কর্মী নিয়োগে ‘ওয়ানস্টপ’ সার্ভিস চালু
এ বছর বিদেশে গেছেন ১০ লাখ কর্মী
যুগান্তর রিপোর্ট
প্রকাশ: ২৮ ডিসেম্বর ২০১৭, ০৬:০০ পিএম
প্রিন্ট সংস্করণ
|
ফলো করুন |
|
|---|---|
প্রবাসী কল্যাণ ও বৈদেশিক কর্মসংস্থানমন্ত্রী নুরুল ইসলাম বিএসসি বলেছেন, যে কোনো বাজারই ওঠা-নামা করে। শ্রমের বাজারও তাই। তারপরও এ বছর ১০ লাখ কর্মী বিদেশে কাজ পেয়েছেন। আগামী দিনে আরও বেশি কর্মী পাঠানো হবে। নতুন কিছু বাজার উন্মুক্ত হয়েছে। আশা করছি ২০১৮ সালে নতুন বাজারগুলোতে পুরোদমে কর্মী নিয়োগ হবে। বৃহস্পতিবার বাংলাদেশ অ্যাসোসিয়েশন অব ইন্টারন্যাশনাল রিক্রুটিং এজেন্সিস (বায়রা) ‘বায়রা ওয়ানস্টপ সার্ভিস সেন্টারের (বিওএসএসসি)’ উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে তিনি এসব কথা বলেন। বায়রা সভাপতি বেনজির আহমেদের সভাপতিত্বে বক্তব্য রাখেন বিএমইটির মহাপরিচালক সেলিম রেজা, বায়রার মহাসচিব রুহুল আমিন স্বপন, নূর আলী প্রমুখ।
প্রবাসী কল্যাণমন্ত্রী বলেন, দীর্ঘদিন মালয়েশিয়ার বাজার বন্ধ থাকার পর গত মার্চ থেকে কর্মী নিয়োগ হচ্ছে। বৈধভাবে সেখানে কর্মী নিয়োগ হচ্ছে এটাই বড় কথা। কর্মী নিয়োগে ওয়ানস্টপ সার্ভিসটি চালু করা হয়েছে। অনলাইনে কর্মী নিয়োগে সব ধরনের কাজ এখান থেকেই করা সম্ভব হবে। কেউ যাতে প্রতারণার শিকার না হন তার জন্য এ ব্যবস্থা চালু করেছে বায়রা। প্রাথমিকভাবে মালয়েশিয়ায় কর্মী নিয়োগের ক্ষেত্রে এ ব্যবস্থা চালু হলেও পর্যায়ক্রমে অন্যান্য দেশে কর্মী পাঠানোর ক্ষেত্রেও এ ব্যবস্থা চালু হবে। নুরুল ইসলাম বিএসসি বলেন, বিশ্ব এগিয়ে গেছে। একই সঙ্গে আমাদেরও এগিয়ে যেতে হবে। আজকে যে ব্যবস্থায় কর্মী নিয়োগ হচ্ছে এটা আধুনিক একটি ব্যবস্থা। এ ব্যবস্থার মধ্য দিয়ে কর্মীরা বিদেশ গেলে প্রতারণার শিকার থেকে মুক্ত থাকবেন। তবে এরপরও আপনাদের বলছি, গরিব মানুষ যাতে কষ্টের শিকার না হন; কোনো অভিযোগ যেন না উঠে। অভিযোগ উঠলে মন্ত্রণালয় ব্যবস্থা নেবেই। মন্ত্রণালয়ের কেউ যদি কোনো অন্যায় করে তাহলেও ব্যবস্থা নেয়া হবে। মন্ত্রী বলেন, বাংলাদেশের জন্য অভিবাসন খুবই গুরুত্বপূর্ণ বিষয়। দেশের মানুষই দেশের সম্পদ। তারা বিশ্বের ১৬৫টি দেশে শ্রম ঘাম দিয়ে বৈদেশিক মুদ্রা আয় করে দেশে পাঠাচ্ছেন। তাদের টাকায় দেশের অর্থনীতি প্রতিনিয়ত সুসংহত হচ্ছে। জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের বলিষ্ঠ নেতৃত্বে দেশ স্বাধীন হওয়ার পর এ দেশের নাগরিকদের অভিবাসনের সুবর্ণ সুযোগ তৈরি হয়। তারই ধারাবাহিকতায় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার দিকনির্দেশনায় আমরা অভিবাসন খাতকে দেশের অন্যতম প্রধান খাতে নিয়ে যাওয়ার চেষ্টা করছি। এ যাবত এবারই প্রথম সর্বোচ্চ সংখ্যক কর্মী চাকরি নিয়ে বিদেশ গেছেন। ১৯৭৬ সাল থেকে এ পর্যন্ত ১৬৫টি দেশে আমরা কর্মী পাঠিয়েছি। শুরু থেকে এখন পর্যন্ত মধ্যপ্রাচ্যের দেশগুলোতে সর্বাধিক পরিমাণ কর্মী প্রেরণ করেছি। এসব দেশ থেকেই সর্বাধিক পরিমাণ রেমিটেন্স পেয়ে আসছি। নারীর ক্ষমতায়ন ও অর্থনৈতিক মুক্তির লক্ষ্যে ১৯৯১ সাল থেকে মধ্যপ্রাচ্যসহ বেশ কয়েকটি দেশে নারী কর্মী প্রেরণ করা হচ্ছে। সৌদি আরবেই সর্বাধিক সংখ্যক নারী কর্মী চাকরি নিয়ে গেছেন। বর্তমানে গৃহকর্মী পেশায় সবচেয়ে বেশি নারী কর্মী চাকরি নিয়ে বিদেশ যাচ্ছেন।
মন্ত্রী বলেন, বৈদেশিক কর্মসংস্থান খাতকে সরকার ‘থ্রাস্ট সেক্টর’ হিসেবে ঘোষণা করেছে। এ খাতের গুরুত্ব অপরিসীম বিবেচনায় সরকার বিদ্যমান শ্রমবাজারকে ধরে রাখার পাশাপাশি নতুন নতুন শ্রমবাজার সৃষ্টির ওপর জোর দিয়েছে। ইতিমধ্যে জাপানে টেকনিক্যাল ইন্টার্ন কর্মী প্রেরণ করেছি। বিদেশে কর্মসংস্থানের বর্তমান ধারাকে অব্যাহত রাখার জন্য বিদ্যমান শ্রমবাজার ধরে রাখাসহ নতুন নতুন সম্ভাবনাময় শ্রমবাজার অনুসন্ধান করছে সরকার। নতুন শ্রমবাজারের সন্ধানে ৫২টি দেশের শ্রমবাজার নিয়ে গবেষণা কার্যক্রম সমাপ্তির পথে। প্রধানমন্ত্রীর নির্দেশ অনুযায়ী বিদেশগামী বাংলাদেশি কর্মীদের শতভাগ বীমার আওতায় আনার ব্যবস্থা হচ্ছে। এ সংক্রান্ত একটি নীতিমালা চূড়ান্ত করা হয়েছে।
