Logo
Logo
×

ভারত

২৪ ঘণ্টার ব্যবধানে ফের ‘শুল্ক বোমা’! কাঁপছে ভারতের বাজার

Icon

কলকাতা প্রতিনিধি

প্রকাশ: ০৭ আগস্ট ২০২৫, ০৯:০৫ পিএম

২৪ ঘণ্টার ব্যবধানে ফের ‘শুল্ক বোমা’! কাঁপছে ভারতের বাজার

ফাইল ছবি

ডোনাল্ড ট্রাম্প ফের আন্তর্জাতিক বাণিজ্য বাজারে আলোড়ন তুললেন। মাত্র ২৪ ঘণ্টা আগে ভারতের ওপর ২৫ শতাংশ আমদানি শুল্ক কার্যকর হওয়ার পর এবার সেমিকন্ডাক্টর চিপের ওপর ১০০ শতাংশ শুল্ক আরোপের হুঁশিয়ারি দিলেন মার্কিন প্রেসিডেন্ট। এ ঘোষণার ফলে ভারত, চীন, তাইওয়ান এবং জাপানের মতো প্রযুক্তিনির্ভর দেশগুলোতে চাঞ্চল্য ছড়িয়েছে।

নিউ হ্যাম্পশায়ারে এক নির্বাচনী জনসভায় ট্রাম্প বলেন, আমরা বাইরের দেশ থেকে সস্তা জিনিস এনে নিজেদের শিল্পকে ধ্বংস হতে দিতে পারি না। চিপ উৎপাদন হবে আমেরিকার মাটিতে। বাইরে থেকে কেউ চিপ আনলে তাকে ১০০ শতাংশ শুল্ক দিতে হবে।

ট্রাম্পের এই বক্তব্য ইতোমধ্যেই মার্কিন এবং আন্তর্জাতিক সংবাদমাধ্যমে ভাইরাল হয়েছে। ব্লুমবার্গ, রয়টার্স, সিএনবিসি এবং ওয়াল স্ট্রিট জার্নাল এই ঘোষণার সত্যতা নিশ্চিত করেছে। পাশাপাশি, রিপাবলিকান হেডকোয়ার্টার থেকেও ট্রাম্পের বক্তব্যকে স্বীকৃতি দেওয়া হয়েছে।

এই ঘোষণার প্রত্যক্ষ প্রভাব পড়বে ভারতের ওপর। কারণ, ভারত বর্তমানে সেমিকন্ডাক্টর উৎপাদনের প্রাথমিক পর্যায়ে রয়েছে এবং মার্কিন প্রযুক্তি ও ডিজাইনের ওপর নির্ভরতা এখনও ব্যাপক। সরকার ‘India Semiconductor Mission’-এর মাধ্যমে আত্মনির্ভর হওয়ার চেষ্টা করছে ঠিকই, তবে বাস্তবে দেশের অধিকাংশ চিপই আমদানি করতে হয় তাইওয়ান, আমেরিকা ও দক্ষিণ কোরিয়া থেকে।

ভারতের সেমিকন্ডাক্টর বাজার গত তিন বছরে দ্রুত প্রসার লাভ করেছে। ২০২২ সালে যেখানে এই বাজারের আকার ছিল প্রায় ২৩ বিলিয়ন ডলার, ২০২৫ অর্থবছরে তা পৌঁছেছে ৫০ বিলিয়নের ঘরে। 

বিশেষজ্ঞদের মতে, আগামী পাঁচ বছরের মধ্যে এই বাজার ১০০–১১০ বিলিয়ন ডলার ছাড়িয়ে যেতে পারে। অথচ, দেশে এখনও পূর্ণাঙ্গ চিপ ডিজাইন ও উৎপাদন পরিকাঠামো গড়ে ওঠেনি। ফলে আমদানি শুল্ক দ্বিগুণ হলে মোবাইল ফোন, ইলেকট্রনিক যন্ত্রপাতি, অটোমোবাইল এমনকি চিকিৎসা সরঞ্জামের খরচও বেড়ে যাবে।

উল্লেখ্য, এর আগে রাশিয়া থেকে তেল কেনার কারণে ভারতকে ‘শাস্তি’ দিতে ট্রাম্প প্রশাসনের পক্ষ থেকে ২৫ শতাংশ অতিরিক্ত শুল্ক আরোপ করা হয়েছিল। এবার তার পরপরই আরও বড় শুল্ক চাপের হুমকি ভারতীয় বাজারকে নতুন করে সংকটের মুখে ফেলেছে।

বিশ্লেষকদের মতে, মার্কিন অভ্যন্তরীণ রাজনীতিতে ‘অর্থনৈতিক জাতীয়তাবাদ’-এর প্রচার ট্রাম্পের অন্যতম প্রধান কৌশল। তবে এই কৌশলের বিরূপ প্রভাব পড়ছে বিশ্বের বৃহত্তম গণতান্ত্রিক দেশ ভারতের ওপরও।

বর্তমানে গুজরাট, কর্ণাটক ও তামিলনাড়ুতে একাধিক সেমিকন্ডাক্টর কারখানা স্থাপনের কাজ চলছে। টাটা, মাইক্রন, ফক্সকন ও অ্যাম্প্যাক-এর মতো প্রতিষ্ঠানগুলো কেন্দ্র সরকারের বিশেষ প্রণোদনার আওতায় উৎপাদন শুরু করতে যাচ্ছে। তবে ট্রাম্পের শুল্ক নীতি যদি এর আগেই কার্যকর হয়, তাহলে ভারতীয় সেমিকন্ডাক্টর শিল্পের সূচনাতেই এক বিশাল ধাক্কা লাগতে পারে।

Logo

সম্পাদক : আবদুল হাই শিকদার

প্রকাশক : সালমা ইসলাম