Logo
Logo
×

দৃষ্টিপাত

নতুন অধ্যাদেশ: সিএজির সাংবিধানিক স্বাধীনতা হ্রাস, ঝুঁকি বাড়ছে

Icon

জাহিরুল ইসলাম

প্রকাশ: ০৮ মে ২০২৫, ০৫:৪৫ পিএম

নতুন অধ্যাদেশ: সিএজির সাংবিধানিক স্বাধীনতা হ্রাস, ঝুঁকি বাড়ছে

সরকারি হিসাব নিরীক্ষা অধ্যাদেশ ২০২৫ দেশের সংবিধান, আদালতের রায় এবং আন্তর্জাতিক চর্চার সঙ্গে সাংঘর্ষিক হয়ে উঠেছে। এই আইনে কম্পট্রোলার অ্যান্ড অডিটর জেনারেল (সিএজি) প্রতিষ্ঠানের স্বাধীনতা খর্ব করা হয়েছে, যা রাষ্ট্রের আর্থিক স্বচ্ছতা ও জবাবদিহিকে দুর্বল করবে।

পাকিস্তান, ভারত ও শ্রীলঙ্কার মতো দেশগুলোতে অডিটর জেনারেলের রাজস্ব অডিটের পূর্ণ ক্ষমতা থাকলেও বাংলাদেশের নতুন আইনে এই ক্ষমতা সীমিত করা হয়েছে। আপিল বিভাগের রায় এবং সংবিধানের ১২৮(৪) ধারা স্পষ্ট করে যে, সিএজি নির্বাহী বিভাগের নিয়ন্ত্রণমুক্ত থাকবেন।

কিন্তু নতুন আইনে তাকে প্রকারান্তরে সরকারের Rules of Business-এর অধীন করা হয়েছে।

সম্প্রতি ড. দেবপ্রিয় ভট্টাচার্যের নেতৃত্বে প্রণীত অর্থনীতির শ্বেতপত্রে স্বীকার করা হয়েছে, গত কয়েক বছরে জিডিপির ৬% কর মওকুফ দেওয়া হয়েছে। এক্ষেত্রে বিশেষ কিছু ব্যবসায়িক গ্রুপ এলএনজি টার্মিনাল, বিদ্যুৎ প্রকল্প ও শেয়ার লেনদেনে বিশাল কর ছাড় পেয়েছে। সিএজি যদি রাজস্ব অডিট যথাযথভাবে করতে পারতেন, তাহলে এই অনিয়মগুলো হয়তো প্রতিরোধ করা যেত।

আন্তর্জাতিক সংস্থা INTOSAI-এর সদস্য হিসেবে সিএজি বিভিন্ন SAI সদস্যদের সাথে দ্বি পাক্ষিক বা বহু পাক্ষিক চুক্তি করতে পারলেও নতুন আইনে সরকারি অনুমোদন বাধ্যতামূলক করা হয়েছে, যা সাংবিধানিক প্রতিষ্ঠানের উপর সরকারের সরাসরি হস্তক্ষেপ। এছাড়াও, CAG Additional Functions আইন, ১৯৭৪-এ অডিট সংক্রান্ত বিধি প্রণয়নের ক্ষমতা সিএজি-এর থাকলেও এখন অধ্যাদেশে তা সরকারের, যা অডিটের স্বাধীনতাকে ক্ষুণ্ন করে এবং সংবিধানের সাথে সাংঘর্ষিক।

এই পরিবর্তন রাষ্ট্রীয় জবাবদিহি কমিয়ে অলিগার্কি ও মাফিয়াতন্ত্রের পথ প্রশস্ত করতে পারে। টিআইবি ইতিমধ্যেই এই আইনের সমালোচনা করেছে।

বিশেষজ্ঞরা বলছেন, সংবিধান ও আদালতের রায় মেনে সিএজি-এর স্বাধীনতা ফিরিয়ে দিতে হবে। নতুবা রাষ্ট্রীয় প্রতিষ্ঠানের ওপর জনগণের আস্থা আরও কমবে, বাড়বে দুর্নীতির ঝুঁকি।

লেখক: সাবেক উপপরিচালক, পরিবহণ অডিট অধিদপ্তর।

অডিটর জেনারেল

Logo

সম্পাদক : আবদুল হাই শিকদার

প্রকাশক : সালমা ইসলাম