১৩০ বছর পর্যন্ত বাঁচতে চান দালাইলামা

আন্তর্জাতিক ডেস্ক
প্রকাশ: ০৫ জুলাই ২০২৫, ১০:৫১ পিএম

দালাইলামা। ছবি: সংগৃহীত
তিব্বতি বৌদ্ধদের ধর্মীয় নেতা দালাইলামা আরও অন্তত ৪০ বছর বা মোট ১৩০ বছরেরও বেশি বাঁচার ইচ্ছা প্রকাশ করেছেন। দালাইলামা বলেছেন, তিনি আশা করেন, ১৩০ বছরের বেশি বাঁচবেন। মৃত্যুর পর তিনি পুনর্জন্ম নিয়ে তিব্বতি বৌদ্ধধর্মের প্রধান হিসাবে আবার ফিরে আসবেন বলেও ভক্তদের আশ্বাস দিয়েছেন। শনিবার ভারতের হিমাচলের ধর্মশালায় তার দীর্ঘায়ু কামনায় আয়োজিত এক প্রার্থনা অনুষ্ঠানে এসব কথা বলেন দালাইলামা। এদিন হাজারো ভক্ত, সন্ন্যাসী এবং বিভিন্ন দেশের অতিথিরা ওই অনুষ্ঠানে যোগ দেন। রোববার তার ৯০তম জন্মদিন।
অনুষ্ঠানে দালাইলামা বলেন, ‘আমি এখন পর্যন্ত বৌদ্ধধর্ম এবং তিব্বতের মানুষের জন্য যথেষ্ট ভালোভাবে কাজ করতে পেরেছি। এখনো আশা করি, আমি ১৩০ বছরের বেশি বাঁচব।’ তার এ কথা শুনে উপস্থিত ভক্তরা হাততালি ও উল্লাসে ফেটে পড়েন। ইতিমধ্যে দালাইলামা তিব্বতি বৌদ্ধধর্মের সবচেয়ে দীর্ঘজীবী নেতা হিসাবে ইতিহাসে ঠাঁই করে নিয়েছেন। ধর্মশালায় অবস্থিত তার আশ্রমে তিনি প্রায় ৯০ মিনিট সময় কাটান। ১৯৫৯ সালে চীনের বিরুদ্ধে ব্যর্থ বিদ্রোহের পর তিনি ভারতে আশ্রয় নেন এবং তারপর থেকেই ধর্মশালায় বসবাস করছেন।
তিব্বতের ওপর পূর্ণ নিয়ন্ত্রণ প্রতিষ্ঠা করতে চায় চীন। দেশটি দালাইলামাকে ‘বিচ্ছিন্নতাবাদী’ মনে করে এবং তার উত্তরসূরি নির্বাচনের চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত নিজেদের হাতেই রাখতে চান। এ নিয়ে দালাইলামা বলেন, তার উত্তরসূরি বেছে নেওয়ার একমাত্র অধিকার অলাভজনক প্রতিষ্ঠান ‘গাডেন ফোড্রাং ট্রাস্টের’ হাতে থাকবে। তিনি আগেই ঘোষণা দিয়েছেন, তার পুনর্জন্ম হবে ‘মুক্ত বিশ্বে’, অর্থাৎ চীনের বাইরে।
এদিনের অনুষ্ঠানে মূল মন্দিরের সামনে বুদ্ধমূর্তির সামনে বসেন দালাইলামা। তার সামনে সারিবদ্ধ হয়ে বসেন সন্ন্যাসীরা। ভক্ত ও সাংবাদিকদের উপস্থিতিতে পুরো মন্দির চত্বর ছিল সরগরম। ধর্মীয় আচার-অনুষ্ঠানের পাশাপাশি সন্ন্যাসীরা বাজিয়েছেন ঝাঁঝরা ও বিশেষ বাদ্যযন্ত্র।
ওরাকল বা ভবিষ্যদ্বক্তারা এবং আধ্যাত্মিক ব্যক্তিত্বরাও অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন। মোহে কাঁপতে কাঁপতে তারা তাদের গুরু দালাইলামার প্রতি শ্রদ্ধা জানান।
দালাইলামা বলেন, ‘আমি প্রতিদিন সব জীবের মঙ্গল কামনায় প্রার্থনা করি। আমি বিশ্বাস করি, তিব্বতের অভিভাবক দেবতা অবলোকিতেশ্বরের আশীর্বাদ আমার ওপর আছে। অনেক ভবিষ্যদ্বাণী অনুযায়ীও তা-ই মনে হয়। আমি যা পেরেছি, করেছি। এখন আশাকরি আরও ৩০ থেকে ৪০ বছর বাঁচব।’