ক্রাউড কন্ট্রোলের চেয়ে ক্রাউড ম্যানজমেন্ট শ্রেয়
ড. এম এ সোবহান
প্রকাশ: ১৭ জুন ২০২৫, ১২:০০ এএম
প্রিন্ট সংস্করণ
|
ফলো করুন |
|
|---|---|
বর্তমান সময়ে বাংলাদেশের ছাত্র, শিক্ষক, শ্রমিক, নার্সসহ বেশকিছু প্রতিষ্ঠানের ব্যক্তিরা মাঝে মধ্যে আন্দোলন করে চলেছেন। তাদের কিছু দাবিও রয়েছে। মাঝে মধ্যে তারা গুরুত্বপূর্ণ মহাসড়ক, স্থান বা স্থাপনার সম্মুখে অবস্থান নেওয়ার ফলে প্রায়ই তাদের পুলিশের মুখোমুখি হতে হচ্ছে। একপর্যায়ে কখনো কখনো পুলিশ সদস্যরা আবেগপ্রবণ জনতার ওপর জলকামান, টিয়ার গ্যাস বা শক্তি প্রয়োগ করছে।
আবার জনতার পক্ষ থেকে পুলিশের ওপর পরিকল্পিত বা অপরিকল্পিতভাবে আঘাতও করা হচ্ছে। এ পরিপ্রেক্ষিতে উপলব্ধি হচ্ছে, জনতা ও পুলিশ উভয়কেই কৌশলী, সহনশীল হতে হবে এবং পেশাদারত্বের সঙ্গে একত্রে কাজ ও সমঝোতা করে সমস্যার সমাধান করতে হবে।
জনগণের সহায়তা ছাড়া অধিকাংশ পুলিশি কাজে সফলতা পাওয়া যায় না। কমিউনিটি পুলিশিংয়ের অন্যতম প্রধান উপাদান হলো কমিউনিটি পার্টনারশিপ। এখানে পার্টনারশিপ বা অংশীদারত্ব বলতে কমিউনিটি ও পুলিশ উভয়কেই সমাজের ভালো ও খারাপ দুটি দিকের সুফল ও দায় নেওয়াকে বোঝায়। একটি সূত্র থেকে জানা যায়, পুলিশের বেশকিছু সদস্যের বিরুদ্ধে সাম্প্রতিক সময়ে গায়েবি মামলা হচ্ছে। একজন প্রশিক্ষণার্থী প্রশিক্ষণ প্রতিষ্ঠানে থাকাকালীন তার বিরুদ্ধে মামলা হয়েছে, আবার একজন কর্মচারী বিগত ১৬ বছরের সিংহভাগ সময় ঢাকার বাইরে নন-অপারেশনাল পদে পদায়ন থাকা সত্ত্বেও তার বিরুদ্ধে ঢাকা মেট্রোপলিটনের একটি থানায় দুটি এজাহার করা হয়েছে। আবার কেউ কেউ নিজ দ্বন্দ্বের ঘটনায় পুলিশকে বাদী করে মামলা দিতে চাপ প্রয়োগ করছে। এছাড়া কিছু ক্ষেত্রে পেন্ডিং মামলায় ‘শ্যোন অ্যারেস্ট’ দেখাতে অনেক শক্তিশালী পক্ষ চাপ প্রয়োগ করে থাকে। এগুলো মূল্যবোধের অবক্ষয় এবং এর দায় সমাজকে নিতে হবে। এসব কারণে সাধারণত মামলার প্রভূত ক্ষতি হয়ে থাকে। প্রকৃতপক্ষে বিরাজমান ক্রিমিনাল জাস্টিস সিস্টেমের মাধ্যমে শাস্তি হলে সেটা টেকসই হয় মর্মে বিজ্ঞজনরা মতামত প্রদান করেন।
এখন আসা যাক ক্রাউড ম্যানেজমেন্টের বিষয়ে। ফরাসি সমাজবিজ্ঞানী ‘লি বোন’ ক্রাউডকে পরিকল্পনা মোতাবেক ব্যবহার করা যায় উল্লেখ করে বলেছেন, দীর্ঘদিন ধরে ‘মব সাইকোলজি’ ও ‘ক্রাউড ম্যানেজমেন্ট’ নিয়ে কাজ করার সুবাদে প্রাপ্ত উপলব্ধি দিয়ে আমাদের ‘ক্রাউড ম্যানেজ’ করতে হবে। যাহোক ক্রাউড ম্যানেজমেন্টের কৌশল সম্পর্কে একটু বলার চেষ্টা করছি।
সমাবেশ বা মিছিলের আগে যোগাযোগ : পুলিশ কর্মকর্তাদের অবশ্যই সমন্বয়ের মাধ্যমে, ইন্টিলিজেন্সের মাধ্যমে কারা ও কোন ধরনের ব্যক্তিরা মিছিল, র্যালি ও সমাবেশ করবে, তা আগেই জানতে হবে এবং তাদের সঙ্গে মিথস্ক্রিয়তা ও যোগাযোগ রক্ষা করতে হবে।
ইন্টিলিজেন্স সংগ্রহ : আন্দোলনের উদ্দেশ্য কী? কারণ কী? কী তার সমাধান? আন্দোলনকারীদের কি কোনো নাশকতামূলক কাজ করার পরিকল্পনা আছে, তাদের নেতা কে অথবা তারা কার কথা শোনে ইত্যাদি জানতে হবে। জনতার আন্দোলনের কারণ, তার উৎস এবং সম্ভাব্য প্রতিকারগুলো নিয়ে তথ্য সংগ্রহ করতে হবে। জনতা শান্ত, আবেগপ্রবণ এবং অনেক সময় অত্যন্ত অশান্ত হয়ে থাকে। সেজন্য আবেগপ্রবণ জনতা সম্পর্কে তথ্য সংগ্রহ করতে হবে এবং সেগুলো যাচাই করতে হবে।
ঝুঁকি নিরূপণ ও গুজব প্রশমন : ইভেন্টে কী ধরনের ঝুঁকি রয়েছে, তা নিরূপণ করতে হবে। অনেক সময় দেখা যায়, কিছু অসাধু স্বার্থান্বেষী মহল অনৈতিক সুবিধা আদায়ের লক্ষ্যে ছাত্র, শ্রমিক বা অন্যদের মধ্যে অস্থিরতা সৃষ্টির লক্ষ্যে গুজবের সৃষ্টি করে থাকে এবং তা প্রচারের ব্যবস্থা করে জনতার মধ্যে অস্থিরতা সৃষ্টি করে। সে সুযোগে কিছু খারাপ মানুষ নিরীহ মানুষকে ভুল বোঝাতে পারে এবং তাদের বিপথে পরিচালিত করতে পারে। আর প্রকৃত ঘটনা পরিষ্কার করতে সঠিক ব্যাখ্যা প্রদান করা গুরুত্বপূর্ণ হয়ে পড়ে, যা ওই পরিস্থিতির মাত্রা কমাতে বা প্রশমন করতে সহায়ক হয়ে থাকে।
পরিকল্পনা ও প্রস্তুতি : আন্দোলনকারীরা কী প্রকৃতির, সংখ্যায় কতজন, কোন বয়সের, কোন উদ্দেশ্যে জমায়েত হচ্ছে ইত্যাদি জানতে হবে এবং সেগুলো গবেষণা করে খুঁজে বের করতে হবে। ইভেন্টের ঝুঁকি মোতাবেক পুলিশ বা আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্যদের মোতায়েন করতে হবে। এছাড়া সব ফোর্স ও অফিসারকে যথাযথভাবে ব্রিফ করতে হবে। আন্দোলনকারীদের আগেই পুলিশকে ঘটনাস্থলে পৌঁছাতে হবে এবং মোতায়েন করতে হবে।
আবেগীয় বৃদ্ধিমত্তা প্রয়োগ করা : আন্দোলনকারীদের আবেগগত দিক জানা এবং সেগুলোর প্রতি সম্মান দেখানো ও সেই মোতাবেক সিদ্ধান্ত নিতে হবে। আবেগপ্রবণ জনতার অন্তর্নিহিত হতাশা, উদ্বেগ ও ক্ষোভের কারণগুলো খুঁজে বের করতে হবে এবং তাদের আবেগ ও অনুভূতিকে স্বীকৃতি দিতে হবে। তাদের সঙ্গে খোলাখুলি আলোচনা করা এবং সহানুভূতির সঙ্গে আবেগকে প্রশমন করে সমস্যার সমাধানকল্পে নিবারণমূলক ব্যবস্থা গ্রহণ করতে হবে।
সহিষ্ণুতা প্রদর্শন করা : অনেক সময় জনতার মধ্য থেকে কতিপয় ব্যক্তি ইচ্ছাকৃতভাবে পুলিশ সদস্যদের উত্ত্যক্ত করার চেষ্টা করে থাকে। তারা ইটপাথর ছুড়ে মারে বা গালিগালাজ করে; সেক্ষেত্রে কোনোরূপ উত্তেজনা প্রদর্শন না করে ধৈর্য ও সহিষ্ণুতার পরিচয় দিতে হবে।
মিথস্ক্রিয়া, ভালো ব্যবহার ও সহায়তা করা : পুলিশ কর্মকর্তাদের আবেগপ্রবণ জনতার সঙ্গে মিথস্ক্রিয়া করার চেষ্টা করতে হবে। আবেগপ্রবণ জনতার সঙ্গে ভালো ব্যবহার ও ভালো শব্দচয়ন করতে হবে। কোনোরূপ খারাপ ভাষা বা আন্দোলনকারীদের সন্ত্রাসী বা গালিগালাজ করা যাবে না। তাছাড়া তাদের সঙ্গে উত্তম শারীরিক ভাষা প্রদর্শন করতে হবে। প্রয়োজনে তাদের খাবার ও পানি সরবরাহ করা যেতে পারে।
ফোর্স উইড্রোল করা : অবস্থার পরিপ্রেক্ষিতে প্রয়োজনে নিজেদের জায়গা ছেড়ে দিয়ে ফোর্সকে নির্দিষ্ট দূরত্বে রাখতে হবে। আর ফোর্সকে সব সময় জনতার থেকে একটু দূরে রাখা উত্তম।
কর্ডন বা রোড ব্লক : সাম্প্রতিক সময়ে দেখা যাচ্ছে, আবেগপ্রবণ জনতা প্রায়ই রোড ব্লক ভেঙে ফেলছে। আবেগপ্রবণ জনতাকে সব সময় রোড ব্লক দিয়ে আটকে রাখতে হবে এমনটি নয়। রোড ব্লক মূলত চার ধরনের। এর মধ্যে অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ রোড ব্লক হলো ‘সবিরাম রোড ব্লক’। এ রোড ব্লকের উদ্দেশ্য হলো একটা নির্দিষ্ট সময় পর্যন্ত জনতাকে আটকে রাখা। অবস্থার পরিপ্রেক্ষিতে সেই ব্লক খুলে দেওয়া যেতে পারে। তো যখন অন্দোলনকারীদের ঠেকানো সম্ভব হবে না; সেক্ষেত্রে সংঘর্ষ পরিহার করে কর্ডন বা রোড ব্লক কিছুক্ষণের জন্য খুলে দেওয়া শ্রেয়।
আলোচনায় বসা : আন্দোলনে অংশগ্রহণকারী ছাত্র, জনতা, শ্রমিক বা তাদের দলনেতাদের সঙ্গে সমস্যা সমাধান করার লক্ষ্যে আলোচনায় বসতে হবে। ওই আলোচনায় প্রয়োজনে নেতা বা প্রতিষ্ঠানপ্রধানকে অথবা শিক্ষকদের অংশগ্রহণের সুযোগ দিতে হবে। আলোচকদের ধৈর্যসহকারে আন্দোলনকারীদের নেতা ও শিক্ষকদের কথা শুনতে হবে। তাহলেই আলোচনায় অংশগ্রহণকারী ছাত্র, জনতা ও শিক্ষকরা সন্তুষ্ট হবেন এবং এক সহজাত পরিবেশ তৈরি হবে।
সমঝোতা করা : সমঝোতায় টেকসই সমাধান পাওয়া যায় এবং সম্মান বৃদ্ধি পায়। তাই শক্তি প্রয়োগের পরিবর্তে সমঝোতার জন্য বারবার চেষ্টা করতে হবে। প্রয়োজনে তৃতীয় পক্ষ বা শিক্ষক বা নেতা বা ওস্তাদ, যাকে আবেগপ্রবণ জনতা মান্য করে, তার দ্বারা সমঝোতা করতে হবে। এখানে উল্লেখ্য, পুলিশ কর্মকর্তা নিজে যখন সমঝোতা করবেন, তখন তিনি কোনোক্রমেই আলোচনায় আবেগপ্রবণ জনতার মধ্য থেকে দুই থেকে তিনজনের বেশি প্রতিনিধিকে গ্রহণ করবেন না। কারণ একজনের পক্ষে তিনের অধিক আন্দোলনরত ব্যক্তিকে সাধারণত বোঝানো বা মোটিভেট বা হিপনোটাইজ করা যায় না। যে কোনো আন্দোলন প্রশমনে সমঝোতা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ বিষয়। সেজন্য সব ধরনের প্রয়াসের মাধ্যমে সমঝোতায় উপনীত হতে হবে এবং একটি টেকসই সমাধান খুঁজে বের করতে হবে।
প্রশিক্ষণ ও প্রশিক্ষিত জনবল মোতায়েন : পুলিশ সদস্যদের মব সাইকোলজি, ক্রাউড ম্যানেজমেন্ট এবং আবেগপ্রবণ জনতার আচরণ ইত্যাদি বিষয়ে প্রশিক্ষণ দিতে হবে এবং জনতা ব্যবস্থাপনায় প্রশিক্ষিত জনবল মোতায়েন করতে হবে।
মিছিলের অংশ হওয়া : পুলিশ কর্মকর্তা আন্দোলনকারীদের সঙ্গে এমন সম্পর্ক তৈরি করবেন, যেন তিনি মিছিলের বা আন্দোলনের অংশ। পুলিশ কর্মকর্তা মিছিলের সঙ্গে থেকে আবেগপ্রবণ জনতার মিছিল যেদিকে যাবে, তিনিও মিছিলের সঙ্গে সেদিকে যাবেন, বলতে গেলে পুলিশ কর্মকর্তা মিছিলের গাইড হিসাবে কাজ করবেন।
আদেশ-নির্দেশের পরিবর্তে পরামর্শ দেওয়া : সাধারণত আন্দোলনকারীরা হুকুম বা আদেশ পছন্দ করে না। যে কোনো সমাবেশের সদস্যরা আদেশের পরিবর্তে পরামর্শ পছন্দ করেন। উদাহরণস্বরূপ, ‘এক পা এগোবেন না’, ‘এ মুহূর্তেই স্থান পরিত্যাগ করুন’-এমন আদেশ প্রদানকারী বাক্য বা ভাষা ব্যবহার করা উচিত নয়। এগুলোর পরিবর্তে ‘এটি করা যেতে পারে’, ‘ধৈর্য ধরুন’, ‘একটু শান্ত হোন’ ইত্যাদি বাক্য ব্যবহার করা যায়। সুতরাং আন্দোলনকারীদের সংক্ষুব্ধতা কমাতে আদেশের পরিবর্তে পরামর্শ প্রদান করা উচিত।
ক্ষমা চাওয়া : কখনো কখনো কোনো দায়িত্বপ্রাপ্ত ব্যক্তি বা আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সদস্যদের ভুল পদক্ষেপ; যেমন শক্তি প্রয়োগ, নিরস্ত্র ও নিরপরাধীর ওপর লাঠিচার্জ ইত্যাদি কারণে সহিংস আন্দোলনের অবতারণা হতে পারে। সেক্ষেত্রে ওই দায়িত্বপ্রাপ্ত ব্যক্তি বা তার জ্যেষ্ঠ ব্যক্তি বা আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর কমান্ডার তার বাহিনীর সদস্য কর্তৃক ঘটে যাওয়া অপ্রীতিকর ঘটনা বা ক্ষতির জন্য ভুল স্বীকার বা ক্ষমা চাইতে পারেন। সমাবেশের সদস্যরা এরূপ পদক্ষেপ বা প্রয়াসকে ইতিবাচকভাবে গ্রহণ করতে পারে এবং সমাবেশের প্রতিক্রিয়া হ্রাস পেতে পারে।
জনতার সঙ্গে একমত পোষণ করা : মনোবিজ্ঞানীদের মতে, দীর্ঘদিনের বঞ্চনা, অবহেলা বা কোনো বিষয়ে গুরুত্ব না দেওয়ার কারণে মানুষ আন্দোলন ও সংগ্রাম করে থাকে। যদি কোনো দায়িত্বপ্রাপ্ত ব্যক্তি বা পুলিশ কর্মকর্তা আন্দোলন ও সংগ্রামের পেছনের কারণগুলোর সঙ্গে একমত পোষণ করেন, তাহলে আন্দোলনের তীব্রতা কমে যায় এবং সমঝোতায় পৌঁছানো সহজ হয়।
ব্যক্তিগত প্রতিরক্ষার ক্ষেত্রে সর্বনিম্ন পর্যায়ের শক্তি প্রয়োগ : যদি সব প্রয়াস ব্যর্থ হয় এবং পুলিশ সদস্যদের বা নিরীহ ব্যক্তিদের জীবনের ওপর হামলা হয়, সেক্ষেত্রে দেশীয় আইন, ফোর্স কনটিনিউয়াম ও জাতিসংঘের শক্তি প্রয়োগের নীতিমালা অনুযায়ী শক্তি প্রয়োগ করা যায়; কিন্তু সেক্ষেত্রে শক্তি প্রয়োগ সমানুপাতিক, আইনানুগ এবং প্রয়োজন শেষ হলে তা বন্ধ করতে হবে। উল্লেখ্য, আবেগপ্রবণ জনতা ব্যবস্থাপনার ক্ষেত্রে একটি রোড বা রাস্তায় কোনো পুলিশ রাখা যাবে না, যেন শক্তি প্রয়োগের সময় আবেগপ্রবণ জনতা দ্রুত নিরাপদে স্থান ত্যাগ করতে পারে। আবার শক্তি প্রয়োগ করে যদি সফলতার চেয়ে ক্ষতি বেশি হয়, সেক্ষেত্রে শক্তি প্রয়োগ করা যাবে না।
আহতদের হাসপাতালে প্রেরণ : শক্তি প্রয়োগে আহতদের হাসপাতালে প্রেরণ করতে হবে। প্রয়োজনে তাদের চিকিৎসার জন্য ওষুধ, রক্ত এবং অন্যান্য প্রয়োজনীয় সহায়তা প্রদান করতে হবে ও তাদের পাশে থাকতে হবে।
পরিশেষে, আন্দোলনের জন্য অনেক সময় আন্দোলনকারীরা দায়ী থাকে না, তাদের অনেক সময় ভুল বোঝানো হয়। সেজন্য কোনো অসন্তোষের সংবাদপ্রাপ্তির সঙ্গে সঙ্গে পুলিশ কর্মকর্তাকে যত দ্রুত সম্ভব ঘটনাস্থল পরিদর্শন করে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনতে হবে। তাছাড়া সংশ্লিষ্ট সবাইকে আবেগপ্রবণ জনতার মনস্তত্ত্ব (Mob psychology) ও সংঘবদ্ধ জনতা ব্যবস্থাপনা (Crowd management) সংক্রান্ত শিক্ষণ, প্রশিক্ষণ ও ব্যুৎপত্তি অর্জন করতে হবে। তাহলেই আন্দোলনকারীদের ক্ষোভ ও আন্দোলন প্রশমন করা সম্ভবপর হবে।
লেখার শুরুতেই বলেছিলাম, জনতা ব্যবস্থাপনায় পুলিশ ও জনতার সমন্বিত প্রয়াস প্রয়োজন এবং উভয়কেই সুফলের পাশাপাশি দায়ভার নিতে হবে। সাবেক মার্কিন প্রেসিডেন্ট জন এফ কেনেডির সেই বিখ্যাত উক্তির সূত্র ধরে বলতে হচ্ছে, ‘দেশ কী দিল তা নয়, নিজে দেশকে কী দিচ্ছি’, সেটা নিজেকে জিজ্ঞাসা করতে হবে। পুলিশ ও জনতার সমন্বিত প্রয়াসে ক্রাউড কন্ট্রোলের পরিবর্তে ক্রাউড ম্যানেজ করা সম্ভব।
ড. এম এ সোবহান পিপিএম : কমান্ড্যান্ট (এডিশনাল ডিআইজি), পুলিশ স্পেশাল ট্রেনিং স্কুল (পিএসটিএস), বেতবুনিয়া, রাঙামাটি
এই দিনে: ১৭ জুন, ২০২৫
