অ্যান্টিভেনমের অভাবে শিশুর মৃত্যু
হাজারীবাগ (ঢাকা) প্রতিনিধি
প্রকাশ: ১০ ডিসেম্বর ২০২৫, ১১:০৭ এএম
সাভারে সাপের কামড়ে শিখা মনি (৬) নামে এক শিশুর মৃত্যু হয়েছে। ছবি: যুগান্তর
|
ফলো করুন |
|
|---|---|
ঢাকার সাভারে সাপের কামড়ে শিখা মনি (৬) নামে এক শিশুর মৃত্যু হয়েছে। মঙ্গলবার (৯ ডিসেম্বর) দুপুর সাড়ে ১২টার দিকে ব্যাংক টাউনের নামা গেন্ডা বটতলা এলাকায় বাড়ির পাশের ঘাসে খেলতে গেলে সাপ তাকে কামড় দেয়।
রাত ৮টার দিকে মুমূর্ষ অবস্থায় ঢাকা মেডিকেল কলেজ (ঢামেক) হাসপাতালে নিয়ে গেলে জরুরি বিভাগের চিকিৎসক তাকে মৃত ঘোষণা করেন।
শিখা মনি সাভারের নামা গেন্ডা বটতলা এলাকার দুবাই প্রবাসী জহুরুল ইসলামের মেয়ে। শিশুটির মা শারীরিক প্রতিবন্ধী বলে জানিয়েছে পরিবার।
সাপের কামড়ে আক্রান্ত ছয় বছরের শিখা মনিকে বাঁচাতে স্বজনরা একের পর এক হাসপাতালে ছুটেছেন। কিন্তু কোথাও মেলেনি জরুরি অ্যান্টিভেনম (ভ্যাকসিন)। সাভার থেকে শুরু করে ঢাকার বিভিন্ন হাসপাতালে ঘণ্টার পর ঘণ্টা ঘুরেও শেষ পর্যন্ত পাওয়া যায়নি প্রয়োজনীয় চিকিৎসা। অবশেষে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে পৌঁছানোর পর মৃত্যু হয় শিশুটির।
নিহত শিশুর নানী শাহনাজ বেগম জানান, আমার প্রতিবন্ধী মেয়ে জেসমিন আক্তারের একমাত্র কন্যা ছিল শিখা মনি। আজ (মঙ্গলবার) দুপুরে অন্যান্য শিশুদের সঙ্গে ঘাস খেতে খেলতে গিয়েছিল। সেখানে তার বাম পায়ে সাপ কামড় দেয়।কামড়ের পরপরই শিখাকে প্রথমে সাভার উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে যাওয়া হয়।
তিনি জানান, ডাক্তার একটা ওষুধ দিয়ে বললেন দুই বেলা খাওয়ালে ঠিক হয়ে যাবে। বাড়িতে নেওয়ার পর শিশুটির অবস্থার দ্রুত অবনতি হলে তাকে নিয়ে যাওয়া হয় সাভারের বেসরকারি এনাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে। সেখানে চিকিৎসকরা জানায়, তাকে দ্রুত সোহরাওয়ার্দী হাসপাতালে নিতে হবে।
তীব্র যানজটের মধ্যেও স্বজনরা অ্যাম্বুলেন্সে করে তাকে সোহরাওয়ার্দীতে নেন। কিন্তু সেখানে গিয়ে জানতে পারেন—হাসপাতালে ভ্যাকসিন নেই। চিকিৎসকরা শিশুটিকে দ্রুত মহাখালী হাসপাতালে নিতে বলেন।
মহাখালীতে পৌঁছালেও পাওয়া যায় একই উত্তর—সাপের ভ্যাকসিন নেই। একের পর পর দিন এক হাসপাতাল থেকে অন্য হাসপাতালে দৌড়ঝাঁপ শেষে শিশুটিকে পাঠানো হয় ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে। সেখানে নেওয়ার পর কর্তব্যরত চিকিৎসক তাকে মৃত ঘোষণা করেন।
কান্নায় ভেঙে পড়া নানী বলেন, এত বড় দেশে সাপের ভ্যাকসিন নেই—আমরা কেমনে কারে কমু? এখন ওর বাবারে কি কমু? ওর মা তো শারীরিক প্রতিবন্ধী, খালি তাকায়ে থাকে—চোখ দিয়ে পানি পড়ে।
ঢামেক হাসপাতালের পুলিশ ক্যাম্প ইনচার্জ পরিদর্শক মো. ফারুক চিকিৎসকদের বরাত দিয়ে শিশুটির মৃত্যুর বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।
তিনি জানান, লাশ মর্গে রাখা হয়েছে এবং বিষয়টি সংশ্লিষ্ট থানাকে জানানো হয়েছে।

