কোটি টাকা চাঁদা দাবি করায় পুলিশ কর্মকর্তাসহ ৫ জনের বিরুদ্ধে মামলা
সাতক্ষীরা প্রতিনিধি
প্রকাশ: ১১ ডিসেম্বর ২০২৫, ১২:৪৪ এএম
|
ফলো করুন |
|
|---|---|
কোটি টাকা চাঁদার দাবিতে অপহরণ ও নির্যাতনের অভিযোগে সাতক্ষীরা সদর সার্কেলের সাবেক অতিরিক্ত পুলিশ সুপার এবং সাবেক পিপিসহ পাঁচজনের বিরুদ্ধে বুধবার (১০ ডিসেম্বর) মামলা হয়েছে। সাতক্ষীরার অতিরিক্ত চিফ জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট বিলাস মণ্ডলের আদালতে দেবহাটা উপজেলা পরিষদের সাবেক চেয়ারম্যান মো. আল ফেরদৌস আলফা এ মামলাটি দায়ের করেন। মামলা নং— সিআর ১৭৪২/২৫। ধারা— ৪৪৮/৩৬৪/৩২৩/৩০৭সহ অন্যান্য। বিচারক মামলাটি আমলে নিয়ে পুলিশের অপরাধ তদন্ত বিভাগকে (সিআইডি) তদন্তের নির্দেশ দিয়েছেন।
মামলার আসামিরা হলেন— সাতক্ষীরা সদর সার্কেলের সাবেক অতিরিক্ত পুলিশ সুপার মির্জা সালাউদ্দীন, সদর থানার সাবেক ওসি মোস্তাফিজুর রহমান, গোয়েন্দা পুলিশের সাবেক ওসি মহিদুল ইসলাম, সাতক্ষীরা জজ আদালতের সাবেক পিপি অ্যাড. আব্দুল লতিফ এবং তার ছেলে মো. রাসেল।
মামলার বিবরণীতে বলা হয়— ২০১৯ সালের ২৯ ডিসেম্বর দুপুরে সাতক্ষীরা সদর উপজেলার বাঁকাল চেকপোস্টে বাদীর দেড় কোটি টাকার ভারতীয় সামুদ্রিক মাছ জব্দ করে বিজিবি। পরে বাদী বৈধ কাগজপত্র পাঠালেও বিজিবি তা যথাযথ মনে না করে মাছগুলো সাতক্ষীরা সদর থানায় পাঠায়। এ সময় সদর থানার তৎকালীন ওসি মোস্তাফিজুর রহমান বাদীর কাছে ফোন করে দেড় কোটি টাকা দাবি করেন। একপর্যায়ে বাদী বাধ্য হয়ে ফোন বন্ধ করে দেন।
সেদিন মধ্যরাতে তৎকালীন অতিরিক্ত পুলিশ সুপার মির্জা সালাউদ্দীন ও ডিবির ওসি মহিদু ল ইসলামের নেতৃত্বে ১০-১২ জন সাদা পোশাকধারী পুলিশ বাদীর বাড়িতে যায় এবং ১ কোটি টাকা চাঁদা দাবি করে। বাড়িতে থাকা ১৫ লাখ টাকা দেওয়ার পরও রক্ষা পাননি তিনি। বাদী ও তার ভাই আব্দুল আলিমকে ডিবি কার্যালয়ে নিয়ে গিয়ে ব্যাপক নির্যাতন চালানো হয়।
চাঁদা না দেওয়ার কারণে মাছ আটকের ঘটনায় করা মামলায় বাদী ও তার ভাইকে ‘অজ্ঞাত আসামি’ দেখিয়ে জেলহাজতে পাঠানো হয়। এদিকে আসামিরা যোগসাজশে জব্দকৃত দেড় কোটি টাকার মাছ মাত্র ১ লাখ ৯৬ হাজার টাকায় বিক্রি দেখিয়ে বাকি টাকা আত্মসাৎ করেন।
মামলায় আরও বলা হয়— মামলায় জামিন করিয়ে দেওয়ার আশ্বাস দিয়ে বাদীর কাছ থেকে ৩৫ লাখ টাকা চাঁদা নেন তৎকালীন পিপি আব্দুল লতিফ ও তার ছেলে রাসেল।
আসামিদের শারীরিক ও মানসিক নির্যাতনে বাদীর দৃষ্টিশক্তি প্রায় নষ্ট হয়ে গেছে এবং তিনি আর্থিক ও সামাজিকভাবে চরম ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছেন বলে আর্জিতে উল্লেখ করা হয়। তৎকালীন সময়ে মামলার অনুকূল পরিবেশ না থাকায় মামলার বিষয়ে বিলম্ব হয়েছে বলেও উল্লেখ আছে।
বাদীপক্ষের আইনজীবী অ্যাড. খায়রুল বদিউজ্জামান জানান, এ মামলার পরবর্তী তারিখ নির্ধারিত হয়েছে ২০২৬ সালের ২০ এপ্রিল। এছাড়া আদালত মামলাটি তদন্ত করে প্রতিবেদন দাখিলের জন্য সিআইডিকে নির্দেশ দিয়েছেন।

