Logo
Logo
×

খেলা

উপেক্ষিত দুই ‘ম’-এর জবাব

দু’জনই সম্ভাবনা জাগিয়েছিলেন আরও বড় কিছুর। শেষ পর্যন্ত সেঞ্চুরি না পেলেও নিজেদের নতুন করে চেনানোর মিশনে দু’জনই সফল

Icon

প্রকাশ: ০১ অক্টোবর ২০১৭, ০৬:০০ পিএম

প্রিন্ট সংস্করণ

উপেক্ষিত দুই ‘ম’-এর জবাব

দু’জনের কেউই বাকপটু নন। উপেক্ষার জবাব তারা দিলেন ব্যাট হাতেই। কোচ চন্ডিকা হাথুরুসিংহের দুই অপ্রিয় পাত্রই

পচেফস্ট্র–ম টেস্টে পথ দেখালেন বাংলাদেশকে। মুমিনুল হক ও মাহমুদউল্লাহর লড়াকু ফিফটির সুবাদেই নিশ্চিত হল, দক্ষিণ আফ্রিকার মাটিতে এবারই প্রথম ইনিংস হারের লজ্জায় পড়তে হচ্ছে না বাংলাদেশকে। আগের চার টেস্টের একটিতেও দক্ষিণ আফ্রিকাকে দ্বিতীয়বার ব্যাটিংয়ে নামাতে পারেনি টাইগাররা। সেই ধারায় ছেদ টানার স্বপ্নটাকে কাল বাস্তবে রূপ দিলেন দুই ‘ম’। কোচের সুনজরে না থাকায় গত মার্চে কলম্বোয় শ্রীলংকার বিপক্ষে বাংলাদেশের শততম টেস্টে দলে জায়গা হারান মাহমুদউল্লাহ ও মুমিনুল। এরপর অস্ট্রেলিয়ার বিপক্ষে হোম সিরিজের প্রথম টেস্টেও দলের বাইরে রাখা হয়েছিল তাদের। পরে মুমিনুল নাটকীয়ভাবে দলে ফিরলেও মাহমুদউল্লাহর ভাগ্য বদলায়নি। দক্ষিণ আফ্রিকা সফরে সাকিব আল হাসানের বিশ্রামে সুযোগ পেলেন দলে ফেরার। কোচ তার সামর্থ্য নিয়ে সন্ধিহান হলেও মাহমুদউল্লাহর অভিজ্ঞতায় ভরসা করেছিল দল। বাংলাদেশের প্রেক্ষাপটে টেস্টে মুমিনুলের কার্যকারিতা নিয়ে প্রশ্ন তোলাটাই বিলাসিতা। কোচ সেই বিলাসিতা দেখালেও পরে বোধোদয় হয়েছে নির্বাচকদের। কাল দু’জনই সেই ভরসা ও আস্থার প্রতিদান দিলেন দারুণভাবে। আগের দিন তিন উইকেটে ৪৯৬ রান তুলে দক্ষিণ আফ্রিকা তাদের প্রথম ইনিংস ঘোষণা করার পর তিন উইকেটে ১২৭ রানে দিন শেষ করেছিল বাংলাদেশ। ফলো-অন এড়াতে তখন দরকার ১৭০ রান। শনিবার তৃতীয়দিনের শুরুতে তামিম ইকবাল ফিরে যাওয়ার পর দলকে ভরসা দেয় মুমিনুল-মাহমুদউল্লাহর পঞ্চম উইকেট জুটি। ৬৯ রানের এই জুটিই দক্ষিণ আফ্রিকার মাটিতে প্রথমবারের মতো তিনশ’ ছাড়ানো ইনিংসের পথে এগিয়ে দেয় বাংলাদেশকে। দু’জনই সম্ভাবনা জাগিয়েছিলেন আরও বড় কিছুর। শেষ পর্যন্ত সেঞ্চুরি না পেলেও নিজেদের নতুন করে চেনানোর মিশনে দু’জনই সফল।

মুমিনুল পেয়েছেন টেস্টে নিজের ১২তম ফিফটি, মাহমুদউল্লাহ ১৪তম। প্রোটিয়া পেসারদের যেভাবে সামলেছেন, তাতে মুমিনুলের ক্যারিয়ারের অন্যতম সেরা ফিফটি হয়ে থাকবে এটি। ১৫০ বলে ৭৭ রানের নিখুঁত এক ইনিংস খেলে শেষ পর্যন্ত প্রোটিয়া স্পিনার কেশব মহারাজকে নিজের উইকেটটি উপহার দিয়ে এসেছেন মুমিনুল। দক্ষিণ আফ্রিকায় বাংলাদেশের কোনো ব্যাটসম্যানের সর্বোচ্চ ইনিংস এটি। আর মাহমুদউল্লাহ ১২৪ বলে ৬৬ করে ফিরেছেন মরনে মরকেলের বলে প্লেডঅন হয়ে। তার বিদায়ের পর বেশিক্ষণ আর টিকতে পারেনি বাংলাদেশ। ৩২০ রানে থামে বাংলাদেশের প্রথম ইনিংস।

সংখ্যায়

২৫২ দক্ষিণ আফ্রিকায় এর আগে টেস্টে এক ইনিংসে বাংলাদেশের সর্বোচ্চ রান ছিল ২৫২। ইস্ট লন্ডনে ২০০২ সালে এই রান করেছিল বাংলাদেশ। কাল সেটি ছাড়িয়ে গেলেন মুমিনুল, মাহমুদউল্লাহরা। বাংলাদেশ ৩২০ রান করে প্রথম ইনিংসে

৩২৬ ২০১৫ সালের জুলাইয়ে চট্টগ্রাম টেস্টের প্রথম ইনিংসে ৩২৬ রান করেছিল বাংলাদেশ, যা প্রোটিয়াদের বিপক্ষে বাংলাদেশের সর্বোচ্চ। কাল পচেফস্ট্র–মে প্রথম টেস্টের তৃতীয়দিন বাংলাদেশ অলআউট হয় ৩২০ রানে

স্কোর কার্ড

দক্ষিণ আফ্রিকা প্রথম ইনিংস ৪৯৬/৩ ডিক্লেয়ার (এলগার ১৯৯, মার্করাম ৯৭, হাশিম আমলা ১৩৭। মোস্তাফিজ ১/৯৮, শফিউল ১/৭৪)।

বাংলাদেশ প্রথম ইনিংস

রান বল ৪ ৬

লিটন ক আমলা ব মরকেল ২৫ ২৯ ৪ ০

ইমরুল ক মার্করাম ব রাবাদা ৭ ২০ ০ ০

মুমিনুল ক মার্করাম ব মহারাজ ৭৭ ১৫০ ১২ ০

মুশফিক ক মার্করাম ব মহারাজ ৪৪ ৫৭ ৭ ১

তামিম ক ডি কক ব ফেলুকওয়ায়ো ৩৯ ৬৭ ৬ ১

মাহমুদউল্লাহ ব মরকেল ৬৬ ১২৪ ১১ ১

সাব্বির রহমান ব অলিভিয়ার ৩০ ৪৬ ৪ ১

মেহেদী হাসান ক এলগার ব রাবাদা ৮ ১৬ ০ ০

তাসকিন রানআউট ১ ২ ০ ০

শফিউল ক আমলা ব মহারাজ ২ ১৩ ০ ০

মোস্তাফিজ নটআউট ১০ ১২ ২ ০

অতিরিক্ত ১১

মোট (অলআউট, ৮৯.১ ওভারে) ৩২০

উইকেট পতন : ১/১৬, ২/৩৬, ৩/১০৩, ৪/১৫৮, ৫/২২৭, ৬/২৯২, ৭/৩০৪, ৮/৩০৫, ৯/৩০৮, ১০/৩২০।

বোলিং : মরকেল ১৯-৭-৫১-২, রাবাদা ২৪-৫-৮৪-২, মহারাজ ২৭.১-৮-৯২-৩, অলিভিয়ার ১১-১-৫২-১, ফেলুকওয়ায়ো ৬-২-১৮-১, মার্করাম ২-০-১৩-০।

দক্ষিণ আফ্রিকা দ্বিতীয় ইনিংস

রান বল ৪ ৬

মার্করাম ক লিটন ব মোস্তাফিজ ১৫ ২৬ ২ ০

এলগার এলবিডব্ল– ব শফিউল ১৮ ২৫ ২ ০

আমলা ব্যাটিং ১৭ ৩২ ১ ০

বাভুমা ব্যাটিং ৩ ১৩ ০ ০

অতিরিক্ত ১

মোট (২ উইকেটে ১৫.৫ ওভারে) ৫৪

উইকেট পতন : ১/৩০, ২/৩৮।

বোলিং : মেহেদী হাসান ৪-১-১৫-০, শফিউল ৫-১-১৮-১, মোস্তাফিজ ৪-১-৭-১, তাসকিন ২.৫-০-১৪-০।

Logo

সম্পাদক : আবদুল হাই শিকদার

প্রকাশক : সালমা ইসলাম