শান্তি প্রক্রিয়া ব্যাহতের আশঙ্কা, নেতানিয়াহুকে নিয়ে ‘হতাশ’ ট্রাম্প প্রশাসন
আন্তর্জাতিক ডেস্ক
প্রকাশ: ২৭ ডিসেম্বর ২০২৫, ১২:২৬ পিএম
ইসরাইলের প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহু ও যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প। ছবি: সংগৃহীত
|
ফলো করুন |
|
|---|---|
ইসরাইলের প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহুর সঙ্গে যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের শীর্ষ উপদেষ্টাদের মধ্যে টানাপোড়েন ক্রমেই তীব্র হচ্ছে। গাজায় যুদ্ধবিরতি ও শান্তি প্রক্রিয়া এগিয়ে নিতে নেতানিয়াহুর ভূমিকা নিয়ে ট্রাম্পের টিম ‘ক্রমবর্ধমানভাবে হতাশ’—এমনটাই জানিয়েছে মার্কিন সংবাদমাধ্যম অ্যাক্সিওস।
প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, ট্রাম্পের ঘনিষ্ঠ উপদেষ্টা মহলে থাকা ভাইস প্রেসিডেন্ট জেডি ভ্যান্স, পররাষ্ট্রমন্ত্রী মার্কো রুবিও, ট্রাম্পের জামাতা জ্যারেড কুশনার, বিশেষ দূত স্টিভ উইটকফ এবং হোয়াইট হাউস চিফ অব স্টাফ সুজি ওয়াইলস—সবাই মনে করছেন, নেতানিয়াহু ইচ্ছাকৃতভাবে শান্তিচুক্তির বাস্তবায়ন ধীর করছেন এবং গাজায় যুদ্ধবিরতি দুর্বল করার চেষ্টা করছেন।
তবে এক ইসরাইলি কর্মকর্তা দাবি করেছেন, এই বিষয়ে রুবিওর অবস্থান নেতানিয়াহুর সঙ্গে তুলনামূলকভাবে ঘনিষ্ঠ, যেখানে উইটকফ ও কুশনারের অবস্থান ভিন্ন।
হোয়াইট হাউসের এক কর্মকর্তা জানিয়েছেন, ট্রাম্পের মূল উপদেষ্টা দলের সমর্থন কার্যত হারিয়েছেন নেতানিয়াহু। যদিও ট্রাম্প নিজে চুক্তির অগ্রগতি আরও দ্রুত চান এবং তিনিই এখনো নেতানিয়াহুর একমাত্র গুরুত্বপূর্ণ সমর্থক হিসাবে রয়েছেন।
প্রতিবেদনে আরও বলা হয়, গাজা নিরস্ত্রীকরণসহ বহুস্তরবিশিষ্ট শান্তি পরিকল্পনায় উইটকফ ও কুশনার যে প্রস্তাব দিয়েছেন, তা নিয়ে নেতানিয়াহু স্পষ্ট সংশয় প্রকাশ করেছেন। এই মতবিরোধ সম্পর্কে অবগত থাকায়, আগামী সোমবার মার-আ-লাগোতে বৈঠকে তিনি সরাসরি ট্রাম্পের সঙ্গে কথা বলে নিজের তুলনামূলক কট্টর অবস্থান গ্রহণে তাকে রাজি করানোর কৌশল নিয়েছেন বলে এক জ্যেষ্ঠ ইসরাইলি কর্মকর্তা অ্যাক্সিওসকে জানিয়েছেন।
চুক্তির প্রথম ধাপ, যা গত ১০ অক্টোবর কার্যকর হয়, তাতে ইসরাইলি জিম্মিদের মুক্তির বিনিময়ে ফিলিস্তিনি বন্দিদের মুক্তির বিষয়টি অন্তর্ভুক্ত ছিল। তবে এই ধাপে যুদ্ধবিরতি কার্যকর রাখার প্রতিশ্রুতি পুরোপুরি পালন করতে ব্যর্থ হয়েছে ইসরাইল। যুদ্ধবিরতির পরও ইসরাইলি বাহিনীর হামলায় অন্তত ৪১১ ফিলিস্তিনি নিহত এবং ১ হাজার ১১৮ জন আহত হয়েছেন।
চুক্তির দ্বিতীয় ধাপে গাজা শাসনের জন্য একটি অস্থায়ী টেকনোক্র্যাটিক কমিটি গঠন, পুনর্গঠন কার্যক্রম শুরু, একটি শান্তি কাউন্সিল প্রতিষ্ঠা, আন্তর্জাতিক বাহিনী মোতায়েন, গাজা থেকে আরও ইসরাইলি সেনা প্রত্যাহার এবং হামাসের নিরস্ত্রীকরণ অন্তর্ভুক্ত রয়েছে।
জাতিসংঘের হিসাবমতে, ইসরাইলি যুদ্ধে গাজা পুনর্গঠনের ব্যয় প্রায় ৭০ বিলিয়ন ডলার। ২০২৩ সালের অক্টোবর থেকে চলমান যুদ্ধে এখন পর্যন্ত প্রায় ৭১ হাজার ফিলিস্তিনি নিহত হয়েছেন।

-694f7b65870bf.jpg)