমান প্রেক্ষাপটে নিম্নমধ্যবিত্ত ও মধ্যবিত্তের জীবনমানের অবস্থা নাজুকই বলা চলে। এক কথায়, এ দুটি স্তর আস্তে আস্তে বিলুপ্তির পথে। জীবনকে নিয়ে তাদের স্বপ্ন দেখার সুযোগ সৃষ্টি হচ্ছে না। এক্ষেত্রে অতীতের সরকার এবং অন্তর্বর্তী সরকারের মধ্যে কোনো অমিল খুঁজে পাচ্ছি না। প্রাকৃতিক দুর্যোগ, রাজনৈতিক অস্থিতিশীল পরিবেশ, বেকারত্ব এবং দ্রব্যমূল্যের ঊর্ধ্বগতির প্রভাব তাদের জীবনে এখনো বর্তমান। কাজেই বাস্তবতা বলছে, দেশে এখন দুটি শ্রেণি বর্তমান। একটি হচ্ছে সাধারণ, অন্যটি অসাধারণ। অসাধারণের ব্যাখ্যার প্রয়োজন পড়ে না। তারা কারণে-অকারণে বিত্তশালী থেকে অধিকতর বিত্তশালী হচ্ছে। অপরদিকে সাধারণ মানুষ দিন দিন নিঃস্ব হচ্ছে। সাধারণ মানুষের জীবনমানের উন্নয়ন না হওয়া পর্যন্ত দেশের প্রকৃত উন্নয়ন নিরূপণ করা কঠিন।

এ সরকারের প্রতিশ্রুতি অনুসারে, ডিসেম্বর ২৫ থেকে জুন ২৬-এর মধ্যে সংসদ নির্বাচন অনুষ্ঠিত হতে পারে। নির্বাচনের দিনক্ষণ যতই ঘনিয়ে আসছে, রাজনৈতিক অস্থিরতা প্রকট হতে দেখা যাচ্ছে। এ সুযোগের অপব্যবহার করে কিছু অসাধু ব্যবসায়ী, বিশেষ করে মজুতদার ও সিন্ডিকেট গং বাজারে এক ধরনের কৃত্রিম সংকট তৈরির অপচেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছে। সংশ্লিষ্ট মন্ত্রণালয় ও ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ অধিদপ্তরের পক্ষ থেকে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করা হলেও সিন্ডিকেট গংরা তা আমলে নিচ্ছে না। প্রতিটি জিনিসের দাম নির্ধারণ করা হয়েছে; কিন্তু তা তারা মানতে নারাজ। এদিকে দখলদারদের অত্যাচার ও মানসিক চাপে সাধারণ মানুষ দিশাহারা। পরিত্রাণের কোনো উপায় নেই, যেহেতু তারা অসহায়। ভূমি মন্ত্রণালয় কর্তৃক ডিজিটাল পদ্ধতি চালু করার নির্দেশনা থাকলেও ভূমি রেজিস্ট্রেশন অফিসে আগের পদ্ধতি চালু রেখে জনগণকে আর্থিক হয়রানির মাধ্যমে নিরুৎসাহিত করা হচ্ছে। স্বাস্থ্য খাতের পরিস্থিতিও নাজুক। ওষুধ ব্যবসায়ীরা নিজেদের মতো করে ওষুধের দাম হাঁকিয়ে গেলেও ওষুধ প্রশাসন অধিদপ্তর নির্বিকার। হুন্ডি ব্যবসায়ীরাও আগের চেয়ে সরব। আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর চোখকে ফাঁকি দিয়ে দাপটের সঙ্গে তারা ব্যবসা চালিয়ে যাচ্ছে। শেয়ারবাজারের বেগতিক অবস্থা দেখে ক্ষুদ্র বিনিয়োগকারীদেরও মাথায় হাত। বিশেষ করে এপ্রিল মাসজুড়ে অভিভাবকহীনভাবে শেয়ারবাজার পরিচালিত হয়েছে। ফলে দেশে অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধি হচ্ছে বাধাগ্রস্ত। বর্তমানে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর লোকবল কম হওয়ার কারণে আগের মতো সাঁড়াশি অভিযানও পরিচালনা হচ্ছে না। খুন-খারাবি, মারামারি, চুরি-ডাকাতির ঘটনা হ্রাস পাচ্ছে না। সরকারি-আধা সরকারি অফিসগুলোয় বর্তমানে ঘুস বাণিজ্যের পরিসর আগের চেয়ে কম হলেও বদলি ও নিয়োগ বাণিজ্যের ব্যবসা রমরমা। বাংলাদেশ একটি ছোট্ট দেশ হয়েও বিশ্বপরিমণ্ডলে এর গুরুত্ব কম নয়। উন্নত বিশ্বের সঙ্গে তাল মিলিয়ে উন্নয়নশীল দেশের কাতারে এখন বাংলাদেশ। উন্নতির শিখরে দেশ এগিয়ে যাবে, এটাই আমাদের প্রত্যাশা।

প্রাবন্ধিক

Logo

সম্পাদক : আবদুল হাই শিকদার

প্রকাশক : সালমা ইসলাম