নিয়ন্ত্রণহীন চালের বাজার
চট্টগ্রামে এক সপ্তাহে বস্তাপ্রতি বেড়েছে ১০০-১৫০ টাকা
চট্টগ্রাম ব্যুরো
প্রকাশ: ২৮ ডিসেম্বর ২০১৭, ০৬:০০ পিএম
প্রিন্ট সংস্করণ
|
ফলো করুন |
|
|---|---|
চট্টগ্রামে আমনের ভরা মৌসুমেও বেড়েছে সব ধরনের চালের দাম। এ সময় চালের দাম বাড়ার কোনো যৌক্তিক কারণ না থাকলেও গত সপ্তাহের তুলনায় চলতি সপ্তাহে বস্তাপ্রতি একশ’ টাকা থেকে দেড়শ’ টাকা বেশি দামে বিক্রি হচ্ছে চাল। তবে ব্যবসায়ীরা বলছেন, একাধিক কারণে দাম বাড়ছে চালের। দেশীয় চালের সরবরাহ কমে যাওয়া, ডলারের দাম বৃদ্ধি ও মহাসড়কে পণ্য পরিবহনে ওজন নিয়ন্ত্রণের কারণে দাম নিয়ন্ত্রণে থাকছে না। এছাড়া উত্তরবঙ্গে প্রচুর পরিমাণ রাইস মিল থাকলেও অতিরিক্ত মুনাফার লোভে কৃষকদের কাছ থেকে মিল মালিকরা কম দামে ধান কিনে মজুদ করে রাখছে। এক্ষেত্রে তারা মানছে না সরকারের মজুদ নীতি।
চট্টগ্রাম নগরীর পাহাড়তলী ও চাকতাই পাইকারি বাজারের চালের আড়তদাররা জানান, দেশীয় চালের মধ্যে জিরাশাইল সিদ্ধ, মিনিকেট সিদ্ধ, স্পেশাল বাসমতি সিদ্ধ, স্বর্ণা সিদ্ধ, দিনাজপুরী পাইজাম, পাইজাম আতপ, মিনিকেট আতপ, কাটারীভোগ আতপ, নতুন চিনিগুঁড়া চালের দাম বস্তাপ্রতি ১০০ থেকে ১৫০ টাকা পর্যন্ত বেড়ে গেছে। তবে অপরিবর্তিত রয়েছে মোটা সিদ্ধ, কাটারিভোগ আতপ ও মিনিকেট আতপ চালের দাম। চট্টগ্রামের বাজারে দেশীয় চালের একটি বড় অংশই আসে আশুগঞ্জ, নেত্রকোনা, নওগাঁ, ময়মনসিংহ, কুষ্টিয়া, দিনাজপুর, খুলনাসহ দেশের উত্তরাঞ্চলের বিভিন্ন জেলা থেকে। বৃহস্পতিবার পাইকারি বাজার ঘুরে দেখা গেছে, বর্তমানে জিরাশাইল সিদ্ধ চাল গত এক সপ্তাহের ব্যবধানে বস্তাপ্রতি ১৫০ টাকা বেড়ে গিয়ে এখন বিক্রি হচ্ছে ২ হাজার ৯০০ টাকায়। এছাড়া স্বর্ণা সিদ্ধ ১৫০ টাকা বেড়ে ২ হাজার ১৫০ টাকা, পাইজাম আতপ ১০০ টাকা বেড়ে ২ হাজার ১৫০ টাকা, দিনাজপুরী পাইজাম ১৫০ টাকা বেড়ে ২ হাজার ৪০০ টাকা, নতুন চিনিগুঁড়া চাল ১০০ টাকা বেড়ে ৩ হাজার ৬০০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। এছাড়া মিনিকেট আতপ বস্তাপ্রতি ২ হাজার ৩৫০ টাকা ও কাটারিভোগ আতপ বিক্রি হচ্ছে ৩ হাজার টাকা ও মোটা সিদ্ধ চাল ১ হাজার ৯০০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে।
ডলারের মূল্যবৃদ্ধির কথা বলে চালের দাম বাড়াচ্ছেন আমদানিকারকরা। স্থলবন্দরগুলোয় আমদানি করা চালের দাম এরই মধ্যে কেজিতে ২ টাকা পর্যন্ত বেড়েছে। এর সুযোগ নিচ্ছেন মিল মালিকরাও। একই হারে দাম বাড়াচ্ছেন তারাও। চাল আমদানিকারকদের মতে চট্টগ্রামে সবচেয়ে বেশি দাম বাড়ছে ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়কে পণ্য পরিবহনে ওজন নিয়ন্ত্রণের ফলে। গত এক সপ্তাহের ব্যবধানে ভারত থেকে আমদানি করা চালের দাম বেড়েছে কেজিতে ১ থেকে দেড় টাকা পর্যন্ত। একইভাবে বেড়েছে দেশীয় চালের দাম। চাকতাই শাহ আমানত ট্রেডিংয়ের মালিক মহিউদ্দিন জানান, একাধিক কারণে বাড়ছে চালের দাম। ডলারের মূল্যবৃদ্ধি ও মহাসড়কে ওজন নিয়ন্ত্রণ আইন কার্যকরের ফলে ব্যবসায়ীদের চাল আমদানিতে পরিবহন ব্যয় বেড়ে গেছে। সরকার চাল আমদানিতে ২ শতাংশ শুল্কহার নির্ধারণের পরেও কার্যত আমরা এর সুফল পাচ্ছি না। কারণ শুল্ক কমানোর পরপরই প্রতিবেশী দেশ ভারত ও মিয়ানমারের ব্যবসায়ীরা টনপ্রতি চালের বুকিং রেট বাড়িয়ে দিয়েছে। এ কারণে বাড়ছে চালের দাম।
