Logo
Logo
×

দ্বিতীয় সংস্করণ

রামরুর সংবাদ সম্মেলন

প্রতি বছর অভিবাসীর সংখ্যা বাড়ছে

৯০ শতাংশ দালালের মাধ্যমে অভিবাসনের খরচ দেন

Icon

যুগান্তর রিপোর্ট

প্রকাশ: ২৮ ডিসেম্বর ২০১৭, ০৬:০০ পিএম

প্রিন্ট সংস্করণ

বাংলাদেশ থেকে যাওয়া অভিবাসীর সংখ্যা প্রতি বছরই বাড়ছে বলে জানিয়েছে রিফিউজি অ্যান্ড মাইগ্রেটরি মুভমেন্টস রিসার্চ ইউনিট (রামরু)। জাতীয় প্রেস ক্লাবের ভিআইপি লাউঞ্জে বৃহস্পতিবার ‘বাংলাদেশ থেকে শ্রম অভিবাসনের গতি-প্রকৃতি ২০১৭ : সাফল্য ও চ্যালেঞ্জ’ শীর্ষক সংবাদ সম্মেলনে এ তথ্য জানান রামরুর প্রতিষ্ঠাতা চেয়ারম্যান ড. তাসনিম সিদ্দিকী। লিখিত বক্তব্যে তিনি বলেন, ২০১৫ সালে বাংলাদেশ থেকে যাওয়া অভিবাসীর সংখ্যা ছিল ৫ লাখ ৫৫ হাজার ৮৮১ জন। ২০১৬ সালে এ সংখ্যা ছিল ৭ লাখ ৫৭ হাজার ৭৩১ জন। আর চলতি বছরের নভেম্বর পর্যন্ত বাংলাদেশ থেকে যাওয়া অভিবাসীর সংখ্যা ৯ লাখ ৩১ হাজার ৮৩২ জন।

বাংলাদেশ থেকে যাওয়া অভিবাসী শ্রমিকদের বাজার বরাবরই একদেশকেন্দ্রিক- এমন মন্তব্য করে ড. তাসনিম সিদ্দিকী বলেন, সামগ্রিক মূল্যায়নে দেখা যায়, আমাদের শ্রম বাজারে বরাবরই একটি দেশের আধিপত্য। কখনও সংযুক্ত আরব আমিরাত, কখনও মালয়েশিয়া, কখনও বা সৌদি আরব। একদেশকেন্দ্রিক বাজার ব্যবস্থার অসুবিধা হল- সেই দেশ কোনো সমস্যা বা বিপর্যয়ের মুখে পড়লে বাংলাদেশের আন্তর্জাতিক শ্রমবাজারও বিপদের মুখে পড়ে যায়।

অভিবাসন খাতের অনিয়ম ও প্রতারণার খুব কম অংশ সালিশের জন্য আসে জানিয়ে তাসনিম সিদ্দিকী বলেন, চলতি বছর অনলাইনে অভিযোগ এসেছে মাত্র ৩৫টি, যার অর্ধেক সৌদি আরব থেকে। এর মধ্যে ১২টি অভিযোগ এসেছে নারী অভিবাসীদের কাছ থেকে। এছাড়া চলতি বছর ১৫৬টি সরেজমিন অভিযোগ গ্রহণ করেছে বিএমইটি। এর মধ্যে ১০৩টি নারী অভিবাসীদের, ৫৩টি পুরুষ অভিবাসীদের।

অভিবাসনে ইচ্ছুকদের প্রতারিত হওয়ার পরিসংখ্যান তুলে ধরে তিনি বলেন, ১৯ শতাংশ অভিবাসন প্রত্যাশী সম্পূর্ণ বা আংশিক টাকা দালাল, আত্মীয় বা বন্ধুবান্ধবকে দেয়ার পরও বিদেশ যেতে পারেনি। অভিবাসন করতে না পারা পরিবারগুলো গড়ে প্রায় ২ লাখ ৪৩ হাজার টাকা ব্যয় করেছে।

ড. তাসনিম সিদ্দিকী জানান, বিদেশে থাকা অবস্থায় প্রতারণা বা অমানবিক ব্যবহারের শিকার হয়েছেন ৩২ শতাংশ অভিবাসী। যারা ওমান, কাতার, সংযুক্ত আরব আমিরাত এবং মালয়েশিয়াতে গেছেন তাদের মধ্যে ৩৬-৪০ শতাংশ প্রতারণার শিকার। সৌদি আরব ও সিঙ্গাপুরে ২৫ শতাংশ প্রতারণার শিকার।

চলতি বছরের নভেম্বর পর্যন্ত ১২.৩৭ বিলিয়ন ডলার রেমিটেন্স দেশে এসেছে বলে জানান রামুরুর চেয়ারম্যান। তিনি বলেন, চলতি বছরের ডিসেম্বর পর্যন্ত রেমিটেন্স ১৩.৫ বিলিয়ন ডলারে পৌঁছবে। আর ২০১৬ সালে রেমিটেন্সের পরিমাণ ছিল ১৩.৬১ বিলিয়ন ডলার।

রামরুর গবেষণায় দেখা গেছে, ৯০ শতাংশ অভিবাসী অভিবাসনের খরচের টাকা দেন দালালের মাধ্যমে। ৭৭ শতাংশ অভিবাসী ওয়ার্ক পারমিট সংগ্রহ করেছেন দালালের মাধ্যমে। ৮১ শতাংশ অভিবাসী প্রথম রিক্রুটিং এজেন্সির অফিসে গেছেন দালাল ধরে। ৫৭ ভাগ অভিবাসী দালালের মাধ্যমে তথ্য সংগ্রহ করেছেন। ৭৬ শতাংশ বিএমইটির রেজিস্ট্রেশন সম্পূর্ণ করেছেন দালালের সহযোগিতায়। ৩২ শতাংশ পাসপোর্ট করেছেন দালালের মাধ্যমে। ৭০ ভাগ মেডিকেল টেস্ট করিয়েছেন দালাল বা তাদের কর্মচারীদের সঙ্গে গিয়ে। ৭২ শতাংশ বিএমইটির স্মার্টকার্ড পেয়েছেন দালালের মাধ্যমে। ৮৫ শতাংশ অভিবাসী বিমানের টিকিট সংগ্রহ করেছেন দালালের মাধ্যমে।

বিএমইটির তথ্যমতে, বর্তমানে ১১৬৯টি লাইসেন্সপ্রাপ্ত রিক্রুটিং এজেন্সি রয়েছে। সৌদি আরবে নারী কর্মী প্রেরণকারী রিক্রুটিং এজেন্সির সংখ্যা ৫৪২টি। ১০৫টি এজেন্সির লাইসেন্স এ বছর স্থগিত করা হয়েছে। সংবাদ সম্মেলনে আরও উপস্থিত ছিলেন- মেরিনা সুলতানা, রাবেয়া নাসরিন ও ড. জালাল উদ্দিন সিকদার।

Logo

সম্পাদক : আবদুল হাই শিকদার

প্রকাশক : সালমা ইসলাম