ডিবি পুলিশের অভিযানে ‘ভণ্ড জিনের বাদশা’ গ্রেফতার
বগুড়া ব্যুরো
প্রকাশ: ০৫ ডিসেম্বর ২০২৫, ০৭:৩০ পিএম
ফাইল ছবি
|
ফলো করুন |
|
|---|---|
বগুড়ায় জিনের বাদশা পরিচয়ে অলৌকিক ক্ষমতা দেখানোর নামে সাধারণ মানুষের কাছ থেকে লাখ লাখ টাকা প্রতারণার মাধ্যমে হাতিয়ে নেওয়া চক্রের সদস্য মহিদুল ইসলামকে (৩৫) গ্রেফতার করেছে ডিবি পুলিশ। বৃহস্পতিবার (৪ ডিসেম্বর) রাতে সোনাতলা উপজেলার রানীরপাড়া গ্রামে নিজ বাড়ি থেকে তাকে গ্রেফতার করা হয়।
বাদী মোমিনুর রহমান এজাহারে উল্লেখ করেন, সোনাতলার রানীরপাড়া গ্রামের তোজাম আকন্দের ছেলে মহিদুল ইসলাম ও তার সহযোগীরা প্রতারক ‘জিনের বাদশা’ (কবিরাজ) পরিচয়ে দীর্ঘদিন ধরে মানুষকে ফাঁদে ফেলছে। কিছুদিন আগে বগুড়ার শিবগঞ্জের মহাস্থান এলাকায় একটি ইসলামী জলসায় বাদীর সঙ্গে মহিদুলের পরিচয় হয়। এরপর তাদের মাঝে যোগাযোগ চলতে থাকে।
গত ৭ সেপ্টেম্বর বাদী মোমিনুর রহমান আসর নামাজ পড়ে বাড়ি থেকে বের হন। রাত ১০টার দিকে তার মেয়ে ফাতেমা জানান, মহিদুলের বাড়িতে ইসলামী জলসা চলছে। পরে বাদীসহ অন্য পাঁচজন রাত সোয়া ১১টার দিকে সেখানে যান। অভিযোগে বলা হয়, পরদিন আসামিরা খাবারের সঙ্গে ওষুধ, কেমিক্যাল বা ঝাড়ফুঁক দিয়ে বাদীকে অস্বাভাবিক করে ফেলে, যাতে তিনি কোনো সিদ্ধান্ত নিতে না পারেন। এ অবস্থায় আত্মীয়রা ফোন করলে তিনি বাড়ি ফিরবেন বলে জানালেও সাত দিন বাড়ি ফেরেননি।
এ সময়ের মধ্যে নগদ ও বিকাশের মাধ্যমে আসামিরা তার কাছ থেকে মোট ১২ লাখ টাকা প্রতারণার মাধ্যমে হাতিয়ে নেয়। এ ঘটনায় গত ৪ ডিসেম্বর শাজাহানপুরের ফুলতলা এলাকার বাসিন্দা, সেনাবাহিনীর অবসরপ্রাপ্ত ওয়ারেন্ট অফিসার মোমিনুর রহমান সোনাতলা থানায় মামলা করেন।
মামলার পর ডিবি পুলিশ গোয়েন্দা তৎপরতা বাড়ায়। বৃহস্পতিবার রাতে অভিযান চালিয়ে মহিদুল ইসলামকে গ্রেফতার করা হয়। এ সময় তার কাছ থেকে মানুষের দুটি হাড়, দুটি সুরমাদানি, তিনটি লাল কাপড়, একটি আতর, দুটি তাবিজ, তিন টুকরো সাদা কাপড়, তিনটি বড় তসবিহ, পাঁচটি আগরবাতি ও কালো সুতা উদ্ধার করা হয়।
প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে মহিদুল স্বীকার করেন, তিনি কবিরাজি চিকিৎসা ও অলৌকিক ক্ষমতার প্রলোভন দেখিয়ে সাধারণ মানুষের কাছ থেকে অর্থ হাতিয়ে নেন। পরে তাকে শাজাহানপুর থানায় হস্তান্তর করা হয়।
ওসি শফিকুল ইসলাম জানান, আদালতের মাধ্যমে তাকে বগুড়া জেলে পাঠানো হয়েছে।

