মুক্তিযুদ্ধের ইতিহাস বিকৃতি
‘বাংলাদেশ স্টাডিজ’ বাজার থেকে তুলে নেয়ার নির্দেশ
মুসতাক আহমদ
প্রকাশ: ২৮ ডিসেম্বর ২০১৭, ০৬:০০ পিএম
প্রিন্ট সংস্করণ
|
ফলো করুন |
|
|---|---|
ইংলিশ মিডিয়ামে এসএসসি পর্যায়ের পাঠ্যবই ‘বাংলাদেশ স্টাডিজ’-এ ভয়াবহ ইতিহাস বিকৃতি করা হয়েছে। এতে স্বাধীনতা সংগ্রামের পাঠে জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের অবদানকে যথাযথভাবে উপস্থাপন করা হয়নি। বরং ক্ষেত্রবিশেষে পাকিস্তানিদের ইতিহাস ও তখনকার রাজনৈতিক নেতাদের অবদানকে বেশি গুরুত্ব দেয়া হয়েছে। এ কারণে বিকৃত ইতিহাসে ভরা পাঠ্যবই বাজার থেকে তুলে নিতে নির্দেশ দিয়েছে শিক্ষা মন্ত্রণালয়। বিষয়টি ইংলিশ মিডিয়াম কারিকুলাম ও পাঠ্যবই রচনায় সংশ্লিষ্ট ইংল্যান্ডের দুই বোর্ডকে জানিয়ে দিতে ব্রিটিশ কাউন্সিলে এ সংক্রান্ত পত্র পাঠানো হয়েছে।
বিষয়টি নিশ্চিত করে শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের মাধ্যমিক ও উচ্চশিক্ষা বিভাগের অতিরিক্ত সচিব চৌধুরী মুফাদ আহমদ বৃহস্পতিবার যুগান্তরকে বলেন, ‘আমরা আজই এ সংক্রান্ত সিদ্ধান্ত নিয়েছি। ব্রিটিশ কাউন্সিলের কাছে এখন পত্র পাঠানো হবে। তারা ইংলিশ মিডিয়াম শিক্ষা নিয়ন্ত্রণকারী বোর্ড ক্যামব্রিজ এবং অ্যাডেক্সেলকে এখন বিষয়টি অবহিত করবে।’
৩ জুলাই এ ব্যাপারে একটি গোয়েন্দা প্রতিবেদন মন্ত্রিপরিষদ বিভাগ থেকে শিক্ষা মন্ত্রণালয়ে পাঠানো হয়। এর পরই প্রথম বিকৃত ইতিহাসের ওই বইয়ের বিষয়টি শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের নজরে আসে। এরপর জাতীয় পাঠ্যপুস্তক বোর্ডকে (এনসিটিবি) এ বইয়ের বিকৃতির দিকগুলো চিহ্নিত করার দায়িত্ব দেয়া হয়। তারা অর্ধশতাধিক স্থানে বিকৃতি চিহ্নিত করে মন্ত্রণালয়ে সুপারিশ জমা দেয়। এরপর মন্ত্রণালয় থেকে এনসিটিবিকে ওই চিহ্নিত দিকগুলো অনুবাদ করার দায়িত্ব দেয়া হয়। এনসিটিবি সেই দায়িত্ব শেষ করে। এরপর এ নিয়ে বৃহস্পতিবার বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়।
এ ব্যাপারে এনটিবির সদস্য (কারিকুলাম) অধ্যাপক ড. মশিউজ্জামান যুগান্তরকে বলেন, ‘আমাদের দায়িত্ব ছিল বিকৃতি চিহ্নিত ও তা ইংরেজিতে অনুবাদ করে দেয়া। মন্ত্রণালয় চাচ্ছে বিকৃত ইতিহাসে ভরা বই বাজারে থাকবে না। সে ব্যাপারে মন্ত্রণালয় পদক্ষেপ নেবে।’
মন্ত্রণালয়ে এরই মধ্যে ব্রিটিশ কাউন্সিলে যে চিঠি পাঠানো হবে, তার খসড়া তৈরি করা হয়েছে। তাতে অবিলম্বে বইটি বাজার থেকে প্রত্যাহার এবং পাঠ্যক্রমে জাতির পিতার অবদান ও মুক্তিযুদ্ধের সঠিক ইতিহাস যথাযথভাবে অন্তর্ভুক্ত করে নতুন বই বাজারজাতের নির্দেশনা আছে। এ ব্যাপারে নেয়া পদক্ষেপ ১৫ দিনের মধ্যে শিক্ষা মন্ত্রণালয়কে জানাতে হবে।
এ ব্যাপারে বাংলাদেশে ইংরেজি মাধ্যমের এসএসসি (ইন্টারন্যাশনাল জিসিএসই) পর্যায়ের কার্যক্রম পরিচালনার দায়িত্বপ্রাপ্ত ব্রিটিশ কাউন্সিল কর্মকর্তা সাইদুর রহমান যুগান্তরকে বলেন, ‘এমন একটি বিষয় আমাকে অনানুষ্ঠানিকভাবে জানানো হয়েছে। তবে এখন পর্যন্ত আনুষ্ঠানিক কোনো পত্র পাইনি। ব্রিটিশ কাউন্সিল ২ জানুয়ারি পর্যন্ত বন্ধ থাকবে। এরপর হয়তো চিঠি পেলে বিষয়টি জানা যাবে।’ তিনি বলেন, ‘আমরা সরকারের চিঠির আলোকে পরবর্তী কার্যক্রম নেব।’
