হালফিল বয়ান
সত্য, সাহস ও ত্যাগের উত্তরাধিকার
ড. মাহফুজ পারভেজ
প্রকাশ: ১৪ ডিসেম্বর ২০২৫, ১২:০০ এএম
প্রিন্ট সংস্করণ
|
ফলো করুন |
|
|---|---|
বাংলাদেশের বুদ্ধিবৃত্তিক পরিমণ্ডলে আজ একটি অস্বস্তিকর বিভাজন স্পষ্টভাবে চোখে পড়ে-একদিকে সত্য ও মানবিকতার পক্ষে সাহসের সঙ্গে দাঁড়ানো প্রকৃত বুদ্ধিজীবীরা, অন্যদিকে ক্ষমতার পাতে মুখ গুঁজে থাকা নতজানু চাটুকারদের দীর্ঘ সারি। এ দুই শ্রেণির উপস্থিতি কোনো নতুন ঘটনা নয়, সমাজের বিবর্তনে বারবারই দেখা গেছে সত্য ও ন্যায়ের কণ্ঠস্বরকে চাপা দিতে ভাঁড় ও বিদূষকদের ব্যবহার করা হয়। কিন্তু ইতিহাস বারবার প্রমাণ করেছে, সত্যকে কখনো দীর্ঘস্থায়ীভাবে দমন করা যায় না। যেমনভাবে ১৯৭১ সালের শহীদ বুদ্ধিজীবীদেরও মুক্তি ও স্বাধীনতার সড়ক থেকে সরানো যায়নি। জীবন দিয়ে তারা সত্য, সাহস ও আত্মত্যাগের অম্লান উপমা রেখে গেছেন। তাদের প্রতি পুরো জাতির বিনম্র শ্রদ্ধা।
সমাজবিজ্ঞানের তাত্ত্বিক দৃষ্টিকোণ থেকে বলা যায়, যে সমাজে ক্ষমতার সমালোচনা দুর্বল হয়ে পড়ে, সেখানে ভাঁড় ও বিদূষকের সংখ্যা বেড়ে যায়। তারা বিনোদন দেয়, হাসায়, ব্যঙ্গ করে। তাদের উদ্দেশ্য মানবিকবোধ জাগানো নয়, বরং ক্ষমতাসীনদের সেবাদানে তৈলমর্দনের সংস্কৃতি তৈরি করা। সদ্য পতিত ফ্যাসিবাদী আমলের বুদ্ধিজীবী নামধারী ভাঁড়, চাটুকার, পদলেহী, দলদাস ও বিদূষকের দল তৈলমর্দন ও লেজুড়বৃত্তির নিকৃষ্ট দৃষ্টান্ত স্থাপন করেছিল। এমনকি, ক্ষমতা হারানোর প্রাক্কালেও ছাত্র-জনতার বিরুদ্ধে হত্যাকাণ্ড ঘটানোর উসকানি দিয়েছিল এ অসাধুচক্র।
প্রকৃত বুদ্ধিজীবী প্রতিকূল মুহূর্তেও সত্য বলা থেকে পিছপা হন না। তাদের কলম, ভাষণ এবং চিন্তা সমাজকে মানবিকতার পথে এগিয়ে নিয়ে যায়। সাধারণ মানুষের পক্ষে দাঁড়াতে গিয়ে নিপীড়ন, অপবাদ কিংবা একাকিত্বকে স্বাভাবিকভাবে মেনে নেন। ক্ষমতা ও পদের মোহ তাদের স্পর্শ করতে পারে না। সুযোগ-সুবিধা তারা ঘৃণাভরে প্রত্যাখ্যান করেন। ধ্রুপদি পণ্ডিত সক্রেটিস ছিলেন তেমনি এক প্রকৃত বুদ্ধিজীবী, যিনি সত্যের পক্ষে দাঁড়িয়ে হেমলক পান করে আত্মত্যাগ করেছিলেন, আপস করেননি। প্রকৃত বুদ্ধিজীবীর নৈতিক দৃঢ়তার শ্রেষ্ঠ দৃষ্টান্ত আমরা খুঁজে পাই ১৯৭১ সালে। যে কারণে ১৯৭১-এর শহীদ বুদ্ধিজীবীরা স্মরণীয়।
বাংলাদেশের স্বাধীনতার শেষপ্রান্তে পাকিস্তানি হানাদার বাহিনী পরিকল্পিতভাবে হত্যা করে দেশের শ্রেষ্ঠ সন্তানদের শিক্ষক, সাংবাদিক, চিকিৎসক, সাহিত্যিক, চিন্তাবিদ। তাদের হত্যা ছিল একটি জাতির মেরুদণ্ড ভেঙে দেওয়ার নিষ্ঠুর চেষ্টা। কিন্তু ১৯৭১-এর শহীদ বুদ্ধিজীবীরা মৃত্যুর মুহূর্তেও মানবিকতার পক্ষে যে দৃঢ়তা দেখিয়েছেন, তা চিরকালের অনুপ্রেরণার ঝরনাধারা। তাদের দর্শন, চেতনা ও বার্তা ছিল স্পষ্ট। তারা ছিলেন মুক্তি, স্বাধীনতা, সত্য, ন্যায়, সাহস ও মানবিকতার সাধক। ক্ষমতাসীন শক্তির কাছে মাথানত করেননি তারা। আত্মত্যাগের মধ্য দিয়ে তারা বেঁচে আছেন প্রত্যেক মানুষের বিবেকের মর্মমূলে।
বেদনার বিষয় হলো, সমাজে প্রকৃত বুদ্ধিজীবীর অভাব চরমভাবে পরিলক্ষিত হচ্ছে। সততার সঙ্গে সত্য ও মানুষের পক্ষে দাঁড়িয়ে ঝুঁকি নিয়ে বুদ্ধিবৃত্তির দায়দায়িত্ব পালন করতে সাহস পাচ্ছেন না অনেকেই। কারণ, অতীত স্বৈরাচারের নিুমানের রাজনৈতিক সংস্কৃতি বুদ্ধিজীবী সমাজকে অবক্ষয় ও পচনের সম্মুখীন করেছিল। তাদের হিম্মত ও দ্রোহ নির্বাপিত হয়েছিল। তেলবাজি ও চাটুকারিতা পুরস্কৃত হয়েছিল। সমালোচনামূলক চিন্তাগুলো সন্দেহ ও আক্রমণের শিকার হয়েছিল।
সাহস করে তখন প্রকৃত বুদ্ধিজীবীর দায়িত্ব পালন করেছিলেন মুষ্টিমেয় কয়েকজন। তখন সত্যকে প্রতিষ্ঠিত করা, মানবিকতার পক্ষে দাঁড়ানো, অসহায় ও নিপীড়িত মানুষের কণ্ঠস্বর হওয়া, ক্ষমতার অপব্যবহার চিহ্নিত করা, জাতির ভবিষ্যৎ সম্পর্কে সতর্কতা দেওয়ার কাজ যারা করেছিলেন, তারা কেউ ক্ষমতা, পদ-পদবির লোভে তা করেননি। তারা উজ্জীবিত হয়েছিলেন ১৯৭১-এর বুদ্ধিজীবীদের আত্মত্যাগের চৈতন্যে। তারা বিশ্বাস করতেন, সত্যের পথ কখনো পরাজিত হয় না। আশার কথা হলো, চাটুকাররা প্রভাব বিস্তার করলেও ভাঁড়েরা নানা পদে সমাসীন হলেও ইতিহাসের শেষ বিচারে প্রকৃত বুদ্ধিজীবীর সততা, সাহস ও নৈতিক অবস্থানই বিজয়ী হয়েছে। ফ্যাসিবাদের মতো চাটুকার ও তৈলবাজ শ্রেণি অন্তর্হিত হয়েছে আর টিকে আছেন প্রকৃত বুদ্ধিজীবীরা, যাদের উত্তরাধিকারে নতুন প্রজন্ম খুঁজে পাচ্ছে উত্তরণের পথ এবং আশা, ন্যায় ও মুক্তির দিশা।
বাংলাদেশ যখন ফ্যাসিবাদী অন্ধকার-অতীত থেকে গণতান্ত্রিক রূপান্তরের আলোকময় প্রহরের দিকে ধাবমান, তখন প্রকৃত বুদ্ধিজীবীর দায়িত্ব অপরিসীম। তাদেরই সংকটে-সঙ্কুলতায় সাধারণ মানুষকে সঠিক দিকনির্দেশনা দিতে হবে। যাবতীয় শাঠ্য-ষড়যন্ত্রের মুখোশ উন্মোচিত করতে হবে।
এজন্যই মনে রাখা দরকার, দায়বদ্ধ বুদ্ধিজীবী আর সাধারণ বুদ্ধিজীবীর মধ্যে বিস্তর তফাত আছে। হাতের নাগালে কাগজ আর কলম থাকলেই যেমন লেখক হওয়া যায় না, তেমনিভাবে অন্যায়, অচলাবস্থা ও অনিয়মের বিরুদ্ধে প্রশ্ন উত্থাপনের সাহস না থাকলে নিজেকে বুদ্ধিজীবী বলে নৈতিকভাবে দাবি করা যায় না। যারা সমালোচনা অত্যন্ত কঠিন ও বিপজ্জনক জেনেও সাহসের পরিচয় দিয়ে অগ্নিপরীক্ষায় অবতীর্ণ হয়ে সত্যের পক্ষাবলম্বন করেন, তারাই প্রকৃত বুদ্ধিজীবী। প্রকৃত বুদ্ধিজীবী হলেন সত্য ও আত্মত্যাগের উত্তরাধিকার। তারা সাহসী ও সক্রিয়। সংখ্যায় সর্বদাই খুব কম। তুলনায় ভেকধারী বুদ্ধিজীবীর সংখ্যাই বেশি।
প্রকৃত বুদ্ধিজীবী যুক্তিবাদী সমাজের গোড়াপত্তনের সময় থেকেই ছিলেন, যাদের আরেকটি নাম হলো, ‘পাবলিক ইন্টেলেকচুয়াল’। তাদের ছিল ক্ষমতা, অন্যায় ও অনাচারের বিরুদ্ধে প্রতিনিয়ত প্রশ্ন করার ঐতিহ্য। সক্রেটিস, প্লেটো, অ্যারিস্টটল সেই ঐতিহ্যের সাহসী পথনির্মাণ করে গিয়েছেন।
অথচ প্রকৃত বুদ্ধিজীবীর দায়িত্ব যেখানে দল-মত নির্বিশেষে দায়িত্বশীল বা ক্ষমতাবানদের ভুল ধরিয়ে দেওয়া, আর ভাঁড়ের কাজ সেখানে মনোরঞ্জন ও চাটুকারিতা করা। বস্তুতপক্ষে, সভ্যতার ইতিহাসের প্রতিটি পর্যায়ে উভয় শ্রেণির বুদ্ধিজীবীর উপস্থিতি লক্ষ করা গেছে। কৃতকর্মের নিরিখে সমাজে ও রাজনৈতিক ব্যবস্থায় তাদের স্ব স্ব আসন ও অবস্থান নির্ধারিত হয়েছে। সবসময়ই দেখা গেছে, প্রকৃত বুদ্ধিজীবী সমালোচনামূলক হওয়ায় বিভিন্ন গোষ্ঠীর রোষানলে পড়েন আর ভাঁড়-বুদ্ধিজীবী তৈলমর্দন ও তোষামোদপূর্ণ আচরণের জন্য পৃষ্ঠপোষকতা ও বাহবা লাভ করেন। কর্মকাণ্ডের ফলস্বরূপ প্রকৃত বুদ্ধিজীবীর ভাগ্যে জোটেছে আঘাত আর ভাঁড় পেয়েছে পদ-পদবি, পুরস্কার।
প্রকৃত বুদ্ধিজীবীর প্রধান বৈশিষ্ট্য হলো, চূড়ান্ত প্রতিকূল পরিস্থিতিতেও রুখে দাঁড়ানোর সাহস ও স্পর্ধা। সত্য ও ন্যায়ের পক্ষে অবিচল থাকার দৃঢ়তা। এমন বুদ্ধিজীবী সংখ্যায় এত কম যে, তাদের প্রচারে বা বুদ্ধিজীবীসুলভ ভাব-ভঙ্গিতে খুঁজে পাওয়া যায় না। প্রত্যক্ষ বা পরোক্ষ বুদ্ধিজীবী সেজে ঘুরে বেড়ানোর ফুসরতও তাদের নেই। সরাসরি সরকারের দালালি কিংবা হাত ঘুরিয়ে ভাত খাওয়ার মতো পরোক্ষ তাঁবেদারি করতেও তারা নারাজ।
ক্ষমতাসীন ও ক্ষমতা-আকাঙ্ক্ষীরা মূলত চায় যে, জনতা থেকে বুদ্ধিজীবী পর্যন্ত সবাই শুধু তাদেরই সমর্থন করুক ও প্রশংসায় লিপ্ত থাকুক। তারা চায় দলীয়ভাবে অনুগত বুদ্ধিজীবী। প্রকারান্তরে যারা আসলে ভাঁড়। প্রকৃত বুদ্ধিজীবীর জায়গা সে কারণেই ক্ষমতার বড় বা ছোট বৃত্তে হয় না। ইতিহাসের কঠিন পরিস্থিতিতে প্রমিথিউসের মতো দেখতে পাওয়া যায় প্রকৃত বুদ্ধিজীবীদের। যখন কেউ কথা বলে না, তখন সোচ্চার হন তারা। পুরো পরিস্থিতির বিপক্ষে দাঁড়িয়ে মানুষ ও সত্যের পক্ষাবলম্বন করেন যেসব বুদ্ধিজীবী, ইতিহাস তাদের ভাঁড় সম্প্রদায়ের চেয়ে আলাদা করে এবং প্রকৃত বুদ্ধিজীবীর মর্যাদা দেয়।
দৃষ্টান্তস্বরূপ ইতিহাসের সবচেয়ে স্পর্শকাতর পরিস্থিতির কথা উল্লেখ করা যায়। ১৯৭১ সালে বাংলাদেশ যখন পাকিস্তানি শাসকগোষ্ঠীর চরম নির্যাতনের সম্মুখীন এবং বাঙালি জাতি গণহত্যার শিকার, তখন পাকিস্তানের প্রায় সবাই জান্তার অপকর্মের পক্ষে অবস্থান নেয়। তখন পাকিস্তানের দু-একজন বুদ্ধিজীবীর প্রতিবাদের কথা জানা যায়। বাংলাদেশের বিরুদ্ধে সামরিক অভিযানের বিরুদ্ধে ক্ষীণ কণ্ঠে হলেও তারা পথে নেমে প্রতিবাদ করেছিলেন। তারাই ছিলেন প্রকৃত বুদ্ধিজীবী। যারা পাকিস্তানের মাটিতে পাকিস্তানের নীতি ও তৎপরতার সমালোচনা করে বাংলাদেশের পক্ষে দাঁড়িয়ে ছিলেন, সংখ্যায় অতি সামান্য হলেও তারা জীবনের কতটা ঝুঁকি নিয়ে সে কাজ করেছিলেন, তা সহজেই অনুমেয়।
একজন ছিলেন কবি ফয়েজ আহমদ ফয়েজ। সব স্বপ্ন চুরমার করে পাকিস্তান পাকাপাকিভাবে একটা অগণতান্ত্রিক রাষ্ট্রে পরিণত হলে তিনি ১৯৪৭ সালে দেশটির স্বাধীনতার কয়েক বছর বাদেই প্রতিবাদ করায় শাসকের দৃষ্টিতে দেশদ্রোহিতার অপরাধের জন্য কারারুদ্ধ হন। তিনিই ১৯৭১ সালে বাংলাদেশের মাটিতে পাকিস্তানে ভয়ংকর অত্যাচারের বিরুদ্ধে লিখলেন ‘হজর করো মেরে তনসে’ নামের ঐতিহাসিক প্রতিবাদী কবিতা। তীব্র ঘৃণায় তার প্রতিবাদ ঠিকরে উঠেছিল, ‘সাজতেই যদি হয় কী করে সাজবে বলো তো, গণহত্যার এই মেলা/বলো তো প্রলোভিত করবে কাকে আমার রক্তের এই আর্তনাদ।
আরেকজন ঢাকায় শৈশব ও প্রথম যৌবন কাটানো কবি আফজল আহমেদ সৈয়দ। নিশ্চিত মৃত্যুর হাত থেকে বাঁচতে ঢাকা ছেড়ে পালিয়ে এসেছিলেন তিনি। পাকিস্তানের মাটিতে বসেই লিখলেন ‘এক সাধারণ বাংলাদেশি মেয়ের কথা’ নামের কবিতাক্স ‘তার দরিদ্র দেশ/দ্বিতীয়বার স্বাধীন হয়েছে/সে দুনিয়ার সব্বাইকার/থেকে বেশি স্বাধীন এবং বেশি খুশি।’
প্রকৃত বুদ্ধিজীবী হওয়া, বিরূপ পরিস্থিতিতে মানুষ ও সত্যের পক্ষ নিয়ে প্রতিবাদ করা সহজ কথা নয়। সবার পক্ষে এমন অবস্থান নেওয়া সহজ নয়, সম্ভবও নয়। শাসককে মুচলেকা দেওয়া, ক্ষমতার দালালি করা, অন্যায়ের পক্ষ নেওয়া বহু লোকই পরিবর্তিত পরিস্থিতিতে সমাজে বীরদর্পে দাপট দেখায়। ভাঁড়ামি ও ভণ্ডামি দ্বারা আকণ্ঠ নিমজ্জিত লোকজনও বুদ্ধিজীবীর তকমা লাগিয়ে মানুষকে জ্ঞানদান করে। দায়বদ্ধ, প্রকৃত বুদ্ধিজীবীদের আড়াল করে ভাঁড়, ভণ্ড ও বাটপাড় নিজের ক্ষুদ্র স্বার্থে ক্ষমতা ও দলের পক্ষে বুদ্ধি বিক্রি করে সমাজের সাধারণ মানুষকে বিভ্রান্ত করতে থাকে। এহেন আত্মবিক্রীত এবং আত্মবিকৃত ভেকধারী বুদ্ধিজীবীদের প্রতি ঘৃণা আর প্রকৃত বুদ্ধিজীবীদের প্রতি শ্রদ্ধা জানানোর তাগিদ দেয় ১৪ ডিসেম্বর, বাংলাদেশের ইতিহাসে এক গভীর শোক ও গৌরবের দিন, শহীদ বুদ্ধিজীবী দিবস।
প্রফেসর ড. মাহফুজ পারভেজ : চেয়ারম্যান, রাজনীতি বিজ্ঞান বিভাগ, চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয় এবং নির্বাহী পরিচালক, চট্টগ্রাম সেন্টার ফর রিজিওন্যাল স্টাডিজ, বাংলাদেশ (সিসিআরএসবিডি)
