যশোরের ৬টির মধ্যে ৪টি আসনেই প্রার্থী পরিবর্তন বিএনপির
তৌহিদ জামান, যশোর
প্রকাশ: ২৭ ডিসেম্বর ২০২৫, ০৫:৩৩ পিএম
ছবি: যুগান্তর
|
ফলো করুন |
|
|---|---|
যশোরের ৬টি আসনের মধ্যে চারটিতেই প্রাথমিকভাবে মনোনয়ন দেওয়া প্রার্থী পরিবর্তন করেছে বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দল (বিএনপি)। এরমধ্যে একটি আসন জোটের শরিককে ছেড়ে দিয়েছে দলটি।
যশোর-১ (শার্শা) আসনে বিএনপি প্রথমে মনোনয়ন দেয় দলের কেন্দ্রীয় কমিটির সাবেক দপ্তর সম্পাদক মফিকুল হাসান তৃপ্তিকে। পরে বদল করে সেখানে মনোনয়ন দেওয়া হয়েছে শার্শা উপজেলা বিএনপির সাধারণ সম্পাদক নুরুজ্জামান লিটনকে।
যশোর-৪ (বাঘারপাড়া, অভয়নগর উপজেলা ও বসুন্দিয়া ইউনিয়ন) আসনে প্রাথমিক মনোনয়ন পান দলের কেন্দ্রীয় নেতা ইঞ্জিনিয়ার টিএস আইয়ূব। কিন্তু চূড়ান্ত মনোনয়ন পেয়েছেন দলের অভয়নগর উপজেলা কমিটির সভাপতি মতিয়ার রহমান ফারাজী।
যশোর-৫ (মণিরামপুর) আসনে প্রাথমিক মনোনয়ন পান দলের উপজেলা কমিটির সভাপতি অ্যাডভোকেট শহীদ ইকবাল হোসেন। পরে জোটের শরিক জমিয়তে ওলামায়ে ইসলামের (একাংশ) সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব মুফতি রশীদ বিন ওয়াক্কাসকে মনোনয়ন দেওয়া হয়।
যশোর-৬ (কেশবপুর) আসনে প্রাথমিক মনোনয়ন পান দলের কেন্দ্রীয় সদস্য ও ছাত্রদলের সাবেক সভাপতি কাজী রওনকুল ইসলাম শ্রাবণ। কিন্তু তাকে পরিবর্তন করে দলের কেন্দ্রীয় সদস্য ও উপজেলা কমিটির সভাপতি আবুল হোসেন আজাদকে মনোনয়ন দেওয়া হয়।
এমন অবস্থায় শুধুমাত্র যশোর-২ (ঝিকরগাছা-চৌগাছা) আসনে দলের উপজেলা কমিটির সভাপতি সাবিরা সুলতানা মুন্নী এবং যশোর-৩ (সদর) আসনে দলের খুলনা বিভাগীয় সাংগঠনিক সম্পাদক অনিন্দ্য ইসলাম অমিত রয়েছেন নিশ্চিন্তে।
যশোর-১ আসনে বাদ পড়া মফিকুল হাসান তৃপ্তি এক মাসের বেশি সময় ধরে মাঠে প্রচারণা চালিয়েছেন। প্রার্থী পরিবর্তনের কারণে সমর্থকদের মাঝে হতাশা বিরাজ করছে। তবে, নুরুজ্জামানের পক্ষের লোকজন ব্যাপক উৎসাহ ও উদ্দীপনা নিয়ে জনসংযোগে নেমে পড়েছেন।
জানতে চাইলে মফিকুল হাসান তৃপ্তি বলেন, নেতাকর্মী-সমর্থকদের বলেছি শান্ত থাকতে। ঢাকা থেকে ফিরে সবার সঙ্গে কথা বলে পরবর্তী ব্যবস্থা নেওয়া হবে। তিনি মনোনয়নপত্র জমা দেবেন বলে জানান।
এদিকে দলীয় সূত্র জানায়, যশোর-৪ আসনে ইঞ্জিনিয়ার টিএস আইয়ূবই বিএনপির মূল প্রার্থী। মতিয়ার রহমান ফারাজীকে ‘ব্যাকআপ’ হিসেবে রাখা হয়েছে। কোনো কারণে তার মনোনয়ন বাতিল হলে সেক্ষেত্রে মতিয়ার রহমান ফারাজীকে দলের প্রার্থী করা হতে পারে।
ইঞ্জিনিয়ার টিএস আইয়ুব বলেছেন, ২৫ ডিসেম্বর তাকে (মতিয়ার রহমান ফারাজী) ব্যাকআপ হিসেবে দলীয় মনোনয়ন দেওয়া হয়েছে। ব্যাংক সংক্রান্ত কিছু জটিলতা ছিল। সেগুলো কেটে গেছে। এরপরই তারেক রহমান তাকে নমিনেশন দিয়েছেন।
২৯ ডিসেম্বর বিকাল ৩টায় বাঘারপাড়া উপজেলায় সহকারী রিটার্নিং অফিসারের কাছে মনোনয়নপত্র জমা দেবেন বলে জানিয়েছেন টিএস আইয়ূব।
এদিকে মতিয়ার রহমান ফারাজী বলছেন, মনোনয়ন চাওয়ার পর তাকে অপেক্ষা করতে বলা হয়েছিল। দলের সম্ভাব্য প্রার্থী ঘোষণার আগে থেকেই অভয়নগর, বাঘারপাড়া এবং বসুন্দিয়ার মানুষ প্রার্থী পরিবর্তনের দাবি জানিয়ে আসছিলেন।
তিনি বলেন, ইঞ্জিনিয়ার টিএস আইয়ুব চার ব্যাংকে ঋণখেলাপি। গত সপ্তাহে ঢাকা ব্যাংকের ঋণ শিডিউলের চেষ্টা করলে আদালত তার আবেদন খারিজ করে দেন।
যশোর-৬ (কেশবপুর) সংসদীয় আসনে বিএনপির চূড়ান্ত মনোনয়ন পেয়েছেন বিএনপির কেন্দ্রীয় সদস্য ও কেশবপুর উপজেলা বিএনপির সভাপতি আবুল হোসেন আজাদ। ফলে প্রাথমিক মনোনয়নপ্রাপ্ত কাজী রওনকুল ইসলাম শ্রাবণ শেষ পর্যন্ত বাদ পড়েছেন। ২৪ ডিসেম্বর রাতে বিএনপির কেন্দ্রীয় কার্যালয় থেকে আবুল হোসেন আজাদের হাতে মনোনয়নপত্র তুলে দেওয়া হয়।
প্রাথমিক মনোনয়ন পেয়ে কাজী রওনকুল ইসলাম শ্রাবণ গত দেড়মাস ধরে এলাকায় ব্যাপক প্রচার-প্রচারণা চালিয়ে আসছিলেন।
যশোরের চারটি আসনেই প্রার্থী বদলে কোনো প্রতিক্রিয়া হবে কিনা- জানতে চাইলে জেলা বিএনপির সাধারণ সম্পাদক দেলোয়ার হোসেন খোকন যুগান্তরকে বলেন, দীর্ঘদিন ধরে দলের জন্যে তারা কাজ করছেন, মন খারাপ হওয়া স্বাভাবিক। কিন্তু দলীয় সিদ্ধান্ত আমাদের সবাইকে মানতে হবে। নমিনেশন সাবমিটের পরে সবাইকে নিয়ে আমরা বসবো। আশা করছি, ঐক্যবদ্ধভাবে ধানের শীষকে বিজয়ী করতে সবাই কাজ করবো।
