Logo
Logo
×

বাতায়ন

জীববৈচিত্র্য সংরক্ষণ ও প্রতিবেশ পুনরুদ্ধারে করণীয়

Icon

মো. আশরাফ উদ্দিন

প্রকাশ: ০৪ জুন ২০২১, ০৬:০০ পিএম

প্রিন্ট সংস্করণ

জীববৈচিত্র্যের সন্নিবেশ ও সমাহারে সৃষ্ট প্রকৃতি ও প্রতিবেশের ওপর ভিত্তি করে টিকে আছে আমাদের জীবন। সৃষ্টির সেরা জীব হলেও বিশ্বজুড়ে প্রতিবেশ বিনষ্ট এবং বিভিন্ন প্রজাতির প্রাণী ও উদ্ভিদের বিলুপ্তির মূলে রয়েছে মানুষের অপরিণামদর্শী কর্মকাণ্ড। বিশ্বব্যাপী মানবসৃষ্ট চাপে অবক্ষয়ের মুখে পতিত প্রতিবেশ ও জীববৈচিত্র্য পুনরুদ্ধারের সংকল্প বাস্তবায়নে যাতে মানুষের মনন-মনীষায় একটি প্রজন্মগত পরিবর্তন আসে এবং বর্তমান প্রজন্ম প্রতিবেশ পুনরুদ্ধার এবং জীববৈচিত্র্য সংরক্ষণে এগিয়ে আসে সে লক্ষ্য নিয়ে পৃথিবীর এক সংকটময় মুহূর্তে পালিত হচ্ছে এবারের বিশ্ব পরিবেশ দিবস। জাতিসংঘ পরিবেশ কর্মসূচির উদ্যোগে ১৯৭২ সাল থেকে সারা বিশ্বে প্রতি বছর ৫ জুন দিবসটি পালিত হয়ে আসছে। জাতিসংঘ পরিবেশ কর্মসূচি এ বছরের বিশ্ব পরিবেশ দিবসের প্রতিপাদ্য নির্ধারণ করেছে- ‘প্রতিবেশ পুনরুদ্ধার, হোক সবার অঙ্গীকার’। আর স্লোগান- ‘প্রকৃতি সংরক্ষণ করি, প্রজন্মকে সম্পৃক্ত করি।’

জীববৈচিত্র্য সংরক্ষণ এবং প্রতিবেশ পুনরুদ্ধারকে গুরুত্ব দিয়ে জাতিসংঘ ২০২১ থেকে ২০৩০- এ দশককে UN Decade Ecosystem Restoration ঘোষণা করেছে। বর্তমান জাতীয় ও আন্তর্জাতিক প্রেক্ষাপটে জাতিসংঘ পরিবেশ ঘোষিত বিগত বছর এবং এ বছরের পরিবেশ দিবসের প্রতিপাদ্য ও স্লোগান অনেক বেশি প্রাসঙ্গিক হয়ে উঠেছে। প্রকৃতি সংরক্ষণে আমরা কী করব, কী করব না সে বিষয়ে এ প্রজন্মের প্রত্যেক নাগরিককে দায়িত্ব নিতে হবে, দায়িত্বশীল আচরণ করতে হবে- এ অমোঘ বাণীটিই নিয়ে এসেছে এবারের বিশ্ব পরিবেশ দিবস।

বিশ্বব্যাপী জীববৈচিত্র্য ও প্রতিবেশ অতীতের যে কোনো সময়ের চেয়ে অনেক বেশি হুমকির সম্মুখীন। জাতিসংঘের তথ্যমতে, প্রকৃতি ধ্বংসের বর্তমান ধারা চলতে থাকলে আগামী ১০ বছরের মধ্যে বিশ্বব্যাপী প্রায় ১০ লাখ প্রজাতি বিলুপ্ত হতে পারে। জলবায়ু পরিবর্তন যেভাবে হচ্ছে, তা যদি চলতে থাকে তাহলে ২০৭০ সালের মধ্যে বিশ্বব্যাপী প্রতি তিনটি প্রাণী ও উদ্ভিদের একটি প্রজাতি বিলুপ্ত হতে পারে। গত ৫০ বছরে গড়ে ৬০ শতাংশের বেশি বন্যপ্রাণী হ্রাস পেয়েছে। এ হিসাবে গত ১০ মিলিয়ন বছরের তুলনায় বর্তমানে প্রজাতি বিলুপ্তির গড় হার ১০ থেকে ১০০ গুণ বেশি। পৃথিবীব্যাপী বায়োস্ফিয়ার রিজার্ভগুলো মনুষ্য কর্মকাণ্ডে অস্বাভাবিকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। পৃথিবীর ৭৫ শতাংশ ভূ-ভাগে মানুষ ভূমির ব্যবহার পরিবর্তন করেছে। ২০১০ থেকে ২০১৫ সালের মধ্যে ৩২ মিলিয়ন হেক্টর বনভূমি ধ্বংস হয়েছে। আমরা যদি পরিবেশগত এ অবক্ষয় রোধ করতে না পারি, তাহলে ব্যাপকভাবে জীববৈচিত্র্য ও প্রতিবেশ ধ্বংসের কারণে মানুষের খাদ্য ও স্বাস্থ্য ব্যবস্থায় এর মারাত্মক নেতিবাচক প্রভাব পড়বে।

জীববৈচিত্র্য ও প্রকৃতি সংরক্ষণের লক্ষ্যে জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান স্বাধীনতা অর্জনের পরপরই কাজ শুরু করেন। ১৯৭৩ সালে বঙ্গবন্ধু সরকার Water Pollution Control Ordinance 1973 জারি করে। ১৯৭৩ সালেই তিনি পানি দূষণ নিয়ন্ত্রণ প্রকল্প গ্রহণের মাধ্যমে স্বাধীন বাংলাদেশে প্রকৃতি ও পরিবেশ সংরক্ষণ কার্যক্রমের সূচনা করেন। বন্যপ্রাণী সংরক্ষণ ও ব্যবস্থাপনার জন্য একই বছরে জারি করা হয় Bangladesh Wild Life (Preservation) Order 1973. সরকার ১৯৮৯ সালে পরিবেশ, বন ও জলবায়ু পরিবর্তন মন্ত্রণালয় নামে পৃথক একটি মন্ত্রণালয় গঠন করেছে এবং পরিবেশ দূষণ নিয়ন্ত্রণ অধিদপ্তরের নাম পরিবর্তন করে পরিবেশ অধিদপ্তর করে পরিবেশ, বন ও জলবায়ু পরিবর্তন মন্ত্রণালয়ের অধীনে ন্যস্ত করা হয়েছে। প্রতিষ্ঠার পর থেকেই পরিবেশ অধিদপ্তর তার সীমিত জনবল ও বাজেট দিয়ে পরিবেশসংক্রান্ত সমস্যা সমাধানের লক্ষ্যে প্রচেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছে।

বিপুল জনগোষ্ঠী, দারিদ্র্য, অপরিকল্পিত নগরায়ণ, শিল্পায়ন ইত্যাদি নানা কারণে দেশের জীববৈচিত্র্য তথা সার্বিক পরিবেশগত সমস্যা বৃদ্ধির প্রেক্ষাপটে পরিবেশ অধিদপ্তরের কার্যক্রম উত্তরোত্তর বৃদ্ধি পাচ্ছে। সম্পদের সীমাবদ্ধতা সত্ত্বেও সরকার প্রতিবেশ সংরক্ষণে নানাবিধ কার্যক্রম গ্রহণ ও বাস্তবায়ন করে যাচ্ছে। পরিবেশ, প্রতিবেশ ও জীববৈচিত্র্য সংরক্ষণের ওপর বিশেষ গুরুত্বারোপ করে বাংলাদেশের সংবিধানে রাষ্ট্র পরিচালনার মূলনীতি অধ্যায়ের ১৮ (ক) অনুচ্ছেদে বলা হয়েছে, ‘রাষ্ট্র বর্তমান ও ভবিষ্যৎ নাগরিকদের জন্য পরিবেশ সংরক্ষণ ও উন্নয়ন করিবেন এবং প্রাকৃতিক সম্পদ, জীববৈচিত্র্য, জলাভূমি, বন ও বন্যপ্রাণীর সংরক্ষণ ও নিরাপত্তা বিধান করিবেন।’ তাই, জীববৈচিত্র্য ও প্রতিবেশ সংরক্ষণ এখন আমাদের সাংবিধানিক বাধ্যবাধকতা এবং পরিবেশ, বন ও জলবায়ু পরিবর্তন মন্ত্রণালয়ের আওতায় পরিবেশ অধিদপ্তর এ বাধ্যবাধকতা বাস্তবায়নে নির্মোহভাবে কাজ করে যাচ্ছে। বর্তমান সরকার পরিবেশ সংরক্ষণ কার্যক্রমকে অধিক গুরুত্ব প্রদান করে পরিবেশ অধিদপ্তরের জনবল বৃদ্ধি করে ১০৮৭ জনে উন্নীত করেছে এবং দেশের সবকটি জেলায় অফিস চালু করার কার্যক্রম গ্রহণ করেছে।

সরকার ১৯৯২ সালে প্রথম পরিবেশ নীতি, ১৯৯৫ সালে পরিবেশ সংরক্ষণ আইন-১৯৯৭ সালে পরিবেশ সংরক্ষণ বিধিমালা এবং ২০১০ সালে পরিবেশ আদালত আইন বলবৎ করে। জীববৈচিত্র্য ও প্রতিবেশ সংরক্ষণকে গুরুত্ব দিয়ে পরিবেশ সংরক্ষণ আইনে লাল শ্রেণিভুক্ত সব শিল্পপ্রতিষ্ঠান ও প্রকল্পের পরিবেশগত প্রভাব নিরূপণ এবং পরিবেশগত ব্যবস্থাপনা পরিকল্পনা বাস্তবায়ন বাধ্যতামূলক করা হয়েছে। প্রতিবেশ ও জীববৈচিত্র্য সংরক্ষণের লক্ষ্যে সরকার দেশের ১৩টি এলাকাকে প্রতিবেশগত সংকটাপন্ন এলাকা ঘোষণা করেছে। প্রতিবেশগত সংকটাপন্ন এলাকায় প্রতিবেশ সংকটাপন্ন হওয়ার সম্ভাব্য সব কার্যক্রম নিষিদ্ধ করা হয়েছে। প্রতিবেশগত সংকটাপন্ন এলাকা ব্যবস্থাপনা বিধিমালা ২০১৬-এর নিষিদ্ধ কার্যক্রমসমূহ দণ্ডনীয় অপরাধ।

দেশের অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ নৈসর্গিক প্রতিবেশ সেন্টমার্টিনের জীববৈচিত্র্য সুরক্ষায় ‘প্রতিবেশগত ব্যবস্থাপনার মাধ্যমে সেন্টমার্টিন দ্বীপের জীববৈচিত্র্যের উন্নয়ন, ব্যবস্থাপনা ও সংরক্ষণ’ শীর্ষক প্রকল্প বাস্তবায়ন করা হচ্ছে। প্রতিবেশগত সংকটাপন্ন এলাকায় সমাজভিত্তিক অভিযোজন কার্যক্রম বাস্তবায়নের মাধ্যমে জীববৈচিত্র্য সংরক্ষণ করা হচ্ছে। টাঙ্গুয়ার হাওড়ের প্রতিবেশ সুরক্ষায় পূর্বে বাস্তবায়িত প্রকল্পের ধারাবাহিকতায় নতুন উন্নয়ন প্রকল্প গ্রহণের কাজ প্রক্রিয়াধীন রয়েছে।

সমুদ্র প্রতিবেশ সংরক্ষণ, সমুদ্রদূষণ রোধ, সমুদ্রসম্পদ আহরণ ও সমুদ্রসম্পদের পরিবেশসম্মত ব্যবস্থাপনা নিশ্চিতকরণ, সামুদ্রিক ও উপকূলীয় জীববৈচিত্র্য সংরক্ষণ ও ব্যবস্থাপনা কার্যক্রমকে উন্নয়নের মূলধারায় অন্তর্ভুক্ত করার লক্ষ্যে পরিবেশ অধিদপ্তর ব্লু-ইকোনমি কর্মপরিকল্পনা গ্রহণ করেছে। সমুদ্র জীববৈচিত্র্য এবং প্রতিবেশসম্পদ জরিপ সম্পাদনের লক্ষ্যে বিশেষ প্রকল্প গ্রহণ করা হয়েছে। পাহাড় কর্তন রোধকল্পে পরিবেশ, বন ও জলবায়ু পরিবর্তন মন্ত্রণালয় প্রজ্ঞাপন জারি করেছে। পরিবেশ সংরক্ষণ আইন, ১৯৯৫-এর সংশোধনীতে (২০১০ সালে আনীত) পাহাড় কাটা বন্ধের লক্ষ্যে বিধান অন্তর্ভুক্ত করা হয়েছে। বর্তমানে পাহাড় কর্তন রোধে নিয়মিত মনিটরিংসহ গণসচেতনতা সৃষ্টির কার্যক্রম অব্যাহত আছে।

দেশের সামগ্রিক পরিবেশ সংরক্ষণ ব্যবস্থাপনা উন্নয়নের লক্ষ্যে নতুনভাবে গৃহীত জাতীয় পরিবেশ নীতি ২০১৮তে পূর্বের ১৫টি খাতসহ আরও ৯টি খাত/ক্ষেত্রের মধ্যে পাহাড় প্রতিবেশ, জীববৈচিত্র্য ও প্রতিবেশ সংরক্ষণ এবং জীবনিরাপত্তা, প্রতিবেশবান্ধব পর্যটন ইত্যাদি খাতকে বিশেষ গুরুত্ব দিয়ে অন্তর্ভুক্ত করা হয়েছে। মোট ২৪টি খাতে অন্তর্ভুক্ত কার্যক্রমগুলো বাস্তবায়নে সংশ্লিষ্ট মন্ত্রণালয়/বিভাগ/সংস্থাসমূহকে চিহ্নিত করা হয়েছে, যা স্ব-স্ব মন্ত্রণালয়/বিভাগ/সংস্থাসমূহ কর্তৃক বাস্তবায়িত হতে হবে। জীববৈচিত্র্য সংরক্ষণ এবং এর টেকসই ব্যবহার নিশ্চিতকরণের লক্ষ্যে বাংলাদেশ জীববৈচিত্র্য আইন ২০১৭ জারি করা হয়েছে। জেনেটিক্যালি পরিবর্তিত জীবের গবেষণা ও উন্নয়ন কাজে নিরাপদ ব্যবহার নিশ্চিত করার লক্ষ্যে বাংলাদেশ জীবনিরাপত্তা বিধিমালা-২০১২ এবং জীবনিরাপত্তা গাইডলাইন-২০০৮ প্রণয়ন করা হয়েছে।

নদ-নদীর প্রতিবেশ সংরক্ষণে শিল্প-কারখানার তরল বর্জ্য থেকে নদ-নদী দূষণ রোধে সরকার তরল বর্জ্য উৎপাদনকারী শিল্প-কারখানার জন্য Effluent Treatment Plant (ETP)-এর ব্যবহার বাধ্যতামূলক করেছে। এ ছাড়া ৬০৫টি তরল বর্জ্য উৎপাদনকারী শিল্প-কারখানার অনুকূলে Zero Liquid Discharge (ZLD) Plan অনুমাদন করেছে। শিল্প-কারখানার দূষণ রোধে ২০১৬-১৭ থেকে ২০২০-২১ পর্যন্ত মোট ৫১৩১টি শিল্পপ্রতিষ্ঠানের বিরুদ্ধে এনফোর্সমেন্ট কার্যক্রম পরিচালনা করা হয়েছে। পরিবেশ দূষণের দায়ে এ প্রতিষ্ঠানগুলোর বিরুদ্ধে ১৮৫.১৯ কোটি টাকা জরিমানা ধার্য এবং ৬২.০৯ কোটি টাকা আদায় করা হয়েছে।

হালদা নদীর দূষণ রোধে দুটি দূষণকারী প্রতিষ্ঠানের কার্যক্রম সম্পূর্ণরূপে বন্ধ করা হয়েছে। এর ফলে হালদা নদীতে কার্পজাতীয় মাছের ডিম পাড়ার হার বেড়েছে। শিল্প-কারখানা দ্বারা দূষণ রোধে ঢাকার চারপাশের বুড়িগঙ্গা, শীতলক্ষ্যা, বালু ও তুরাগ নদকে সুরক্ষা ও পরিবেশ-প্রতিবেশের উন্নয়নের জন্য প্রতিবেশগত সংকটাপন্ন এলাকা ঘোষণা করা হয়েছে। বুড়িগঙ্গা নদীর পানি দূষণ কমাতে হাজারীবাগের ট্যানারি শিল্পগুলো কেন্দ্রীয় বর্জ্য পরিশোধনাগার স্থাপনপূর্বক ঢাকার বাইরে সাভারের হরিণধারায় অবস্থিত ঢাকা চামড়া শিল্পনগরীতে স্থানান্তর করা হয়েছে। ধলেশ্বরী নদীতে চামড়া শিল্পের দূষণ পরিবীক্ষণ করা হচ্ছে। ঢাকার কেরানীগঞ্জে অবস্থিত ৬৪টি ওয়াশিং কারখানার কার্যক্রমও বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে।

বায়ুদূষণ রোধে পরিবেশ অধিদপ্তর শিল্প-কারখানায় এয়ার ট্রিটমেন্ট প্ল্যান্ট (এটিপি) স্থাপন বাধ্যতামূলক করেছে। এ ছাড়া অবৈধ ইটভাটাগুলো বন্ধ করাসহ ভেঙে দেওয়া হচ্ছে। সরকারি নির্মাণকাজে ২০২৫ সাল থেকে ব্লক ইটের ব্যবহার শতভাগ করার নির্দেশনা সংবলিত প্রজ্ঞাপন জারি করা হয়েছে। রাস্তার ধুলাবালিসৃষ্ট বায়ুদূষণ রোধে উদ্যোগ গ্রহণ করা হয়েছে এবং সচেতনতা সৃষ্টির লক্ষ্যে গণবিজ্ঞপ্তি প্রচার করা হয়েছে। শব্দদূষণ রোধে পরিবেশ অধিদপ্তর কর্তৃক শব্দদূষণ নিয়ন্ত্রণে সমন্বিত ও অংশীদারিত্বমূলক প্রকল্প বাস্তবায়িত হচ্ছে।

এখানে বিশেষভাবে উল্লেখ্য, পরিবেশ সংরক্ষণে জাতীয় পর্যায়ে গৃহীত কার্যক্রমসহ আন্তর্জাতিক পরিমণ্ডলে মাননীয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার প্রজ্ঞা, একনিষ্ঠতা, সুদূরপ্রসারী দিকনির্দেশনা সর্বোপরি বলিষ্ঠ নেতৃত্বের জন্য তিনি ২০১৫ সালে জাতিসংঘের পরিবেশবিষয়ক সর্বোচ্চ পুরস্কার ‘Champions of the Earth’ অর্জন করেছেন। টেকসই উন্নয়ন নিশ্চিত করে প্রতিবেশ ও প্রকৃতি সংরক্ষণে একটি অগ্রগামী দেশে পরিণত হওয়ার লক্ষ্যে পরিবেশ অধিদপ্তর এবং পরিবেশ, বন ও জলবায়ু পরিবর্তন মন্ত্রণালয়ের কার্যক্রম অব্যাহত রয়েছে। সরকার জলবায়ু পরিবর্তনজনিত বিরূপ প্রভাব মোকাবিলায় Bangladesh Climate Change Strategy and Action Plan (BCCSAP, 2009) প্রণয়ন করেছে। এতে ছয়টি থিমের আওতায় প্রায় ৪৪টি প্রোগ্রামের অধীনে উন্নয়ন প্রকল্প গৃহীত ও বাস্তবায়িত হচ্ছে।

জীববৈচিত্র্য সংরক্ষণ এবং টেকসই ব্যবহার নিশ্চিতকরণে পরিবেশ, বন ও জলবায়ু পরিবর্তন মন্ত্রণালয়ের পাশাপাশি সব উন্নয়ন মন্ত্রণালয় ও সংস্থার বাজেটে সুনির্দিষ্ট আর্থিক সংস্থান অন্তর্ভুক্ত করে জীববৈচিত্র্য এবং প্রতিবেশ সংরক্ষণ ও পুনরুদ্ধার কার্যক্রমকে অগ্রাধিকার দিয়ে এগিয়ে নিয়ে যেতে হবে। জীববৈচিত্র্য ও প্রকৃতি সংরক্ষণের মাধ্যমে নিশ্চিত করতে হবে বর্তমান ও আগামী প্রজন্মের জন্য টেকসই একটি ভবিষ্যৎ। আমাদের প্রজন্মের সবার সমবেত ও শক্তিশালী প্রচেষ্টাই পারে প্রতিবেশকে অক্ষুণ্ন ও সমৃদ্ধ রেখে টেকসই উন্নয়ন নিশ্চিত করতে। হারানো প্রকৃতি ও প্রতিবেশকে পুনরুদ্ধারের মাধ্যমেই আমরা এ ধরিত্রীকে টিকিয়ে রাখতে সক্ষম হব। তাই প্রতিবেশ পুনরুদ্ধারই হোক আজকের প্রজন্মের একমাত্র অঙ্গীকার। (পিআইডি ফিচার)

মো. আশরাফ উদ্দিন : মহাপরিচালক, পরিবেশ অধিদপ্তর

Logo

সম্পাদক : আবদুল হাই শিকদার

প্রকাশক : সালমা ইসলাম